এক কিংবদন্তির প্রস্থান
দেশীয়
সংগীতের এক মহীরুহের চির বিদায়। বীর মুক্তিযোদ্ধা, একুশে পদকপ্রাপ্ত
গীতিকার-সংগীত পরিচালক আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল আর নেই। গতকাল ভোর ৪টায় তিনি
রাজধানীর আফতাবনগরের নিজ বাসায় ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি... রাজিউন)।
তার বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর। আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা
একুশে পদক, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং প্রেসিডেন্ট পদকসহ অসংখ্য
পুরস্কারে ভূষিত হন। সামির আহমেদ নামে তার এক পুত্র সন্তান রয়েছে। গতকাল
সকালে তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে সংস্কৃতি অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে আসে।
তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ,
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।
তারা তার আত্মার মাগফেরাত কামনা এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
১৯৭৬ সাল থেকে আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের নিয়মিত গান করা শুরু। প্রায় চার দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি গান লিখেছেন ও সুর দিয়েছেন। তিনি স্বাধীনভাবে গানের অ্যালবাম তৈরি করেছেন এবং অসংখ্য চলচ্চিত্রের সংগীত পরিচালনা করেছেন। সাবিনা ইয়াসমিন, রুনা লায়লা, সৈয়দ আবদুল হাদি, এন্ড্রু কিশোর, কুমার বিশ্বজিৎ, আইয়ুব বাচ্চু, সামিনা চৌধুরী, খালিদ হাসান মিলু, আগুন, কনকচাঁপাসহ বাংলাদেশি প্রায় সব জনপ্রিয় সংগীতশিল্পীর গাওয়া বহু শ্রোতাপ্রিয় গানের স্রষ্টা তিনি।
১৯৭৮ সালে ‘মেঘ বিজলী বাদল’ ছবিতে সংগীত পরিচালনার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেন বুলবুল। এরপর ক্যারিয়ারে তিন শতাধিক চলচ্চিত্রের সংগীত পরিচালনা করেছেন। চলচ্চিত্রের সংগীত পরিচালনা করে দুবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। সাবিনা ইয়াসমিনের কণ্ঠে ‘সব কটা জানালা’ গানটি শুনেন নি এমন শ্রোতা খুঁজে পাওয়া খুব কঠিন। কালজয়ী এই দেশাত্মবোধক গানের সুরস্রষ্টা আরো অসংখ্য গানে সুর করেছেন। যেগুলোর বেশিরভাগই তার লেখা। এসব গানের মধ্যে রয়েছে- ‘এই দেশ আমার সুন্দরী রাজকন্যা’, ‘আয় রে মা আয় রে’, ‘উত্তর-দক্ষিণ, পূর্ব পশ্চিম’, ‘মাঝি নাও ছাইড়া দে ও মাঝি পাল উড়াইয়া দে’, ‘সেই রেললাইনের ধারে’, ‘মাগো আর তোমাকে ঘুম পাড়ানি মাসি হতে দেব না’, ‘একাত্তরের মা জননী’, ‘আমার সারা দেহ খেয়ো গো মাটি’, ‘আমার বুকের মধ্যেখানে’, ‘আম্মাজান আম্মাজান’, ‘পড়ে না চোখের পলক’, ‘যে প্রেম স্বর্গ থেকে এসে’, ‘তুমি মোর জীবনের ভাবনা’, ‘ভাড়া কইরা আনবি মানুষ’, ‘চিঠি লিখেছে বউ আমার’, ‘আমার দুই চোখে দুই নদী’, ‘জীবন ফুরিয়ে যাবে ভালোবাসা ফুরাবে না জীবনে’, ‘আমার বাবার মুখে প্রথম যেদিন’, ‘আমি জীবন্ত একটা লাশ’, ‘অনেক সাধনার পরে’ প্রভৃতি। এ কিংবদন্তির জন্ম ১৯৫৬ সালের ১লা জানুয়ারি ঢাকায়।
আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করতে অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছিলেন। বাংলা গানকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের মতোই তিনি আরেক সংগীতযুদ্ধ অব্যাহত রেখেছিলেন জীবনের শেষদিন পর্যন্ত। বাংলা চলচ্চিত্রে এমন অনেক জনপ্রিয় গান আছে যা একজন আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলকে যুগ যুগ ধরে বাঁচিয়ে রাখবে। মুক্তিযুদ্ধের সময় আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের বয়স ছিল মাত্র ১৫ বছর। সে বয়সেই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে রাইফেল হাতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন রণাঙ্গনে। মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যক্ষ স্মৃতি-বিস্মৃতি নিয়ে বহু জনপ্রিয় গান লিখেছেন ও সুর করেছেন। বেশ দূরন্তপনার মধ্য দিয়ে একজন মানুষের কৈশোরের সময়টা কাটে।
আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলেরও কাটছিলো সেভাবে। তখন তিনি ঢাকার আজিমপুরের ওয়েস্টটেন্ট হাইস্কুলে পড়তেন। ২৫শে মার্চের ঘটনা তিনি নিজ চোখে দেখেছিলেন। এ রাতকে সবাই ‘কালরাত্রি’ বললেও বুলবুল একে ‘লাল রাত’ বলতেন। কারণ, এ রাতে মানুষের রক্তে বাংলার মাটি লাল হয়েছিল। ২৭শে মার্চ কারফিউ শিথিল হলে তার বন্ধুরা মিলে সাইকেলে চড়ে এসএম হল, জহুরুল হক হল, রোকেয়া হলসহ বিভিন্ন রাস্তার অলিতে-গলিতে ছুটে গিয়েছিলেন। শত শত মানুষের লাশ আর তাজা রক্তের ছড়াছড়ি দেখে সেদিন আঁতকে উঠেছিলেন। পাক-হানাদারদের ধ্বংস করতে তখনই যুদ্ধে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। বন্ধু সজীবের নেতৃত্বে বিহারিদের অস্ত্র ছিনতাইয়ের মধ্য দিয়ে তাদের যুদ্ধ শুরু হয়। সেই অস্ত্রের সহায়তায় তারা মুক্তিবাহিনী গঠন করেন। পাশাপাশি তার বড় ভাই ক্র্যাক প্লাটুনের বীর মুক্তিযোদ্ধা ইফতেখার উদ্দিন আহমেদ টুলটুলের সঙ্গেও বেশকিছু গেরিলা অপারেশনে অংশ নেন।
অবশেষে, মুক্তিযুদ্ধের ট্রেনিং নেয়ার জন্য আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহে ভারতে চলে যান। দেশে ফিরে সজীবের নেতৃত্বে আবারো রাইফেল হাতে বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করেন বুলবুল। পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকারদের হাতে আটক হয়ে একসময় পাশবিক ও লোমহর্ষক নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন তিনি। আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল সংগীতবিষয়ক একটি বই লিখে অবসর সময়টা পার করছিলেন। বইয়ের নাম রেখেছিলেন ‘সার্কল অব সিক্সটিন্থ’। বইটি তিনটি খণ্ডে প্রকাশ করার ইচ্ছে ছিল বুলবুলের। এটি একটি গবেষণাধর্মী বই। তাই লিখতে একটু সময় লাগছিলো তার। বইটির প্রথম খণ্ডে ৬২৫ পৃষ্ঠা, দ্বিতীয় খণ্ডে ৩০০ আর শেষ খণ্ডে ৩৫০ পৃষ্ঠা। প্রায় সাড়ে আট বছরের পরিশ্রমের ফসল তার এই বইটি। সংগীত অঙ্গনকে বইটি উপহার দিতে চেয়েছিলেন বুলবুল। কিন্তু সেটি আর নিজের মতো করে প্রকাশ করে যেতে পারলেন না। আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগে ভুগছিলেন।
গত বছরের মাঝামাঝি তার হার্টে ৮টি ব্লক ধরা পড়েছিল। মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া প্রথিতযশা এই শিল্পীর শারীরিক অবস্থার কথা জানতে পেরে সেসময় তার চিকিৎসার দায়িত্ব নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব নেওয়ার পর বুলবুলকে ভর্তি করা হয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে। সবাই ধারণা করেছিল তার ওপেন হার্ট সার্জারি করা হবে। কিন্তু শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে চিকিৎসকরা তার বাইপাস সার্জারি না করে রিং পরানোর সিদ্ধান্ত নেন। হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডা. অধ্যাপক আফজালুর রহমানের অধীনে বুলবুলকে ভর্তি করা হয়েছিল। ডা. আফজাল বুলবুলের হার্টে দুটি স্টেন্ট (রিং) স্থাপন করেন। রিং পরানো শেষে সুস্থ হয়ে বাসায় ফেরেন বুলবুল। এর পর থেকে তিনি বাসাতেই বেশি সময় কাটাতেন। গানে আর তাকে খুব একটা পাওয়া যায়নি। তার জীবনযাপনেও বেশ পরিবর্তন আসে। পরিবার পরিজন ও ভক্ত-শুভাকাঙ্ক্ষীদের সঙ্গে আড্ডা আর গল্পেই সময় কাটতো তার।
তারা তার আত্মার মাগফেরাত কামনা এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
১৯৭৬ সাল থেকে আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের নিয়মিত গান করা শুরু। প্রায় চার দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি গান লিখেছেন ও সুর দিয়েছেন। তিনি স্বাধীনভাবে গানের অ্যালবাম তৈরি করেছেন এবং অসংখ্য চলচ্চিত্রের সংগীত পরিচালনা করেছেন। সাবিনা ইয়াসমিন, রুনা লায়লা, সৈয়দ আবদুল হাদি, এন্ড্রু কিশোর, কুমার বিশ্বজিৎ, আইয়ুব বাচ্চু, সামিনা চৌধুরী, খালিদ হাসান মিলু, আগুন, কনকচাঁপাসহ বাংলাদেশি প্রায় সব জনপ্রিয় সংগীতশিল্পীর গাওয়া বহু শ্রোতাপ্রিয় গানের স্রষ্টা তিনি।
১৯৭৮ সালে ‘মেঘ বিজলী বাদল’ ছবিতে সংগীত পরিচালনার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেন বুলবুল। এরপর ক্যারিয়ারে তিন শতাধিক চলচ্চিত্রের সংগীত পরিচালনা করেছেন। চলচ্চিত্রের সংগীত পরিচালনা করে দুবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। সাবিনা ইয়াসমিনের কণ্ঠে ‘সব কটা জানালা’ গানটি শুনেন নি এমন শ্রোতা খুঁজে পাওয়া খুব কঠিন। কালজয়ী এই দেশাত্মবোধক গানের সুরস্রষ্টা আরো অসংখ্য গানে সুর করেছেন। যেগুলোর বেশিরভাগই তার লেখা। এসব গানের মধ্যে রয়েছে- ‘এই দেশ আমার সুন্দরী রাজকন্যা’, ‘আয় রে মা আয় রে’, ‘উত্তর-দক্ষিণ, পূর্ব পশ্চিম’, ‘মাঝি নাও ছাইড়া দে ও মাঝি পাল উড়াইয়া দে’, ‘সেই রেললাইনের ধারে’, ‘মাগো আর তোমাকে ঘুম পাড়ানি মাসি হতে দেব না’, ‘একাত্তরের মা জননী’, ‘আমার সারা দেহ খেয়ো গো মাটি’, ‘আমার বুকের মধ্যেখানে’, ‘আম্মাজান আম্মাজান’, ‘পড়ে না চোখের পলক’, ‘যে প্রেম স্বর্গ থেকে এসে’, ‘তুমি মোর জীবনের ভাবনা’, ‘ভাড়া কইরা আনবি মানুষ’, ‘চিঠি লিখেছে বউ আমার’, ‘আমার দুই চোখে দুই নদী’, ‘জীবন ফুরিয়ে যাবে ভালোবাসা ফুরাবে না জীবনে’, ‘আমার বাবার মুখে প্রথম যেদিন’, ‘আমি জীবন্ত একটা লাশ’, ‘অনেক সাধনার পরে’ প্রভৃতি। এ কিংবদন্তির জন্ম ১৯৫৬ সালের ১লা জানুয়ারি ঢাকায়।
আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করতে অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছিলেন। বাংলা গানকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের মতোই তিনি আরেক সংগীতযুদ্ধ অব্যাহত রেখেছিলেন জীবনের শেষদিন পর্যন্ত। বাংলা চলচ্চিত্রে এমন অনেক জনপ্রিয় গান আছে যা একজন আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলকে যুগ যুগ ধরে বাঁচিয়ে রাখবে। মুক্তিযুদ্ধের সময় আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের বয়স ছিল মাত্র ১৫ বছর। সে বয়সেই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে রাইফেল হাতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন রণাঙ্গনে। মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যক্ষ স্মৃতি-বিস্মৃতি নিয়ে বহু জনপ্রিয় গান লিখেছেন ও সুর করেছেন। বেশ দূরন্তপনার মধ্য দিয়ে একজন মানুষের কৈশোরের সময়টা কাটে।
আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলেরও কাটছিলো সেভাবে। তখন তিনি ঢাকার আজিমপুরের ওয়েস্টটেন্ট হাইস্কুলে পড়তেন। ২৫শে মার্চের ঘটনা তিনি নিজ চোখে দেখেছিলেন। এ রাতকে সবাই ‘কালরাত্রি’ বললেও বুলবুল একে ‘লাল রাত’ বলতেন। কারণ, এ রাতে মানুষের রক্তে বাংলার মাটি লাল হয়েছিল। ২৭শে মার্চ কারফিউ শিথিল হলে তার বন্ধুরা মিলে সাইকেলে চড়ে এসএম হল, জহুরুল হক হল, রোকেয়া হলসহ বিভিন্ন রাস্তার অলিতে-গলিতে ছুটে গিয়েছিলেন। শত শত মানুষের লাশ আর তাজা রক্তের ছড়াছড়ি দেখে সেদিন আঁতকে উঠেছিলেন। পাক-হানাদারদের ধ্বংস করতে তখনই যুদ্ধে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। বন্ধু সজীবের নেতৃত্বে বিহারিদের অস্ত্র ছিনতাইয়ের মধ্য দিয়ে তাদের যুদ্ধ শুরু হয়। সেই অস্ত্রের সহায়তায় তারা মুক্তিবাহিনী গঠন করেন। পাশাপাশি তার বড় ভাই ক্র্যাক প্লাটুনের বীর মুক্তিযোদ্ধা ইফতেখার উদ্দিন আহমেদ টুলটুলের সঙ্গেও বেশকিছু গেরিলা অপারেশনে অংশ নেন।
অবশেষে, মুক্তিযুদ্ধের ট্রেনিং নেয়ার জন্য আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহে ভারতে চলে যান। দেশে ফিরে সজীবের নেতৃত্বে আবারো রাইফেল হাতে বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করেন বুলবুল। পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকারদের হাতে আটক হয়ে একসময় পাশবিক ও লোমহর্ষক নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন তিনি। আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল সংগীতবিষয়ক একটি বই লিখে অবসর সময়টা পার করছিলেন। বইয়ের নাম রেখেছিলেন ‘সার্কল অব সিক্সটিন্থ’। বইটি তিনটি খণ্ডে প্রকাশ করার ইচ্ছে ছিল বুলবুলের। এটি একটি গবেষণাধর্মী বই। তাই লিখতে একটু সময় লাগছিলো তার। বইটির প্রথম খণ্ডে ৬২৫ পৃষ্ঠা, দ্বিতীয় খণ্ডে ৩০০ আর শেষ খণ্ডে ৩৫০ পৃষ্ঠা। প্রায় সাড়ে আট বছরের পরিশ্রমের ফসল তার এই বইটি। সংগীত অঙ্গনকে বইটি উপহার দিতে চেয়েছিলেন বুলবুল। কিন্তু সেটি আর নিজের মতো করে প্রকাশ করে যেতে পারলেন না। আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগে ভুগছিলেন।
গত বছরের মাঝামাঝি তার হার্টে ৮টি ব্লক ধরা পড়েছিল। মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া প্রথিতযশা এই শিল্পীর শারীরিক অবস্থার কথা জানতে পেরে সেসময় তার চিকিৎসার দায়িত্ব নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব নেওয়ার পর বুলবুলকে ভর্তি করা হয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে। সবাই ধারণা করেছিল তার ওপেন হার্ট সার্জারি করা হবে। কিন্তু শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে চিকিৎসকরা তার বাইপাস সার্জারি না করে রিং পরানোর সিদ্ধান্ত নেন। হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডা. অধ্যাপক আফজালুর রহমানের অধীনে বুলবুলকে ভর্তি করা হয়েছিল। ডা. আফজাল বুলবুলের হার্টে দুটি স্টেন্ট (রিং) স্থাপন করেন। রিং পরানো শেষে সুস্থ হয়ে বাসায় ফেরেন বুলবুল। এর পর থেকে তিনি বাসাতেই বেশি সময় কাটাতেন। গানে আর তাকে খুব একটা পাওয়া যায়নি। তার জীবনযাপনেও বেশ পরিবর্তন আসে। পরিবার পরিজন ও ভক্ত-শুভাকাঙ্ক্ষীদের সঙ্গে আড্ডা আর গল্পেই সময় কাটতো তার।
No comments