পাঁচ জেলা থেকেই সেসময় ভারতে আশ্রয় নিয়েছিল ২৯,৯০০ জন
আইনটি
নামেই বদলেছে। কখনো ‘শত্রু সম্পত্তি’। কখনো ‘অনাবাসী সম্পত্তি’। ১৯৬৯ সালে
আইনটি করেছিল পাকিস্তান সরকার। একাত্তরে দেশ স্বাধীন হলে মানুষ স্বপ্ন
দেখেছিল শান্তিপূর্ণভাবে বসবাসের। পূর্ব পুরুষের ভিটেমাটিতে নিজেদের শান্তি
অন্বেষণের। স্বপ্নভঙ্গ হলো অচিরেই। হিন্দুরা ভেবেছিল স্বাধীন দেশে ধর্মীয়
সহনশীলতা থাকবে। রাষ্ট্র ধর্ম নিরপেক্ষ হবে। অতীতের দুঃখভোগ শেষ হবে। সকলেই
আইনের চোখে সমান বিবেচিত হবে। হলো উলটো। দেশ স্বাধীন হলে আইনগুলো বদলাতে
থাকে। নতুন নতুন আইন প্রণীত হয়। কিন্তু পাকিস্তান আমলে প্রণীত অবৈধ সরকারের
করা ‘শত্রু সম্পত্তি’ আইন নামে বদলালেও একই থাকে। হিন্দুদের সম্পত্তি
ওয়েস্টেড বা অনাবাসী সম্পত্তি বলে শত্রু সম্পত্তি হিসাবেই ব্যবহার হয়ে আসে।
সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা প্রকাশিত ‘ব্রোকেন ড্রিম: রুল অব ল, হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেমোক্রেসি’ বইতে সময়চক্রে শাসক বদলের সঙ্গে সঙ্গে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় যেভাবে দেশ ত্যাগ করেছিল তার উল্লেখ করেছেন। বিভিন্ন সূত্রের বরাদ দিয়ে তিনি লিখেছেন, ১৯৬১ সালে পূর্ব পাকিস্তানে হিন্দু নাগরিকের সংখ্য ছিল ১৮.৫ শতাংশ। ১৯৭৪ সালে তা এসে দাঁড়ায় ১৩.৫ শতাংশে। ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম ঘোষণার পর ১৯৯৮ সালে হিন্দু জনগোষ্ঠী দাঁড়ায় ১০.৫ শতাংশে। সেসময় পাঁচ জেলা থেকেই ভারতে আশ্রয় চেয়েছিল আনুমানিক ২৯,৯০০ মানুষ। জেলাওয়ারি এই হিসাবটি দাঁড়ায় কুমিল্লা থেকে ১০,০০০, নাটোরে ১২,০০০, চট্টগ্রামে ৫,০০০, পবনায় ৬০০ ও ঝিনাইদহের ৫০০ মানুষ। এই সময়কালে নয় জেলায় ত্রিশটি মন্দির ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ১৯৭৭ সালে ২৭শে মার্চ সংবাদ প্রকাশিত রিপোর্টে জানা যায়, সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী ৭০২,৩৩৫ একর বা ২৮৮২ বর্গকিলোমিটার চাষযোগ্য জমি এবং ২২,৮৩৫টি বাড়ি শত্রু সম্পত্তি (রনরফ) হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়।
অধ্যাপক আবুল বারাকাত তার রিপোর্টে উল্লেখ করেছেন, ৯২,০৫০৫০ হিন্দু পরিবার (বাংলাদেশে হিন্দু পরিবারের ৪০%) শত্রু সম্পত্তি আইন দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে। যার মধ্যে ৭৪৮,৮৫০টি পরিবারের কৃষি জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। এই বৈষম্যমূলক কাজের কারণে হিন্দু পরিবারের হারিয়ে যাওয়া জমির পরিমাণ ১.৪ মিলিয়ন একর (৬,৬৪০ বর্গকিলোমিটার)। যা হিন্দু সম্প্রদায়ের মালিকানাধীন মোট ভূমি ৫৩ শতাংশ এবং মোট এলাকার ৫.৩ শতাংশ। আর হিন্দু পরিবারের সম্পত্তি দখলদারদের তালিকায় রয়েছে সকল রাজনৈতিক দল। প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ৪৪,২%, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ৩১.৭%, জাতীয় পার্টি ৫.৮%, জামায়াতে ইসলামী ৪.৮% এবং অন্যান্য ১৩.৫%।
অগণিত সাধারণ হিন্দু সম্প্রদায় শুধু ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তেমনটি নয় শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের সম্পত্তি এবং অর্থনীতিতে নোবেল জয়ী অমর্ত সেনের পরিবারের সম্পত্তিও দখলের তালিকায় রয়েছে। পাকিস্তান আমলে প্রণীত আইনের আদলে হিন্দু সম্পত্তি শত্রু সম্পত্তি রাখার পক্ষে কোনো যুক্তি নেই উল্লেখ করে সিনহা বলেন, আইনটি বাতিলের জন্য আন্দোলন করলেও সরকার এ ব্যাপারে মনযোগ দেয়নি।
সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা প্রকাশিত ‘ব্রোকেন ড্রিম: রুল অব ল, হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেমোক্রেসি’ বইতে সময়চক্রে শাসক বদলের সঙ্গে সঙ্গে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় যেভাবে দেশ ত্যাগ করেছিল তার উল্লেখ করেছেন। বিভিন্ন সূত্রের বরাদ দিয়ে তিনি লিখেছেন, ১৯৬১ সালে পূর্ব পাকিস্তানে হিন্দু নাগরিকের সংখ্য ছিল ১৮.৫ শতাংশ। ১৯৭৪ সালে তা এসে দাঁড়ায় ১৩.৫ শতাংশে। ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম ঘোষণার পর ১৯৯৮ সালে হিন্দু জনগোষ্ঠী দাঁড়ায় ১০.৫ শতাংশে। সেসময় পাঁচ জেলা থেকেই ভারতে আশ্রয় চেয়েছিল আনুমানিক ২৯,৯০০ মানুষ। জেলাওয়ারি এই হিসাবটি দাঁড়ায় কুমিল্লা থেকে ১০,০০০, নাটোরে ১২,০০০, চট্টগ্রামে ৫,০০০, পবনায় ৬০০ ও ঝিনাইদহের ৫০০ মানুষ। এই সময়কালে নয় জেলায় ত্রিশটি মন্দির ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ১৯৭৭ সালে ২৭শে মার্চ সংবাদ প্রকাশিত রিপোর্টে জানা যায়, সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী ৭০২,৩৩৫ একর বা ২৮৮২ বর্গকিলোমিটার চাষযোগ্য জমি এবং ২২,৮৩৫টি বাড়ি শত্রু সম্পত্তি (রনরফ) হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়।
অধ্যাপক আবুল বারাকাত তার রিপোর্টে উল্লেখ করেছেন, ৯২,০৫০৫০ হিন্দু পরিবার (বাংলাদেশে হিন্দু পরিবারের ৪০%) শত্রু সম্পত্তি আইন দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে। যার মধ্যে ৭৪৮,৮৫০টি পরিবারের কৃষি জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। এই বৈষম্যমূলক কাজের কারণে হিন্দু পরিবারের হারিয়ে যাওয়া জমির পরিমাণ ১.৪ মিলিয়ন একর (৬,৬৪০ বর্গকিলোমিটার)। যা হিন্দু সম্প্রদায়ের মালিকানাধীন মোট ভূমি ৫৩ শতাংশ এবং মোট এলাকার ৫.৩ শতাংশ। আর হিন্দু পরিবারের সম্পত্তি দখলদারদের তালিকায় রয়েছে সকল রাজনৈতিক দল। প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ৪৪,২%, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ৩১.৭%, জাতীয় পার্টি ৫.৮%, জামায়াতে ইসলামী ৪.৮% এবং অন্যান্য ১৩.৫%।
অগণিত সাধারণ হিন্দু সম্প্রদায় শুধু ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তেমনটি নয় শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের সম্পত্তি এবং অর্থনীতিতে নোবেল জয়ী অমর্ত সেনের পরিবারের সম্পত্তিও দখলের তালিকায় রয়েছে। পাকিস্তান আমলে প্রণীত আইনের আদলে হিন্দু সম্পত্তি শত্রু সম্পত্তি রাখার পক্ষে কোনো যুক্তি নেই উল্লেখ করে সিনহা বলেন, আইনটি বাতিলের জন্য আন্দোলন করলেও সরকার এ ব্যাপারে মনযোগ দেয়নি।
No comments