জানুয়ারিতে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে ১৩০০ রোহিঙ্গা
মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নৃশংসতা চালানোর জন্য সেদেশের সেনাবাহিনীকে দায়ী করা হয়। সেই নৃশংসতা বা নির্যাতন এখনো হচ্ছে না তা নয়।
মাঝে মাঝেই খবর পাওয়া যায়, সেখানে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত আছে। এমন অবস্থায় সাম্প্রতিক সময়ে নির্যাতিত এই সম্প্রদায়ের বেশকিছু সংখ্যক সদস্যকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠিয়েছে ভারত। এ জন্য তাদের কড়া সমালোচনা করা হয়েছে। জাতিসংঘ থেকে এ বিষয়ে বিবৃতি দেয়া হয়েছে। জাতিসংঘ ও অধিকার বিষয়ক গ্রুপগুলো ভারতকে আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি অসম্মান করার অভিযোগ উত্থাপন করেছে। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী দেশ নয় ভারত। তারা ২০১৮ সালে গ্রেপ্তার করেছে ২৩০ রোহিঙ্গাকে। রোহিঙ্গাদেরকে এভাবে গ্রেপ্তার ও তাদেরকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর আতঙ্কে বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা মুসলিম পালিয়ে বাংলাদেশে চলে এসেছে। তারা আশ্রয় নিয়েছে কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় শিবিরে। এএফপিকে নয়না বোস বলেছেন, ৩০০ পরিবারের প্রায় ১৩০০ সদস্য ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছেন। তাদেরকে জাতিসংঘের ট্রানজিট সেন্টারে আশ্রয় দেয়া হয়েছে।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক এজেন্সি ইউএনএইচসিআরের মুখপাত্র ফিরাস আল খতিব বলেছেন, এ পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত জাতিসংঘের এ এজেন্সি। সম্প্রতি যেসব রোহিঙ্গা সীমান্ত অতিক্রম করে প্রবেশ করেছেন তাদেরকে আটক করেছে পুলিশ এবং পাঠিয়ে দিয়েছে কক্সবাজারে শরণার্থীদের শিবিরে।
উল্লেখ্য, ভারতে বসবাস করছেন প্রায় ৪০০০০ রোহিঙ্গা মুসলিম। দশকের পর দশক ধরে মিয়ানমারে বসবাসকারী রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠী ভয়াবহ নির্যাতন ও অবহেলার শিকার। তাদের কোনো নাগরিকত্ব নেই দেশে। মিয়ানমার তাদেরকে দেখে থাকে বাঙালি হিসেবে। এর মধ্য দিয়ে তারা বোঝাতে চায় যে, রোহিঙ্গারা অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশি। তাদের বিরুদ্ধে সর্বশেষ ২০১৭ সালের ২৫শে আগস্ট থেকে যে নৃশংসতা শুরু করেছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী তাকে জাতিসংঘের তদন্তকারীরা গণহত্যা বলে অভিহিত করেছেন। এমন নৃশংসতার কারণে বাধ্য হয়ে তাদের কমপক্ষে ৭ লাখ ২০ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন। আগে থেকেই প্রায় তিন লাখ রোহিঙ্গা একই রকম নৃশংসতার শিকার হয়ে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিলেন। ফলে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীর সংখ্যা এখন কমপক্ষে ১০ লাখ।
No comments