হুগো শাভেজের ‘পাঠ বিপ্লব’
ভেনেজুয়েলার বামপন্থী রাষ্ট্রনায়ক হুগো শাভেজ তাঁর দেশে পাঠ বিপ্লব শুরু করেছেন। এর অংশ হিসেবে ইতিমধ্যেই তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে একটি বাম বিপ্লবাত্মক বই উপহার দিয়ে বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। বারাক ওবামাকে তিনি যে বইটি উপহার দিয়েছেন তা এডুয়ার্ডো গ্যালিয়ানোর একটি বিখ্যাত বাম বিপ্লব ক্ল্যাসিক। ওপেন ভেইনস অব ল্যাটিন আমেরিকা নামের বইটি হুগো শাভেজের কল্যাণে ইতিমধ্যেই নিউইয়র্ক টাইমসের সর্বোচ্চ বিক্রীত বইয়ের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে। হুগো শাভেজ কিছুদিন আগে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সরাসরি প্রচারিত এক ভাষণে তাঁর দেশের জনগণকে পাঠে উদ্বুদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি তাঁর বিপ্লবী ভাষণে নির্দিষ্ট করে একটি স্লোগান জনগণের সামনে তুলে ধরেছেন। তা হলো ‘পাঠ’, ‘পাঠ’ এবং ‘পাঠ’। এত দিন বিশ্বনেতারা তাঁদের দেশের জনগণকে কাজ করতে উত্সাহিত করেছেন, কৃষিতে সবুজ বিপ্লবের মাধ্যমে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন, কিন্তু কোনো নেতা জনগণকে পড়াশোনার নির্দেশ দিচ্ছেন, তাও আবার এক সরাসরি প্রচারিত ভাষণে, এমনটা বিশ্ব আর কখনো অবলোকন করেনি।
ভেনেজুয়েলায় রাস্তায় রাস্তায় মানুষকে বিনামূল্যে বই বিতরণ করা হচ্ছে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় জনগণের মধ্যে সমাজতন্ত্রের আদর্শ ছড়িয়ে দেওয়া এবং তাঁদের মানবপ্রেম, মনুষ্যত্ব ইত্যাদি জাগ্রত করার লক্ষ্যেই এই সরকারি উদ্যোগ। এই উদ্যোগের মধ্য দিয়ে ভেনেজুয়েলা সরকার তাঁদের দেশের মানুষকে পৃথিবীর অনেক ক্ল্যাসিক লেখার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে। এমন সব বই দেশের মানুষের মধ্যে বিনামূল্যে বিতরণ করা হচ্ছে যার বাজারমূল্য অনেক এবং এত দিন যে বইগুলো দেশের মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে ছিল। ভেনেজুয়েলার রাজধানী কারাকাসের বিভিন্ন রাস্তায় বই সংগ্রহের জন্য মানুষের বিরাট লাইন দেখে বলা যেতে পারে, হুগো শাভেজের এ উদ্যোগকে দেশের মানুষ স্বাগতই জানিয়েছে।
প্রেসিডেন্ট শাভেজের পাঠ বিপ্লব দেশের মানুষের মধ্যে সাড়া ফেললেও অনেক বিজ্ঞজন এর সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে বলেছেন, বিনামূল্যে বই বিতরণ ছাড়া এ উদ্যোগের অন্য উদ্দেশ্য পূরণ হওয়ার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। তা ছাড়া চলমান অর্থনৈতিক মন্দায় বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম পড়ে যাওয়ার কারণে ভেনেজুয়েলার অর্থনীতি যখন ধসের মুখোমুখি, ঠিক তখন বই পড়ার পেছনে লাখো ডলারের ভর্তুকি কোনোমতেই অর্থনীতির জন্য স্বাস্থ্যকর নয় বলে মন্তব্য করেছেন অনেকে।
অর্থনীতির কথা বাদ দিলেও সরকারের চাপিয়ে দেওয়া এই ‘পাঠ বিপ্লব’ মানুষকে তাঁর ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ থেকে বঞ্চিত করবে বলে অনেকে মনে করেন। প্রত্যেক নাগরিকেরই নিজের পছন্দে বই পড়ার অধিকার রয়েছে। কিন্তু ভেনেজুয়েলায় জনগণ কেবল তাঁদের সরকারের চাপিয়ে দেওয়া বইগুলোই পড়তে বাধ্য হচ্ছে। তা সবই একই রাজনৈতিক মতাদর্শনির্ভর, যা ভেনেজুয়েলার জনগণের অধিকার হরণ করছে।
অনেকে বলছেন, এভাবে জনগণের মধ্যে পাঠাভ্যাস গড়ে তোলা যাবে না। এ পাঠাভ্যাস গড়ে তোলার একমাত্র সময় স্কুলের প্রাইমারি পর্যায়। যে শিশুটির পাঠাভ্যাস ছোটবেলায় গড়ে ওঠে না তাঁর পক্ষে পরবর্তী সময়ে বই পড়ার অভ্যাস করা একটু কঠিন বৈকি।
এদিকে যে বইগুলো ভেনেজুয়েলা সরকার বিনামূল্যে বিতরণ করছে, সেগুলোর কপিরাইটসংক্রান্ত অনেক ধরনের জটিলতা রয়েছে এবং যেভাবে তারা বিতরণ করছে তা নিয়েও সমালোচনা রয়েছে।
সবকিছু ছাপিয়ে ভেনেজুয়েলা সরকার তাদের এ উদ্যোগ নিয়ে যথেষ্টই গর্ব অনুভব করছে। এমনকি তারা এটাকে প্রেসিডেন্ট হুগো শাভেজের গত ১০ বছরের শাসনকালের অন্যতম সেরা সাফল্য হিসেবে অভিহিত করেছে। তারা মনে করে, এর মাধ্যমে ভেনেজুয়েলা একটি জ্ঞানভিত্তিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে উঠছে।
ভেনেজুয়েলা জ্ঞানভিত্তিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে উঠুক আর না-ই উঠুক, তাঁদের এ উদ্যোগ সফল কি না তা ভবিষ্যৎই বলে দেবে। বিবিসি অবলম্বনে নাইর ইকবাল
ভেনেজুয়েলায় রাস্তায় রাস্তায় মানুষকে বিনামূল্যে বই বিতরণ করা হচ্ছে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় জনগণের মধ্যে সমাজতন্ত্রের আদর্শ ছড়িয়ে দেওয়া এবং তাঁদের মানবপ্রেম, মনুষ্যত্ব ইত্যাদি জাগ্রত করার লক্ষ্যেই এই সরকারি উদ্যোগ। এই উদ্যোগের মধ্য দিয়ে ভেনেজুয়েলা সরকার তাঁদের দেশের মানুষকে পৃথিবীর অনেক ক্ল্যাসিক লেখার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে। এমন সব বই দেশের মানুষের মধ্যে বিনামূল্যে বিতরণ করা হচ্ছে যার বাজারমূল্য অনেক এবং এত দিন যে বইগুলো দেশের মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে ছিল। ভেনেজুয়েলার রাজধানী কারাকাসের বিভিন্ন রাস্তায় বই সংগ্রহের জন্য মানুষের বিরাট লাইন দেখে বলা যেতে পারে, হুগো শাভেজের এ উদ্যোগকে দেশের মানুষ স্বাগতই জানিয়েছে।
প্রেসিডেন্ট শাভেজের পাঠ বিপ্লব দেশের মানুষের মধ্যে সাড়া ফেললেও অনেক বিজ্ঞজন এর সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে বলেছেন, বিনামূল্যে বই বিতরণ ছাড়া এ উদ্যোগের অন্য উদ্দেশ্য পূরণ হওয়ার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। তা ছাড়া চলমান অর্থনৈতিক মন্দায় বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম পড়ে যাওয়ার কারণে ভেনেজুয়েলার অর্থনীতি যখন ধসের মুখোমুখি, ঠিক তখন বই পড়ার পেছনে লাখো ডলারের ভর্তুকি কোনোমতেই অর্থনীতির জন্য স্বাস্থ্যকর নয় বলে মন্তব্য করেছেন অনেকে।
অর্থনীতির কথা বাদ দিলেও সরকারের চাপিয়ে দেওয়া এই ‘পাঠ বিপ্লব’ মানুষকে তাঁর ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ থেকে বঞ্চিত করবে বলে অনেকে মনে করেন। প্রত্যেক নাগরিকেরই নিজের পছন্দে বই পড়ার অধিকার রয়েছে। কিন্তু ভেনেজুয়েলায় জনগণ কেবল তাঁদের সরকারের চাপিয়ে দেওয়া বইগুলোই পড়তে বাধ্য হচ্ছে। তা সবই একই রাজনৈতিক মতাদর্শনির্ভর, যা ভেনেজুয়েলার জনগণের অধিকার হরণ করছে।
অনেকে বলছেন, এভাবে জনগণের মধ্যে পাঠাভ্যাস গড়ে তোলা যাবে না। এ পাঠাভ্যাস গড়ে তোলার একমাত্র সময় স্কুলের প্রাইমারি পর্যায়। যে শিশুটির পাঠাভ্যাস ছোটবেলায় গড়ে ওঠে না তাঁর পক্ষে পরবর্তী সময়ে বই পড়ার অভ্যাস করা একটু কঠিন বৈকি।
এদিকে যে বইগুলো ভেনেজুয়েলা সরকার বিনামূল্যে বিতরণ করছে, সেগুলোর কপিরাইটসংক্রান্ত অনেক ধরনের জটিলতা রয়েছে এবং যেভাবে তারা বিতরণ করছে তা নিয়েও সমালোচনা রয়েছে।
সবকিছু ছাপিয়ে ভেনেজুয়েলা সরকার তাদের এ উদ্যোগ নিয়ে যথেষ্টই গর্ব অনুভব করছে। এমনকি তারা এটাকে প্রেসিডেন্ট হুগো শাভেজের গত ১০ বছরের শাসনকালের অন্যতম সেরা সাফল্য হিসেবে অভিহিত করেছে। তারা মনে করে, এর মাধ্যমে ভেনেজুয়েলা একটি জ্ঞানভিত্তিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে উঠছে।
ভেনেজুয়েলা জ্ঞানভিত্তিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে উঠুক আর না-ই উঠুক, তাঁদের এ উদ্যোগ সফল কি না তা ভবিষ্যৎই বলে দেবে। বিবিসি অবলম্বনে নাইর ইকবাল
No comments