গ্রেপ্তারের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করলেন সজীব ওয়াজেদ
এই
গ্রীষ্মে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় গতিশীল একটি বাসের ধাক্কায় দুই
শিক্ষার্থী নিহত হয়। তাদের ভয়াবহ এই মৃত্যুতে জাতীয় পর্যায়ে এর প্রতিফলন
ঘটেছে। শিক্ষার্থীরা, তাদের বেশির ভাগই হাইস্কুল পড়ুয়া, অবকাঠামোর উন্নতির
দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে এবং সরকার তাদের কথা শুনেছে।
বিক্ষোভ শুরুর অল্প পরেই বাংলাদেশ সরকার শিক্ষার্থীদের সব দাবির প্রতি একমত পোষণ করে। এক্ষেত্রে পরিবর্তন বাস্তবায়ন শুরু করার জন্য সরকারকে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তিনি শিক্ষার্থীদের ঘরে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করেন। কারণ, তাদের আন্দোলন সফল হয়েছে।
দুর্ভাগ্যজনক হলো, বিরোধী দলের নেতারা, বিশেষ করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির নেতারা বিক্ষোভ অব্যাহত রাখার জন্য চাপ দিতে থাকে এবং সক্রিয়ভাবে তাদেরকে সহিংস হয়ে উঠার আহ্বান জানান। এই উস্কানির জন্য যারা দায়ী তাদের মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশী ফটো সাংবাদিক শহিদুল আলম। সহিংসতা উস্কে দেয়ার জন্য তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যার জন্য প্রকৃত সত্য থাকা সত্ত্বেও তার পক্ষে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
যেসব সাংবাদিকের লেখা সেন্সর করা হয় অথবা উন্নয়নশীল দেশগুলোতে যারা আটক সেই সব সাংবাদিকদের লেখা পড়তেই অভ্যস্ত পশ্চিমা পাঠকরা। ‘ব্যাড গাই’ সব সময়ই সরকারকে নিয়ে বক্রোক্তি করে। কিন্তু এক্ষেত্রে শহিদুল আলমকে গ্রেপ্তার ও যে সহিংসতা ছড়িয়ে দিতে তিনি সহায়তা করেছিলেন তা দমন করা ছাড়া সরকারের সামনে কোন বিকল্প ছিল না। সরকার নিজের রাজনৈতিক অবস্থানকে রক্ষা করার চেষ্টা করেনি। যা করেছে তা হলো নাগরিকদেরকে রক্ষা করার চেষ্টা।
বিরোধীরা সরকারের কর্তৃত্বপরায়ণতা সম্পর্কে পুরনো একটি কৌশল ছড়িয়ে দেয়ার জন্য ব্যবহার করছে পশ্চিমা মিডিয়াকে। কিন্তু এই ক্লিকের চেয়ে বাংলাদেশের অবস্থা অন্যরকম। এমনকি সরকার যা করেছে তার পক্ষেই কথা বলছে সরকার। শহিদুল আলম একজন ভিকটিম নন। তার কর্মকান্ড বিপুল সংখ্যক মানুষের ক্ষতি করেছে।
শহিদুল আলম বাংলাদেশে দীর্ঘ সময় ভিন্নমত পোষণ করে আসছেন। সব বাংলাদেশী যেমনটা তাদের মত প্রকাশের ক্ষেত্রে স্বাধীন, তিনিও সেরকমভাবে মত প্রকাশের ক্ষেত্রে স্বাধীন। বাংলাদেশের প্রেস গতিশীল। এখানে রয়েছে ৩০০ সংবাদপত্র। ৩০টি বেসরকারি মালিকানাধীন সংবাদ বিষয়ক নেটওয়ার্ক এবং স্বাধীনভাবে পরিচালিত ২২০টি নিউজ বিষয়ক ওয়েবসাইট। এর মধ্যে অনেকেই সরকারের সমালোচনা করে।
শহিদুল আলমের সর্বশেষ বক্তব্যের জন্য পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও প্রথাগত মিডিয়া আউটলেটের মাধ্যমে এসব কথা বলেছেন। তিনি ছাত্রবিক্ষোভ চলাকালে শিক্ষার্থীদের মৃত্যুর মিথ্যা কথা বলেছেন, যা সহিংসতাকে উস্কে দিয়েছে এবং এর জন্য ক্ষমতাসীন দলের প্রধান কার্যালয়ে হামলা হয়েছে। অকারণে অনেক মানুষ আহত হয়েছেন তার মিথ্যা কথা ও জোরালো বক্তব্যের কারণে। প্রধান কার্যালয়ে হামলায় স্থায়ীভাবে অন্ধ হয়ে গেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের একজন সদস্য।
যুক্তরাষ্ট্রে যখন কোনো থিয়েটারে অগ্নিকান্ড না লাগে তখন যদি কেউ সেখানে আগুন উচ্চারণ করে তা অবৈধ। কিন্তু শহিদুল আলম ঢাকায় এরই সমতুল্য কাজ করেছেন। এ জন্য অপরাধের জন্য যথাযথভাবে তাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
সত্য হলো, বিক্ষোভ চলাকালে কোনো শিক্ষার্থী নিহত হয়নি। উপরন্তু সরকার শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেয়ার পর বিরোধী দলীয় নেতারা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে তাদের নেতাকর্মীদের অনুপ্রবেশ ঘটিয়েছে। এর মাধ্যমে বিরোধী দল ওই বিক্ষোভকে সরকার বিরোধী বিক্ষোভে পরিণত করে সহিংসতার মাধ্যমে।
বিরোধী দলীয় কিছু সদস্য ছাত্রদের বেশ ধরে এ সময় প্ররোচনা দিতে নামে। বাংলাদেশে এই কৌশল খুব ভালভাবে জানা। ২০১৪ সালে জাতীয় নির্বাচনকালে একই রকম ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছিল। তখন বিরোধী দলীয় সদস্যরা যানবাহনে পেট্রোলবোমা মেরেছিল। নির্বাচনে ব্যালটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার চেয়ে তারা পরিবহনে অন্য রকম ক্ষতিসাধনও করেছিল।
সরকার অনেক অর্জন করেছে। এ থেকে মনোযোগ অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেয়ার ইচ্ছা রয়েছে বিরোধী রাজনীতিকদের। সরকার ৩ কোটি মানুষকে দারিদ্র্যমুক্ত করেছে। মাথাপিছু আয় দ্বিগুণেরও বেশি করেছে। এ বছরের শেষের দিকে জাতীয় নির্বাচন। সরকার তার উন্নয়ন কাজের ধারা একই রকম রাখতে চায়। কিন্তু এ সময়ে ছাত্রদের বিক্ষোভকে হাইজ্যাক করেছে তারা (বিরোধী দল)। বিষয়টি সরকার মোকাবিলা করেছে। তারা (বিরোধীরা) চেষ্টা করেছে পরিস্থিতিকে এমনভাবে তুলে ধরতে যাতে বাইরের বিশ্ব বুঝতে পারে সরকার কড়া হাতে শাসন ব্যবস্থা চালাচ্ছে।
কিন্তু বিষয়টি আসলে সত্য নয়। পুলিশ শহিদুল আলমকে প্রহার করেছে বলে তিনি যে দাবি করেছেন, তাও সত্য নয়। নিউ ইয়র্ক টাইমস রিপোর্ট করেছে যে, ‘হাসপাতাল কর্মকর্তারা বলেছেন তার (শহিদুল আলম) দেহে কোন ক্ষত নেই, যার জন্য তাকে হাসপাতালে রাখা যায়’।
ব্যাপকভাবে গৃহীত দায়িত্ব আমাদেরকে জটিল এবং মাঝে মাঝে নৃশংস বিশ্ব সম্পর্কে সঠিক পথে চলতে সহায়তা করে। কখনো কখনো, বাংলাদেশে পরিস্থিতি যেমন, বাস্তবতা হলো ক্লিক। শহিদুল আলম এবং অন্যরা, যারা সরকারের নীতির সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করেন, তারা বলতে পারেন কি চান। কিন্তু এর নাম করে তারা মানুষকে আহত করতে পারেন না। এক্ষেত্রে নাগরিকদের রক্ষা করেছে বাংলাদেশ এবং আবারও তাই করবে।
(সজীব ওয়াজেদ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে ও তার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা। তার এ লেখাটি যুক্তরাষ্ট্রের অনলাইন দ্য ডেইলি কলার-এ প্রকাশিত)
বিক্ষোভ শুরুর অল্প পরেই বাংলাদেশ সরকার শিক্ষার্থীদের সব দাবির প্রতি একমত পোষণ করে। এক্ষেত্রে পরিবর্তন বাস্তবায়ন শুরু করার জন্য সরকারকে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তিনি শিক্ষার্থীদের ঘরে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করেন। কারণ, তাদের আন্দোলন সফল হয়েছে।
দুর্ভাগ্যজনক হলো, বিরোধী দলের নেতারা, বিশেষ করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির নেতারা বিক্ষোভ অব্যাহত রাখার জন্য চাপ দিতে থাকে এবং সক্রিয়ভাবে তাদেরকে সহিংস হয়ে উঠার আহ্বান জানান। এই উস্কানির জন্য যারা দায়ী তাদের মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশী ফটো সাংবাদিক শহিদুল আলম। সহিংসতা উস্কে দেয়ার জন্য তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যার জন্য প্রকৃত সত্য থাকা সত্ত্বেও তার পক্ষে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
যেসব সাংবাদিকের লেখা সেন্সর করা হয় অথবা উন্নয়নশীল দেশগুলোতে যারা আটক সেই সব সাংবাদিকদের লেখা পড়তেই অভ্যস্ত পশ্চিমা পাঠকরা। ‘ব্যাড গাই’ সব সময়ই সরকারকে নিয়ে বক্রোক্তি করে। কিন্তু এক্ষেত্রে শহিদুল আলমকে গ্রেপ্তার ও যে সহিংসতা ছড়িয়ে দিতে তিনি সহায়তা করেছিলেন তা দমন করা ছাড়া সরকারের সামনে কোন বিকল্প ছিল না। সরকার নিজের রাজনৈতিক অবস্থানকে রক্ষা করার চেষ্টা করেনি। যা করেছে তা হলো নাগরিকদেরকে রক্ষা করার চেষ্টা।
বিরোধীরা সরকারের কর্তৃত্বপরায়ণতা সম্পর্কে পুরনো একটি কৌশল ছড়িয়ে দেয়ার জন্য ব্যবহার করছে পশ্চিমা মিডিয়াকে। কিন্তু এই ক্লিকের চেয়ে বাংলাদেশের অবস্থা অন্যরকম। এমনকি সরকার যা করেছে তার পক্ষেই কথা বলছে সরকার। শহিদুল আলম একজন ভিকটিম নন। তার কর্মকান্ড বিপুল সংখ্যক মানুষের ক্ষতি করেছে।
শহিদুল আলম বাংলাদেশে দীর্ঘ সময় ভিন্নমত পোষণ করে আসছেন। সব বাংলাদেশী যেমনটা তাদের মত প্রকাশের ক্ষেত্রে স্বাধীন, তিনিও সেরকমভাবে মত প্রকাশের ক্ষেত্রে স্বাধীন। বাংলাদেশের প্রেস গতিশীল। এখানে রয়েছে ৩০০ সংবাদপত্র। ৩০টি বেসরকারি মালিকানাধীন সংবাদ বিষয়ক নেটওয়ার্ক এবং স্বাধীনভাবে পরিচালিত ২২০টি নিউজ বিষয়ক ওয়েবসাইট। এর মধ্যে অনেকেই সরকারের সমালোচনা করে।
শহিদুল আলমের সর্বশেষ বক্তব্যের জন্য পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও প্রথাগত মিডিয়া আউটলেটের মাধ্যমে এসব কথা বলেছেন। তিনি ছাত্রবিক্ষোভ চলাকালে শিক্ষার্থীদের মৃত্যুর মিথ্যা কথা বলেছেন, যা সহিংসতাকে উস্কে দিয়েছে এবং এর জন্য ক্ষমতাসীন দলের প্রধান কার্যালয়ে হামলা হয়েছে। অকারণে অনেক মানুষ আহত হয়েছেন তার মিথ্যা কথা ও জোরালো বক্তব্যের কারণে। প্রধান কার্যালয়ে হামলায় স্থায়ীভাবে অন্ধ হয়ে গেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের একজন সদস্য।
যুক্তরাষ্ট্রে যখন কোনো থিয়েটারে অগ্নিকান্ড না লাগে তখন যদি কেউ সেখানে আগুন উচ্চারণ করে তা অবৈধ। কিন্তু শহিদুল আলম ঢাকায় এরই সমতুল্য কাজ করেছেন। এ জন্য অপরাধের জন্য যথাযথভাবে তাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
সত্য হলো, বিক্ষোভ চলাকালে কোনো শিক্ষার্থী নিহত হয়নি। উপরন্তু সরকার শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেয়ার পর বিরোধী দলীয় নেতারা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে তাদের নেতাকর্মীদের অনুপ্রবেশ ঘটিয়েছে। এর মাধ্যমে বিরোধী দল ওই বিক্ষোভকে সরকার বিরোধী বিক্ষোভে পরিণত করে সহিংসতার মাধ্যমে।
বিরোধী দলীয় কিছু সদস্য ছাত্রদের বেশ ধরে এ সময় প্ররোচনা দিতে নামে। বাংলাদেশে এই কৌশল খুব ভালভাবে জানা। ২০১৪ সালে জাতীয় নির্বাচনকালে একই রকম ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছিল। তখন বিরোধী দলীয় সদস্যরা যানবাহনে পেট্রোলবোমা মেরেছিল। নির্বাচনে ব্যালটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার চেয়ে তারা পরিবহনে অন্য রকম ক্ষতিসাধনও করেছিল।
সরকার অনেক অর্জন করেছে। এ থেকে মনোযোগ অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেয়ার ইচ্ছা রয়েছে বিরোধী রাজনীতিকদের। সরকার ৩ কোটি মানুষকে দারিদ্র্যমুক্ত করেছে। মাথাপিছু আয় দ্বিগুণেরও বেশি করেছে। এ বছরের শেষের দিকে জাতীয় নির্বাচন। সরকার তার উন্নয়ন কাজের ধারা একই রকম রাখতে চায়। কিন্তু এ সময়ে ছাত্রদের বিক্ষোভকে হাইজ্যাক করেছে তারা (বিরোধী দল)। বিষয়টি সরকার মোকাবিলা করেছে। তারা (বিরোধীরা) চেষ্টা করেছে পরিস্থিতিকে এমনভাবে তুলে ধরতে যাতে বাইরের বিশ্ব বুঝতে পারে সরকার কড়া হাতে শাসন ব্যবস্থা চালাচ্ছে।
কিন্তু বিষয়টি আসলে সত্য নয়। পুলিশ শহিদুল আলমকে প্রহার করেছে বলে তিনি যে দাবি করেছেন, তাও সত্য নয়। নিউ ইয়র্ক টাইমস রিপোর্ট করেছে যে, ‘হাসপাতাল কর্মকর্তারা বলেছেন তার (শহিদুল আলম) দেহে কোন ক্ষত নেই, যার জন্য তাকে হাসপাতালে রাখা যায়’।
ব্যাপকভাবে গৃহীত দায়িত্ব আমাদেরকে জটিল এবং মাঝে মাঝে নৃশংস বিশ্ব সম্পর্কে সঠিক পথে চলতে সহায়তা করে। কখনো কখনো, বাংলাদেশে পরিস্থিতি যেমন, বাস্তবতা হলো ক্লিক। শহিদুল আলম এবং অন্যরা, যারা সরকারের নীতির সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করেন, তারা বলতে পারেন কি চান। কিন্তু এর নাম করে তারা মানুষকে আহত করতে পারেন না। এক্ষেত্রে নাগরিকদের রক্ষা করেছে বাংলাদেশ এবং আবারও তাই করবে।
(সজীব ওয়াজেদ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে ও তার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা। তার এ লেখাটি যুক্তরাষ্ট্রের অনলাইন দ্য ডেইলি কলার-এ প্রকাশিত)
No comments