পাড় ভাঙার পর পন্টিং
কে দেখে যে কারও মনে হতেই পারে, পন্টিং যেন বাহাদুর শাহ জাফর। সাম্রাজ্য হারিয়ে যিনি কি না শুধুই একজন কবি।
শেষ মুঘল সম্রাটের কাব্যের পরতে পরতে মিশে ছিল বেদনাও। ব্যর্থ সিপাহি বিদ্রোহ শেষে যাঁর নির্বাসিত জীবন কেটেছে রেঙ্গুনে। কিন্তু কাল তপ্ত দুপুরে বিসিবি একাডেমির মাঠে বিষণ্ন পন্টিংকে দেখে ঠিকই আঁচ পাওয়া গেল, এই পন্টিং বেদনার কাব্য লিখতে নয়, তৈরি হচ্ছেন প্রতিশোধ নিতে!
কার বিরুদ্ধে প্রতিশোধ? নিন্দুক-সমালোচক? না! পন্টিং প্রতিশোধ নিতে চান নিয়তির বিরুদ্ধে। যে নিয়তি আজ তাঁকে প্রায় অচেনা এক পরিস্থিতির সামনে দাঁড় করিয়েছে। নয় বছরের মধ্যে এই প্রথম সাতসকালে ড্রেসিংরুমে গিয়ে পন্টিং উপলব্ধি করবেন, টস করার জন্য আর ডাক পড়ছে না তাঁর! পন্টিং পাল্টা জবাব দিতে চান দুঃসময়কে। যে দুঃসময় তাঁর সাম্রাজ্যের মানচিত্র থেকে মুছে ফেলেছে একের পর এক রাজ্য।
পন্টিং তাই ধনুকভাঙা পণই যেন করেছেন। দলের সবচেয়ে বয়সী ক্রিকেটার, তার পরও অনুশীলনে তিনিই সবচেয়ে তৎপর। টানা আধঘণ্টার মতো নেটে ব্যাটিং করলেন। একটু বিরতি দিয়ে আবারও। কিশোর নেট বোলারটি ঠিকমতো বল ফেলতে পারছিল না বলে একটু যেন রেগেও গেলেন। নিজেকে শাণিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতিতে সামান্য ফাঁকটুকুও বরদাস্ত করতে নারাজ।
অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়কত্ব ছাড়া মানে ক্যারিয়ারেরও শেষ—এটা অলিখিত রেওয়াজ। পুরোপুরি নেতৃত্ব ছাড়ার পরও জাতীয় দলে অন্যের অধিনায়কত্বে খেলা সর্বশেষ অস্ট্রেলীয় ছিলেন কিম হিউজ। সেটিও ১৯৮৫ সালের ঘটনা। ৩৬ বছর বয়সী পন্টিংয়ের ক্যারিয়ারেরও অস্ত তাই অনেকেই দেখছেন। তাঁদের একজন কলাম লেখক পিটার রোবাক। রোবাকরা জেনে দুঃখই পাবেন, কাল পন্টিংকে দেখে মনে হলো, যেন তাঁর পুনর্জন্ম হয়েছে।
পুনর্জন্মের কথাটি পন্টিং নিজেই বলেছিলেন অধিনায়কত্ব ছাড়ার সময়। শচীন টেন্ডুলকার যেমন ক্যারিয়ারের শেষ প্রান্তে এসে, গত দুই বছরে সবচেয়ে সুবর্ণ সময়টা কাটাচ্ছেন; পন্টিংয়েরও আশা, তাঁর পতনোন্মুখ ক্যারিয়ারের ঊর্ধ্বযাত্রা শুরু হবে এখান থেকেই। যে যাত্রা পথের প্রথম মাইলফলক হিসেবে পন্টিং মনে করছেন ভারতের বিপক্ষে তাঁর বিশ্বকাপ সেঞ্চুরিটিকে, আন্তর্জাতিক যে সেঞ্চুরিটি এসেছে ৩৭ ইনিংস পর। পরশু প্রস্তুতি ম্যাচে ৬৯ রানের ইনিংস খেলা পন্টিং বুঝিয়ে দিয়েছেন, ঝড় আসছে!
ক্লার্ক-যুগের আনুষ্ঠানিক শুরুর ক্ষণটা আজ তাঁর জন্য তাই মিশ্র অনুভূতির হবে। একদিকে নির্ভার হয়ে খেলার স্বস্তি; অন্যদিকে অধিনায়কের কর্তৃত্বময় ক্রিকেটে হঠাৎ করে পার্শ্বচরিত্র হয়ে যাওয়ার অস্বস্তি। পন্টিং চাইলেও কি আর আগের মতো কর্তৃত্ব নিয়ে বকে দিতে পারবেন কাউকে?
অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটের সর্বকালের সফল ব্যাটসম্যানটি অবশ্য বলেছেন, ছায়া-অধিনায়ক হিসেবে থাকবেন। কাল ক্লার্কও বললেন, ‘রিকির উপদেশ সব সময়ই আমাকে অনেক সাহায্য করেছে। সেটা আমি ওর ডেপুটি থাকার সময়ও যেমন, এখন ওর অধিনায়ক হওয়ার পরও তা-ই। আমি রিকিকে খোলাখুলিই বলেছি, আমার মতো একজন অনভিজ্ঞ অধিনায়কের জন্য ওর বিশাল অভিজ্ঞতা অনেক সাহায্য করবে। মাঠে, মাঠের বাইরে আমাদের সম্পর্ক সব সময়ই দৃঢ় ছিল। আশা করি, সেটা পাল্টাবে না।’
কিন্তু কিছু জিনিস ক্লার্ক না চাইলেও পাল্টাবে। পাল্টাবে সময়ের হাত ধরে। পাল্টাবে পরিস্থিতির দাবিতে। এবং সেই পরিবর্তনের স্রোতে পাড় ভাঙতে ভাঙতে পন্টিং একদিন আবিষ্কার করবেন, জীবনের নদীটা অনেকটাই বাঁক নিয়ে চলে গেছে অন্যদিকে!
শেষ মুঘল সম্রাটের কাব্যের পরতে পরতে মিশে ছিল বেদনাও। ব্যর্থ সিপাহি বিদ্রোহ শেষে যাঁর নির্বাসিত জীবন কেটেছে রেঙ্গুনে। কিন্তু কাল তপ্ত দুপুরে বিসিবি একাডেমির মাঠে বিষণ্ন পন্টিংকে দেখে ঠিকই আঁচ পাওয়া গেল, এই পন্টিং বেদনার কাব্য লিখতে নয়, তৈরি হচ্ছেন প্রতিশোধ নিতে!
কার বিরুদ্ধে প্রতিশোধ? নিন্দুক-সমালোচক? না! পন্টিং প্রতিশোধ নিতে চান নিয়তির বিরুদ্ধে। যে নিয়তি আজ তাঁকে প্রায় অচেনা এক পরিস্থিতির সামনে দাঁড় করিয়েছে। নয় বছরের মধ্যে এই প্রথম সাতসকালে ড্রেসিংরুমে গিয়ে পন্টিং উপলব্ধি করবেন, টস করার জন্য আর ডাক পড়ছে না তাঁর! পন্টিং পাল্টা জবাব দিতে চান দুঃসময়কে। যে দুঃসময় তাঁর সাম্রাজ্যের মানচিত্র থেকে মুছে ফেলেছে একের পর এক রাজ্য।
পন্টিং তাই ধনুকভাঙা পণই যেন করেছেন। দলের সবচেয়ে বয়সী ক্রিকেটার, তার পরও অনুশীলনে তিনিই সবচেয়ে তৎপর। টানা আধঘণ্টার মতো নেটে ব্যাটিং করলেন। একটু বিরতি দিয়ে আবারও। কিশোর নেট বোলারটি ঠিকমতো বল ফেলতে পারছিল না বলে একটু যেন রেগেও গেলেন। নিজেকে শাণিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতিতে সামান্য ফাঁকটুকুও বরদাস্ত করতে নারাজ।
অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়কত্ব ছাড়া মানে ক্যারিয়ারেরও শেষ—এটা অলিখিত রেওয়াজ। পুরোপুরি নেতৃত্ব ছাড়ার পরও জাতীয় দলে অন্যের অধিনায়কত্বে খেলা সর্বশেষ অস্ট্রেলীয় ছিলেন কিম হিউজ। সেটিও ১৯৮৫ সালের ঘটনা। ৩৬ বছর বয়সী পন্টিংয়ের ক্যারিয়ারেরও অস্ত তাই অনেকেই দেখছেন। তাঁদের একজন কলাম লেখক পিটার রোবাক। রোবাকরা জেনে দুঃখই পাবেন, কাল পন্টিংকে দেখে মনে হলো, যেন তাঁর পুনর্জন্ম হয়েছে।
পুনর্জন্মের কথাটি পন্টিং নিজেই বলেছিলেন অধিনায়কত্ব ছাড়ার সময়। শচীন টেন্ডুলকার যেমন ক্যারিয়ারের শেষ প্রান্তে এসে, গত দুই বছরে সবচেয়ে সুবর্ণ সময়টা কাটাচ্ছেন; পন্টিংয়েরও আশা, তাঁর পতনোন্মুখ ক্যারিয়ারের ঊর্ধ্বযাত্রা শুরু হবে এখান থেকেই। যে যাত্রা পথের প্রথম মাইলফলক হিসেবে পন্টিং মনে করছেন ভারতের বিপক্ষে তাঁর বিশ্বকাপ সেঞ্চুরিটিকে, আন্তর্জাতিক যে সেঞ্চুরিটি এসেছে ৩৭ ইনিংস পর। পরশু প্রস্তুতি ম্যাচে ৬৯ রানের ইনিংস খেলা পন্টিং বুঝিয়ে দিয়েছেন, ঝড় আসছে!
ক্লার্ক-যুগের আনুষ্ঠানিক শুরুর ক্ষণটা আজ তাঁর জন্য তাই মিশ্র অনুভূতির হবে। একদিকে নির্ভার হয়ে খেলার স্বস্তি; অন্যদিকে অধিনায়কের কর্তৃত্বময় ক্রিকেটে হঠাৎ করে পার্শ্বচরিত্র হয়ে যাওয়ার অস্বস্তি। পন্টিং চাইলেও কি আর আগের মতো কর্তৃত্ব নিয়ে বকে দিতে পারবেন কাউকে?
অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটের সর্বকালের সফল ব্যাটসম্যানটি অবশ্য বলেছেন, ছায়া-অধিনায়ক হিসেবে থাকবেন। কাল ক্লার্কও বললেন, ‘রিকির উপদেশ সব সময়ই আমাকে অনেক সাহায্য করেছে। সেটা আমি ওর ডেপুটি থাকার সময়ও যেমন, এখন ওর অধিনায়ক হওয়ার পরও তা-ই। আমি রিকিকে খোলাখুলিই বলেছি, আমার মতো একজন অনভিজ্ঞ অধিনায়কের জন্য ওর বিশাল অভিজ্ঞতা অনেক সাহায্য করবে। মাঠে, মাঠের বাইরে আমাদের সম্পর্ক সব সময়ই দৃঢ় ছিল। আশা করি, সেটা পাল্টাবে না।’
কিন্তু কিছু জিনিস ক্লার্ক না চাইলেও পাল্টাবে। পাল্টাবে সময়ের হাত ধরে। পাল্টাবে পরিস্থিতির দাবিতে। এবং সেই পরিবর্তনের স্রোতে পাড় ভাঙতে ভাঙতে পন্টিং একদিন আবিষ্কার করবেন, জীবনের নদীটা অনেকটাই বাঁক নিয়ে চলে গেছে অন্যদিকে!
No comments