শেয়ারের সরবরাহ বাড়াতে বাধা এসইসির আইনি শর্ত by হাসান ইমাম
দেশের পুঁজিবাজারের সাম্প্রতিক অস্থিতিশীলতা ঠেকাতে সব মহল থেকেই শেয়ারের সরবরাহ বাড়ানোর কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) নিজের প্রণীত কিছু আইনি শর্তই এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এ পরিস্থিতিতে আইনটি সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে এসইসি। এর অংশ হিসেবে সংস্থাটি গতকাল মঙ্গলবার বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করেছে। কিন্তু আইন সংশোধনের ব্যাপারে কী ধরনের আলোচনা হয়েছে তা আনুষ্ঠানিকভাবে জানাতে রাজি হননি বৈঠকে উপস্থিত কর্মকর্তারা।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, যেহেতু অর্থ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে আইনটি করা হয়েছিল, সেহেতু এটি সংশোধন করতে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন লাগবে। তার আগে আইনটিতে কী ধরনের সংশোধন আনা যায়, সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মতামত জানতেই এ বৈঠক।
এসইসি গত ১১ মার্চ প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে নতুন কোম্পানির ক্ষেত্রে পুঁজিবাজার থেকে মূলধন সংগ্রহের ব্যাপারে কিছু শর্ত আরোপ করে। ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, কোনো কোম্পানি প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে বাজার থেকে মূলধন সংগ্রহ করতে চাইলে ন্যূনতম পরিশোধিত মূলধন (বিদ্যমান ও প্রস্তাবিত মিলে) ৪০ কোটি টাকা হতে হবে।
তবে বিদ্যমান ও প্রস্তাবিত মিলে মূলধন ৭৫ কোটি টাকা হলে বাজারে শেয়ার ছাড়তে হবে এর ৪০ শতাংশ। একইভাবে ৭৫ কোটি টাকা থেকে ১৫০ কোটি টাকা পর্যন্ত পরিশোধিত মূলধনের ক্ষেত্রে আইপিওর আকার হবে ২৫ শতাংশ বা ৩০ কোটি টাকা, এর মধ্যে যেটি বেশি। মূলধন ১৫০ কোটি টাকার বেশি হলে আইপিওর আকার হবে ১৫ শতাংশ বা ৪০ কোটি টাকার মধ্যে যেটি বেশি।
জানা গেছে, এই শর্ত পূরণ করে এখন পর্যন্ত মাত্র চারটি প্রতিষ্ঠান প্রাথমিক শেয়ার ছাড়ার অনুমোদন পেয়েছে। তবে পরিশোধিত মূলধনের এসব শর্ত পূরণ না হওয়ায় সম্প্রতি বেসরকারি খাতের দুটি কোম্পানির আইপিওর প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছে এসইসি। কোম্পানি দুটি হলো ইউনিক (ওয়েস্টিন হোটেল) হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টস লিমিটেড ও অ্যাপোলো হাসপাতাল লিমিটেড।
একই আইনের কারণে বিমা খাতের পাঁচটি কোম্পানি মেঘনা ইন্স্যুরেন্স, দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, পদ্মা ইসলামী ইন্স্যুরেন্স, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স ও সানফ্লাওয়ার লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির আইপিও প্রস্তাব দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে রয়েছে।
এসব কোম্পানির কোনোটিই বিদ্যমান ও প্রস্তাবিত মিলে ৪০ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধনের শর্ত পূরণ করতে পারেনি। প্রতিষ্ঠার সময় কম পরিশোধিত মূলধন দিয়ে শুরু করায়, এসব কোম্পানির পক্ষে এখন হঠাৎ করে মূলধন বাড়ানো কঠিন।
আবার বিশ্লেষকদের অনেকে মনে করেন, বোনাস বা রাইট শেয়ার দিয়ে মূলধন বাড়ানো হলে কোম্পানির আয় ভাগ হয়ে যাবে। এতে শুরুতেই কোম্পানিগুলো দুর্বল হয়ে পড়বে। অন্যদিকে, বিমা আইনের শর্ত মেনে বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরুর সাড়ে তিন বছরের মধ্যে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এই শর্তের ব্যত্যয় ঘটলে প্রতিদিন এক হাজার টাকা করে জরিমানা গুনতে হয় কোম্পানিগুলোকে। এ অবস্থায় কোম্পানিগুলো পড়েছে উভয় সংকটে।
ইউনিক হোটেলের বর্তমান পরিশোধিত মূলধন ২৩০ কোটি টাকা। প্রতিষ্ঠানটি আইপিওর মাধ্যমে নতুন করে তিন কোটি শেয়ার ছেড়ে আরও ৩০ কোটি টাকার মূলধন সংগ্রহের প্রস্তাব করবে। এ হিসেবে বিদ্যমান ও প্রস্তাবিত মিলে কোম্পানিটির মোট মূলধন দাঁড়াবে ২৬০ কোটি টাকা।
অন্যদিকে, অ্যাপোলো হাসপাতালের বর্তমান পরিশোধিত মূলধন ১৫১ কোটি টাকার মতো। শেয়ারের অভিহিত মূল্যের হিসাবে বাজার থেকে প্রতিষ্ঠানটি সংগ্রহ করতে চায় ২২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।
এসইসি সূত্র জানায়, এই দুটি কোম্পানি পরিশোধিত মূলধনসংক্রান্ত সর্বশেষ শর্তটি পূরণ করতে পারেনি। এ জন্যই তাদের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
যোগাযোগ করা হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সালাহউদ্দিন আহমেদ খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে শেয়ারের সরবরাহ বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি। তাই এ ধরনের আইনি বাধা সৃষ্টি করে ভালো কোম্পানিকে বাজারে আসতে নিরুৎসাহিত করা ঠিক হবে না। পরিশোধিত মূলধনের বিষয়টি ছাড় দিয়ে হলেও কোম্পানিকে বাজারে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে উৎসাহ দিতে হবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে, এই সুযোগে যাতে কোনো দুর্বল কোম্পানি বাজারে চলে না আসে।’
উল্লেখ্য, এর আগে এসইসি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে নতুন কোম্পানির জন্য পরিশোধিত মূলধনের ৪০ শতাংশ শেয়ার বাজারে ছাড়া বাধ্যতামূলক করেছিল। কিন্তু ব্যাপক সমালোচনার মুখে মন্ত্রণালয় সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নিয়েছে।
এ পরিস্থিতিতে আইনটি সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে এসইসি। এর অংশ হিসেবে সংস্থাটি গতকাল মঙ্গলবার বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করেছে। কিন্তু আইন সংশোধনের ব্যাপারে কী ধরনের আলোচনা হয়েছে তা আনুষ্ঠানিকভাবে জানাতে রাজি হননি বৈঠকে উপস্থিত কর্মকর্তারা।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, যেহেতু অর্থ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে আইনটি করা হয়েছিল, সেহেতু এটি সংশোধন করতে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন লাগবে। তার আগে আইনটিতে কী ধরনের সংশোধন আনা যায়, সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মতামত জানতেই এ বৈঠক।
এসইসি গত ১১ মার্চ প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে নতুন কোম্পানির ক্ষেত্রে পুঁজিবাজার থেকে মূলধন সংগ্রহের ব্যাপারে কিছু শর্ত আরোপ করে। ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, কোনো কোম্পানি প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে বাজার থেকে মূলধন সংগ্রহ করতে চাইলে ন্যূনতম পরিশোধিত মূলধন (বিদ্যমান ও প্রস্তাবিত মিলে) ৪০ কোটি টাকা হতে হবে।
তবে বিদ্যমান ও প্রস্তাবিত মিলে মূলধন ৭৫ কোটি টাকা হলে বাজারে শেয়ার ছাড়তে হবে এর ৪০ শতাংশ। একইভাবে ৭৫ কোটি টাকা থেকে ১৫০ কোটি টাকা পর্যন্ত পরিশোধিত মূলধনের ক্ষেত্রে আইপিওর আকার হবে ২৫ শতাংশ বা ৩০ কোটি টাকা, এর মধ্যে যেটি বেশি। মূলধন ১৫০ কোটি টাকার বেশি হলে আইপিওর আকার হবে ১৫ শতাংশ বা ৪০ কোটি টাকার মধ্যে যেটি বেশি।
জানা গেছে, এই শর্ত পূরণ করে এখন পর্যন্ত মাত্র চারটি প্রতিষ্ঠান প্রাথমিক শেয়ার ছাড়ার অনুমোদন পেয়েছে। তবে পরিশোধিত মূলধনের এসব শর্ত পূরণ না হওয়ায় সম্প্রতি বেসরকারি খাতের দুটি কোম্পানির আইপিওর প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছে এসইসি। কোম্পানি দুটি হলো ইউনিক (ওয়েস্টিন হোটেল) হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টস লিমিটেড ও অ্যাপোলো হাসপাতাল লিমিটেড।
একই আইনের কারণে বিমা খাতের পাঁচটি কোম্পানি মেঘনা ইন্স্যুরেন্স, দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, পদ্মা ইসলামী ইন্স্যুরেন্স, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স ও সানফ্লাওয়ার লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির আইপিও প্রস্তাব দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে রয়েছে।
এসব কোম্পানির কোনোটিই বিদ্যমান ও প্রস্তাবিত মিলে ৪০ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধনের শর্ত পূরণ করতে পারেনি। প্রতিষ্ঠার সময় কম পরিশোধিত মূলধন দিয়ে শুরু করায়, এসব কোম্পানির পক্ষে এখন হঠাৎ করে মূলধন বাড়ানো কঠিন।
আবার বিশ্লেষকদের অনেকে মনে করেন, বোনাস বা রাইট শেয়ার দিয়ে মূলধন বাড়ানো হলে কোম্পানির আয় ভাগ হয়ে যাবে। এতে শুরুতেই কোম্পানিগুলো দুর্বল হয়ে পড়বে। অন্যদিকে, বিমা আইনের শর্ত মেনে বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরুর সাড়ে তিন বছরের মধ্যে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এই শর্তের ব্যত্যয় ঘটলে প্রতিদিন এক হাজার টাকা করে জরিমানা গুনতে হয় কোম্পানিগুলোকে। এ অবস্থায় কোম্পানিগুলো পড়েছে উভয় সংকটে।
ইউনিক হোটেলের বর্তমান পরিশোধিত মূলধন ২৩০ কোটি টাকা। প্রতিষ্ঠানটি আইপিওর মাধ্যমে নতুন করে তিন কোটি শেয়ার ছেড়ে আরও ৩০ কোটি টাকার মূলধন সংগ্রহের প্রস্তাব করবে। এ হিসেবে বিদ্যমান ও প্রস্তাবিত মিলে কোম্পানিটির মোট মূলধন দাঁড়াবে ২৬০ কোটি টাকা।
অন্যদিকে, অ্যাপোলো হাসপাতালের বর্তমান পরিশোধিত মূলধন ১৫১ কোটি টাকার মতো। শেয়ারের অভিহিত মূল্যের হিসাবে বাজার থেকে প্রতিষ্ঠানটি সংগ্রহ করতে চায় ২২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।
এসইসি সূত্র জানায়, এই দুটি কোম্পানি পরিশোধিত মূলধনসংক্রান্ত সর্বশেষ শর্তটি পূরণ করতে পারেনি। এ জন্যই তাদের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
যোগাযোগ করা হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সালাহউদ্দিন আহমেদ খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে শেয়ারের সরবরাহ বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি। তাই এ ধরনের আইনি বাধা সৃষ্টি করে ভালো কোম্পানিকে বাজারে আসতে নিরুৎসাহিত করা ঠিক হবে না। পরিশোধিত মূলধনের বিষয়টি ছাড় দিয়ে হলেও কোম্পানিকে বাজারে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে উৎসাহ দিতে হবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে, এই সুযোগে যাতে কোনো দুর্বল কোম্পানি বাজারে চলে না আসে।’
উল্লেখ্য, এর আগে এসইসি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে নতুন কোম্পানির জন্য পরিশোধিত মূলধনের ৪০ শতাংশ শেয়ার বাজারে ছাড়া বাধ্যতামূলক করেছিল। কিন্তু ব্যাপক সমালোচনার মুখে মন্ত্রণালয় সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নিয়েছে।
No comments