ঈদের ছুটিতে কক্সবাজার সৈকতে পর্যটকের ঢল

ঈদের প্রথম দিন থেকে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজারে ভ্রমণপিয়াসীদের ঢল নেমেছে। তবে প্রথম দিনে স্থানীয়দের আধিক্য থাকলেও দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার সকাল থেকে দেশের নানা প্রান্ত থেকে লাখো পর্যটক কক্সবাজার এসে ভিড় জমিয়েছেন। পবিত্র ঈদুল ফিতরের ৯ দিনের টানা ছুটি কাটাতে ভ্রমণপিপাসুরা বরাবরের মতো এবারো কক্সবাজারকে বেছে নিয়েছেন। সকাল থেকে সমুদ্রসৈকতের পাশাপাশি বিনোদন কেন্দ্রগুলোয় পর্যটকের ভিড় দেখা গেছে।

পর্যটন-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২রা এপ্রিল থেকে হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট ও গেস্ট হাউসগুলোর কক্ষ বুকিং ছিল। তবে এবার রোজা ২৯টি হওয়ায় ঈদ একদিন আগে চলে এসেছে। এতে অনেকেই মঙ্গলবার থেকে কক্সবাজার ছুটে এসেছেন। কক্সবাজার শহরের ডায়াবেটিস পয়েন্ট, লাবণী পয়েন্ট, সুগন্ধা পয়েন্ট ও কলাতলী পয়েন্ট সৈকতে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত লাখো পর্যটক ও স্থানীয়রা সমুদ্র স্নানে মেতে ওঠেন। পর্যটকরা সমুদ্র স্নানের পাশাপাশি বিচ বাইক, ঘোড়া ও ওয়াটার বাইকে চড়ে আনন্দ উপভোগ করছেন।
পাশাপাশি সৈকতের এই পয়েন্টগুলো ছাড়াও মেরিন ড্রাইভ ধরে দরিয়ানগর, হিমছড়ি, ইনানী, পাটুয়ারটেক, টেকনাফ সমুদ্রসৈকত, রামু বৌদ্ধপল্লী, মহেশখালীর আদিনাথ মন্দির, সোনাদিয়া, চকরিয়ার ডুলাহাজারা সাফারি পার্কসহ বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

বিপুল সংখ্যক পর্যটকের নিরাপত্তা ও সেবা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, লাইফ গার্ড ও বিচকর্মীদের সতর্ক অবস্থানে থাকতে দেখা গেছে। সিলেট থেকে সপরিবারে বেড়াতে এসেছেন ব্যাংকার আরিয়ান শাহ। তিনি বলেন, এবারের লম্বা ছুটি কাটাতে কক্সবাজারকে বেছে নিয়েছেন তারা। সৈকতে বিপুল মানুষের উপস্থিতি দেখে তিনি অভিভূত বলে জানান। বাচ্চারাও বেশ উপভোগ করছে। কক্সবাজার শৈবাল ট্যুরিজমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুল আলম বলেন, কক্সবাজার শহর ও আশপাশের পাঁচ শতাধিক হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট ও গেস্ট হাউজে ৮০ শতাংশ কক্ষ বুকিং হয়েছে। পর্যটকদের বাড়তি চাপে কেউ যাতে হয়রানির শিকার না হয় সে ব্যাপারে সতর্ক রয়েছে হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতি। পর্যটন ব্যবসায়ী নেতা রাসেদুল ইসলাম ডালিম বলেন, পর্যটকদের থাকা-খাওয়ায় অতিরিক্ত আদায় করতে না পারে তার জন্য তদারকি করা হচ্ছে। হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাসেম সিকদার বলেন, ছুটি বা বিশেষ দিনে কক্সবাজারে বরাবরই চাপ থাকে। এজন্য ভ্রমণে আসা পর্যটকদের অনলাইন বা ফোনে কক্ষ বুকিং দিয়ে আসার পরামর্শ দেন তিনি। কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার নিহাদ আদনান তাইয়ান বলেন, পর্যটকরা অবকাশে এসে যাতে স্বস্তির ভ্রমণ করতে পারেন তার জন্য সজাগ রয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। এ ছাড়া পর্যটকদের নিরাপত্তায় বাড়তি টহল বাড়ানো হয়েছে। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বলেন, পর্যটকদের ভ্রমণ নির্বিঘ্ন করতে পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব, বিজিবি ও সেনাবাহিনী রয়েছে। এ ছাড়া যেকোনো ধরনের হয়রানি রোধে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে জেলা প্রশাসনের একাধিক ভ্রাম্যমাণ আদালত মাঠে রয়েছে।

mzamin

No comments

Powered by Blogger.