ত্রুটিপূর্ণ প্রক্রিয়া পোশাকখাতে অসন্তোষের কারণ
তৈরি
পোশাক শ্রমিকদের মধ্যে মজুরি নিয়ে অসন্তোষের প্রধান অন্তরায় মজুরি কাঠামোর
ত্রুটিপূর্ণ প্রক্রিয়া বলে জানিয়েছে ‘সেন্টার ফর ডায়ালগ পলিসি (সিপিডি)’।
ঢাকার পার্শ্ববর্তী কয়েকটি এলাকার তৈরিপোশাক শ্রমিক ও মালিকদের ওপর করা
পর্যালোচনায় এ তথ্য পাওয়া গেছে বলে সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। এছাড়া
শ্রমিকদের কাছে বেতন বৃদ্ধির তথ্য ঠিকভাবে পৌঁছানোয় ঘাটতি রয়েছে বলেও
সিপিডির পর্যালোচনায় উঠে এসেছে। গতকাল রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টার ইনে আয়োজিত
‘পোশাকখাতে সামপ্রতিক মজুরি বিতর্ক, কী শিখলাম?’ শীর্ষক সংলাপে সিপিডির
করা গবেষণা পর্যালোচনা তুলে ধরেন গবেষক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম ও
মোহাম্মদ আলী। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সি।
সিপিডির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহানের সভাপতিত্বে
অনুষ্ঠানের সঞ্চালনায় ছিলেন সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
এছাড়া পোশাকশিল্প মালিক সংগঠনের নেতা এবং শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিরাও
উপস্থিত ছিলেন।
সিপিডির গবেষণা পর্যালোচনায় বলা হয়, সমপ্রতি নতুন মজুরি কাঠামো বাস্তবায়নের পর সেখানে কিছু অসঙ্গতি নিয়েই শুরু হয় শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ। যদিও সরকারের উদ্যোগে কয়েকটি মজুরি কাঠামোর গ্রেডে সংশোধন ও সংস্কার করলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
সংলাপে সিপিডি জানায়, ঢাকা, সাভার, আশুলিয়া, টঙ্গী, গাজীপুর অঞ্চলের ৬১ জন শ্রমিক, কারখানা মালিক ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এই প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া বেতনের দুই একটি গ্রেডের বেতন কাঠামো নিয়ে এখনও সমালোচনা রয়ে গেছে। এছাড়া সিপিডি পোশাক খাতের শ্রমিকদের অসন্তোষ দূর করতে বেশ কিছু সুপারিশ তুলে ধরেছে গবেষণা পর্যালোচনায়।
শ্রমিক অসন্তোষ দূর করতে একটি নির্দিষ্ট শ্রমিক প্রতিনিধি দল তৈরি করতে হবে বলে অনুষ্ঠানে জানান বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সি। তিনি বলেন, তৈরিপোশাক খাতে শ্রমিকদের সব রকম অসন্তোষ দূর করতে হলে তাদের সব পক্ষ থেকে পাঁচজনের একটি প্রতিনিধিদল করা দরকার। যারা মালিক পক্ষসহ সরকারের সঙ্গে শ্রমিকদের প্রতিনিধিত্ব করবে। ভবিষ্যতে তাদের সঙ্গে কথা বলে আমরা সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টা করব।
শ্রমিক নেতাদের পক্ষ থেকে জানানোর প্রেক্ষিতে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, কোনো শ্রমিকই অন্যায়ভাবে মামলায় জড়িয়ে না পড়ে সেদিক লক্ষ্য রাখতে হবে। বিনা কারণে যেন ঢালাওভাবে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া না হয়। এছাড়া কোনো শ্রমিককে যদি কোনো মালিক অন্যায়ভাবে ছাঁটাই করে সেটাও গ্রহণযোগ্য নয়।
তিনি বলেন, আমার কারখানার উদাহরণ টেনেই বলতে পারি একটি কারখানায় সকল শ্রমিক অন্যায়ে জড়ায় না। অল্পকিছু শ্রমিকের কারণে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে দু-একটি কারখানার এমন অপ্রীতিকর ঘটনা এবং ত্রুটির কারণে অন্যান্য কারখানাগুলোকেও ইমেজ সংকটে পড়তে হয়।
মন্ত্রী বলেন, শ্রমিকদের বেতন বাড়ার কারণে উৎপাদন খরচ বাড়লেও বিদেশি ক্রেতারা সে তুলনায় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি করছে না। ভবিষ্যতে বাড়বে এমন কোনো নিশ্চয়তাও নেই। এ নিয়ে আমাদের মতো একটি উন্নয়নশীল দেশে দীর্ঘমেয়াদে এই ব্যবসা করতে পারব কি-না তাও জানি না। ইফিসিয়েন্সি তো হঠাৎ করে বাড়বে না, বাড়ানোর জন্য তো চেষ্টা চলছে। আপনাদেরও সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, মালিকদের পক্ষ থেকে এবার বেতন কাঠমোতে সুপারিশ ছিল সর্বনিম্ন মজুরি সাত হাজার টাকা। তারা সব হিসাব মিলিয়ে এর বেশি পারবেন না বলেও জানিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর কাছে এটা নিয়ে যখন গেলাম তিনি আট হাজার টাকা করে দিলেন। এরপরে কারখানা মালিক শ্রমিক প্রতিনিধি মিলে এটা ঠিক করা হয়েছে। এছাড়া শ্রমিকদের অসন্তোষের পেছনে স্বার্থন্বেষী রাজনৈতিক দলের বি না কারণে অহেতুক বিবৃতিও রয়েছে বলে জানান। যেটা সাম্প্রতিক সময়ে দেখা গেছে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) সভাপতি সফিউল ইসলাম শ্রমিক নেতাদের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন যেমন শ্রমিকের করার অধিকার রয়েছে, আবার না করারও অধিকার আছে। শ্রমিকদের এই অসন্তোষের পেছনে একটি গোষ্ঠী জড়িত থাকার কথা রয়েছে বলেও তিনি জানান। তিনি বলেন, রপ্তানিতে আমাদের চাহিদা কমছে। সব থেকে বড় ক্রেতা ইউরোপ এবং আমেরিকায় দরপতন হয়েছে। অথচ আমাদের উৎপাদন খরচ বেড়েই চলছে। এর বাইরে আমাদের প্রতিবেশী প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলো বসে আছে। তাদের রপ্তানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ কারণে বৈদেশিক ক্রেতাদের তেমন চাপ দেয়া যাচ্ছে না। তাহলে তারা অন্যদিকের বাজারে চলে যেতে পারে।
বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, আমরা বিভিন্নভাবে শ্রমিকদের সঙ্গে রেখে চলছি। আমাদের মালিকদের দুটি সংগঠন আর শ্রমিকদের সংগঠন রয়েছে শাতাধিক। যাদের অর্ধশতাংশের নিবন্ধন নেই। এরপরেও আমরা তাদেরও আলোচনায় ডাকি। তিনি বলেন, আমরা বিগত সময়ের বেতন নিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা এবার বেতন নিয়ে খুশি। তাদের যে সামান্য অসন্তোষ ছিল তা এখন আর নেই। বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, আমি চাই শ্রমিকদের নূন্যতম বেতন।
এটাও চাই তাদের দক্ষতা দেখে বেতন দিতে। এরই মধ্যে রপ্তানিতে আমাদের ডিমান্ড কমেই চলছে। বেতন আমি ঠিক করলাম কিন্তু দিতে পারলাম না এটা হয় না। আলোচনায় আরও অংশ নেন সিপিডির ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ডিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি আসিফ ইব্রাহিম, শিল্প উদ্যোক্তা মুমীনুর রহমান, ফারুক আহমেদ, আরসাদ জামান দীপু, শহীদুল আজিম, শ্রমিক নেতা মন্টু ঘোষ, বাবুল আকতার, কাজী রুহুল আমিন, নুরুল ইসলাম প্রমুখ।
সিপিডির গবেষণা পর্যালোচনায় বলা হয়, সমপ্রতি নতুন মজুরি কাঠামো বাস্তবায়নের পর সেখানে কিছু অসঙ্গতি নিয়েই শুরু হয় শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ। যদিও সরকারের উদ্যোগে কয়েকটি মজুরি কাঠামোর গ্রেডে সংশোধন ও সংস্কার করলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
সংলাপে সিপিডি জানায়, ঢাকা, সাভার, আশুলিয়া, টঙ্গী, গাজীপুর অঞ্চলের ৬১ জন শ্রমিক, কারখানা মালিক ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এই প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া বেতনের দুই একটি গ্রেডের বেতন কাঠামো নিয়ে এখনও সমালোচনা রয়ে গেছে। এছাড়া সিপিডি পোশাক খাতের শ্রমিকদের অসন্তোষ দূর করতে বেশ কিছু সুপারিশ তুলে ধরেছে গবেষণা পর্যালোচনায়।
শ্রমিক অসন্তোষ দূর করতে একটি নির্দিষ্ট শ্রমিক প্রতিনিধি দল তৈরি করতে হবে বলে অনুষ্ঠানে জানান বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সি। তিনি বলেন, তৈরিপোশাক খাতে শ্রমিকদের সব রকম অসন্তোষ দূর করতে হলে তাদের সব পক্ষ থেকে পাঁচজনের একটি প্রতিনিধিদল করা দরকার। যারা মালিক পক্ষসহ সরকারের সঙ্গে শ্রমিকদের প্রতিনিধিত্ব করবে। ভবিষ্যতে তাদের সঙ্গে কথা বলে আমরা সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টা করব।
শ্রমিক নেতাদের পক্ষ থেকে জানানোর প্রেক্ষিতে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, কোনো শ্রমিকই অন্যায়ভাবে মামলায় জড়িয়ে না পড়ে সেদিক লক্ষ্য রাখতে হবে। বিনা কারণে যেন ঢালাওভাবে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া না হয়। এছাড়া কোনো শ্রমিককে যদি কোনো মালিক অন্যায়ভাবে ছাঁটাই করে সেটাও গ্রহণযোগ্য নয়।
তিনি বলেন, আমার কারখানার উদাহরণ টেনেই বলতে পারি একটি কারখানায় সকল শ্রমিক অন্যায়ে জড়ায় না। অল্পকিছু শ্রমিকের কারণে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে দু-একটি কারখানার এমন অপ্রীতিকর ঘটনা এবং ত্রুটির কারণে অন্যান্য কারখানাগুলোকেও ইমেজ সংকটে পড়তে হয়।
মন্ত্রী বলেন, শ্রমিকদের বেতন বাড়ার কারণে উৎপাদন খরচ বাড়লেও বিদেশি ক্রেতারা সে তুলনায় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি করছে না। ভবিষ্যতে বাড়বে এমন কোনো নিশ্চয়তাও নেই। এ নিয়ে আমাদের মতো একটি উন্নয়নশীল দেশে দীর্ঘমেয়াদে এই ব্যবসা করতে পারব কি-না তাও জানি না। ইফিসিয়েন্সি তো হঠাৎ করে বাড়বে না, বাড়ানোর জন্য তো চেষ্টা চলছে। আপনাদেরও সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, মালিকদের পক্ষ থেকে এবার বেতন কাঠমোতে সুপারিশ ছিল সর্বনিম্ন মজুরি সাত হাজার টাকা। তারা সব হিসাব মিলিয়ে এর বেশি পারবেন না বলেও জানিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর কাছে এটা নিয়ে যখন গেলাম তিনি আট হাজার টাকা করে দিলেন। এরপরে কারখানা মালিক শ্রমিক প্রতিনিধি মিলে এটা ঠিক করা হয়েছে। এছাড়া শ্রমিকদের অসন্তোষের পেছনে স্বার্থন্বেষী রাজনৈতিক দলের বি না কারণে অহেতুক বিবৃতিও রয়েছে বলে জানান। যেটা সাম্প্রতিক সময়ে দেখা গেছে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) সভাপতি সফিউল ইসলাম শ্রমিক নেতাদের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন যেমন শ্রমিকের করার অধিকার রয়েছে, আবার না করারও অধিকার আছে। শ্রমিকদের এই অসন্তোষের পেছনে একটি গোষ্ঠী জড়িত থাকার কথা রয়েছে বলেও তিনি জানান। তিনি বলেন, রপ্তানিতে আমাদের চাহিদা কমছে। সব থেকে বড় ক্রেতা ইউরোপ এবং আমেরিকায় দরপতন হয়েছে। অথচ আমাদের উৎপাদন খরচ বেড়েই চলছে। এর বাইরে আমাদের প্রতিবেশী প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলো বসে আছে। তাদের রপ্তানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ কারণে বৈদেশিক ক্রেতাদের তেমন চাপ দেয়া যাচ্ছে না। তাহলে তারা অন্যদিকের বাজারে চলে যেতে পারে।
বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, আমরা বিভিন্নভাবে শ্রমিকদের সঙ্গে রেখে চলছি। আমাদের মালিকদের দুটি সংগঠন আর শ্রমিকদের সংগঠন রয়েছে শাতাধিক। যাদের অর্ধশতাংশের নিবন্ধন নেই। এরপরেও আমরা তাদেরও আলোচনায় ডাকি। তিনি বলেন, আমরা বিগত সময়ের বেতন নিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা এবার বেতন নিয়ে খুশি। তাদের যে সামান্য অসন্তোষ ছিল তা এখন আর নেই। বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, আমি চাই শ্রমিকদের নূন্যতম বেতন।
এটাও চাই তাদের দক্ষতা দেখে বেতন দিতে। এরই মধ্যে রপ্তানিতে আমাদের ডিমান্ড কমেই চলছে। বেতন আমি ঠিক করলাম কিন্তু দিতে পারলাম না এটা হয় না। আলোচনায় আরও অংশ নেন সিপিডির ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ডিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি আসিফ ইব্রাহিম, শিল্প উদ্যোক্তা মুমীনুর রহমান, ফারুক আহমেদ, আরসাদ জামান দীপু, শহীদুল আজিম, শ্রমিক নেতা মন্টু ঘোষ, বাবুল আকতার, কাজী রুহুল আমিন, নুরুল ইসলাম প্রমুখ।
No comments