জনপ্রতিক্রিয়া- প্রসঙ্গ: সেনা মোতায়েন
জাতীয়
নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব নিয়ে মাঠে নামছে সশস্ত্র বাহিনী।
২৪শে ডিসেম্বর থেকে সেনা মোতায়েন করার কথা। নিয়মিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী
বাহিনীর সঙ্গে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা।
নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতার পাশাপাশি অনাকাঙ্খিত কোন পরিস্থিতি তৈরি
হলে তারা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে পারবে। প্রয়োজনে অপরাধীদের গ্রেপ্তারও
করতে পারবে। নির্বাচনের মাঠে সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ
রয়েছে সাধারণ ভোটার ও রাজনৈতিক দলগুলোর। আর নির্বাচন নিয়ে কি ভাবছে সাধারণ
মানুষ? রাজধানীর নানা শ্রেণি পেশার মানুষের কাছ থেকে উত্তর খোঁজার চেষ্টা
করেছি। মানবজমিন রিপোর্টার শুভ্র দেব, মরিয়ম চম্পা, হাফিজ মুহাম্মদ ও
মোহাম্মদ ওমর ফারুক নগরীর বিভিন্ন এলাকার ৮০ জন নাগরিকের সঙ্গে কথা
বলেছেন।
বাসাবোর মুদির দোকানি মোহাম্মদ আলী বলেন, সেনাবাহিনী মাঠে নামলে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হবে। তাদের সামনে কোনো ঝামেলা হোক- এটা তারা মেনে নেবে না। কারণ, বিশ্বে তাদের একটা গ্রহণযোগ্যতা আছে। তারা সেটা নষ্ট করতে চাইবে না।
বিজয়নগরে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় সহকারী পরিমল দাস বলেন, বিরোধী দল এখন মাঠে নামলে যারা হামলা চালায় সেনাবাহিনী মাঠে থাকলে তখন তারা সেই সাহস পাবে না। তখন বিএনপি প্রচারণা চালাতে পারবে।
সংবাদকর্মী মাহমুদ হোসাইন বলেন, আরো আগে সেনাবাহিনীকে নামালে পরিস্থিতি আরও ভালো হতো। তবে এই সময়ের ভেতরে পরিস্থিতি কিছুটা ভালো হওয়ার সম্ভাবনা দেখছি।
সেগুনবাগিচায় সৌদি প্রবাসী আলিম উদ্দিন বলেন, একটা জাতীয় নির্বাচন হচ্ছে, অথচ কোথাও কোনো নির্বাচনী আমেজ নেই। নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশে এসেছি। কিন্তু কোথাও বিরোধী দলের প্রার্থীদের পোস্টার, ব্যানার, প্রচারণা নেই। এ কেমন নির্বাচন হচ্ছে? আমার এলাকা কুমিল্লায় খোঁজ নিয়েছি। একই অবস্থা সেখানেও। পোস্টার লাগানো মাত্র ছিঁড়ে ফেলে দেয়া হচ্ছে। সেনাবাহিনী মাঠে নামলে বিরোধীদলীয় প্রার্থীরা সাহস পেতে পারেন।
সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজার এলাকার চা-দোকানি আনোয়ার হোসেন বলেন, বিরোধী দলের প্রার্থীদের কি নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর অধিকার নেই। তাদের ওপরে গণহারে হামলা-মামলা করা হচ্ছে। প্রকাশ্য ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। পুলিশ বাহিনী দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে। এখন শেষ ভরসা সেনাবাহিনী। তারাই পারে পরিস্থিতিটা স্বাভাবিক করতে।
রিকশাচালক রফিক উদ্দিন বলেন, আস্থা ও ভরসার শেষ জায়গা সেনাবাহিনী।
খিলগাঁর তিলপাপাড়া এলাকায় ট্র্যাভেলস এজেন্সি ব্যবসায়ী জয়নাল আবেদিন বলেন, সেনাবাহিনী সাধারণ মানুষের আস্থা কুড়িয়েছে। এই সেনাবাহিনী মাঠে নামলে পরিস্থিতি বদলাবে।
কাকরাইলে সিএনজিচালক নুরু মিয়া বলেন, দেশটা আসলে কোথায় যাচ্ছে সেটাই ভাবছি। কোথাও কোনো আশার কথা শোনা যায় না। যে দেশে নির্বাচনের জন্য প্রার্থীরা প্রচারণা চালাতে পারেন না, সে দেশের ভবিষ্যৎ কী?
ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আবুল বাশার বলেন, সেনাবাহিনী নামলে এরকম পরিস্থিতি থাকবে না। তাদের সামনে কোনো দলের লোকই মারামারি করতে পারবে না। সেনাবাহিনীর প্রতি মানুষের একটা ভয় কাজ করে। অনিয়ম-অবিচার হলে তারা সেটা বরদাস্ত করবে না।
বেসরকারি চাকরিজীবী ফারুক হোসেন বলেন, সেনাবাহিনী নিরপেক্ষ। তারা সরকারের হয়ে কাজ করবে না।
মালিবাগের সবজি ব্যবসায়ী আব্দুল হান্নান বলেন, পরিস্থিতিটা এমন হয়েছে, কোনো কথা বলার অবস্থা নেই। আমরা সাধারণ মানুষ দেশে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। যেটা এখন আমরা দেখতে পাচ্ছি না। সেনাবাহিনী অবশ্যই সেই পরিবেশটা ফিরিয়ে আনতে পারবে।
আলমগীর হোসেন নামের নির্মাণশ্রমিক বলেন, পাঁচ বছর পর পর একটা জাতীয় নির্বাচন আসে। সবাই চায় তাদের পছন্দের দলের প্রার্থীকে ভোট দেবে। ইদানীং ভোটকেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় একজনের ভোট আরেকজন দিয়ে দেয়। সেনাবাহিনী থাকলে সে পরিস্থিতি হবে না।
ভোট হবে কি হবে না- এই নিয়ে শঙ্কা দেখছেন মগবাজারের বাসিন্দা গৃহিণী মিনা বেগম। তিনি বলেন, ঢাক-ঢোল পিটিয়ে ভোটের আয়োজন করে কী লাভ? যদি না মানুষ পছন্দের প্রার্থীকে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারে। তবে আশা আছে, সেনাবাহিনী মাঠে নামলে একটা ভালো পরিবেশ তৈরি হবে।
আইটি প্রকৌশলী সোহেল হায়দার বলেন, সেনাবাহিনীর প্রতি মানুষের আস্থা আছে। সেনাবাহিনী অবশ্যই মানুষের সেই আশা পূরণ করবে।
বড় মগবাজার এলাকার সংস্কৃতিকর্মী আরাফাত হোসেন বলেন, একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করবে সেনাবাহিনী- এই প্রত্যাশা সবার। গণতান্ত্রিক দেশে ভোট নিয়ে কোনো ধরনের কারচুপি বা হানাহানি-মারামারি হোক সেটা কাম্য নয়।
শিক্ষক ও সমাজসেবী আক্তার হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর প্রতি সাধারণ মানুষের যথেষ্ট আস্থা আছে। এখন যে রকম একটা দলের ওপর অবিচার হচ্ছে। তাদেরকে প্রচার প্রচারণা চালাতে দেওয়া হচ্ছে না- সেনাবাহিনী মাঠে নামলে সেটা হবে না।
পোশাক কারখানার কর্মী সাইদুর রহমান বলেন, সেনাবাহিনী যদি মাঠে নেমে সুন্দর একটা পরিবেশ তৈরি করে তবে ভোট দিতে যাব।
ফুটপাতের পিঠা বিক্রেতা মনিরুল ইসলাম বলেন, সেনাবাহিনী নির্বাচনের মাঠে আসুক- এটা আমরা সবাই চাই। তাদের প্রতি মানুষের মনোভাবটা অন্যরকম। আগেও যখন সেনাবাহিনী মাঠে ছিল তখন কোনো ঝামেলা ছিল না। দেশ অনেক সুন্দরভাব চলেছে। এখনও তাই হবে।
মোটরসাইকেল ওয়ার্কশপের মালিক ফিরোজ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীকে বিচারকি ক্ষমতা দিলে বিশৃঙ্খলাকারীরা ভয়ে থাকবে।
পোশাক ব্যবসায়ী রবিন তালুকদার বলেন, শুধু টহল দিলে হবে না। সেনাবাহিনীকে অ্যাকশনে যেতে হবে। তাহলে কেউ কিছু করার সাহস পাবে না।
শিক্ষিকা তাসফিয়া মেহজাবিন বলেন, আমরা ভোট দিতে চাই। সেই পরিবেশ তৈরি করুক সেনাবাহিনী। তাহলে সাধারণ মানুষের মধ্যে সংশয় কাটবে।
মোটরপার্টস বিক্রেতা রুহুল কবির বলেন, আস্থা বলেন আর ভরসা বলেন এই একটা জায়গাই আছে। সাধারণ মানুষের ভোট দেয়ার অধিকার ও নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করবে সেনাবাহিনী।
রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী শিকদার হোসেন বলেন, প্রচারণার শুরু থেকে যদি সেনাবাহিনী নামানো হতো অনেক ভালো হতো।
খবর পাঠক ও মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী তাজকিয়া বিনতে নাজিব বলেন, প্রায় এক সপ্তাহ আগে আর্মি মাঠে নামছে। সেক্ষেত্রে পরিস্থিতি অনেকটা ঠিক হয়ে যাবে। সকল দল প্রচার-প্রচারণা চালানোর সুযোগ পাবে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মোস্তাফিজ তাকিয়ে আছেন সেনাবাহিনী মাঠে নামার অপেক্ষায়। তাদের মাধ্যমে বর্তমান পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে বলে তার বিশ্বাস।
লিফট ইলেক্ট্রিশিয়ান মো. জুয়েল রানা বলেন, নির্বাচন নিয়ে তার কোনো মাথাব্যথা নেই। তবে ঢাকা-১৪ আসনে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোনো প্রার্থীর প্রচারণা তিনি দেখছেন না। এমনকি এ আসনে বিএনপির যে প্রার্থী রয়েছেন তার কোনো পোস্টার চোখে পড়েনি। তবে তার ধারণা সেনাবাহিনী নামলে বিএনপিও মাঠে নামবে। প্রচার-প্রচারণা চালাতে পারবে। তখন ধরপাকড় ও হামলা হবে না।
চা-দোকানি মো. নূর আলম বলেন, আমার ধারণা নির্বাচন হচ্ছে একপাক্ষিক। যারা ক্ষমতায় তারাই নির্বাচন দিচ্ছে।
মিরপুর-১ নম্বরে চল্লিশোর্ধ্ব এক নারী হোটেল ব্যবসায়ী বলেন, আমি আশুলিয়ার ভোটার। ভোট নিয়ে আমার তেমন কোনো চিন্তা নেই। সেনাবাহিনীর দেশপ্রেমকে সাধারণ মানুষ ভয় পায়। একারণে কেউ মারামারি করবে না। তখন আওয়ামী লীগ-বিএনপি সকলেই মাঠে নামতে পারবে।
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান স্বাধীন মনে করেন, আওয়ামী লীগ সরকার ১০ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকায় তাদের এক বিশাল কর্মী বাহিনী গড়ে উঠেছে। সেনাবাহিনী নামলেও তারা মাঠে সক্রিয় থাকবে। সেনাবাহিনীকে যথেষ্ট ক্ষমতা দেয়া হচ্ছে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতার শিক্ষার্থী মীর হুজাইফা আল মামদূহ বলেন, প্রচার-প্রচারণা চালানোর জন্য একটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জরুরি হয়ে পড়েছে। নয়তো ক্ষমতাধররা সব সময়ই তাদের ক্ষমতা দেখিয়ে যাবে।
চিকিৎসক ও সংগঠক নাজমুল ইসলাম মনে করেন, বাংলাদেশের সেনাবাহিনী জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক। সাধারণ মানুষ হিসেবে মনে করি অবস্থার পরিবর্তন হবে।
ঢাকা-১৪ আসনের ভোটার চা-বিক্রেতা কবির বলেন, আমি আশাবাদী। সেনাবাহিনী নামলে পরিস্থিতি এমন থাকবে না।
বিক্রয় কর্মী এখলাস হাসান বলেন, সেনাবাহিনী নামলে পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে মনে করার কারণ নেই। সরকারের কথাবার্তায় এমনটা মনে হয়নি। তবে সেনাবাহিনী তাদের প্রফেশনালিজম ধরে রাখতে চেষ্টা করবে।
বেসরকারি চাকরিজীবী মো. মোহিব্বুল্লাহ বলেন, সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সকল বিরোধী দল এটাই মনে করছে যে, সেনাবাহিনী মাঠে নেমে যদি নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করে তবেই হয়তো পরিস্থিতি শান্ত হবে এবং বিরোধী দলের সকলেই সমানভাবে প্রচার-প্রচারণা চালাতে পারবে। আমিও এটাই মনে করি সেনাবাহিনী নামলে পরিস্থিতির কিছুটা পরিবর্তন হবে।
মফস্বল সাংবাদিক আবদুল আজিজ মনে করেন, পরিস্থিতি কতটা পরিবর্তন হবে সেটা বলা যাবে সেনাবাহিনী কী কী পদক্ষেপ নেয় তার ওপর। তারা যদি মাঠ পর্যায়ে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করে তাহলে হয়তো দেশের মানুষ এর সুফল পাবেন। তারা নির্বিঘ্নে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন।
সাংবাদিকতার শিক্ষার্থী সাদিয়া নওশীনের কথা-আশায় আছি, দেখা যাক কি হয়।
রিকশাচালক ছলিম বলেন, সেনাবাহিনী আইলে খালি মারামারি কমবে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলেন, সেনাবাহিনী মাঠে নামলে অবশ্যই অবস্থার পরিবর্তন হবে। কোনো গ্যাঞ্জাম-হাঙ্গামা হতে দিবে না। তখন শুধুমাত্র মুখ দেখে পুলিশি ধরপাকড় কিছুটা হলেও বন্ধ হবে। সব কিছুই একটি শৃঙ্খলার মধ্যে চলে আসবে।
একজন সংবাদকর্মী বলেন, সেনাবাহিনী মাঠে নামলে পরিস্থিতি কতোটা পরিবর্তন কিংবা উন্নতি হবে সেটা ডিপেন্ড করছে অন্যদের ওপর। কারণ প্রাইমারি ফোর্সতো হচ্ছে আনসার, বিজিবি, পুলিশ। ওরা সেনাবাহিনী থাকবে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে। সুতরাং পুলিশ যদি বলে আমরা এখানে আছি অন্য কাউকে দরকার নেই। আর পুলিশ আল্টিমেটলি না ডাকলে সেনাবাহিনী যাবে না।
পিটিআইয়ের নির্মাণ শ্রমিক আবুল কালাম বলেন, সেনাবাহিনী এলে পরিবর্তন হবে। কোনো হুড়-হাঙ্গামা থাকবে না। পরিবেশ কিছুটা শান্ত হবে। মোটকথা এখনকার থেকে কম ঝামেলা হবে।
লেগুনা ড্রাইভার মো. শামীম বলেন, সেনাবাহিনী নামার পরে দেখা যাক কি হয়। আশা করি ভালো কিছু হবে। তারা যদি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করে তাহলে অবশ্যই অবস্থার পরিবর্তন আসবে।
চা দোকানদার সেলিম বলেন, সেনাবাহিনী এলে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। কোনো গ্যাঞ্জাম হবে না। কোনো সরকার এলো বা না এলো সেটা আমাদের দেখার বিষয় না। জনগণ নির্ভয়ে ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিতে চায়। যে সরকার ভালো কাজ করবে আমরা তাকেই ভোট দিবো।
ঝালমুড়ি বিক্রেতা ছালাম সরদার বলেন, হয় দেখা যাক। এখনো সময় আছে। তবে ধীরে ধীরে অবস্থার পরিবর্তন হবেই।
বাংলালিংকের ভ্রাম্যমাণ সিমকার্ড বিক্রেতা মো. আরিফুজ্জামান মিলন বলেন, আমরা চাই সেনাবাহিনী আসুক। তারা এলে সবাই নির্ভয়ে থাকবে। গ্যাঞ্জাম-ফ্যাসাদ হবে না।
জুতা মেরামতের কাজ করা স্বপন দাস বলেন, সেনাবাহিনী আরো আগে দেয়া উচিত ছিল। দেরিতে হলেও সেনাবাহিনী এলে ভালো হবে।
সিমেন্ট ব্যবসায়ী ননী গোপাল বলেন, সেনাবাহিনী নামলে বিএনপি মাঠে নামতে পারবে।
ব্যবসায়ী মো. মাহমুদুর রহমান বলেন, আমি মনে করি এখন পরিস্থিতি নরমাল ও স্বাভাবিক আছে। পুলিশ নিজেদের মতো করে একরকম দায়িত্ব পালন করছে। তবে এটাও ঠিক যে, সেনাবাহিনীকে সবাই ভয় পায়। সম্মান করে।
তালা মিস্ত্রি শামীম বলেন, সেনাবাহিনী এলে অবশ্যই পরিবর্তন হবে। সবজি বিক্রেতা মজিবর বলেন, সেনাবাহিনী এলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে। জনগণের জন্য সুবিধা হবে। সবাই নিরাপদে থাকবে। কোনো ঝামেলা হবে না। সবদিকেই সুবিধা হবে। লেপ-তোষক বিক্রেতা নাইম বলেন, সেনাবাহিনী এলে ভালো হবে। এখনতো বিএনপি পোস্টার লাগাতে পারে না। মাঠে প্রচারণায় নামতে পারছে না। এখন নির্দিষ্ট এক পার্টি একপাক্ষিকভাবে মাঠে নামছে। তখন দুই পার্টিই মাঠে নামতে পারবে।
চাল ব্যবসায়ী স্বপন বলেন, অবস্থার আর কি পরিবর্তন হবে।
আগারগাঁও আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. তায়েফ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনী যদি আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দু’পক্ষের হয়ে কাজ করে তাহলে অবস্থার পরিবর্তন হবে।
পুলিশ সদস্য ট্রাফিক কনস্টেবল মোকসেদ বলেন, এটাতো আগের থেকেই হয়ে আসছে। নির্বাচনের সময় প্রত্যেক বাহিনীর লোক অংশ নিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন করবে এটাই নিয়ম। শুধুমাত্র পুলিশ দিয়েতো কাজ হবে না। সব বাহিনীর সহযোগিতা লাগবে।
ভাঙাড়ি ব্যবসায়ী আল-আমিন বলেন, সেনাবাহিনী নামলে মানুষের মনে যে একটি ভয় আছে সেটা থাকবে না। এখন সঠিকভাবে ভোট দিতে পারবো কি না এটা নিয়ে বড় টেনশনে আছি।
মাংস বিক্রেতা মো. খোকন কসাই বলেন, কোন পরিবর্তন আসবে বলে মনে হয় না। দেশ তো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে যায়নি। দলীয় সরকারই এখনো রয়ে গেছে।
বনানীর চেয়ারম্যান বাড়ি এলাকার পত্রিকা বিক্রেতা সিরাজুল ইসলাম বলেন, সরকার ক্ষমতার যত্রতত্র ব্যবহার করছে, যার জন্য নির্বাচনে বিরোধী দল কোনো ভূমিকাই রাখতে পারছে না। এটা কিন্তু ভালো লক্ষণ নয়।
গুলশান-১ এ লোটাস কামাল টাওয়ারের সামনের চা দোকানি আলী হোসেন বলেন, সেনাবাহিনী আসলে সবার জন্য সুবিধা। আর না আসলে ক্ষমতায় থাকা দল সবসময়ই বিরোধী দলকে জুলুম করে। এক দল আরেক দলকে কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়ার চেষ্টা করে। এতে সাধারণ ভোটাররা সবসময়ই আতঙ্কে থাকে। তাই আমার মনে হয় সেনাবাহিনী আসলে এটা আর হবে না। সবাই নিরাপদ থাকবে।
মহাখালী রসুলবাগের বাসিন্দা নাদের মিয়া বলেন, দিনে দিনে এই দেশ গণতন্ত্রহীন হয়ে যাচ্ছে, ভোট কেন্দ্রেও এই প্রভাব পড়বে। কেন্দ্র দখল করতে পারে সরকারদলীয় লোকজন। ফলে সাধারণ ভোটারদের হতাহতের সম্ভাবনা থাকতে পারে। সেই ক্ষেত্রে সেনাবাহিনী আসলে সবার জন্যই ভালো হবে।
পান্থপথের বাসিন্দা ইলিয়াস আকবর বলেন, এবার যদি কেন্দ্রে গিয়ে সাধারণ ভোটাররা ভোট দিতে না পারেন এর পরিণতি সারা দেশের মানুষ ভয়াবহভাবে ভোগ করবে। ভোটারদের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতে হবে নির্বাচন কমিশনের। সেই ক্ষেত্রে যে যে পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন সেটাই করতে হবে। আর সেনাবাহিনী আসলে তো কোনো কথাই নেই, একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আমরা দেখতে পাবো।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আমজাদ হোসাইন বলেন, জীবনে প্রথম ভোট দেবো। প্রথম ভোটটা যেন ভোটকেন্দ্রে গিয়ে সঠিকভাবে নিরাপদে দিতে পারি এটিই চাওয়া। কিন্তু গত ২০১৪ সালের ভোটের মতো আমি চাই সেনাবাহিনীকে তাদের ক্ষমতা দিয়ে নির্বাচনকালীন সময়টাতে রাখা হোক তাহলে মানুষ নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারবে।
বাসাবোর মুদির দোকানি মোহাম্মদ আলী বলেন, সেনাবাহিনী মাঠে নামলে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হবে। তাদের সামনে কোনো ঝামেলা হোক- এটা তারা মেনে নেবে না। কারণ, বিশ্বে তাদের একটা গ্রহণযোগ্যতা আছে। তারা সেটা নষ্ট করতে চাইবে না।
বিজয়নগরে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় সহকারী পরিমল দাস বলেন, বিরোধী দল এখন মাঠে নামলে যারা হামলা চালায় সেনাবাহিনী মাঠে থাকলে তখন তারা সেই সাহস পাবে না। তখন বিএনপি প্রচারণা চালাতে পারবে।
সংবাদকর্মী মাহমুদ হোসাইন বলেন, আরো আগে সেনাবাহিনীকে নামালে পরিস্থিতি আরও ভালো হতো। তবে এই সময়ের ভেতরে পরিস্থিতি কিছুটা ভালো হওয়ার সম্ভাবনা দেখছি।
সেগুনবাগিচায় সৌদি প্রবাসী আলিম উদ্দিন বলেন, একটা জাতীয় নির্বাচন হচ্ছে, অথচ কোথাও কোনো নির্বাচনী আমেজ নেই। নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশে এসেছি। কিন্তু কোথাও বিরোধী দলের প্রার্থীদের পোস্টার, ব্যানার, প্রচারণা নেই। এ কেমন নির্বাচন হচ্ছে? আমার এলাকা কুমিল্লায় খোঁজ নিয়েছি। একই অবস্থা সেখানেও। পোস্টার লাগানো মাত্র ছিঁড়ে ফেলে দেয়া হচ্ছে। সেনাবাহিনী মাঠে নামলে বিরোধীদলীয় প্রার্থীরা সাহস পেতে পারেন।
সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজার এলাকার চা-দোকানি আনোয়ার হোসেন বলেন, বিরোধী দলের প্রার্থীদের কি নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর অধিকার নেই। তাদের ওপরে গণহারে হামলা-মামলা করা হচ্ছে। প্রকাশ্য ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। পুলিশ বাহিনী দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে। এখন শেষ ভরসা সেনাবাহিনী। তারাই পারে পরিস্থিতিটা স্বাভাবিক করতে।
রিকশাচালক রফিক উদ্দিন বলেন, আস্থা ও ভরসার শেষ জায়গা সেনাবাহিনী।
খিলগাঁর তিলপাপাড়া এলাকায় ট্র্যাভেলস এজেন্সি ব্যবসায়ী জয়নাল আবেদিন বলেন, সেনাবাহিনী সাধারণ মানুষের আস্থা কুড়িয়েছে। এই সেনাবাহিনী মাঠে নামলে পরিস্থিতি বদলাবে।
কাকরাইলে সিএনজিচালক নুরু মিয়া বলেন, দেশটা আসলে কোথায় যাচ্ছে সেটাই ভাবছি। কোথাও কোনো আশার কথা শোনা যায় না। যে দেশে নির্বাচনের জন্য প্রার্থীরা প্রচারণা চালাতে পারেন না, সে দেশের ভবিষ্যৎ কী?
ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আবুল বাশার বলেন, সেনাবাহিনী নামলে এরকম পরিস্থিতি থাকবে না। তাদের সামনে কোনো দলের লোকই মারামারি করতে পারবে না। সেনাবাহিনীর প্রতি মানুষের একটা ভয় কাজ করে। অনিয়ম-অবিচার হলে তারা সেটা বরদাস্ত করবে না।
বেসরকারি চাকরিজীবী ফারুক হোসেন বলেন, সেনাবাহিনী নিরপেক্ষ। তারা সরকারের হয়ে কাজ করবে না।
মালিবাগের সবজি ব্যবসায়ী আব্দুল হান্নান বলেন, পরিস্থিতিটা এমন হয়েছে, কোনো কথা বলার অবস্থা নেই। আমরা সাধারণ মানুষ দেশে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। যেটা এখন আমরা দেখতে পাচ্ছি না। সেনাবাহিনী অবশ্যই সেই পরিবেশটা ফিরিয়ে আনতে পারবে।
আলমগীর হোসেন নামের নির্মাণশ্রমিক বলেন, পাঁচ বছর পর পর একটা জাতীয় নির্বাচন আসে। সবাই চায় তাদের পছন্দের দলের প্রার্থীকে ভোট দেবে। ইদানীং ভোটকেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় একজনের ভোট আরেকজন দিয়ে দেয়। সেনাবাহিনী থাকলে সে পরিস্থিতি হবে না।
ভোট হবে কি হবে না- এই নিয়ে শঙ্কা দেখছেন মগবাজারের বাসিন্দা গৃহিণী মিনা বেগম। তিনি বলেন, ঢাক-ঢোল পিটিয়ে ভোটের আয়োজন করে কী লাভ? যদি না মানুষ পছন্দের প্রার্থীকে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারে। তবে আশা আছে, সেনাবাহিনী মাঠে নামলে একটা ভালো পরিবেশ তৈরি হবে।
আইটি প্রকৌশলী সোহেল হায়দার বলেন, সেনাবাহিনীর প্রতি মানুষের আস্থা আছে। সেনাবাহিনী অবশ্যই মানুষের সেই আশা পূরণ করবে।
বড় মগবাজার এলাকার সংস্কৃতিকর্মী আরাফাত হোসেন বলেন, একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করবে সেনাবাহিনী- এই প্রত্যাশা সবার। গণতান্ত্রিক দেশে ভোট নিয়ে কোনো ধরনের কারচুপি বা হানাহানি-মারামারি হোক সেটা কাম্য নয়।
শিক্ষক ও সমাজসেবী আক্তার হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর প্রতি সাধারণ মানুষের যথেষ্ট আস্থা আছে। এখন যে রকম একটা দলের ওপর অবিচার হচ্ছে। তাদেরকে প্রচার প্রচারণা চালাতে দেওয়া হচ্ছে না- সেনাবাহিনী মাঠে নামলে সেটা হবে না।
পোশাক কারখানার কর্মী সাইদুর রহমান বলেন, সেনাবাহিনী যদি মাঠে নেমে সুন্দর একটা পরিবেশ তৈরি করে তবে ভোট দিতে যাব।
ফুটপাতের পিঠা বিক্রেতা মনিরুল ইসলাম বলেন, সেনাবাহিনী নির্বাচনের মাঠে আসুক- এটা আমরা সবাই চাই। তাদের প্রতি মানুষের মনোভাবটা অন্যরকম। আগেও যখন সেনাবাহিনী মাঠে ছিল তখন কোনো ঝামেলা ছিল না। দেশ অনেক সুন্দরভাব চলেছে। এখনও তাই হবে।
মোটরসাইকেল ওয়ার্কশপের মালিক ফিরোজ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীকে বিচারকি ক্ষমতা দিলে বিশৃঙ্খলাকারীরা ভয়ে থাকবে।
পোশাক ব্যবসায়ী রবিন তালুকদার বলেন, শুধু টহল দিলে হবে না। সেনাবাহিনীকে অ্যাকশনে যেতে হবে। তাহলে কেউ কিছু করার সাহস পাবে না।
শিক্ষিকা তাসফিয়া মেহজাবিন বলেন, আমরা ভোট দিতে চাই। সেই পরিবেশ তৈরি করুক সেনাবাহিনী। তাহলে সাধারণ মানুষের মধ্যে সংশয় কাটবে।
মোটরপার্টস বিক্রেতা রুহুল কবির বলেন, আস্থা বলেন আর ভরসা বলেন এই একটা জায়গাই আছে। সাধারণ মানুষের ভোট দেয়ার অধিকার ও নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করবে সেনাবাহিনী।
রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী শিকদার হোসেন বলেন, প্রচারণার শুরু থেকে যদি সেনাবাহিনী নামানো হতো অনেক ভালো হতো।
খবর পাঠক ও মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী তাজকিয়া বিনতে নাজিব বলেন, প্রায় এক সপ্তাহ আগে আর্মি মাঠে নামছে। সেক্ষেত্রে পরিস্থিতি অনেকটা ঠিক হয়ে যাবে। সকল দল প্রচার-প্রচারণা চালানোর সুযোগ পাবে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মোস্তাফিজ তাকিয়ে আছেন সেনাবাহিনী মাঠে নামার অপেক্ষায়। তাদের মাধ্যমে বর্তমান পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে বলে তার বিশ্বাস।
লিফট ইলেক্ট্রিশিয়ান মো. জুয়েল রানা বলেন, নির্বাচন নিয়ে তার কোনো মাথাব্যথা নেই। তবে ঢাকা-১৪ আসনে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোনো প্রার্থীর প্রচারণা তিনি দেখছেন না। এমনকি এ আসনে বিএনপির যে প্রার্থী রয়েছেন তার কোনো পোস্টার চোখে পড়েনি। তবে তার ধারণা সেনাবাহিনী নামলে বিএনপিও মাঠে নামবে। প্রচার-প্রচারণা চালাতে পারবে। তখন ধরপাকড় ও হামলা হবে না।
চা-দোকানি মো. নূর আলম বলেন, আমার ধারণা নির্বাচন হচ্ছে একপাক্ষিক। যারা ক্ষমতায় তারাই নির্বাচন দিচ্ছে।
মিরপুর-১ নম্বরে চল্লিশোর্ধ্ব এক নারী হোটেল ব্যবসায়ী বলেন, আমি আশুলিয়ার ভোটার। ভোট নিয়ে আমার তেমন কোনো চিন্তা নেই। সেনাবাহিনীর দেশপ্রেমকে সাধারণ মানুষ ভয় পায়। একারণে কেউ মারামারি করবে না। তখন আওয়ামী লীগ-বিএনপি সকলেই মাঠে নামতে পারবে।
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান স্বাধীন মনে করেন, আওয়ামী লীগ সরকার ১০ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকায় তাদের এক বিশাল কর্মী বাহিনী গড়ে উঠেছে। সেনাবাহিনী নামলেও তারা মাঠে সক্রিয় থাকবে। সেনাবাহিনীকে যথেষ্ট ক্ষমতা দেয়া হচ্ছে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতার শিক্ষার্থী মীর হুজাইফা আল মামদূহ বলেন, প্রচার-প্রচারণা চালানোর জন্য একটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জরুরি হয়ে পড়েছে। নয়তো ক্ষমতাধররা সব সময়ই তাদের ক্ষমতা দেখিয়ে যাবে।
চিকিৎসক ও সংগঠক নাজমুল ইসলাম মনে করেন, বাংলাদেশের সেনাবাহিনী জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক। সাধারণ মানুষ হিসেবে মনে করি অবস্থার পরিবর্তন হবে।
ঢাকা-১৪ আসনের ভোটার চা-বিক্রেতা কবির বলেন, আমি আশাবাদী। সেনাবাহিনী নামলে পরিস্থিতি এমন থাকবে না।
বিক্রয় কর্মী এখলাস হাসান বলেন, সেনাবাহিনী নামলে পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে মনে করার কারণ নেই। সরকারের কথাবার্তায় এমনটা মনে হয়নি। তবে সেনাবাহিনী তাদের প্রফেশনালিজম ধরে রাখতে চেষ্টা করবে।
বেসরকারি চাকরিজীবী মো. মোহিব্বুল্লাহ বলেন, সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সকল বিরোধী দল এটাই মনে করছে যে, সেনাবাহিনী মাঠে নেমে যদি নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করে তবেই হয়তো পরিস্থিতি শান্ত হবে এবং বিরোধী দলের সকলেই সমানভাবে প্রচার-প্রচারণা চালাতে পারবে। আমিও এটাই মনে করি সেনাবাহিনী নামলে পরিস্থিতির কিছুটা পরিবর্তন হবে।
মফস্বল সাংবাদিক আবদুল আজিজ মনে করেন, পরিস্থিতি কতটা পরিবর্তন হবে সেটা বলা যাবে সেনাবাহিনী কী কী পদক্ষেপ নেয় তার ওপর। তারা যদি মাঠ পর্যায়ে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করে তাহলে হয়তো দেশের মানুষ এর সুফল পাবেন। তারা নির্বিঘ্নে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন।
সাংবাদিকতার শিক্ষার্থী সাদিয়া নওশীনের কথা-আশায় আছি, দেখা যাক কি হয়।
রিকশাচালক ছলিম বলেন, সেনাবাহিনী আইলে খালি মারামারি কমবে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলেন, সেনাবাহিনী মাঠে নামলে অবশ্যই অবস্থার পরিবর্তন হবে। কোনো গ্যাঞ্জাম-হাঙ্গামা হতে দিবে না। তখন শুধুমাত্র মুখ দেখে পুলিশি ধরপাকড় কিছুটা হলেও বন্ধ হবে। সব কিছুই একটি শৃঙ্খলার মধ্যে চলে আসবে।
একজন সংবাদকর্মী বলেন, সেনাবাহিনী মাঠে নামলে পরিস্থিতি কতোটা পরিবর্তন কিংবা উন্নতি হবে সেটা ডিপেন্ড করছে অন্যদের ওপর। কারণ প্রাইমারি ফোর্সতো হচ্ছে আনসার, বিজিবি, পুলিশ। ওরা সেনাবাহিনী থাকবে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে। সুতরাং পুলিশ যদি বলে আমরা এখানে আছি অন্য কাউকে দরকার নেই। আর পুলিশ আল্টিমেটলি না ডাকলে সেনাবাহিনী যাবে না।
পিটিআইয়ের নির্মাণ শ্রমিক আবুল কালাম বলেন, সেনাবাহিনী এলে পরিবর্তন হবে। কোনো হুড়-হাঙ্গামা থাকবে না। পরিবেশ কিছুটা শান্ত হবে। মোটকথা এখনকার থেকে কম ঝামেলা হবে।
লেগুনা ড্রাইভার মো. শামীম বলেন, সেনাবাহিনী নামার পরে দেখা যাক কি হয়। আশা করি ভালো কিছু হবে। তারা যদি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করে তাহলে অবশ্যই অবস্থার পরিবর্তন আসবে।
চা দোকানদার সেলিম বলেন, সেনাবাহিনী এলে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। কোনো গ্যাঞ্জাম হবে না। কোনো সরকার এলো বা না এলো সেটা আমাদের দেখার বিষয় না। জনগণ নির্ভয়ে ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিতে চায়। যে সরকার ভালো কাজ করবে আমরা তাকেই ভোট দিবো।
ঝালমুড়ি বিক্রেতা ছালাম সরদার বলেন, হয় দেখা যাক। এখনো সময় আছে। তবে ধীরে ধীরে অবস্থার পরিবর্তন হবেই।
বাংলালিংকের ভ্রাম্যমাণ সিমকার্ড বিক্রেতা মো. আরিফুজ্জামান মিলন বলেন, আমরা চাই সেনাবাহিনী আসুক। তারা এলে সবাই নির্ভয়ে থাকবে। গ্যাঞ্জাম-ফ্যাসাদ হবে না।
জুতা মেরামতের কাজ করা স্বপন দাস বলেন, সেনাবাহিনী আরো আগে দেয়া উচিত ছিল। দেরিতে হলেও সেনাবাহিনী এলে ভালো হবে।
সিমেন্ট ব্যবসায়ী ননী গোপাল বলেন, সেনাবাহিনী নামলে বিএনপি মাঠে নামতে পারবে।
ব্যবসায়ী মো. মাহমুদুর রহমান বলেন, আমি মনে করি এখন পরিস্থিতি নরমাল ও স্বাভাবিক আছে। পুলিশ নিজেদের মতো করে একরকম দায়িত্ব পালন করছে। তবে এটাও ঠিক যে, সেনাবাহিনীকে সবাই ভয় পায়। সম্মান করে।
তালা মিস্ত্রি শামীম বলেন, সেনাবাহিনী এলে অবশ্যই পরিবর্তন হবে। সবজি বিক্রেতা মজিবর বলেন, সেনাবাহিনী এলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে। জনগণের জন্য সুবিধা হবে। সবাই নিরাপদে থাকবে। কোনো ঝামেলা হবে না। সবদিকেই সুবিধা হবে। লেপ-তোষক বিক্রেতা নাইম বলেন, সেনাবাহিনী এলে ভালো হবে। এখনতো বিএনপি পোস্টার লাগাতে পারে না। মাঠে প্রচারণায় নামতে পারছে না। এখন নির্দিষ্ট এক পার্টি একপাক্ষিকভাবে মাঠে নামছে। তখন দুই পার্টিই মাঠে নামতে পারবে।
চাল ব্যবসায়ী স্বপন বলেন, অবস্থার আর কি পরিবর্তন হবে।
আগারগাঁও আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. তায়েফ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনী যদি আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দু’পক্ষের হয়ে কাজ করে তাহলে অবস্থার পরিবর্তন হবে।
পুলিশ সদস্য ট্রাফিক কনস্টেবল মোকসেদ বলেন, এটাতো আগের থেকেই হয়ে আসছে। নির্বাচনের সময় প্রত্যেক বাহিনীর লোক অংশ নিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন করবে এটাই নিয়ম। শুধুমাত্র পুলিশ দিয়েতো কাজ হবে না। সব বাহিনীর সহযোগিতা লাগবে।
ভাঙাড়ি ব্যবসায়ী আল-আমিন বলেন, সেনাবাহিনী নামলে মানুষের মনে যে একটি ভয় আছে সেটা থাকবে না। এখন সঠিকভাবে ভোট দিতে পারবো কি না এটা নিয়ে বড় টেনশনে আছি।
মাংস বিক্রেতা মো. খোকন কসাই বলেন, কোন পরিবর্তন আসবে বলে মনে হয় না। দেশ তো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে যায়নি। দলীয় সরকারই এখনো রয়ে গেছে।
বনানীর চেয়ারম্যান বাড়ি এলাকার পত্রিকা বিক্রেতা সিরাজুল ইসলাম বলেন, সরকার ক্ষমতার যত্রতত্র ব্যবহার করছে, যার জন্য নির্বাচনে বিরোধী দল কোনো ভূমিকাই রাখতে পারছে না। এটা কিন্তু ভালো লক্ষণ নয়।
গুলশান-১ এ লোটাস কামাল টাওয়ারের সামনের চা দোকানি আলী হোসেন বলেন, সেনাবাহিনী আসলে সবার জন্য সুবিধা। আর না আসলে ক্ষমতায় থাকা দল সবসময়ই বিরোধী দলকে জুলুম করে। এক দল আরেক দলকে কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়ার চেষ্টা করে। এতে সাধারণ ভোটাররা সবসময়ই আতঙ্কে থাকে। তাই আমার মনে হয় সেনাবাহিনী আসলে এটা আর হবে না। সবাই নিরাপদ থাকবে।
মহাখালী রসুলবাগের বাসিন্দা নাদের মিয়া বলেন, দিনে দিনে এই দেশ গণতন্ত্রহীন হয়ে যাচ্ছে, ভোট কেন্দ্রেও এই প্রভাব পড়বে। কেন্দ্র দখল করতে পারে সরকারদলীয় লোকজন। ফলে সাধারণ ভোটারদের হতাহতের সম্ভাবনা থাকতে পারে। সেই ক্ষেত্রে সেনাবাহিনী আসলে সবার জন্যই ভালো হবে।
পান্থপথের বাসিন্দা ইলিয়াস আকবর বলেন, এবার যদি কেন্দ্রে গিয়ে সাধারণ ভোটাররা ভোট দিতে না পারেন এর পরিণতি সারা দেশের মানুষ ভয়াবহভাবে ভোগ করবে। ভোটারদের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতে হবে নির্বাচন কমিশনের। সেই ক্ষেত্রে যে যে পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন সেটাই করতে হবে। আর সেনাবাহিনী আসলে তো কোনো কথাই নেই, একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আমরা দেখতে পাবো।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আমজাদ হোসাইন বলেন, জীবনে প্রথম ভোট দেবো। প্রথম ভোটটা যেন ভোটকেন্দ্রে গিয়ে সঠিকভাবে নিরাপদে দিতে পারি এটিই চাওয়া। কিন্তু গত ২০১৪ সালের ভোটের মতো আমি চাই সেনাবাহিনীকে তাদের ক্ষমতা দিয়ে নির্বাচনকালীন সময়টাতে রাখা হোক তাহলে মানুষ নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারবে।
No comments