লক্ষ্মণের ব্যাটে ভারতের জয়
তাঁকে ‘গ্রেট’ বলতে অনেকের আপত্তি থাকতে পারে। টেস্ট গড় পঞ্চাশের নিচে, ১১৩ টেস্টে ১৬টি সেঞ্চুরিকেও কম মনে হতে পারে। কিন্তু ভিভিএস লক্ষ্মণ ‘গ্রেট ইনিংস’ যতগুলো খেলেছেন, তার চেয়ে অনেক বেশি গড়, অনেক বেশি রান-সেঞ্চুরি করা ব্যাটসম্যানও তা পারেননি। ‘ভিভিএস’কে ‘ভেরি ভেরি স্পেশাল’ তো এ জন্যই বলা হয়। তাঁর ২৮১ উইজডেনের বিবেচনায় সর্বকালের ষষ্ঠ সেরা ইনিংস। সিডনিতে তাঁর ১৬৭ ও ১৭৮, অ্যাডিলেডের ১৪৮, কলকাতার ১৫৪ কিংবা নেপিয়ারের ১২৪ টেস্ট ইতিহাসের স্মরণীয় ইনিংসগুলোর তালিকায় ঢুকে যাবে অনায়াসেই। তালিকায় যুক্ত হলো আরও একটি ইনিংস। ভারতকে জয় এনে দেওয়া কালকের ইনিংসটি মনে পড়লে আজ থেকে অনেক দিন পরও প্রশান্তিতে মন ভরে উঠবে লক্ষ্মণের।
এই ইনিংসটা শচীন টেন্ডুলকারের ব্যাট থেকে এলেই বলা যেত ‘আদর্শ চিত্রনাট্য।’ টেন্ডুলকারের এই ইনিংসটাও চতুর্থ ইনিংসে ম্যাচ জেতানো ইনিংসের মর্যাদা পাবে না। তবে তাঁর ৫৪ রানের গুরুত্বও কম নয়। লক্ষ্মণের সঙ্গে তাঁর ১০৯ রানের জুটিই তো শ্রীলঙ্কার দিকে হেলে পড়া ম্যাচ ভারতের করে দিল। বলতে হবে সুরেশ রায়নার কথাও। ‘টেস্ট টেম্পারামেন্টের’ পরীক্ষায় আরও একবার উতরে গেছেন এই বাঁহাতি। তবে টেন্ডুলকার-রায়নারা কাল হয়ে গেলেন পার্শ্বনায়ক। ভেলেগেদারাকে লংঅন সীমানার বাইরে ফেলে জয় এনে দিলেন রায়না। কিন্তু টিভি ক্যামেরা সঙ্গে সঙ্গে ধরল তাঁর সঙ্গীকে, দুহাত তুলে জয়টা প্রথম উদ্যাপন করলেন লক্ষ্মণ। কালকের নায়ক তো তিনিই!
‘গ্রেট’ কিনা, এটা নিয়ে বিতর্ক হতে পারে। তবে একটা জায়গায় যে তিনি এখন শীর্ষে, এটা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। আধুনিক ক্রিকেটের বিরল ‘শিল্পী’ প্রজাতির সম্ভবত শেষ প্রতিনিধিদের একজন। আজহারউদ্দিন, মার্ক ওয়াহদের মতো তাঁর ব্যাটিং চোখ আর মনের জন্য প্রশান্তি। ব্যতিক্রম নয় কালকের ইনিংসটিও। টেস্টের পঞ্চম দিন, উইকেট আস্তে আস্তে আরও ধীরগতির হয়ে পড়ছে, চার উইকেট নেই, সিরিজ হারের শঙ্কা—এতসব চাপের কোনো ছায়াই পড়ল না লক্ষ্মণের ব্যাটে। ধীরগতির উইকেটেও কবজির মোচড় আর টাইমিংয়ের অপূর্ব প্রদর্শনী দেখালেন। ইনিংসের মাঝপথে পিঠের চোটে শেবাগকে রানার নিয়ে খেলেছেন, কিন্তু ব্যাটিংয়ে কোনো প্রভাব পড়েনি।
টেন্ডুলকারের ব্যাটিংয়ে ছিল দারুণ দৃঢ়প্রতিজ্ঞা। প্রতিটি বল যেভাবে খেলছিলেন, মনে হচ্ছিল থাকতে চান শেষ পর্যন্ত। কিন্তু সুরাজ রণদিভের বলে সুইপ করতে গিয়ে ধরা পড়েন উইকেটের পেছনে। এই টেস্টে শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি রণদিভ। আগের টেস্টে অভিষেকে সবচেয়ে বেশি রান দেওয়ার অনাকাঙ্ক্ষিত রেকর্ড গড়া অফ স্পিনার দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতের পাঁচ উইকেটের সবগুলোসহ ম্যাচে পেয়েছেন ৯ উইকেট। সতীর্থদের কাছ থেকে সমর্থন না পাওয়ায় তাঁকে তবুও থাকতে হলো পরাজিতের দলে।
১৯৯৪ সালের পর পি সারায় প্রথম টেস্ট হারল শ্রীলঙ্কা। যে উইকেটে দুই শ তাড়া করাই কষ্টসাধ্য হবে বলে মনে করছিলেন বিশেষজ্ঞরা, সেখানে এত সহজেই হারার দায় অনেকটা দেওয়া যায় সাঙ্গাকারাকে। আগের দিন যে ভুল করেছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি, কাল সেটারই পুনরাবৃত্তি করলেন শ্রীলঙ্কা অধিনায়ক। রান বাঁচানোর ফিল্ডিং সাজালেন, সহজ সিঙ্গেল দিলেন টেন্ডুলকার-লক্ষ্মণদের। দুজনের ১০৯ রানের জুটির ৪৮টিই সিঙ্গেল! সকালের সেশনে কেন মাত্র ২ ওভার বোলিং করানো হলো মালিঙ্গাকে বা মেন্ডিসকে আক্রমণে আনতে কেন লেগে গেল ৩৮ ওভার—তোলা যায় এই প্রসঙ্গগুলোও। দায় দেওয়া যায় ফিল্ডিংকেও। ১৮ রানের মাথায় শর্ট লেগে টেন্ডুলকারের ক্যাচটা দিলশান নিতে পারলে হয়তো বদলে যেত খেলার পুরো আবহ।
লক্ষ্মণ-টেন্ডুলকারদের কথা বলা হলো, বীরেন্দর শেবাগের কথা ভুলে গেলে চলবে না। দ্বিতীয় ইনিংসে হয়তো ব্যর্থ হয়েছেন। কিন্তু প্রথম ইনিংসে তাঁর দ্রুতগতির সেঞ্চুরি বা দ্বিতীয় ইনিংসে শ্রীলঙ্কার দুই ওপেনারকে আউট করে জয়ের রাস্তা তো তিনিই তৈরি করে দিয়েছেন।
এই ইনিংসটা শচীন টেন্ডুলকারের ব্যাট থেকে এলেই বলা যেত ‘আদর্শ চিত্রনাট্য।’ টেন্ডুলকারের এই ইনিংসটাও চতুর্থ ইনিংসে ম্যাচ জেতানো ইনিংসের মর্যাদা পাবে না। তবে তাঁর ৫৪ রানের গুরুত্বও কম নয়। লক্ষ্মণের সঙ্গে তাঁর ১০৯ রানের জুটিই তো শ্রীলঙ্কার দিকে হেলে পড়া ম্যাচ ভারতের করে দিল। বলতে হবে সুরেশ রায়নার কথাও। ‘টেস্ট টেম্পারামেন্টের’ পরীক্ষায় আরও একবার উতরে গেছেন এই বাঁহাতি। তবে টেন্ডুলকার-রায়নারা কাল হয়ে গেলেন পার্শ্বনায়ক। ভেলেগেদারাকে লংঅন সীমানার বাইরে ফেলে জয় এনে দিলেন রায়না। কিন্তু টিভি ক্যামেরা সঙ্গে সঙ্গে ধরল তাঁর সঙ্গীকে, দুহাত তুলে জয়টা প্রথম উদ্যাপন করলেন লক্ষ্মণ। কালকের নায়ক তো তিনিই!
‘গ্রেট’ কিনা, এটা নিয়ে বিতর্ক হতে পারে। তবে একটা জায়গায় যে তিনি এখন শীর্ষে, এটা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। আধুনিক ক্রিকেটের বিরল ‘শিল্পী’ প্রজাতির সম্ভবত শেষ প্রতিনিধিদের একজন। আজহারউদ্দিন, মার্ক ওয়াহদের মতো তাঁর ব্যাটিং চোখ আর মনের জন্য প্রশান্তি। ব্যতিক্রম নয় কালকের ইনিংসটিও। টেস্টের পঞ্চম দিন, উইকেট আস্তে আস্তে আরও ধীরগতির হয়ে পড়ছে, চার উইকেট নেই, সিরিজ হারের শঙ্কা—এতসব চাপের কোনো ছায়াই পড়ল না লক্ষ্মণের ব্যাটে। ধীরগতির উইকেটেও কবজির মোচড় আর টাইমিংয়ের অপূর্ব প্রদর্শনী দেখালেন। ইনিংসের মাঝপথে পিঠের চোটে শেবাগকে রানার নিয়ে খেলেছেন, কিন্তু ব্যাটিংয়ে কোনো প্রভাব পড়েনি।
টেন্ডুলকারের ব্যাটিংয়ে ছিল দারুণ দৃঢ়প্রতিজ্ঞা। প্রতিটি বল যেভাবে খেলছিলেন, মনে হচ্ছিল থাকতে চান শেষ পর্যন্ত। কিন্তু সুরাজ রণদিভের বলে সুইপ করতে গিয়ে ধরা পড়েন উইকেটের পেছনে। এই টেস্টে শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি রণদিভ। আগের টেস্টে অভিষেকে সবচেয়ে বেশি রান দেওয়ার অনাকাঙ্ক্ষিত রেকর্ড গড়া অফ স্পিনার দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতের পাঁচ উইকেটের সবগুলোসহ ম্যাচে পেয়েছেন ৯ উইকেট। সতীর্থদের কাছ থেকে সমর্থন না পাওয়ায় তাঁকে তবুও থাকতে হলো পরাজিতের দলে।
১৯৯৪ সালের পর পি সারায় প্রথম টেস্ট হারল শ্রীলঙ্কা। যে উইকেটে দুই শ তাড়া করাই কষ্টসাধ্য হবে বলে মনে করছিলেন বিশেষজ্ঞরা, সেখানে এত সহজেই হারার দায় অনেকটা দেওয়া যায় সাঙ্গাকারাকে। আগের দিন যে ভুল করেছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি, কাল সেটারই পুনরাবৃত্তি করলেন শ্রীলঙ্কা অধিনায়ক। রান বাঁচানোর ফিল্ডিং সাজালেন, সহজ সিঙ্গেল দিলেন টেন্ডুলকার-লক্ষ্মণদের। দুজনের ১০৯ রানের জুটির ৪৮টিই সিঙ্গেল! সকালের সেশনে কেন মাত্র ২ ওভার বোলিং করানো হলো মালিঙ্গাকে বা মেন্ডিসকে আক্রমণে আনতে কেন লেগে গেল ৩৮ ওভার—তোলা যায় এই প্রসঙ্গগুলোও। দায় দেওয়া যায় ফিল্ডিংকেও। ১৮ রানের মাথায় শর্ট লেগে টেন্ডুলকারের ক্যাচটা দিলশান নিতে পারলে হয়তো বদলে যেত খেলার পুরো আবহ।
লক্ষ্মণ-টেন্ডুলকারদের কথা বলা হলো, বীরেন্দর শেবাগের কথা ভুলে গেলে চলবে না। দ্বিতীয় ইনিংসে হয়তো ব্যর্থ হয়েছেন। কিন্তু প্রথম ইনিংসে তাঁর দ্রুতগতির সেঞ্চুরি বা দ্বিতীয় ইনিংসে শ্রীলঙ্কার দুই ওপেনারকে আউট করে জয়ের রাস্তা তো তিনিই তৈরি করে দিয়েছেন।
No comments