প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলা: সরকারের ভেতরের একটা অংশের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে: নাহিদ ইসলাম
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমাদের স্লোগানগুলো ব্যবহার করে তারা সেখানে আক্রমণ করেছে এবং সেটার পক্ষে সম্মতি তৈরি করেছে। এই ঘটনার পরে আমরা বলেছি যে, সরকারের ভেতরের একটা অংশের এখানে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। সমাজে এটার পক্ষে সম্মতি তৈরি করা হয়েছিল অনেকদিন ধরেই এবং এটার সঙ্গে রাজনৈতিক ব্যাকআপও আছে। এই তিনটা ঘটনা এক সাথে না ঘটলে এত বড় সাহস সেই রাতে কারও পক্ষে করা সম্ভব হতো না।’
আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে ‘মব ভায়োলেন্সে আক্রান্ত বাংলাদেশ’ শীর্ষক যৌথ প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে সংবাদপত্রের সম্পাদকদের সংগঠন সম্পাদক পরিষদ ও মালিকদের সংগঠন নিউজ পেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন (নোয়াব)। প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সেখানে সংহতি জানাতে আসা সম্পাদক পরিষদের সভাপতি নিউ এজ পত্রিকার সম্পাদক নূরুল কবীরকে হেনস্তা করার প্রতিবাদে এই সভার আয়োজন করা হয়। প্রতিবাদ সভা শেষে প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ের পাশের রাস্তায় দাঁড়িয়ে মানববন্ধন করেন তাঁরা। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, পেশাজীবী সংগঠন, ব্যবসায়ী সংগঠন, সাংবাদিক সংগঠন ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ এতে সংহতি জানাতে আসেন।
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা ও আগুন দেওয়ার পুরো ঘটনাটাই পরিকল্পিত ছিল বলে মন্তব্য করেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, ‘শরিফ ওসমান হাদি তার একটা অ্যাক্সিডেন্ট হতে পারে এবং হওয়ার পরে কী কী ঘটনা ঘটানো হবে বাংলাদেশে, এটার একটা চক্রান্ত পরিকল্পনা আগে থেকেই তৈরি হয়েছে।... আমরা মনে করি আমাদের সবারই এটার পেছনে দায় আছে। আমাদের অনেক বেশি দায় আছে, যারা আমরা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ করেছিলাম।’
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘এই ঘটনা যারা সেই রাতে ঘটিয়েছে, এটা খুবই স্পষ্ট যে, কারা সেটার পক্ষে সম্মতি তৈরি করেছে। কারা সেই রাতে সেখানে গিয়েছে। লেখালেখি করেছে। আমার মনে হয় যে, সেটা সরকারের উচিত হবে...আমাদের সবাই মিলে সরকারকে বাধ্য করতে হবে এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং বিচার।’
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা ও আগুন দেওয়ার ঘটনা প্রসঙ্গে এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘সেই রাতে এই ঘটনা ঘটার পরে আমাদের কাছে আরও মনে হয়েছে যে, ঢাকা শহরে ৫০০ মানুষ নাই যে, সেখানে ওই বিল্ডিং দুইটার সামনে গিয়ে ব্যারিকেড তৈরি করতে পারে--এটা আমাদের জন্য আরও দুর্ভাগ্যজনক মনে হয়েছে।’
গত বৃহস্পতিবার রাতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও সংগঠিত সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয় দেশের শীর্ষ সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো। প্রথম আলোর কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এতে প্রথম আলোর কার্যালয় ভস্মীভূত হয়ে যায়। একই রাতে ডেইলি স্টার কার্যালয়েও ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট করা হয়। সংহতি জানাতে ডেইলি স্টার কার্যালয়ে গেলে একই রাতে সম্পাদক পরিষদের সভাপতি নূরুল কবীরকে হেনস্তা করা হয়। এ ঘটনাকে ‘গণমাধ্যমের জন্য কালো দিন’ আখ্যায়িত করে প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছেন অনেকেই। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই হামলার ঘটনা স্বাধীন গণমাধ্যমের ওপর হামলার শামিল। ওই রাতে ছায়ানট ভবনেও হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। পরদিন শুক্রবার সন্ধ্যায় উদীচী কার্যালয়ে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।
![]() |
| ‘মব ভায়োলেন্সে আক্রান্ত বাংলাদেশ’ শীর্ষক যৌথ প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে সম্পাদক পরিষদ ও নোয়াব এই সভার আয়োজন করে। ছবি: প্রথম আলো |

No comments