দুর্নীতিতে পিছিয়ে আমরা-ঘুরে দাঁড়ানোর এখনই সময়
দুর্নীতিতে বাংলাদেশের সুদিন আর নেই। একটা সময় দুর্নীতিতে অপ্রতিরোধ্য ছিলাম আমরা। দুর্নীতির র্যাঙ্কিংয়ে বেশ কয়েকবার শীর্ষস্থান দখল করেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ইদানীং আমাদের ফর্ম একেবারেই ভালো যাচ্ছে না। আমরা আর শীর্ষস্থানে নেই। অনেক দিন ধরেই দুর্নীতিতে প্রথম হতে পারছি না আমরা। যা অত্যন্ত হতাশাজনক।
একবার-দুবার নয়, পর পর পাঁচবার দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ। যে দুর্নীতির কারণে বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী পরিচিতি লাভ করেছিল, সেই বাংলাদেশ এখন শীর্ষস্থানে নেই—এটা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। শুধু শীর্ষস্থান কেন, একেবারে প্লেসের বাইরে চলে গিয়েছি আমরা। গত বছর আমাদের অবস্থান ছিল ১২ নম্বরে। এ বছর আমাদের পারফরম্যান্স আরও খারাপ হয়েছে। আমরা এখন ১৩ নম্বরে আছি। ছিঃ! সারা বছর এত এত দুর্নীতি করেও যদি দশের ভেতরে আসতে না পারি, তাহলে বেঁচে থেকে কী লাভ? তা ছাড়া ১৩ সংখ্যাটিও মানুষ ভালো চোখে দেখে না। অশুভ-১৩ নিয়ে অনেক প্রবাদ আছে। ১৩ নম্বরে এসে আমরা আবার কোন অশুভ জালে আটকা পড়ব তা কে জানে! আমাদের দেশের দুর্নীতিবাজেরাও ব্যাপারটি বেশ গুরুত্বের সঙ্গে দেখছেন। ঘুরে দাঁড়ানোর এখনই সময়। আশা করি দেশের সুনাম অক্ষুণ্ন রাখতে যত ধরনের দুর্নীতি করা দরকার তার সবই তাঁরা করবেন। কে জানে, হয়তো তাঁরা এরই মধ্যে কাজও শুরু করে দিয়েছেন। তবে শোনা যায়, অনেক দুর্নীতিবাজ এই ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছেন। তাঁদের দাবি, এখানে নিশ্চয়ই কোনো দুর্নীতি হয়েছে। তা না হলে আমাদের যে পারফরম্যান্স তাতে নিশ্চিতভাবেই আমরা প্রথম স্থানের দাবিদার। তবে ক্রিকেটাররা যেভাবে আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত মেনে নেন, সেভাবে দুর্নীতিবাজেরাও এই ফলাফল মেনে নিয়ে নতুন ইনিংস শুরু করবেন। দেশের প্রতিটি পয়েন্টে দুর্নীতি করে শীর্ষস্থান দখলের দৃঢ় প্রত্যয় লক্ষ করা গেছে দুর্নীতিবাজদের মধ্যে। তবে তাঁরা জানেন যে ভালো কাজে, দেশের কাজে বাধা আসবেই। বাধা এসেছেও। এরই মধ্যে নিখিল বাংলা বাজপাখি সমিতি প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছে, ‘দুর্নীতিবাজ’ শব্দটি থেকে ‘বাজ’ শব্দাংশটুকু বাদ দিতে। এতে দেশের আপামর বাজপাখি সম্প্রদায় অপমানিত বোধ করে। তবে এ নিয়ে দুর্নীতিবাজদের মাথা ঘামবে না। তাঁদের একমাত্র লক্ষ্য দুর্নীতির মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেশকে চ্যাম্পিয়ন বানানো। সে লক্ষ্যেই তাঁরা দিনরাত কাজ করে চলেছেন। এখন পর্যন্ত তাদের কাজের অগ্রগতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে রস+আলো এই সংখ্যাটি প্রকাশ করল। আর তাতে সহযোগিতা করেছে টিআইবি।
No comments