খালেদাকে নিয়ে বিএনপিতে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা by কাফি কামাল
দলের
চেয়ারপারসন কারাবন্দি খালেদা জিয়াকে নিয়ে বিএনপিতে তৈরি হয়েছে
উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। পরিত্যক্ত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের নির্জন পরিবেশে
মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তিনি। দ্রুতগতিতে অবনতি ঘটছে তার শারীরিক
অবস্থার। কারাগারে নেয়ার পর থেকে তার অসুস্থতার কথা বলে কারাকর্তৃপক্ষ
তাকে একবারও আদালতে হাজির করেনি।
খালেদা জিয়ার অসুস্থতার তথ্য-উপাত্ত উল্লেখ করে দীর্ঘদিন ধরেই একটি বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়ার দাবি জানিয়ে আসছে বিএনপি। সরকারের তরফে বারবারই বলা হচ্ছিল, কারাগারে সুচিকিৎসা পাচ্ছেন তিনি।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় বুধবার একটি বিশেষ প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে পরিত্যক্ত কারাগারের প্রশাসনিক কক্ষে আদালত স্থানান্তর করে সরকার। বৃহস্পতিবার খালেদা জিয়াকে সে আদালতে উপস্থিত করা হলে তার অসুস্থতার বিষয়টি নতুন করে সামনে আসে। সেদিন তাকে আদালতে হাজির করা হয়েছিল হুইল চেয়ারে করে।
আদালতে আইনজীবীসহ সাংবাদিকরা দেখেছেন পুরো সময় তিনি প্রায় নড়চড়নহীন বসেছিলেন। একপর্যায়ে খালেদা জিয়া আদালতের উদ্দেশে বলেন, ‘আমার শারীরিক অবস্থাও ভালো না। এভাবে এখানে বসে থাকলে আমার পা ফুলে যেতে পারে। হাতেও প্রচণ্ড ব্যথা। এ অবস্থায় বার বার আদালতে আসা সম্ভব না। আমার সিনিয়র আইনজীবীদের কেউ এখানে নেই।
এখানে প্রসিকিউশনের ইচ্ছায় সব হয়, ফলে ন্যায়বিচার হবে না। আপনাদের যা মন চায়, যতদিন ইচ্ছা সাজা দিন।’ নিজের শারীরিক অবস্থার বিষয়টি সাংবাদিকদের কাছেও প্রকাশ করেন খালেদা জিয়া। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার শারীরিক অবস্থা ভালো নয়। বাম পা ঠিকমতো বাঁকাতে পারি না, প্যারালাইজডের মতো হয়ে গেছে।
বাম হাতও নাড়াতে পারি না। আমি খুবই অসুস্থ। আমি এখানে বার বার আসতে পারবো না। এখানে ন্যায়বিচার নেই। যা খুশি তাই করুক।’ আদালত আনুষ্ঠানিকভাবে নোটিশ না করায় সেদিন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা কারাগারে স্থাপিত সে আদালতে যাননি। কিন্তু উপস্থিত সাংবাদিকদের মাধ্যমে খালেদা জিয়ার শারীরিক পরিস্থিতির অবনতির খবর পেয়ে বিএনপিতে নতুন করে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা তৈরি হয়। পরদিন কারাগারে গিয়ে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তার চারজন আইনজীবী। সাক্ষাৎশেষে গণমাধ্যমে দেয়া তাদের বক্তব্য বিএনপি নেতাকর্মীদের ও সমর্থকসহ দেশের মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে সে উদ্বেগ।
গণমাধ্যমের বেশ কয়েকজন সাংবাদিক কারাগারের ভেতরে স্থাপিত বিশেষ আদালতের প্রথমদিনের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করেছেন। সেদিন আদালতে উপস্থিত কয়েকজন সাংবাদিক জানান, দুপুর সোয়া ১২টায় নাজিমউদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত কারাগারে স্থাপিত অস্থায়ী আদালতে খালেদা জিয়াকে হাজির করা হয়েছিল। কাঠগড়ার সামনে খালেদা জিয়ার জন্য প্রথমদিন রাখা ছিল একটি চেয়ার ও সাদা কাপড়ে মোড়া একটি ছোট টেবিল। হুইল চেয়ারে করে তাকে আদালতে আনা হয়েছিল।
তার পরনে ছিল গোলাপি শাড়ি, পায়ে সাদা জুতো। ঊর্ধ্বাঙ্গ থেকে পা পর্যন্ত সাদা চাদরে ঢাকা। আদালতের কার্যক্রম চলাকালে পুরো সময় তিনি নড়াচড়াহীনভাবে বসেছিলেন হুইল চেয়ারে। তার চেহারায় স্পষ্ট ছাপ ছিল অসুস্থতা আর যন্ত্রণার। কুঁঁকড়ে যাচ্ছিলেন বারবার। দৃশ্যত বাম হাত একেবারেই নাড়াতে পারছিলেন না।
আদালতে তার কোনো আইনজীবীও উপস্থিত ছিলেন না। খালেদা জিয়ার পাশে ছোট একটি ব্যাগ নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন কেবল তার গৃহকর্মী ফাতেমা। সাংবাদিকরা জানান, কারাগারে এজলাস স্থাপন করায় খালেদা জিয়ার অসন্তোষ ছিল স্পষ্ট। আইনজীবীদের বক্তব্যের একপর্যায়ে তিনি অসন্তোষের অভিব্যক্তি প্রকাশও করেছেন।
সাংবাদিকরা জানান, খালেদা জিয়ার অসুস্থতার বিষয়টি অনেকটাই দৃশ্যমান। সামনা সামনি দেখে পরিষ্কার বুঝা যাচ্ছিল, তিনি খুবই অসুস্থবোধ করছেন। তার নিবিড় চিকিৎসার প্রয়োজন।
কারাগার গিয়ে শুক্রবার খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন যে চারজন আইনজীবী তাদের একজন এডভোকেট আবদুর রেজাক খান। প্রবীণ এই আইনজীবী বলেন, কারাগারে গিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে যে রকম দেখলাম তাতে উনাকে খুবই অসুস্থ মনে হলো। তিনি অনেকটাই শুকিয়ে গেছেন। সম্ভবত তার ওজন কমেছে।
এছাড়া তিনি বাম হাত ও পা প্রায় নাড়াতেই পারছেন না। প্রায় প্যারালাইজড অবস্থা। এছাড়া চোখের সমস্যার কারণে ঠিকমতো দেখতেও পারছেন না। স্বাভাবিকভাবে কথাও বলতে পারছেন না। রেজাক খান বলেন, উনাকে দেখে এবং কথা শুনে যেটা মনে হলো, দ্রুতগতিতে তার স্বাস্থ্যের অবনতি হচ্ছে।
এই অসুস্থ অবস্থায় তিনি আদালতে এসে বসতে পারবেন বলেও মনে হলো না। তার জরুরি সুচিকিৎসা দরকার। আইনজীবীদের আরেকজন দলের ভাইস চেয়ারম্যান এডভোকেট জয়নুল আবেদিন বলেন, খালেদা জিয়াকে যখন কারাগারে নেয়া হয় তখন তিনি সুস্থ ছিলেন। কিন্তু এখন তার যে শারীরিক অবস্থা তা সত্যিই বেদনাদায়ক। বুঝে উঠতে পারছি না, এমন পরিস্থিতিতে তাকে কিভাবে আদালতে আনা হলো। কিভাবে তার বিচার হচ্ছে।
সিনিয়র এই আইনজীবী বলেন, বর্তমানে খালেদা জিয়া হাঁটতেও পারেন না, ঠিকমতো বসতেও পারেন না। তার হাত-পা সহ শরীরের বামপাশটা নাড়াতেই পারছেন না। তার চোখেও সমস্যা দেখা দিয়েছে। দিনদিন তার স্বাস্থ্য বিপর্যয় ঘটছে। এই রকম অসুস্থ একজন মানুষকে কিভাবে কারাগারে রেখে বিচার করা যায়! আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাই, আগে খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা নিশ্চিত করুন, তারপর বিচার করুন।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে যেখানে রাখা হয়েছে সেটা একটি নির্জন ও ধুলো-ধূসরিত কক্ষ। সেটা মানুষের পক্ষে বসবাসের উপযুক্ত নয়। রোববার তার সুচিকিৎসার দাবি নিয়ে আবেদনসহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যাবে বিএনপি’র একটি প্রতিনিধি দল। আর কারাগারের প্রশাসনিক ভবনে আদালত স্থাপনের বিষয়টি নিয়ে উচ্চআদালতে যাওয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছে। আদালতের ভ্যাকেশন শেষ হলেই এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হবে।
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ অবস্থায় একটি বাস অযোগ্য নির্জন কারাকক্ষে দিন কাটাচ্ছেন। বৃহস্পতিবার অসুস্থ অবস্থায় আদালতে তার উপস্থিতির পর দেশের মানুষের কোন সন্দেহ নেই যে, খালেদা জিয়া মারাত্মক অসুস্থ এবং তার সুচিকিৎসা দরকার। কিন্তু তার চিকিৎসা নিয়ে সরকার যে আচরণ করছে তা অত্যন্ত নির্মম। কেবল বিএনপি নেতাকর্মীরাই নন, আজ সারা দেশের মানুষ তার শারীরিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন। আর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের একটি সুনির্দিষ্ট মামলায় কারাগারে আদালত স্থানান্তরের বিষয়টি পরিকল্পিতভাবেই করেছে সরকার। তাদের হীন উদ্দেশ্যের বিষয়টি জনগণের কাছে পরিষ্কার।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিশেষ আদালত ৫ বছরের সাজার রায় ঘোষণার মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠান। কারাগারে নেয়ার কিছুদিন পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ সময় ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের মাধ্যমে তার চিকিৎসার দাবি করে বিএনপি।
দলটির নেতাকর্মীদের অব্যাহত দাবির মুখে সরকারি চিকিৎসকদের সমন্বয়ে কারাকর্তৃপক্ষ ১লা এপ্রিল একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করেন। সে বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী ৭ই এপ্রিল খালেদা জিয়াকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে নেয়া হয়। কিন্তু কয়েকটি এক্স-রে করেই সেদিন তাকে ফিরিয়ে নেয়া হয় কারাগারে।
তারপর বিভিন্ন সময়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাওয়া পরিবারের সদস্য, স্বজন, আইনজীবী ও নেতারা বারবার দাবি করেছেন কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন খালেদা জিয়া। সেখানে তাকে সুচিকিৎসা দেয়া হচ্ছে না। একপর্যায়ে তাকে একটি বিশেষায়িত হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়ার দাবি জোরদার করে বিএনপি। কারাকর্তৃপক্ষ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আনুষ্ঠানিক আবেদনও করে। এ সময় সরকারের তরফে তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির কথা বলা হয়। কিন্তু সে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে অস্বীকৃতি জানান খালেদা জিয়া।
এ নিয়ে সে সময় সরকারের মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের দীর্ঘ বাহাসও চলে। কিন্তু হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসার দাবিটি সরকার বরাবরের মতো উপেক্ষা করলে বিএনপি নেতারাও ধীরে ধীরে চুপসে যান। ঈদুল আজহার আগে খালেদা জিয়ার স্বজনরা ফের তার অসুস্থতার বিষয়টি সামনে আনেন।
এ সময় কয়েকটি মামলায় পরপর জামিন পান তিনি। এ অবস্থায় গত ২৫শে আগস্ট খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পান দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি কারাগার থেকে বেরিয়ে এসে বলেছিলেন, ‘খালেদা জিয়া অসুস্থ। তবে তাঁর মনোবল যথেষ্ট শক্তিশালী আছে। উনি দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন। তার দু’টি মামলা জামিনের অপেক্ষায় আছে। ওই দু’টিতে জামিন হলে তিনি কারাগার থেকে বের হয়ে আসতে পারবেন।’
এদিকে রাজনীতিতে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির প্রক্রিয়াটি জোরদার হওয়ায় বিরোধী নেতাকর্মীদের মধ্যে তৈরি হচ্ছিল নতুন আত্মবিশ্বাস। কিন্তু সবকিছুই ঘুরে যায়, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া চ্যারিটেবর ট্রাস্ট মামলার বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনায় প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে বিশেষ আদালতে কারাগারের প্রশাসনিক ভবনে স্থানান্তরের মাধ্যমে। আর সেখানে অসুস্থ খালেদা জিয়াকে জনসম্মুখে আদালতে হাজির করার পর তার স্বাস্থ্য পরিস্থিতি, চিকিৎসা ও দেশের সার্বিক রাজনীতি নিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে নতুন করে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা তৈরি হয়েছে।
এদিকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি’র নেতারা পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দিয়েছেন। জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ ডেমোক্রেটিক কাউন্সিল আয়োজিত আলোচনা সভায় বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান এডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন অভিযোগ করেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া খুবই অসুস্থ। সরকার প্রতিহিংসার রাজনীতি করে তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
সরকারকে বলবো- খালেদা জিয়ার বিচারের রায় কি দেবেন দিয়েন, কিন্তু তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করুন। তিনি বলেন, দেশে আজ গণতন্ত্র নেই, আইনের শাসন নেই। আর তাই খালেদা জিয়াও সুষ্ঠু বিচার পাচ্ছেন না। দেশে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হলেই তিনি সুষ্ঠু বিচার পাবেন। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ কুষ্টিয়া শহরের নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের বলেছেন, কারাগারে খালেদা জিয়া সুস্থ আছেন।
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় চিকিৎসক তাকে চিকিৎসা দিচ্ছেন। অসুস্থতার অজুহাত দেখিয়ে খালেদা জিয়া আদালতকেই কারাগারে নিয়ে গেছেন। বিএনপি’র উদ্দেশে হানিফ বলেন, হত্যা খুনের রাজনীতি বিএনপি করে। ক্ষমতা দখলের জন্য দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান এদেশে হত্যা-খুনের রাজনীতি শুরু করেছিলেন। তারপর থেকে বাংলাদেশে যত হত্যা-খুনের রাজনীতি হয়েছে সবই করেছে বিএনপি।
উচ্চ আদালতে খালেদা জিয়ার জামিনের বিরোধিতা ও নতুন নতুন মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানোয় আগামী নির্বাচনে তার অংশগ্রহণ নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। বিএনপি নেতারা প্রতিদিনই বলে আসছেন খালেদা জিয়াকে নির্বাচনের বাইরে রাখতে নানা অপচেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। তার মামলায় আদালতকে কারাগারে অভ্যন্তরে স্থানান্তরের ঘটনায় এখন নতুন মাত্রা পেয়েছে সে সংশয়।
তবে গতকালও একটি আলোচনা সভায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দৃঢ়তার সঙ্গে বলেছেন, ‘আমরা পরিষ্কার করে বলেছি- এখানে নির্বাচন তখনই হবে যখন নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হবে। অর্থাৎ দেশনেত্রী কারাগারে বাইরে থাকবেন।’ সার্বিক পরিস্থিতি জাতীয় ঐক্য ও কারাগারে খালেদা জিয়ার শারীরিক অসুস্থতাকে কেন্দ্র করে করণীয় নির্ধারণে আজ ২০ দলীয় জোটের বৈঠক ডেকেছে বিএনপি।
খালেদা জিয়ার অসুস্থতার তথ্য-উপাত্ত উল্লেখ করে দীর্ঘদিন ধরেই একটি বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়ার দাবি জানিয়ে আসছে বিএনপি। সরকারের তরফে বারবারই বলা হচ্ছিল, কারাগারে সুচিকিৎসা পাচ্ছেন তিনি।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় বুধবার একটি বিশেষ প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে পরিত্যক্ত কারাগারের প্রশাসনিক কক্ষে আদালত স্থানান্তর করে সরকার। বৃহস্পতিবার খালেদা জিয়াকে সে আদালতে উপস্থিত করা হলে তার অসুস্থতার বিষয়টি নতুন করে সামনে আসে। সেদিন তাকে আদালতে হাজির করা হয়েছিল হুইল চেয়ারে করে।
আদালতে আইনজীবীসহ সাংবাদিকরা দেখেছেন পুরো সময় তিনি প্রায় নড়চড়নহীন বসেছিলেন। একপর্যায়ে খালেদা জিয়া আদালতের উদ্দেশে বলেন, ‘আমার শারীরিক অবস্থাও ভালো না। এভাবে এখানে বসে থাকলে আমার পা ফুলে যেতে পারে। হাতেও প্রচণ্ড ব্যথা। এ অবস্থায় বার বার আদালতে আসা সম্ভব না। আমার সিনিয়র আইনজীবীদের কেউ এখানে নেই।
এখানে প্রসিকিউশনের ইচ্ছায় সব হয়, ফলে ন্যায়বিচার হবে না। আপনাদের যা মন চায়, যতদিন ইচ্ছা সাজা দিন।’ নিজের শারীরিক অবস্থার বিষয়টি সাংবাদিকদের কাছেও প্রকাশ করেন খালেদা জিয়া। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার শারীরিক অবস্থা ভালো নয়। বাম পা ঠিকমতো বাঁকাতে পারি না, প্যারালাইজডের মতো হয়ে গেছে।
বাম হাতও নাড়াতে পারি না। আমি খুবই অসুস্থ। আমি এখানে বার বার আসতে পারবো না। এখানে ন্যায়বিচার নেই। যা খুশি তাই করুক।’ আদালত আনুষ্ঠানিকভাবে নোটিশ না করায় সেদিন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা কারাগারে স্থাপিত সে আদালতে যাননি। কিন্তু উপস্থিত সাংবাদিকদের মাধ্যমে খালেদা জিয়ার শারীরিক পরিস্থিতির অবনতির খবর পেয়ে বিএনপিতে নতুন করে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা তৈরি হয়। পরদিন কারাগারে গিয়ে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তার চারজন আইনজীবী। সাক্ষাৎশেষে গণমাধ্যমে দেয়া তাদের বক্তব্য বিএনপি নেতাকর্মীদের ও সমর্থকসহ দেশের মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে সে উদ্বেগ।
গণমাধ্যমের বেশ কয়েকজন সাংবাদিক কারাগারের ভেতরে স্থাপিত বিশেষ আদালতের প্রথমদিনের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করেছেন। সেদিন আদালতে উপস্থিত কয়েকজন সাংবাদিক জানান, দুপুর সোয়া ১২টায় নাজিমউদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত কারাগারে স্থাপিত অস্থায়ী আদালতে খালেদা জিয়াকে হাজির করা হয়েছিল। কাঠগড়ার সামনে খালেদা জিয়ার জন্য প্রথমদিন রাখা ছিল একটি চেয়ার ও সাদা কাপড়ে মোড়া একটি ছোট টেবিল। হুইল চেয়ারে করে তাকে আদালতে আনা হয়েছিল।
তার পরনে ছিল গোলাপি শাড়ি, পায়ে সাদা জুতো। ঊর্ধ্বাঙ্গ থেকে পা পর্যন্ত সাদা চাদরে ঢাকা। আদালতের কার্যক্রম চলাকালে পুরো সময় তিনি নড়াচড়াহীনভাবে বসেছিলেন হুইল চেয়ারে। তার চেহারায় স্পষ্ট ছাপ ছিল অসুস্থতা আর যন্ত্রণার। কুঁঁকড়ে যাচ্ছিলেন বারবার। দৃশ্যত বাম হাত একেবারেই নাড়াতে পারছিলেন না।
আদালতে তার কোনো আইনজীবীও উপস্থিত ছিলেন না। খালেদা জিয়ার পাশে ছোট একটি ব্যাগ নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন কেবল তার গৃহকর্মী ফাতেমা। সাংবাদিকরা জানান, কারাগারে এজলাস স্থাপন করায় খালেদা জিয়ার অসন্তোষ ছিল স্পষ্ট। আইনজীবীদের বক্তব্যের একপর্যায়ে তিনি অসন্তোষের অভিব্যক্তি প্রকাশও করেছেন।
সাংবাদিকরা জানান, খালেদা জিয়ার অসুস্থতার বিষয়টি অনেকটাই দৃশ্যমান। সামনা সামনি দেখে পরিষ্কার বুঝা যাচ্ছিল, তিনি খুবই অসুস্থবোধ করছেন। তার নিবিড় চিকিৎসার প্রয়োজন।
কারাগার গিয়ে শুক্রবার খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন যে চারজন আইনজীবী তাদের একজন এডভোকেট আবদুর রেজাক খান। প্রবীণ এই আইনজীবী বলেন, কারাগারে গিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে যে রকম দেখলাম তাতে উনাকে খুবই অসুস্থ মনে হলো। তিনি অনেকটাই শুকিয়ে গেছেন। সম্ভবত তার ওজন কমেছে।
এছাড়া তিনি বাম হাত ও পা প্রায় নাড়াতেই পারছেন না। প্রায় প্যারালাইজড অবস্থা। এছাড়া চোখের সমস্যার কারণে ঠিকমতো দেখতেও পারছেন না। স্বাভাবিকভাবে কথাও বলতে পারছেন না। রেজাক খান বলেন, উনাকে দেখে এবং কথা শুনে যেটা মনে হলো, দ্রুতগতিতে তার স্বাস্থ্যের অবনতি হচ্ছে।
এই অসুস্থ অবস্থায় তিনি আদালতে এসে বসতে পারবেন বলেও মনে হলো না। তার জরুরি সুচিকিৎসা দরকার। আইনজীবীদের আরেকজন দলের ভাইস চেয়ারম্যান এডভোকেট জয়নুল আবেদিন বলেন, খালেদা জিয়াকে যখন কারাগারে নেয়া হয় তখন তিনি সুস্থ ছিলেন। কিন্তু এখন তার যে শারীরিক অবস্থা তা সত্যিই বেদনাদায়ক। বুঝে উঠতে পারছি না, এমন পরিস্থিতিতে তাকে কিভাবে আদালতে আনা হলো। কিভাবে তার বিচার হচ্ছে।
সিনিয়র এই আইনজীবী বলেন, বর্তমানে খালেদা জিয়া হাঁটতেও পারেন না, ঠিকমতো বসতেও পারেন না। তার হাত-পা সহ শরীরের বামপাশটা নাড়াতেই পারছেন না। তার চোখেও সমস্যা দেখা দিয়েছে। দিনদিন তার স্বাস্থ্য বিপর্যয় ঘটছে। এই রকম অসুস্থ একজন মানুষকে কিভাবে কারাগারে রেখে বিচার করা যায়! আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাই, আগে খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা নিশ্চিত করুন, তারপর বিচার করুন।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে যেখানে রাখা হয়েছে সেটা একটি নির্জন ও ধুলো-ধূসরিত কক্ষ। সেটা মানুষের পক্ষে বসবাসের উপযুক্ত নয়। রোববার তার সুচিকিৎসার দাবি নিয়ে আবেদনসহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যাবে বিএনপি’র একটি প্রতিনিধি দল। আর কারাগারের প্রশাসনিক ভবনে আদালত স্থাপনের বিষয়টি নিয়ে উচ্চআদালতে যাওয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছে। আদালতের ভ্যাকেশন শেষ হলেই এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হবে।
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ অবস্থায় একটি বাস অযোগ্য নির্জন কারাকক্ষে দিন কাটাচ্ছেন। বৃহস্পতিবার অসুস্থ অবস্থায় আদালতে তার উপস্থিতির পর দেশের মানুষের কোন সন্দেহ নেই যে, খালেদা জিয়া মারাত্মক অসুস্থ এবং তার সুচিকিৎসা দরকার। কিন্তু তার চিকিৎসা নিয়ে সরকার যে আচরণ করছে তা অত্যন্ত নির্মম। কেবল বিএনপি নেতাকর্মীরাই নন, আজ সারা দেশের মানুষ তার শারীরিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন। আর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের একটি সুনির্দিষ্ট মামলায় কারাগারে আদালত স্থানান্তরের বিষয়টি পরিকল্পিতভাবেই করেছে সরকার। তাদের হীন উদ্দেশ্যের বিষয়টি জনগণের কাছে পরিষ্কার।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিশেষ আদালত ৫ বছরের সাজার রায় ঘোষণার মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠান। কারাগারে নেয়ার কিছুদিন পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ সময় ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের মাধ্যমে তার চিকিৎসার দাবি করে বিএনপি।
দলটির নেতাকর্মীদের অব্যাহত দাবির মুখে সরকারি চিকিৎসকদের সমন্বয়ে কারাকর্তৃপক্ষ ১লা এপ্রিল একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করেন। সে বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী ৭ই এপ্রিল খালেদা জিয়াকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে নেয়া হয়। কিন্তু কয়েকটি এক্স-রে করেই সেদিন তাকে ফিরিয়ে নেয়া হয় কারাগারে।
তারপর বিভিন্ন সময়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাওয়া পরিবারের সদস্য, স্বজন, আইনজীবী ও নেতারা বারবার দাবি করেছেন কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন খালেদা জিয়া। সেখানে তাকে সুচিকিৎসা দেয়া হচ্ছে না। একপর্যায়ে তাকে একটি বিশেষায়িত হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়ার দাবি জোরদার করে বিএনপি। কারাকর্তৃপক্ষ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আনুষ্ঠানিক আবেদনও করে। এ সময় সরকারের তরফে তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির কথা বলা হয়। কিন্তু সে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে অস্বীকৃতি জানান খালেদা জিয়া।
এ নিয়ে সে সময় সরকারের মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের দীর্ঘ বাহাসও চলে। কিন্তু হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসার দাবিটি সরকার বরাবরের মতো উপেক্ষা করলে বিএনপি নেতারাও ধীরে ধীরে চুপসে যান। ঈদুল আজহার আগে খালেদা জিয়ার স্বজনরা ফের তার অসুস্থতার বিষয়টি সামনে আনেন।
এ সময় কয়েকটি মামলায় পরপর জামিন পান তিনি। এ অবস্থায় গত ২৫শে আগস্ট খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পান দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি কারাগার থেকে বেরিয়ে এসে বলেছিলেন, ‘খালেদা জিয়া অসুস্থ। তবে তাঁর মনোবল যথেষ্ট শক্তিশালী আছে। উনি দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন। তার দু’টি মামলা জামিনের অপেক্ষায় আছে। ওই দু’টিতে জামিন হলে তিনি কারাগার থেকে বের হয়ে আসতে পারবেন।’
এদিকে রাজনীতিতে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির প্রক্রিয়াটি জোরদার হওয়ায় বিরোধী নেতাকর্মীদের মধ্যে তৈরি হচ্ছিল নতুন আত্মবিশ্বাস। কিন্তু সবকিছুই ঘুরে যায়, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া চ্যারিটেবর ট্রাস্ট মামলার বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনায় প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে বিশেষ আদালতে কারাগারের প্রশাসনিক ভবনে স্থানান্তরের মাধ্যমে। আর সেখানে অসুস্থ খালেদা জিয়াকে জনসম্মুখে আদালতে হাজির করার পর তার স্বাস্থ্য পরিস্থিতি, চিকিৎসা ও দেশের সার্বিক রাজনীতি নিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে নতুন করে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা তৈরি হয়েছে।
এদিকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি’র নেতারা পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দিয়েছেন। জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ ডেমোক্রেটিক কাউন্সিল আয়োজিত আলোচনা সভায় বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান এডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন অভিযোগ করেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া খুবই অসুস্থ। সরকার প্রতিহিংসার রাজনীতি করে তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
সরকারকে বলবো- খালেদা জিয়ার বিচারের রায় কি দেবেন দিয়েন, কিন্তু তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করুন। তিনি বলেন, দেশে আজ গণতন্ত্র নেই, আইনের শাসন নেই। আর তাই খালেদা জিয়াও সুষ্ঠু বিচার পাচ্ছেন না। দেশে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হলেই তিনি সুষ্ঠু বিচার পাবেন। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ কুষ্টিয়া শহরের নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের বলেছেন, কারাগারে খালেদা জিয়া সুস্থ আছেন।
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় চিকিৎসক তাকে চিকিৎসা দিচ্ছেন। অসুস্থতার অজুহাত দেখিয়ে খালেদা জিয়া আদালতকেই কারাগারে নিয়ে গেছেন। বিএনপি’র উদ্দেশে হানিফ বলেন, হত্যা খুনের রাজনীতি বিএনপি করে। ক্ষমতা দখলের জন্য দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান এদেশে হত্যা-খুনের রাজনীতি শুরু করেছিলেন। তারপর থেকে বাংলাদেশে যত হত্যা-খুনের রাজনীতি হয়েছে সবই করেছে বিএনপি।
উচ্চ আদালতে খালেদা জিয়ার জামিনের বিরোধিতা ও নতুন নতুন মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানোয় আগামী নির্বাচনে তার অংশগ্রহণ নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। বিএনপি নেতারা প্রতিদিনই বলে আসছেন খালেদা জিয়াকে নির্বাচনের বাইরে রাখতে নানা অপচেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। তার মামলায় আদালতকে কারাগারে অভ্যন্তরে স্থানান্তরের ঘটনায় এখন নতুন মাত্রা পেয়েছে সে সংশয়।
তবে গতকালও একটি আলোচনা সভায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দৃঢ়তার সঙ্গে বলেছেন, ‘আমরা পরিষ্কার করে বলেছি- এখানে নির্বাচন তখনই হবে যখন নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হবে। অর্থাৎ দেশনেত্রী কারাগারে বাইরে থাকবেন।’ সার্বিক পরিস্থিতি জাতীয় ঐক্য ও কারাগারে খালেদা জিয়ার শারীরিক অসুস্থতাকে কেন্দ্র করে করণীয় নির্ধারণে আজ ২০ দলীয় জোটের বৈঠক ডেকেছে বিএনপি।
No comments