মাদুরোর ওপর ট্রাম্প চাপ বাড়ালে ভেনেজুয়েলাকে সমর্থন দেবে রাশিয়া ও চীন

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেলবাহী ট্যাংকার অবরোধের মুখে চীন ও রাশিয়া ভেনেজুয়েলার প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। একই সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প দক্ষিণ আমেরিকার দেশটির প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর ওপর চাপ আরও বাড়িয়ে চলেছেন। ভেনেজুয়েলার বন্দরগুলোতে কার্যক্রম ধীর হয়ে আসার খবরের মধ্যেই ট্রাম্প আবারও মাদুরোকে ক্ষমতা ছাড়ার আহ্বান জানান।

সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ভেনেজুয়েলার উপকূল থেকে যুক্তরাষ্ট্র যে তেল জব্দ করেছে, তা নিজেদের কাছে রাখা বা বিক্রি করার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।  মাদুরোকে ক্ষমতা থেকে সরানোই কি লক্ষ্য- এমন প্রশ্নে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, আমি মনে করি, তার জন্য সেটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। এরপর বলেন, যদি সে কিছু করতে চায়, যদি সে শক্ত অবস্থান নেয়, তাহলে সেটাই হবে শেষবার যখন সে আর শক্ত হতে পারবে।
গত সপ্তাহে ট্রাম্প ভেনেজুয়েলায় প্রবেশ ও সেখান থেকে বের হওয়া সব নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেলবাহী ট্যাংকারের ওপর অবরোধ ঘোষণার পর দেশটির বন্দরগুলোতে ট্যাংকারে তেল তোলার গতি কমে গেছে।

রয়টার্স জানায়, এখন বেশিরভাগ জাহাজ শুধু দেশীয় বন্দরগুলোর মধ্যেই তেল পরিবহন করছে। সাম্প্রতিক দিনে লোড করা কিন্তু বন্দর ছাড়তে না পারা ট্যাংকারের সংখ্যা বেড়েছে। ফলে কয়েক মিলিয়ন ব্যারেল ভেনেজুয়েলার তেল জাহাজেই আটকে আছে। এদিকে ক্রেতারা ঝুঁকিপূর্ণ সমুদ্রযাত্রার জন্য আরও বড় ছাড় ও চুক্তির শর্ত পরিবর্তনের দাবি জানাচ্ছেন। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সোমবার জানায়, অন্য দেশের জাহাজ জব্দ করা আন্তর্জাতিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘন। শনিবার ভেনেজুয়েলার উপকূলে যুক্তরাষ্ট্র যখন চীনগামী একটি তেলবাহী ট্যাংকার আটক করে, তার প্রেক্ষিতেই এই মন্তব্য আসে।

হোয়াইট হাউস জানায়, আটক করা ট্যাংকারটি ভেনেজুয়েলার ‘শ্যাডো ফ্লিট’-এর অংশ এবং এতে নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেল বহন করা হচ্ছিল। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে জাহাজটি তখনো আনুষ্ঠানিকভাবে নিষেধাজ্ঞাভুক্ত ছিল না। তবে পানামার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সেঞ্চুরিজ’ নামের সুপারট্যাংকারটি দেশটির সামুদ্রিক বিধি মানেনি এবং ভেনেজুয়েলা থেকে তেল বহনের সময় নাম পরিবর্তন করে ও ট্রান্সপন্ডার বন্ধ রেখেছিল।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান ব্রিফিংয়ে বলেন, ভেনেজুয়েলার অন্যান্য দেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের অধিকার রয়েছে। তিনি আরও বলেন, চীন সব ধরনের একতরফা ও অবৈধ নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করে। চীন ভেনেজুয়েলার অপরিশোধিত তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা; দেশটির মোট তেল আমদানির প্রায় ৪ শতাংশই আসে ভেনেজুয়েলা থেকে। সোমবার পরে রাশিয়া ও ভেনেজুয়েলার পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপের সমালোচনা করেন। এসব পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে মাদক পাচারের অভিযোগে নৌযানে হামলা এবং রোববার তৃতীয় একটি ট্যাংকারকে লক্ষ্য করে অভিযান।

রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ভেনেজুয়েলার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইভান গিল ও রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ ক্যারিবীয় সাগরে ওয়াশিংটনের কর্মকাণ্ডের ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। যা অঞ্চলের জন্য গুরুতর পরিণতি ডেকে আনতে পারে এবং আন্তর্জাতিক নৌপরিবহনকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে। বিবৃতিতে বলা হয়, বর্তমান প্রেক্ষাপটে রাশিয়া ভেনেজুয়েলার নেতৃত্ব ও জনগণের প্রতি পূর্ণ সমর্থন ও সংহতি পুনর্ব্যক্ত করছে।

https://mzamin.com/uploads/news/main/195417_Abul-7.webp

No comments

Powered by Blogger.