সিপিডি’র ৩ প্রস্তাব
চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বেসরকারি
গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) তিনটি প্রস্তাব তুলে
ধরেছে। নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে টিআইবির প্রস্তাব দেয়ার পরের দিন সিপিডি এ
প্রস্তাব উপস্থাপন করলো।
সিপিডি বলেছে, জীবন ও সম্পদের
ক্ষতি করছে ধংসাত্মক ও নাশকতামূলক এমন কর্মকাণ্ড অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে,
সংলাপের পরিবেশ তৈরি করতে গ্রেপ্তার হওয়া বিরোধীদলীয় রাজনৈতিক নেতাদের
মুক্তি দিতে হবে এবং শীর্ষ রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণে একটি অবাধ ও স্বচ্ছ
নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে। রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত
‘বাংলাদেশ ২০১৩: অ্যাসেসিং ইকনোমিক ইমপ্লিকেশনস অব দ্য প্রেজেন্ট
পলিটিক্যাল শকস’ শীর্ষক সংলাপে রাজনীতিক ও ব্যবসায়ীদের উপস্থিতিতে এ
প্রস্তাব উপস্থাপন করেন সংস্থাটির সম্মানিত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
আলোচনা অনুষ্ঠানে সিপিডির পক্ষ থেকে সংলাপ এবং সমঝোতার প্রস্তাব এলেও
উপস্থিত রাজনীতিবিদরা অনেকে এ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন। তবে চলমান পরিস্থিতি
উত্তরণে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা ও সংলাপের ওপর গুরুত্ব দেন
বক্তারা।
আলোচনায় অংশ নিয়ে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেন, সংবিধান অনুযায়ী দেশ চলছে না। বর্তমান বাস্তবতায় তোফায়েল আহমেদ বা রাশেদ খান মেননের মতো নেতারাও মুখ খুলছেন না। আমি তাদের মুখ খোলার আহ্বান জানাই। পরিকল্পিতভাবে সংবিধানকে উপেক্ষা করা হচ্ছে। দলীয় আজ্ঞাবহদের বিচারক বানানো হচ্ছে। ৩-৪টি থার্ড ক্লাস পেয়েও কেউ কেউ বিচারক হচ্ছেন। সুপ্রিম কোর্ট বার এসোসিয়েশন নির্বাচনে আইনজীবীরা দলীয় আজ্ঞাবহদের উচিত শিক্ষা দিয়েছেন। তিনি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকে দপ্তরবিহীন মন্ত্রী করার দাবি জানান। তিনি বলেন, বিরোধী মতকে দমন করতে আইনের অপব্যবহার করা হচ্ছে। ড. কামাল আরও বলেন, হেফাজতে ইসলামকে তলে তলে সমর্থন দিচ্ছে আওয়ামী লীগ।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, জেল, জুলুম আর নির্যাতনে মাধ্যমে বিরোধী মতকে দমানোর চেষ্টা করে কোন সরকারই সফল হতে পারে না। রাজনীতি আজ কলঙ্কিত, কলুষিত হয়ে পড়েছে। যার সিরিয়াল নম্বর ১০ তাকে প্রমোশন দেয়া হচ্ছে না। যার সিরিয়াল নম্বর ১০০ তাকে প্রমোশন দেয়া হচ্ছে। দেশে কোন নিরপেক্ষ বুদ্ধিজীবী খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এভাবে দেশ চলতে পারে না। তিনি বলেন, রাজনীতি আর রাজনীতিবিদদের হাতে নেই। দেশে এখন চরম ক্রান্তিকাল চলছে। এ অবস্থায় আমি মুখ খুলতে পারছি না। আমি মুখ খুলি দলীয় ফোরামে। প্রকাশ্যে মিডিয়ার সামনে মুখ খোলা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, আমি মুখ খুললে আমার পরিণতি হবে ড. কামাল হোসেন বা সাবেক প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরীর মতো। আমি যদি আওয়ামী লীগ না করার সিদ্ধান্ত নিই তাহলে মুখ খুলতে পারবো। সঙ্কট মোকাবিলায় সংলাপের কোন বিকল্প নেই উল্লেখ করে তোফায়েল বলেন, সংলাপের সম্ভাবনা আমি দেখছি না। সরকার বলছে- তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মানা কখনও সম্ভব নয়। বিএনপি বলছে- তত্ত্বাবধায়ক ইস্যুতে তারা কোন কমেপ্রামাইজ করবে না। তাহলে সঙ্কট সমাধান কবে কিভাবে? দু’টি দল যে অবস্থানে তাতে সংলাপ সম্ভব নয়। তিনি বলেন, রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে যে দেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে সে দেশে হেফাজতে ইসলামের দাবি মানা সম্ভব নয়। দেশকে আজ ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার ষড়যন্ত্র হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সিপিডি সংলাপে আজ যে প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হলো- তা বাস্তবের সঙ্গে মিল নেই। সংলাপে উপস্থিত বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপি চেয়ারম্যান আন্দালিভ রহমান পার্থকে উদ্দেশ্য করে তোফায়েল বলেন, তুমি তো পার্লামেন্ট বক্তব্য দিয়ে প্রশংসা কুড়িয়েছ। এরপর আর কেন পার্লামেন্টে যাও না?
সাবেক মন্ত্রী বিএনপি নেতা ড. ওসমান ফারুক বলেন, ২০০৬ সালে ১৪৫ দিন হরতাল দেয়া হয়েছিল। তারপর জিডিপি ছিল ৬ দশমিক ৭ ভাগ। আর আমরা মাত্র ১০ দিন হরতাল দিলাম। আর এতেই অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে গেল? তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা কেবল হরতালের সমালোচনা করছেন। কেন হরতাল দেয়া হচ্ছে সে বিষয়ে কিছু বলছেন না। পুলিশ গুলি করে অনেকগুলো লোক মারলো। ওই মানুষগুলোর জীবনের কোন মূল্য নেই? তারা কেন ওইসব হত্যাকাণ্ডের সমালোচনা করছেন না? তিনি বলেন, হরতালের কারণে নয়- অর্থনীতি ধ্বংস হয়েছে দুর্নীতি আর লুটপাটের কারণে।
সাবেক মন্ত্রী বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, একদিকে বিরোধী দলীয় নেতাদের জেলে রাখবেন, অন্যদিকে আলোচনার কথা বলবেন তা হবে না। তিনি বলেন, কেবল হরতালের বিরোধিতা করলে চলবে না। দেশে সাংবিধানিক অধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে। রাজনীতিবিদরা আজ ব্যবসা-বাণিজ্য দখল করে ফেলছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। সাবেক প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী বলেন, সবকিছুতেই আজ রাজনীতি খোঁজা হচ্ছে। রাজনীতি আজ কার্ল মার্কসের লেবাসে পরিণত হযেছে। সব কিছু জেনেও আমরা অনেক গোপন কথা বলতে পারি না। তিনি দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল আহমেদকে মুখ খোলার আহ্বান জানান।
অর্থনীতিবিদ এম এম আকাশ বলেন, হেফাজতে ইসলাম নিয়ে আওয়ামী লীগের ভূমিকা রহস্যজনক। তারা দ্বৈত ভূমিকা পালন করছেন। তিনি বলেন, বাঘের পিঠে চড়েছি। বাঘকে বধ করেই সমস্যার সমাধান করবো। সুশাসনের জন্যে নাগরিক- সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, জামায়াতে ইসলামী এবং হেফাজতে ইসলামের দাবি এক সময় এক হয়ে যাবে। তখন কিভাবে বিষয়টি মোকাবিলা করা হবে? সমস্যা সমাধানে তিনি নাগরিক সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সরকারকে চাপ দেয়ার দাবি জানান। আন্দালিব রহমান পার্থ বলেন, সঙ্কট সমাধানে সাংবিধানিক সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি রাজনীতিবিদদের মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে। সব সমস্যার মূলে রয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান এবং শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ছাড়া আর কেউই জাতি গঠনে কাজ করেননি।
এফবিসিসিআই সভাপতি এ কে আজাদ বলেন, শিল্পকারখানা আজ ধ্বংসের মুখে। ব্যবসায়ীরা আজ থালা হাতে রাস্তায় নেমেছেন। কোন ইউরোপিয়ান এবং আমেরিকান বিনিয়োগকারী আজ বাংলাদেশে আসতে চান না। তারা তৃতীয় কোন দেশে যেতে চাইছেন। বাংলাদেশকে তারা আজ রেড এলার্ট কান্ট্রি হিসেবে উল্লেখ করছে। তিনি বলেন, এক মাসের মধ্যে চলমান সমস্যা সমাধানের যে কথা অর্থমন্ত্রী বলছেন তা গোঁজামিল ছাড়া আর কিছু নয়। আমার বিশ্বাস ছিল- ওয়ান ইলেভেন থেকে রাজনীতিবিদ এবং ব্যবসায়ীরা শিক্ষা নিয়েছেন। এখন দেখছি তারা শিক্ষা নেননি। পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে- ওয়ান ইলেভেনের চেয়ে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি অপেক্ষা করছে। তিনি বলেন, বিরোধী দলীয় নেত্রীকে চিঠি দিয়ে বলেছি- ব্যবসায়ীরা আপনার সঙ্গে দেখা করতে চান। প্রধানমন্ত্রীকে বলেছি- এ অবস্থায় দেশ চলতে পারে না। দেশে আজ তিন কোটি লোক বেকার।
এফবিসিসিআই সাবেক সভাপতি আবদুল আওয়াল মিন্টু বলেন, দেশের বিদ্যমান অবস্থায় অর্থনীতির বিকাশ সম্ভব নয়। একটি বিশেষ চেতনার কথা বলে পরিকল্পিতভাবে দেশে বিভাজন বাড়ানো হচ্ছে। তিনি বলেন, ন্যায় বিচার চাওয়া বাদ দিয়ে কেবল ফাঁসি চাওয়া মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী। দেশের মূল সমস্যা সাংবিধানিক। এ সংবিধান পরিবর্তন করতে হবে। যে দেশে মানববন্ধন করা অধিকার নেই সেদেশে সহিংসতা বাড়বেই। সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহানের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠিত এ সংলাপে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- সার্ক চেম্বারের সাবেক সহসভাপতি শামসুদ্দোহা, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য শামসুল আলম, সংসদ সদস্য তাজুল ইসলাম, সৈয়দা আসিফা আশরাফি পাপিয়া, ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।
আলোচনায় অংশ নিয়ে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেন, সংবিধান অনুযায়ী দেশ চলছে না। বর্তমান বাস্তবতায় তোফায়েল আহমেদ বা রাশেদ খান মেননের মতো নেতারাও মুখ খুলছেন না। আমি তাদের মুখ খোলার আহ্বান জানাই। পরিকল্পিতভাবে সংবিধানকে উপেক্ষা করা হচ্ছে। দলীয় আজ্ঞাবহদের বিচারক বানানো হচ্ছে। ৩-৪টি থার্ড ক্লাস পেয়েও কেউ কেউ বিচারক হচ্ছেন। সুপ্রিম কোর্ট বার এসোসিয়েশন নির্বাচনে আইনজীবীরা দলীয় আজ্ঞাবহদের উচিত শিক্ষা দিয়েছেন। তিনি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকে দপ্তরবিহীন মন্ত্রী করার দাবি জানান। তিনি বলেন, বিরোধী মতকে দমন করতে আইনের অপব্যবহার করা হচ্ছে। ড. কামাল আরও বলেন, হেফাজতে ইসলামকে তলে তলে সমর্থন দিচ্ছে আওয়ামী লীগ।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, জেল, জুলুম আর নির্যাতনে মাধ্যমে বিরোধী মতকে দমানোর চেষ্টা করে কোন সরকারই সফল হতে পারে না। রাজনীতি আজ কলঙ্কিত, কলুষিত হয়ে পড়েছে। যার সিরিয়াল নম্বর ১০ তাকে প্রমোশন দেয়া হচ্ছে না। যার সিরিয়াল নম্বর ১০০ তাকে প্রমোশন দেয়া হচ্ছে। দেশে কোন নিরপেক্ষ বুদ্ধিজীবী খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এভাবে দেশ চলতে পারে না। তিনি বলেন, রাজনীতি আর রাজনীতিবিদদের হাতে নেই। দেশে এখন চরম ক্রান্তিকাল চলছে। এ অবস্থায় আমি মুখ খুলতে পারছি না। আমি মুখ খুলি দলীয় ফোরামে। প্রকাশ্যে মিডিয়ার সামনে মুখ খোলা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, আমি মুখ খুললে আমার পরিণতি হবে ড. কামাল হোসেন বা সাবেক প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরীর মতো। আমি যদি আওয়ামী লীগ না করার সিদ্ধান্ত নিই তাহলে মুখ খুলতে পারবো। সঙ্কট মোকাবিলায় সংলাপের কোন বিকল্প নেই উল্লেখ করে তোফায়েল বলেন, সংলাপের সম্ভাবনা আমি দেখছি না। সরকার বলছে- তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মানা কখনও সম্ভব নয়। বিএনপি বলছে- তত্ত্বাবধায়ক ইস্যুতে তারা কোন কমেপ্রামাইজ করবে না। তাহলে সঙ্কট সমাধান কবে কিভাবে? দু’টি দল যে অবস্থানে তাতে সংলাপ সম্ভব নয়। তিনি বলেন, রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে যে দেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে সে দেশে হেফাজতে ইসলামের দাবি মানা সম্ভব নয়। দেশকে আজ ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার ষড়যন্ত্র হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সিপিডি সংলাপে আজ যে প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হলো- তা বাস্তবের সঙ্গে মিল নেই। সংলাপে উপস্থিত বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপি চেয়ারম্যান আন্দালিভ রহমান পার্থকে উদ্দেশ্য করে তোফায়েল বলেন, তুমি তো পার্লামেন্ট বক্তব্য দিয়ে প্রশংসা কুড়িয়েছ। এরপর আর কেন পার্লামেন্টে যাও না?
সাবেক মন্ত্রী বিএনপি নেতা ড. ওসমান ফারুক বলেন, ২০০৬ সালে ১৪৫ দিন হরতাল দেয়া হয়েছিল। তারপর জিডিপি ছিল ৬ দশমিক ৭ ভাগ। আর আমরা মাত্র ১০ দিন হরতাল দিলাম। আর এতেই অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে গেল? তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা কেবল হরতালের সমালোচনা করছেন। কেন হরতাল দেয়া হচ্ছে সে বিষয়ে কিছু বলছেন না। পুলিশ গুলি করে অনেকগুলো লোক মারলো। ওই মানুষগুলোর জীবনের কোন মূল্য নেই? তারা কেন ওইসব হত্যাকাণ্ডের সমালোচনা করছেন না? তিনি বলেন, হরতালের কারণে নয়- অর্থনীতি ধ্বংস হয়েছে দুর্নীতি আর লুটপাটের কারণে।
সাবেক মন্ত্রী বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, একদিকে বিরোধী দলীয় নেতাদের জেলে রাখবেন, অন্যদিকে আলোচনার কথা বলবেন তা হবে না। তিনি বলেন, কেবল হরতালের বিরোধিতা করলে চলবে না। দেশে সাংবিধানিক অধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে। রাজনীতিবিদরা আজ ব্যবসা-বাণিজ্য দখল করে ফেলছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। সাবেক প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী বলেন, সবকিছুতেই আজ রাজনীতি খোঁজা হচ্ছে। রাজনীতি আজ কার্ল মার্কসের লেবাসে পরিণত হযেছে। সব কিছু জেনেও আমরা অনেক গোপন কথা বলতে পারি না। তিনি দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল আহমেদকে মুখ খোলার আহ্বান জানান।
অর্থনীতিবিদ এম এম আকাশ বলেন, হেফাজতে ইসলাম নিয়ে আওয়ামী লীগের ভূমিকা রহস্যজনক। তারা দ্বৈত ভূমিকা পালন করছেন। তিনি বলেন, বাঘের পিঠে চড়েছি। বাঘকে বধ করেই সমস্যার সমাধান করবো। সুশাসনের জন্যে নাগরিক- সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, জামায়াতে ইসলামী এবং হেফাজতে ইসলামের দাবি এক সময় এক হয়ে যাবে। তখন কিভাবে বিষয়টি মোকাবিলা করা হবে? সমস্যা সমাধানে তিনি নাগরিক সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সরকারকে চাপ দেয়ার দাবি জানান। আন্দালিব রহমান পার্থ বলেন, সঙ্কট সমাধানে সাংবিধানিক সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি রাজনীতিবিদদের মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে। সব সমস্যার মূলে রয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান এবং শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ছাড়া আর কেউই জাতি গঠনে কাজ করেননি।
এফবিসিসিআই সভাপতি এ কে আজাদ বলেন, শিল্পকারখানা আজ ধ্বংসের মুখে। ব্যবসায়ীরা আজ থালা হাতে রাস্তায় নেমেছেন। কোন ইউরোপিয়ান এবং আমেরিকান বিনিয়োগকারী আজ বাংলাদেশে আসতে চান না। তারা তৃতীয় কোন দেশে যেতে চাইছেন। বাংলাদেশকে তারা আজ রেড এলার্ট কান্ট্রি হিসেবে উল্লেখ করছে। তিনি বলেন, এক মাসের মধ্যে চলমান সমস্যা সমাধানের যে কথা অর্থমন্ত্রী বলছেন তা গোঁজামিল ছাড়া আর কিছু নয়। আমার বিশ্বাস ছিল- ওয়ান ইলেভেন থেকে রাজনীতিবিদ এবং ব্যবসায়ীরা শিক্ষা নিয়েছেন। এখন দেখছি তারা শিক্ষা নেননি। পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে- ওয়ান ইলেভেনের চেয়ে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি অপেক্ষা করছে। তিনি বলেন, বিরোধী দলীয় নেত্রীকে চিঠি দিয়ে বলেছি- ব্যবসায়ীরা আপনার সঙ্গে দেখা করতে চান। প্রধানমন্ত্রীকে বলেছি- এ অবস্থায় দেশ চলতে পারে না। দেশে আজ তিন কোটি লোক বেকার।
এফবিসিসিআই সাবেক সভাপতি আবদুল আওয়াল মিন্টু বলেন, দেশের বিদ্যমান অবস্থায় অর্থনীতির বিকাশ সম্ভব নয়। একটি বিশেষ চেতনার কথা বলে পরিকল্পিতভাবে দেশে বিভাজন বাড়ানো হচ্ছে। তিনি বলেন, ন্যায় বিচার চাওয়া বাদ দিয়ে কেবল ফাঁসি চাওয়া মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী। দেশের মূল সমস্যা সাংবিধানিক। এ সংবিধান পরিবর্তন করতে হবে। যে দেশে মানববন্ধন করা অধিকার নেই সেদেশে সহিংসতা বাড়বেই। সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহানের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠিত এ সংলাপে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- সার্ক চেম্বারের সাবেক সহসভাপতি শামসুদ্দোহা, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য শামসুল আলম, সংসদ সদস্য তাজুল ইসলাম, সৈয়দা আসিফা আশরাফি পাপিয়া, ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।
No comments