ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬ শতাংশ শিক্ষার্থী ভুগছেন মানসিক সমস্যায়
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১৬ শতাংশ বিভিন্ন ধরনের মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। মূলত বিষণ্নতা ও হতাশার কারণেই শিক্ষার্থীরা জীবনের প্রতি মায়া হারিয়ে ফেলেন। তাঁদের কেউ কেউ আত্মহত্যার দিকেও এগিয়ে যান। এতে করে যে নিজেকে ধ্বংস করা হয় তা-ই নয়, বরং তাঁর পুরো পরিবারকেও ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে গতকাল শনিবার অনুষ্ঠিত ‘আত্মহত্যা কখনোই জীবন প্রশ্নের শেষ উত্তর নয়’ শীর্ষক সেমিনারে মনোবিজ্ঞানীরা এসব তথ্য তুলে ধরেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-নির্দেশনা ও পরামর্শদান দপ্তর এই সেমিনারের আয়োজন করে।
এতে মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, সারা দেশ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিচ্ছিন্ন নয়, তেমনি সারা দেশের মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যের প্রভাব এখানেও পড়ে। দারিদ্র্য ও ভবিষ্যৎ প্রাপ্তির অনিশ্চয়তাও শিক্ষার্থীদের মধ্যে হীনম্মন্যতা সৃষ্টি করতে পারে। এ থেকেই একসময় ওই শিক্ষার্থী মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত হন। তারই ধারাবাহিকতায় আসে আত্মহত্যার প্রবণতা। তাঁরা বলেন, সবচেয়ে বেশি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে বিষপানের মাধ্যমে। এ ছাড়া বাদবাকি শিক্ষার্থী সাধারণত গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন।
বক্তারা আরও বলেন, আত্মহত্যা কমানোর জন্য বিষণ্নতা কমাতে হবে। এই প্রবণতা কমাতে পারিবারিকভাবে উদ্যোগী হওয়ার কোনো বিকল্প নেই। তাঁরা বলেন, আত্মহত্যাপ্রবণতা থেকে মুক্ত থাকতে বিভিন্ন হতাশাজনিত মানসিক সমস্যায় আক্রান্তদের চিকিত্সা নিতে মনোবিজ্ঞানীদের শরণাপন্ন হওয়া উচিৎ।
সেমিনারে বিষয়ভিত্তিক চারটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। এগুলোর মধ্যে ‘আত্মহত্যা মানসিক রোগ: মনস্তাত্ত্বিক সমর্থন’ শীর্ষক প্রবন্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিত্সা মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক রোকেয়া বেগম বলেন, ঝিনাইদহ অঞ্চলে আত্মহত্যার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। এখানকার শতকরা ২৮ থেকে ৩২ ভাগ মানুষ আত্মহত্যাপ্রবণতায় ভোগে। আর বাংলাদেশের ৮ থেকে ১০ ভাগ মানুষের মধ্যে রয়েছে সরাসরি আত্মহত্যার প্রবণতা। এ ছাড়া সারা বিশ্বে এ প্রবণতার হার শতকরা ১৪ ভাগ।
‘আত্মহত্যার ঝুঁকির মূল্যায়ন’ শীর্ষক প্রবন্ধে সিটিআরডিডব্লিউর পরিচালক দিলরুবা বলেন, মানুষ মরতে চায় না, চায় মানসিক ও সামাজিক বিভিন্ন সমস্যা থেকে পরিত্রাণ। কিন্তু সামাজিক ও পারিবারিক পরিবেশ যদি প্রতিকূল হয়, তবেই তাকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করে। তাই এ ক্ষেত্রে প্রিয় ও ঘনিষ্ঠজনদেরই এগিয়ে আসতে হবে।
‘আত্মহত্যার স্বরূপ, লক্ষণ ও প্রতিরোধ: মানসিক স্বাস্থ্যসেবার গুরুত্ব’ শীর্ষক প্রবন্ধে অ্যাপোলো হাসপাতালের কাউন্সেলর ফারহাত হাসান বলেন, হতাশা ও বিষণ্নতা থেকেই মানুষ আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। ২০-৪৫ বছর বয়সী মানুষের এ প্রবণতা থাকে। পরিবার থেকেই সন্তানদের মধ্যে প্রতিকূলতা মোকাবিলা করার মানসিকতা গড়ে তুলতে পারলে আত্মহত্যার প্রবণতা থেকে তাদের মুক্ত করা যাবে।
সেমিনারে ডিউক অব এডিনবরার ন্যাশনাল ডিরেক্টর সুমনকুমার সাহা আরেকটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। সেমিনারে সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন সৈয়দ তানভীর হোসেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, অনেক সম্ভাবনাময় প্রতিভা আত্মহননের কারণে ধ্বংস হয়ে যায়। এমন অনেক আত্মহত্যা আছে, যেগুলো হত্যারই নামান্তর। কারণ, সমাজ তাকে এমন পর্যায়ে নিয়ে যায়, যার ফলে সে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে বাধ্য হয়। কিন্তু এ আত্মহত্যা জীবন প্রশ্নের কোনো উত্তরই নয়। একজনের আত্মহত্যার কারণে একটি পরিবার, সমাজ, তথা জাতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তিনি বলেন, যেসব শিক্ষার্থীর গল্প, উপন্যাস ও সাহিত্য পাঠের অভ্যাস আছে, তাঁদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা কম।
সভাপতির বক্তব্যে ছাত্র-নির্দেশনা ও পরামর্শদান দপ্তরের পরিচালক ও মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক শাহীন ইসলাম বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ১৬ শতাংশ শিক্ষার্থী শিক্ষাজীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে আত্মহত্যার উদ্যোগ নেন। কিন্তু সবাই আবার এই প্রবণতাকে ঘৃণা করেন এবং স্বীকারও করেন, আত্মহত্যা মহাপাপ। কিন্তু গত কয়েক বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা শঙ্কার সৃষ্টি করেছে।
শাহীন ইসলাম বলেন, মানসিক সমস্যা দূর করতে এবং আত্মহত্যার প্রবণতা কমিয়ে আনতে ছাত্র-নির্দেশনা ও পরামর্শদান দপ্তর প্রতিবছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক-অনাবাসিক মিলিয়ে কয়েক হাজার শিক্ষার্থীকে কাউন্সেলিং করে। তবুও এই কাউন্সেলিংয়ের পরিসর আরও বাড়াতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে গতকাল শনিবার অনুষ্ঠিত ‘আত্মহত্যা কখনোই জীবন প্রশ্নের শেষ উত্তর নয়’ শীর্ষক সেমিনারে মনোবিজ্ঞানীরা এসব তথ্য তুলে ধরেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-নির্দেশনা ও পরামর্শদান দপ্তর এই সেমিনারের আয়োজন করে।
এতে মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, সারা দেশ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিচ্ছিন্ন নয়, তেমনি সারা দেশের মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যের প্রভাব এখানেও পড়ে। দারিদ্র্য ও ভবিষ্যৎ প্রাপ্তির অনিশ্চয়তাও শিক্ষার্থীদের মধ্যে হীনম্মন্যতা সৃষ্টি করতে পারে। এ থেকেই একসময় ওই শিক্ষার্থী মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত হন। তারই ধারাবাহিকতায় আসে আত্মহত্যার প্রবণতা। তাঁরা বলেন, সবচেয়ে বেশি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে বিষপানের মাধ্যমে। এ ছাড়া বাদবাকি শিক্ষার্থী সাধারণত গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন।
বক্তারা আরও বলেন, আত্মহত্যা কমানোর জন্য বিষণ্নতা কমাতে হবে। এই প্রবণতা কমাতে পারিবারিকভাবে উদ্যোগী হওয়ার কোনো বিকল্প নেই। তাঁরা বলেন, আত্মহত্যাপ্রবণতা থেকে মুক্ত থাকতে বিভিন্ন হতাশাজনিত মানসিক সমস্যায় আক্রান্তদের চিকিত্সা নিতে মনোবিজ্ঞানীদের শরণাপন্ন হওয়া উচিৎ।
সেমিনারে বিষয়ভিত্তিক চারটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। এগুলোর মধ্যে ‘আত্মহত্যা মানসিক রোগ: মনস্তাত্ত্বিক সমর্থন’ শীর্ষক প্রবন্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিত্সা মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক রোকেয়া বেগম বলেন, ঝিনাইদহ অঞ্চলে আত্মহত্যার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। এখানকার শতকরা ২৮ থেকে ৩২ ভাগ মানুষ আত্মহত্যাপ্রবণতায় ভোগে। আর বাংলাদেশের ৮ থেকে ১০ ভাগ মানুষের মধ্যে রয়েছে সরাসরি আত্মহত্যার প্রবণতা। এ ছাড়া সারা বিশ্বে এ প্রবণতার হার শতকরা ১৪ ভাগ।
‘আত্মহত্যার ঝুঁকির মূল্যায়ন’ শীর্ষক প্রবন্ধে সিটিআরডিডব্লিউর পরিচালক দিলরুবা বলেন, মানুষ মরতে চায় না, চায় মানসিক ও সামাজিক বিভিন্ন সমস্যা থেকে পরিত্রাণ। কিন্তু সামাজিক ও পারিবারিক পরিবেশ যদি প্রতিকূল হয়, তবেই তাকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করে। তাই এ ক্ষেত্রে প্রিয় ও ঘনিষ্ঠজনদেরই এগিয়ে আসতে হবে।
‘আত্মহত্যার স্বরূপ, লক্ষণ ও প্রতিরোধ: মানসিক স্বাস্থ্যসেবার গুরুত্ব’ শীর্ষক প্রবন্ধে অ্যাপোলো হাসপাতালের কাউন্সেলর ফারহাত হাসান বলেন, হতাশা ও বিষণ্নতা থেকেই মানুষ আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। ২০-৪৫ বছর বয়সী মানুষের এ প্রবণতা থাকে। পরিবার থেকেই সন্তানদের মধ্যে প্রতিকূলতা মোকাবিলা করার মানসিকতা গড়ে তুলতে পারলে আত্মহত্যার প্রবণতা থেকে তাদের মুক্ত করা যাবে।
সেমিনারে ডিউক অব এডিনবরার ন্যাশনাল ডিরেক্টর সুমনকুমার সাহা আরেকটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। সেমিনারে সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন সৈয়দ তানভীর হোসেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, অনেক সম্ভাবনাময় প্রতিভা আত্মহননের কারণে ধ্বংস হয়ে যায়। এমন অনেক আত্মহত্যা আছে, যেগুলো হত্যারই নামান্তর। কারণ, সমাজ তাকে এমন পর্যায়ে নিয়ে যায়, যার ফলে সে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে বাধ্য হয়। কিন্তু এ আত্মহত্যা জীবন প্রশ্নের কোনো উত্তরই নয়। একজনের আত্মহত্যার কারণে একটি পরিবার, সমাজ, তথা জাতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তিনি বলেন, যেসব শিক্ষার্থীর গল্প, উপন্যাস ও সাহিত্য পাঠের অভ্যাস আছে, তাঁদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা কম।
সভাপতির বক্তব্যে ছাত্র-নির্দেশনা ও পরামর্শদান দপ্তরের পরিচালক ও মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক শাহীন ইসলাম বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ১৬ শতাংশ শিক্ষার্থী শিক্ষাজীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে আত্মহত্যার উদ্যোগ নেন। কিন্তু সবাই আবার এই প্রবণতাকে ঘৃণা করেন এবং স্বীকারও করেন, আত্মহত্যা মহাপাপ। কিন্তু গত কয়েক বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা শঙ্কার সৃষ্টি করেছে।
শাহীন ইসলাম বলেন, মানসিক সমস্যা দূর করতে এবং আত্মহত্যার প্রবণতা কমিয়ে আনতে ছাত্র-নির্দেশনা ও পরামর্শদান দপ্তর প্রতিবছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক-অনাবাসিক মিলিয়ে কয়েক হাজার শিক্ষার্থীকে কাউন্সেলিং করে। তবুও এই কাউন্সেলিংয়ের পরিসর আরও বাড়াতে হবে।
No comments