প্রতিদ্বন্দ্বী দুই পক্ষেই অনেক ভুয়া ভোটার
দেশের শিল্পমালিকদের সর্ববৃহৎ সংগঠন তৈরি পোশাক মালিক সমিতির (বিজিএমইএ) নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী ব্যবসায়ীদের দুটি পক্ষ—সম্মিলিত পরিষদ ও ফোরাম—ব্যাপকসংখ্যক ভুয়া ভোটার তৈরি করেছে। বছরের পর বছর ধরে এই সংগঠনের আওতাভুক্ত রুগ্ণ শিল্প নিয়ে চলেছে নির্বাচনী ‘রাজনীতি’।
যে পক্ষটি রুগ্ণ শিল্পের নামে অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানকে নিজেদের পক্ষে ভোটার বানাতে সক্ষম হয়েছে, নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়া সে পক্ষের জন্য তত সহজ হয়েছে। এবারের আসন্ন নির্বাচনে বিষয়টি বিবাদের পর্যায়ে গিয়ে ঠেকায়, তা প্রকাশ পেয়ে গেছে।
ইতিমধ্যেই এক দফা নির্বাচন স্থগিত হয়েছে। আগামী ২০ মার্চ নতুনভাবে নির্বাচন ঘোষণা করা হলেও তা নিয়ে সন্দেহ-সংশয় দেখা দিয়েছে। নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচন বোর্ডের সচিবের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্ব, খামখেয়ালি ও একগুঁয়েমির অভিযোগ এনেছে প্রতিদ্বন্দ্বী পক্ষ। এর আগে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোট গ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বিজিএমইএর নির্বাচন কমিশন প্রতিদ্বন্দ্বী পক্ষ দুটিকে ডেকে ২৫ থেকে ৪০ ভাগ ভুয়া ভোটার রয়েছে বলে উল্লেখ করে। পরিস্থিতি বিবেচনায় উভয় পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়। কিন্তু সেই সমঝোতা না মেনে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে খামখেয়ালি ও একগুঁয়েমির অভিযোগ এনেছে ফোরাম। নির্বাচন কমিশন সমঝোতা ভেঙে পুরো ভোটার তালিকা যাচাই-বাছাই না করে বিজিএমইএর দেওয়া ৯০০ কারখানার তালিকা ও ফাইল দেখে ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করার চেষ্টা করায় ফোরাম গণমাধ্যমের কাছে অভিযোগ আনে।
তবে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে নির্বাচন কমিশন ও আপিল বোর্ড প্রতিদ্বন্দ্বী দুই ব্যবসায়ী গোষ্ঠীকে নিয়ে বৈঠক করে ১০০ ভাগ ফাইল পুরোপুরি খুঁটিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে। আগামীকাল শনিবার থেকে এই পর্বের খুঁটিয়ে দেখার কাজ শুরু হবে।
অনুসন্ধানে বিজিএমইএর ২০১১-১২ সময়ের নির্বাচনে ভোটার তালিকায় ব্যাপক ভুয়া ভোটার থাকার প্রমাণ মিলেছে। এর মধ্যে মৃত ব্যক্তির প্রতিষ্ঠানের পক্ষে ভুয়া ভোটার হওয়ার নজির যেমন রয়েছে, তেমনি এক যুগের বেশি সময় ধরে কারখানার অস্তিত্ব নেই, কারখানার স্থানে বহুতল ভবন নির্মাণ হয়েছে—এমন শিল্পের নামে ভোটার হওয়ারও প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে।
সূত্রে পাওয়া তথ্যে দেখা যাচ্ছে, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের কাছে ২১ জন আবেদনকারী তাঁদের প্রতিষ্ঠানের নাম ভাঙিয়ে, ভোটার তালিকায় ছবি পাল্টিয়ে ভুয়া ভোটার হওয়ার অভিযোগ এনেছেন। আর অন্য সূত্রগুলো বলছে, শত শত এমনকি হাজারের ওপরে ভুয়া ভোটার রয়েছে বিজিএমইএর ভোটার তালিকায়। নির্বাচন কমিশন দুই পক্ষের সমঝোতা বৈঠকে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ২৫ থেকে ৪০ ভাগ ভোটারের আনুষ্ঠানিক কাগজপত্রে গরমিলের তথ্য জানায়।
ভোটার তালিকা পর্যালোচনায় পাওয়া গেছে নানা বিস্ময়কর তথ্য। যেমন, মাহমুদুর রহমান তালিকা অনুসারে তিনটি কোম্পানির পক্ষে ভোটার হয়েছেন। এই তিনটি কোম্পানি হলো, ঢাকা ট্যাগ লিমিটেড (ভোটার আইডি ৬১৬), জেম অ্যাপারেলস লিমিটেড (ভোটার আইডি ৯১১) ও কেকেকে গার্মেন্টস লিমিটেড (ভোটার আইডি ১১৮৯)। কিন্তু বিজিএমইএর নির্বাচন কমিশনের কাছে কেকেকে গার্মেন্টসের প্রকৃত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) বিএম নুরুল আজিম আবেদন করে জানিয়েছেন, তাঁর অজ্ঞাতসারে স্বাক্ষর জাল করে এবং ছবি পরিবর্তন করে ভোটার তালিকায় নাম তোলা হয়েছে। উল্লেখ্য, গত কয়েকটি নির্বাচনে মাহমুদুর রহমান ফোরামের সমর্থক হিসেবে ভূমিকা রেখেছেন। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে মাহমুদুর রহমানকে পাওয়া যায়নি। তার নম্বরটি ধরেন মার্চেনডাইজিং ম্যানেজার আরিফুর রহমান। তিনি জানান, উনি চীনে আছেন।
অন্যদিকে মাসুদ কাদের মনা দুটি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে ভোটার হয়েছেন। এর একটা হলো তিভোলি অ্যাপারেলস্ লিমিডেট (ভোটার ২৪৩৮) এবং লাপিন ড্রেস লিমিটেড (ভোটার আইডি ১৩৭৮)। মাসুদ কাদের সম্মিলিত পরিষদের সমর্থক হিসেবে বিগত নির্বাচনগুলোতে ভূমিকা রেখেছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেছেন, লাপিনের এমডি তাঁকে প্রতিনিধি হিসেবে ভোটার করেছেন। কিন্তু বিজিএমইএ নির্বাচনে ভোটারের শর্ত হিসেবে জয়েন্ট স্টক কোম্পানিতে কোম্পানির পরিচালক হিসেবে মাসুদ কাদেরের নাম নেই।
আবার মোহাম্মদ আলী ব্লু বার্ড গার্মেন্টস লিমিটেড ও মডার্ন গার্মেন্টস লিমিটেডের পক্ষে ভোটার হয়েছেন। এই দুই প্রতিষ্ঠানে তাঁর ভোটার আইডি হলো যথাক্রমে ৩৯২ ও ১৪৫৭। মোহাম্মদ আলী জানান, ব্লু বার্ড তিনি কিনেছেন। কিন্তু কোম্পানির পরিচালক হিসেবে জয়েন্ট স্টক কোম্পানিতে তাঁর নাম নেই ঠিকই, তবে তাঁকে কোম্পানি এমডি প্রতিনিধি হিসেবে ভোটার করেছে। তিনি সম্মিলিত পরিষদের সমর্থক।
বিজিএমইএ গত ২৪ ফেব্রুয়ারি এক সাধারণ সভায় ছয় আসল মালিক ও ভুয়া ভোটার এবং তাঁদের রঙিন ছবিসংবলিত পরিচয় প্রোজেক্টরের মাধ্যমে উপস্থাপন করেছে। ওপরে উল্লিখিত মাহমুদুর রহমান ছাড়া অন্যরা হলেন: এরডোওর অ্যাপারেলস্ সোর্সিং লিমিটেডের আসল মালিক সাখাওয়াত হোসেন, কিন্তু ভুয়া ভোটার হয়েছেন চৌধুরী আনোয়ারুল আজিম। ভোটার আইডি সংখ্যা ২১৭। দেওয়ান ফ্যাশনস্ ওয়্যার লিমিটেডের প্রকৃত মালিক মাহমুদা চৌধুরী, কিন্তু ভুয়া ভোটার হয়েছেন কামরুর রহমান। ভোটার আইডি সংখ্যা ৬০৯। দেওয়ান টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডের আসল মালিক হলেন মো. দেওয়ান ফারুক দেওয়ান, কিন্তু ভুয়া ভোটার হয়েছেন গুইয়াম রাসেল, যাঁর ভোটার আইডি সংখ্যা ৬১০। দি চিক ওয়্যার লিমিটেডের আসল মালিক হলেন এহতেশাম চৌধুরী, কিন্তু ভুয়া ভোটার হয়েছে জহুর চৌধুরী, যাঁর ভোটার আইডি ২২৯৫। ইরান টেক্সটাইল লিমিটেডের আসল মালিক হচ্ছেন মো. মনির হোসেন, কিন্তু ভুয়া ভোটার হয়েছেন কবীর হোসেন মোল্লা, যাঁর ভোটার আইডি ১০৬২।
জানা গেছে, নির্বাচন কমিশনের কাছে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মোট ২১ জন আসল মালিক অভিযোগ করেছেন, তাঁদের স্বাক্ষর জাল করে ছবি বদলিয়ে ভুয়া ভোটার হয়েছে। এসব আবেদন ধরেই এবারের নির্বাচন নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিবাদ পরিষ্কার হয়ে পড়ে।
বিজিএমইএ নির্বাচন এলে প্রতিবারই রুগ্ণ শিল্প ইস্যু নিয়ে বেশ তৎপর থাকে দুই পক্ষ। এটা নির্বাচনী রাজনীতি ছাড়া অন্য কিছু নয়। বছরের পর বছর যেসব শিল্পের একটি টাকারও রপ্তানি নেই, কিংবা শিল্পকারখানা পরিদর্শকের প্রতিবেদন অনুসারে শিল্পের অস্তিত্ব নেই, তাঁদের ভোটার হতে দেখা যায়। জানা যায়, আসলে এসব রুগ্ণ শিল্পের ভোটার হওয়ার অর্থ জোগান দেয় প্রতিদ্বন্দ্বী দুই গ্রুপ নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক একটি বড় শিল্প গ্রুপের মালিক এ প্রসঙ্গে বলেন, পোশাক শিল্পমালিকদের আরেকটি সংগঠন বিকেএমইএ নিয়ম চালু করেছে, বছরে একটা চালান রপ্তানি না থাকলে তিনি ভোটার হতে পারবেন না। তিনি দাবি করেন, বিজিএমইএতেও এই ব্যবস্থা চালু করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। তিনি আরও বলেন, রুগ্ণ শিল্পের রাজনীতি থেকে বিজিএমইএকে বেরিয়ে আসতে হবে।
যে পক্ষটি রুগ্ণ শিল্পের নামে অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানকে নিজেদের পক্ষে ভোটার বানাতে সক্ষম হয়েছে, নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়া সে পক্ষের জন্য তত সহজ হয়েছে। এবারের আসন্ন নির্বাচনে বিষয়টি বিবাদের পর্যায়ে গিয়ে ঠেকায়, তা প্রকাশ পেয়ে গেছে।
ইতিমধ্যেই এক দফা নির্বাচন স্থগিত হয়েছে। আগামী ২০ মার্চ নতুনভাবে নির্বাচন ঘোষণা করা হলেও তা নিয়ে সন্দেহ-সংশয় দেখা দিয়েছে। নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচন বোর্ডের সচিবের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্ব, খামখেয়ালি ও একগুঁয়েমির অভিযোগ এনেছে প্রতিদ্বন্দ্বী পক্ষ। এর আগে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোট গ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বিজিএমইএর নির্বাচন কমিশন প্রতিদ্বন্দ্বী পক্ষ দুটিকে ডেকে ২৫ থেকে ৪০ ভাগ ভুয়া ভোটার রয়েছে বলে উল্লেখ করে। পরিস্থিতি বিবেচনায় উভয় পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়। কিন্তু সেই সমঝোতা না মেনে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে খামখেয়ালি ও একগুঁয়েমির অভিযোগ এনেছে ফোরাম। নির্বাচন কমিশন সমঝোতা ভেঙে পুরো ভোটার তালিকা যাচাই-বাছাই না করে বিজিএমইএর দেওয়া ৯০০ কারখানার তালিকা ও ফাইল দেখে ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করার চেষ্টা করায় ফোরাম গণমাধ্যমের কাছে অভিযোগ আনে।
তবে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে নির্বাচন কমিশন ও আপিল বোর্ড প্রতিদ্বন্দ্বী দুই ব্যবসায়ী গোষ্ঠীকে নিয়ে বৈঠক করে ১০০ ভাগ ফাইল পুরোপুরি খুঁটিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে। আগামীকাল শনিবার থেকে এই পর্বের খুঁটিয়ে দেখার কাজ শুরু হবে।
অনুসন্ধানে বিজিএমইএর ২০১১-১২ সময়ের নির্বাচনে ভোটার তালিকায় ব্যাপক ভুয়া ভোটার থাকার প্রমাণ মিলেছে। এর মধ্যে মৃত ব্যক্তির প্রতিষ্ঠানের পক্ষে ভুয়া ভোটার হওয়ার নজির যেমন রয়েছে, তেমনি এক যুগের বেশি সময় ধরে কারখানার অস্তিত্ব নেই, কারখানার স্থানে বহুতল ভবন নির্মাণ হয়েছে—এমন শিল্পের নামে ভোটার হওয়ারও প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে।
সূত্রে পাওয়া তথ্যে দেখা যাচ্ছে, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের কাছে ২১ জন আবেদনকারী তাঁদের প্রতিষ্ঠানের নাম ভাঙিয়ে, ভোটার তালিকায় ছবি পাল্টিয়ে ভুয়া ভোটার হওয়ার অভিযোগ এনেছেন। আর অন্য সূত্রগুলো বলছে, শত শত এমনকি হাজারের ওপরে ভুয়া ভোটার রয়েছে বিজিএমইএর ভোটার তালিকায়। নির্বাচন কমিশন দুই পক্ষের সমঝোতা বৈঠকে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ২৫ থেকে ৪০ ভাগ ভোটারের আনুষ্ঠানিক কাগজপত্রে গরমিলের তথ্য জানায়।
ভোটার তালিকা পর্যালোচনায় পাওয়া গেছে নানা বিস্ময়কর তথ্য। যেমন, মাহমুদুর রহমান তালিকা অনুসারে তিনটি কোম্পানির পক্ষে ভোটার হয়েছেন। এই তিনটি কোম্পানি হলো, ঢাকা ট্যাগ লিমিটেড (ভোটার আইডি ৬১৬), জেম অ্যাপারেলস লিমিটেড (ভোটার আইডি ৯১১) ও কেকেকে গার্মেন্টস লিমিটেড (ভোটার আইডি ১১৮৯)। কিন্তু বিজিএমইএর নির্বাচন কমিশনের কাছে কেকেকে গার্মেন্টসের প্রকৃত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) বিএম নুরুল আজিম আবেদন করে জানিয়েছেন, তাঁর অজ্ঞাতসারে স্বাক্ষর জাল করে এবং ছবি পরিবর্তন করে ভোটার তালিকায় নাম তোলা হয়েছে। উল্লেখ্য, গত কয়েকটি নির্বাচনে মাহমুদুর রহমান ফোরামের সমর্থক হিসেবে ভূমিকা রেখেছেন। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে মাহমুদুর রহমানকে পাওয়া যায়নি। তার নম্বরটি ধরেন মার্চেনডাইজিং ম্যানেজার আরিফুর রহমান। তিনি জানান, উনি চীনে আছেন।
অন্যদিকে মাসুদ কাদের মনা দুটি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে ভোটার হয়েছেন। এর একটা হলো তিভোলি অ্যাপারেলস্ লিমিডেট (ভোটার ২৪৩৮) এবং লাপিন ড্রেস লিমিটেড (ভোটার আইডি ১৩৭৮)। মাসুদ কাদের সম্মিলিত পরিষদের সমর্থক হিসেবে বিগত নির্বাচনগুলোতে ভূমিকা রেখেছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেছেন, লাপিনের এমডি তাঁকে প্রতিনিধি হিসেবে ভোটার করেছেন। কিন্তু বিজিএমইএ নির্বাচনে ভোটারের শর্ত হিসেবে জয়েন্ট স্টক কোম্পানিতে কোম্পানির পরিচালক হিসেবে মাসুদ কাদেরের নাম নেই।
আবার মোহাম্মদ আলী ব্লু বার্ড গার্মেন্টস লিমিটেড ও মডার্ন গার্মেন্টস লিমিটেডের পক্ষে ভোটার হয়েছেন। এই দুই প্রতিষ্ঠানে তাঁর ভোটার আইডি হলো যথাক্রমে ৩৯২ ও ১৪৫৭। মোহাম্মদ আলী জানান, ব্লু বার্ড তিনি কিনেছেন। কিন্তু কোম্পানির পরিচালক হিসেবে জয়েন্ট স্টক কোম্পানিতে তাঁর নাম নেই ঠিকই, তবে তাঁকে কোম্পানি এমডি প্রতিনিধি হিসেবে ভোটার করেছে। তিনি সম্মিলিত পরিষদের সমর্থক।
বিজিএমইএ গত ২৪ ফেব্রুয়ারি এক সাধারণ সভায় ছয় আসল মালিক ও ভুয়া ভোটার এবং তাঁদের রঙিন ছবিসংবলিত পরিচয় প্রোজেক্টরের মাধ্যমে উপস্থাপন করেছে। ওপরে উল্লিখিত মাহমুদুর রহমান ছাড়া অন্যরা হলেন: এরডোওর অ্যাপারেলস্ সোর্সিং লিমিটেডের আসল মালিক সাখাওয়াত হোসেন, কিন্তু ভুয়া ভোটার হয়েছেন চৌধুরী আনোয়ারুল আজিম। ভোটার আইডি সংখ্যা ২১৭। দেওয়ান ফ্যাশনস্ ওয়্যার লিমিটেডের প্রকৃত মালিক মাহমুদা চৌধুরী, কিন্তু ভুয়া ভোটার হয়েছেন কামরুর রহমান। ভোটার আইডি সংখ্যা ৬০৯। দেওয়ান টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডের আসল মালিক হলেন মো. দেওয়ান ফারুক দেওয়ান, কিন্তু ভুয়া ভোটার হয়েছেন গুইয়াম রাসেল, যাঁর ভোটার আইডি সংখ্যা ৬১০। দি চিক ওয়্যার লিমিটেডের আসল মালিক হলেন এহতেশাম চৌধুরী, কিন্তু ভুয়া ভোটার হয়েছে জহুর চৌধুরী, যাঁর ভোটার আইডি ২২৯৫। ইরান টেক্সটাইল লিমিটেডের আসল মালিক হচ্ছেন মো. মনির হোসেন, কিন্তু ভুয়া ভোটার হয়েছেন কবীর হোসেন মোল্লা, যাঁর ভোটার আইডি ১০৬২।
জানা গেছে, নির্বাচন কমিশনের কাছে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মোট ২১ জন আসল মালিক অভিযোগ করেছেন, তাঁদের স্বাক্ষর জাল করে ছবি বদলিয়ে ভুয়া ভোটার হয়েছে। এসব আবেদন ধরেই এবারের নির্বাচন নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিবাদ পরিষ্কার হয়ে পড়ে।
বিজিএমইএ নির্বাচন এলে প্রতিবারই রুগ্ণ শিল্প ইস্যু নিয়ে বেশ তৎপর থাকে দুই পক্ষ। এটা নির্বাচনী রাজনীতি ছাড়া অন্য কিছু নয়। বছরের পর বছর যেসব শিল্পের একটি টাকারও রপ্তানি নেই, কিংবা শিল্পকারখানা পরিদর্শকের প্রতিবেদন অনুসারে শিল্পের অস্তিত্ব নেই, তাঁদের ভোটার হতে দেখা যায়। জানা যায়, আসলে এসব রুগ্ণ শিল্পের ভোটার হওয়ার অর্থ জোগান দেয় প্রতিদ্বন্দ্বী দুই গ্রুপ নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক একটি বড় শিল্প গ্রুপের মালিক এ প্রসঙ্গে বলেন, পোশাক শিল্পমালিকদের আরেকটি সংগঠন বিকেএমইএ নিয়ম চালু করেছে, বছরে একটা চালান রপ্তানি না থাকলে তিনি ভোটার হতে পারবেন না। তিনি দাবি করেন, বিজিএমইএতেও এই ব্যবস্থা চালু করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। তিনি আরও বলেন, রুগ্ণ শিল্পের রাজনীতি থেকে বিজিএমইএকে বেরিয়ে আসতে হবে।
No comments