বাংলাদেশে প্রতিরক্ষা কাউন্সিল বিতর্ক

বাংলাদেশে প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রতিনিধিদের নিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল গঠনের প্রস্তাব নিয়ে আবারও বিতর্ক শুরু হয়েছে। সোমবার ঢাকায় এক সেমিনারে প্রস্তাবটি নতুন করে উত্থাপিত হয়। এই সেমিনারের আয়োজক বেসরকারি সংগঠন ‘সেন্টার ফর সিকিউরিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ’র চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আমসা আমিন বলেন, নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকারের অধীনেই এ ধরণের নিরাপত্তা কাউন্সিল গঠনের প্রস্তাব এসেছে।

উল্লেখ্য, জেনারেল আমসা আমিন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত। তাদের সেমিনারে কয়েকজন সাবেক সেনা প্রধান এবং সেনাবাহিনীর বর্তমান চিফ অব জেনারেল স্টাফও আলোচক হিসেবে অংশগ্রহণ করেন।

ওই অনুষ্ঠানের বরাত দিয়ে সংবাদ মাধ্যমে বলা হয়, অতি সম্প্রতি বাংলাদেশে ব্যর্থ এক সেনা অভ্যূত্থান প্রচেষ্টার পটভূমিতেই নিরাপত্তা কাউন্সিল গঠনের প্রস্তাবটি তোলা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে মেজর জেনারেল আমসা আমীন বলেন, তাদের সেমিনার ছিল মূলত জাতীয় নিরাপত্তা কৌশল নিয়ে। সেই আলোচনায় এক পর্যায়ে জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল গঠনের বিষয়টি এসেছে। এটি আলোচনার মুল বিষয় ছিল না। তিনি স্বীকার করেন যে জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল সম্পর্কে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে একটা নেতিবাচক ধারণা আছে।

অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আমসা আমিন বলেন, “এধরনের কাউন্সিল বাংলাদেশে গ্রহণযোগ্য হয় না। কিন্তু এটি ভ্রান্ত ধারণা। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রীর অধীনেই নিরাপত্তা কাউন্সিল গঠনের কথা বলা হচ্ছে।”

জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল গঠনের বিষয়ে বিতর্ক চলছে বিগত তত্বাবধায়ক সরকারের সময় হতেই। তখন রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে এর বিরুদ্ধে আপত্তি উঠে। অনেকে এই উদ্যোগকে দেখেছেন সরকার ও রাষ্ট্র পরিচালনায় সামরিক বাহিনীর অযাচিত হস্তক্ষেপ হিসেবে।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ বলেন, “গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাতেই সামরিক বাহিনী বা প্রতিরক্ষার কোনো বিষয় নিয়ে সংসদে আলোচনা হয় না। প্রতিরক্ষা খাতের বাজেট নিয়েও সংসদে কখনও কথা বলা হয় না। ফলে নিরাপত্তা কাউন্সিল গঠনের প্রশ্নে সার্বিক বিষয় বিবেচনায় নেয়া প্রয়োজন।”

জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল গঠনের এই প্রস্তাবের ব্যাপারে সরকারের তরফ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান ইদ্রিস আলী জানান, তারা যে প্রতিরক্ষা নীতিমালার খসড়া সরকারের কাছে জমা দিয়েছেন, তাতে এরকম নিরাপত্তা কাউন্সিল গঠনের কোনো প্রস্তাব ছিল না। সূত্র: বিবিসি।

No comments

Powered by Blogger.