নির্বাচনকালীন দল নিরপেক্ষ সরকারের বিকল্প নেই -ঐক্যপ্রক্রিয়ার আলোচনা সভা
জাতীয়
ঐক্য প্রক্রিয়ার আলোচনাসভায় বক্তারা বলেছেন, নির্বাচনকালীন দলনিরপেক্ষ
সরকারের কোনো বিকল্প নেই। তাছাড়া ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অধীনে অবাধ,
সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনেরও কোনো সম্ভাবনা নেই। দেশের মানুষের আস্থাও
নেই। সংবিধানের অজুহাত দিয়ে বর্তমান সরকার আবার ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন করলে
দেশে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে। তাই প্রয়োজনে নির্বাচনের আগেই সংবিধান
সংশোধন করে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের দাবি জানিয়েছেন বক্তারা।
গতকাল বুধবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় পেশাজীবীরা এসব মত প্রকাশ করেন। ‘নির্বাচনকালীন দলনিরপেক্ষ সরকারের অপরিহার্যতা’- শীর্ষক আলোচনা সভায় রাজনীতিবিদসহ বিভিন্ন পেশার প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
সভাপতির বক্তব্যে ড. কামাল হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধু স্বাক্ষরিত সংবিধানে দেশের মালিক জনগণ। কিন্তু অনেকদিন ধরে জনগণ সেই আত্মবিশ্বাস হারাচ্ছে। সেই ক্ষমতা থেকে দেশের মালিককে দূরে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে। অথচ সেই সংবিধান এখনও আছে। অনেক কাটাছাঁটার পরও চার মূলনীতি এখনও বজায় আছে। এর মধ্যে ১ নম্বর হচ্ছে- গণতন্ত্র। প্রত্যেক নাগরিকের চাওয়া হলো গণতন্ত্র। ভোটের দিন সবাই তোয়াজ করে। তারপর দিন আমরা আর মালিক থাকি না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি বিভাগে ৪০ জন অধ্যাপক রয়েছে বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
এ সময় তিনি আরো বলেন, রাজনীতি থেকে এখন নীতি সরে গেছে। এটা একটা ঘাটতি। এখন দেশে দালানের ঘাটতি নেই। অনেক গাড়ি-ঘোড়া হয়েছে। কীসের ঘাটতি রয়ে গেছে। তা ভাবতে হবে। এখন ভোটটা সঠিক হতে হবে। ৯ মাস যুদ্ধে দেশ স্বাধীন হয়েছে। বঙ্গবন্ধু অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন। এখন আমাদের প্রতিনিধিত্বশীল গণতন্ত্র নিশ্চিত করতে হবে।
এ সময় তিনি আরো বলেন, এমপিদের মাননীয় বলা হয়। মাননীয় অনেক বড় কথা। কিন্তু মাননীয় এমপিরা যদি অন্ধ- বোবা হয়ে থাকেন। তারা সংসদের জনগণের আশা-প্রয়োজন, ঘাটতি নিয়ে কী বলেন? সংসদে অর্থপূর্ণ কোন আলোচনা হচ্ছে? অংশগ্রহণমূলক প্রতিনিধিত্বশীল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। মেধাবীদের নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনায় অংশ নিতে হবে। কৃষক, শ্রমিক, মেহনতি মানুষ দেশপ্রেমিক উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাদের পরিশ্রমেই দেশের উৎপাদন বেড়েছে। দেশের এক নম্বর রোগ হচ্ছে দলীয়করণ। দলীয় সরকার হয়। কিন্তু দলীয়করণ ও সরকার এক নয়। দলের লোক সব পাচ্ছে। দলের নয় বলে গণ্য হচ্ছে এমন লোক কিছু পাচ্ছে না। জনগণের ঐক্যের মধ্য দিয়ে সব মোকাবিলা করতে হবে। কিন্তু যারা অনৈক্য চায় তারা সংগঠিত। তারা কালো টাকার মালিক। এটা বোঝার সময় এসেছে। আমি কালো টাকার মালিক না। অনেক রাজনীতিবিদ সংকটের কথা বলে। সংকটের কথা বলে তারা সংকট সৃষ্টি করে। তাদের কাছ থেকে মুক্তি হলে সংকট মুক্ত হবো। আমরা অবশ্যই ভোট দাবি করি।
দেশে মনোনয়নে পায়ের ধুলো নেয়ার রাজনীতি চলছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটা স্বাধীন দেশের কালচার হতে পারে না। এটাকে কবর দিতে হবে। টাকা দিয়ে মনোনয়ন হবে না।
অবাধ নির্বাচনের দাবিতে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া নিয়ে তিনি বলেন, আমি লেগে থাকব। আপনারা সবাই পাড়া, মহল্লায় যুক্তি দিয়ে কথা বলুন। লুট হয়ে যওয়ার কোটি কোটি টাকার হিসাব চান। বলা হয় জবাবদিহিতার সরকার। কীসের জবাব দিয়েছে। এখন আমরা উত্তর চাই। শুধু দেশে থাকলেই হয় না। দেশে থেকে আমরা কী করছি। এখন দরকার জনগণের ঐক্য।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি’র সভাপতি আ স ম আবদুর রব ড. কামাল হোসেনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, এই মানুষটা ব্যক্তি নয়। একটা ইনস্টিটিউশন। তিনি এমন এক ব্যক্তি। যার ডাকে সবাই আসেন। তিনি প্রায় সময় বলেন, দেশের মালিক জনগণ। কিন্তু সেই মালিকানা চুরি হয়ে গেছে। রাষ্ট্র পরিচালনায় পেশাজীবীদের অংশগ্রহণ নেই। ধনী ও গরিবের মধ্যে ৮০ ভাগ পেশাজীবী। কৃষক-শ্রমিকদের কেউ কী পার্লামেন্টে আছে। বিদ্যমান অঢ়লাবস্থা, স্বৈরাচার ও রাষ্ট্রব্যবস্থা, হাতুড়ি তন্ত্র, হেলমেট বন্ধ করতে হবে। এখন ড. কামালের বিরুদ্ধে গালাগালি শুরু হয়েছে। সরকারি দলের লোক এ কী বলে? একলাখ লোক মারা যাবে। জীবনের নিশ্চয়তা কোথায়। আমাদের রাষ্ট্রব্যবস্থায় গুণগত পরিবর্তন আনতে হবে। অংশীদারিত্বের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
তত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন বলেন, একটা বিপদ আসছে। রক্তপাত হবে। বলা হচ্ছে, লাখ লাখ লোক মারা যাবে। দেশে থাকতে পারবে না। এত কিছুর দরকার নেই। শান্তিপূর্ণভাবে ড. কামালের নেতৃত্বে একটা উপায় বের করে নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে হবে।
আলোচনা সভায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, গত কয়েকদিনের ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী উদ্বিগ্ন। প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেন, কিন্তু সবার অধিকার স্বীকার করেন না। দল নিরপেক্ষ সরকার গঠন করতে গেলে কার কী ভূমিকা প্রয়োজন। রাজবন্দিদের মুক্তি দিতে হবে। জামিন দিতে হবে। কোর্টের বিচার কারাগারে, তা ন্যায়বিচার নয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ১০ দিনে ১৪টা আইন প্রণয়ন করলেন। তাহলে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য সংবিধান আর একবার সংশোধন করতে অসুবিধা কোথায়।
গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু বলেন, জনগণের সরকার করতে হবে। দেশের মানুষ আজকে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে যেমনি আমরা অতীতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলাম। আমার বিশ্বাস জনগণেরই জয় হবে। আওয়ামী লীগ যারা করে তাদের বলবো, জনগণের অধিকার আদায়ের জন্য আপনারাও আসেন। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন।
এফবিসিসিআিই-এর সাবেক সভাপতি বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, দেশে গণতন্ত্র না গুণ্ডাতন্ত্র তা বোঝা যায় না। কতিপয় সুবিধাতন্ত্র চলছে। আজকে আমরা গণতন্ত্রের নামে স্বেচ্ছাচারিতা প্রতিষ্ঠা করেছি। এর থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।
জানালার দিকে তাকিয়ে থাকলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হবে না- মন্তব্য করে তিনি বলেন, যে সমাজ নিজেদের গণতান্ত্রিক করেছে, তাদেরকে সেটার জন্য দীর্ঘ সংগ্রাম ও অনেক ত্যাগ করতে হয়েছে। দেশের ‘ক্রান্তিকালে’ ‘অভিভাবক’ হিসেবে এগিয়ে আসায় ড. কামাল হোসেনকে অভিনন্দন জানান মিন্টু।
ডাকসু’র সাবেক ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ বলেন, জাতীয় ঐক্য হচ্ছে জনগণের মনের, হৃদয়ের প্রতিধ্বনি। বেগম খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দিকে মুক্তি দিয়ে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত জনগণ জাতীয় ঐক্যের পক্ষে। আমি সরকারকে চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলছি ঢাকার ১২টি আসনে যদি একটি দল নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন দেখবেন আপনাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে। এটা না হলে আমি আর রাজনীতি করবো না।
ড. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে ও জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সদস্য সচিব আ ব ম মোস্তাফা আমীনের পরিচালনায় আলোচনা সভায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নাল আবেদীন, সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নুরুল আমিন বেপারী, অধ্যাপক সি আর আবরার, সাংবাদিক মাহফুজউল্লাহ, সুপ্রিম কোর্ট গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট, সুব্রত চৌধুরী, জগলুল হায়দার আফ্রিক, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতা মোশতাক আহমেদ, হাবিবুর রহমান, এটিএম গোলাম মওলা চৌধুরী, নুরুল হুদা নিলু চৌধুরী, ব্যবসায়ী নেতা মশিউর রহমান বাবু, এমএ হানিফ শরীফ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এছাড়া অনুষ্ঠানে বিএনপি’র নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের শরিক ইসলামী ঐক্যজোটের এমএ রকীব, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ন্যাপ-ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, জাগপা’র খোন্দকার লুৎফর রহমান, আসাদুর রহমান খানসহ বিভিন্ন পেশাজীবীর লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
গতকাল বুধবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় পেশাজীবীরা এসব মত প্রকাশ করেন। ‘নির্বাচনকালীন দলনিরপেক্ষ সরকারের অপরিহার্যতা’- শীর্ষক আলোচনা সভায় রাজনীতিবিদসহ বিভিন্ন পেশার প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
সভাপতির বক্তব্যে ড. কামাল হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধু স্বাক্ষরিত সংবিধানে দেশের মালিক জনগণ। কিন্তু অনেকদিন ধরে জনগণ সেই আত্মবিশ্বাস হারাচ্ছে। সেই ক্ষমতা থেকে দেশের মালিককে দূরে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে। অথচ সেই সংবিধান এখনও আছে। অনেক কাটাছাঁটার পরও চার মূলনীতি এখনও বজায় আছে। এর মধ্যে ১ নম্বর হচ্ছে- গণতন্ত্র। প্রত্যেক নাগরিকের চাওয়া হলো গণতন্ত্র। ভোটের দিন সবাই তোয়াজ করে। তারপর দিন আমরা আর মালিক থাকি না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি বিভাগে ৪০ জন অধ্যাপক রয়েছে বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
এ সময় তিনি আরো বলেন, রাজনীতি থেকে এখন নীতি সরে গেছে। এটা একটা ঘাটতি। এখন দেশে দালানের ঘাটতি নেই। অনেক গাড়ি-ঘোড়া হয়েছে। কীসের ঘাটতি রয়ে গেছে। তা ভাবতে হবে। এখন ভোটটা সঠিক হতে হবে। ৯ মাস যুদ্ধে দেশ স্বাধীন হয়েছে। বঙ্গবন্ধু অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন। এখন আমাদের প্রতিনিধিত্বশীল গণতন্ত্র নিশ্চিত করতে হবে।
এ সময় তিনি আরো বলেন, এমপিদের মাননীয় বলা হয়। মাননীয় অনেক বড় কথা। কিন্তু মাননীয় এমপিরা যদি অন্ধ- বোবা হয়ে থাকেন। তারা সংসদের জনগণের আশা-প্রয়োজন, ঘাটতি নিয়ে কী বলেন? সংসদে অর্থপূর্ণ কোন আলোচনা হচ্ছে? অংশগ্রহণমূলক প্রতিনিধিত্বশীল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। মেধাবীদের নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনায় অংশ নিতে হবে। কৃষক, শ্রমিক, মেহনতি মানুষ দেশপ্রেমিক উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাদের পরিশ্রমেই দেশের উৎপাদন বেড়েছে। দেশের এক নম্বর রোগ হচ্ছে দলীয়করণ। দলীয় সরকার হয়। কিন্তু দলীয়করণ ও সরকার এক নয়। দলের লোক সব পাচ্ছে। দলের নয় বলে গণ্য হচ্ছে এমন লোক কিছু পাচ্ছে না। জনগণের ঐক্যের মধ্য দিয়ে সব মোকাবিলা করতে হবে। কিন্তু যারা অনৈক্য চায় তারা সংগঠিত। তারা কালো টাকার মালিক। এটা বোঝার সময় এসেছে। আমি কালো টাকার মালিক না। অনেক রাজনীতিবিদ সংকটের কথা বলে। সংকটের কথা বলে তারা সংকট সৃষ্টি করে। তাদের কাছ থেকে মুক্তি হলে সংকট মুক্ত হবো। আমরা অবশ্যই ভোট দাবি করি।
দেশে মনোনয়নে পায়ের ধুলো নেয়ার রাজনীতি চলছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটা স্বাধীন দেশের কালচার হতে পারে না। এটাকে কবর দিতে হবে। টাকা দিয়ে মনোনয়ন হবে না।
অবাধ নির্বাচনের দাবিতে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া নিয়ে তিনি বলেন, আমি লেগে থাকব। আপনারা সবাই পাড়া, মহল্লায় যুক্তি দিয়ে কথা বলুন। লুট হয়ে যওয়ার কোটি কোটি টাকার হিসাব চান। বলা হয় জবাবদিহিতার সরকার। কীসের জবাব দিয়েছে। এখন আমরা উত্তর চাই। শুধু দেশে থাকলেই হয় না। দেশে থেকে আমরা কী করছি। এখন দরকার জনগণের ঐক্য।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি’র সভাপতি আ স ম আবদুর রব ড. কামাল হোসেনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, এই মানুষটা ব্যক্তি নয়। একটা ইনস্টিটিউশন। তিনি এমন এক ব্যক্তি। যার ডাকে সবাই আসেন। তিনি প্রায় সময় বলেন, দেশের মালিক জনগণ। কিন্তু সেই মালিকানা চুরি হয়ে গেছে। রাষ্ট্র পরিচালনায় পেশাজীবীদের অংশগ্রহণ নেই। ধনী ও গরিবের মধ্যে ৮০ ভাগ পেশাজীবী। কৃষক-শ্রমিকদের কেউ কী পার্লামেন্টে আছে। বিদ্যমান অঢ়লাবস্থা, স্বৈরাচার ও রাষ্ট্রব্যবস্থা, হাতুড়ি তন্ত্র, হেলমেট বন্ধ করতে হবে। এখন ড. কামালের বিরুদ্ধে গালাগালি শুরু হয়েছে। সরকারি দলের লোক এ কী বলে? একলাখ লোক মারা যাবে। জীবনের নিশ্চয়তা কোথায়। আমাদের রাষ্ট্রব্যবস্থায় গুণগত পরিবর্তন আনতে হবে। অংশীদারিত্বের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
তত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন বলেন, একটা বিপদ আসছে। রক্তপাত হবে। বলা হচ্ছে, লাখ লাখ লোক মারা যাবে। দেশে থাকতে পারবে না। এত কিছুর দরকার নেই। শান্তিপূর্ণভাবে ড. কামালের নেতৃত্বে একটা উপায় বের করে নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে হবে।
আলোচনা সভায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, গত কয়েকদিনের ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী উদ্বিগ্ন। প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেন, কিন্তু সবার অধিকার স্বীকার করেন না। দল নিরপেক্ষ সরকার গঠন করতে গেলে কার কী ভূমিকা প্রয়োজন। রাজবন্দিদের মুক্তি দিতে হবে। জামিন দিতে হবে। কোর্টের বিচার কারাগারে, তা ন্যায়বিচার নয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ১০ দিনে ১৪টা আইন প্রণয়ন করলেন। তাহলে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য সংবিধান আর একবার সংশোধন করতে অসুবিধা কোথায়।
গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু বলেন, জনগণের সরকার করতে হবে। দেশের মানুষ আজকে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে যেমনি আমরা অতীতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলাম। আমার বিশ্বাস জনগণেরই জয় হবে। আওয়ামী লীগ যারা করে তাদের বলবো, জনগণের অধিকার আদায়ের জন্য আপনারাও আসেন। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন।
এফবিসিসিআিই-এর সাবেক সভাপতি বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, দেশে গণতন্ত্র না গুণ্ডাতন্ত্র তা বোঝা যায় না। কতিপয় সুবিধাতন্ত্র চলছে। আজকে আমরা গণতন্ত্রের নামে স্বেচ্ছাচারিতা প্রতিষ্ঠা করেছি। এর থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।
জানালার দিকে তাকিয়ে থাকলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হবে না- মন্তব্য করে তিনি বলেন, যে সমাজ নিজেদের গণতান্ত্রিক করেছে, তাদেরকে সেটার জন্য দীর্ঘ সংগ্রাম ও অনেক ত্যাগ করতে হয়েছে। দেশের ‘ক্রান্তিকালে’ ‘অভিভাবক’ হিসেবে এগিয়ে আসায় ড. কামাল হোসেনকে অভিনন্দন জানান মিন্টু।
ডাকসু’র সাবেক ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ বলেন, জাতীয় ঐক্য হচ্ছে জনগণের মনের, হৃদয়ের প্রতিধ্বনি। বেগম খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দিকে মুক্তি দিয়ে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত জনগণ জাতীয় ঐক্যের পক্ষে। আমি সরকারকে চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলছি ঢাকার ১২টি আসনে যদি একটি দল নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন দেখবেন আপনাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে। এটা না হলে আমি আর রাজনীতি করবো না।
ড. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে ও জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সদস্য সচিব আ ব ম মোস্তাফা আমীনের পরিচালনায় আলোচনা সভায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নাল আবেদীন, সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নুরুল আমিন বেপারী, অধ্যাপক সি আর আবরার, সাংবাদিক মাহফুজউল্লাহ, সুপ্রিম কোর্ট গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট, সুব্রত চৌধুরী, জগলুল হায়দার আফ্রিক, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতা মোশতাক আহমেদ, হাবিবুর রহমান, এটিএম গোলাম মওলা চৌধুরী, নুরুল হুদা নিলু চৌধুরী, ব্যবসায়ী নেতা মশিউর রহমান বাবু, এমএ হানিফ শরীফ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এছাড়া অনুষ্ঠানে বিএনপি’র নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের শরিক ইসলামী ঐক্যজোটের এমএ রকীব, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ন্যাপ-ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, জাগপা’র খোন্দকার লুৎফর রহমান, আসাদুর রহমান খানসহ বিভিন্ন পেশাজীবীর লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
No comments