পরিস্থিতি সামাল দিতে দিনভর নানা চেষ্টা
শিক্ষার্থীদের
তীব্র আন্দোলনের মুখে দিনভর সরকারের পক্ষ থেকে নানাভাবে চেষ্টা হয়েছে
পরিস্থিতি শান্ত করার। বিভিন্ন পর্যায়ে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক সভা
ছাড়াও সড়ক পরিবহন আইনটি আগামী মন্ত্রিসভা বৈঠকে উঠবে বলে জানানো হয়েছে।
এদিন বেলা ১১টায় সড়ক পরিবহন আইন এবং শিক্ষার্থীদের পক্ষে কথা বলে
সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এরপর
সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন আইন নিয়ে কথা বলেন আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক।
বলেন, সড়ক পরিবহন আইনের ভেটিং শেষ হয়েছে। আগামী মন্ত্রিসভায় আইনটি উঠতে পারে। এরপর বিকালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সভাপতিত্বে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে অন্যান্যের মধ্যে নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এবং পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গাসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এদের মধ্যে নৌমন্ত্রী শাজাহান খান বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি। আর জাতীয় পার্টির নেতা রাঙ্গা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি।
বৈঠকের পর আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণের আশ্বাস দিয়ে শিক্ষার্থীদের রাজপথ ছেড়ে ঘরে ফিরে যেতে অনুরোধ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মো. আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, আমরা ছাত্রছাত্রীদের আহ্বান জানাবো, তোমাদের যে সমবেদনা, যে দুর্ভোগ- সারা দেশে এই মেসেজ পৌঁছে গেছে। আমরা অনুরোধ করবো, তোমাদের দাবি সবই মানা হয়েছে। যারা অন্যায় করেছে, যারা ঘাতক, আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি যাতে তারা পায়, সেই ব্যবস্থা আমরা করছি। অভিভাবক, শিক্ষক যারা আছেন, তাদের বলছি, আপনারা আপনাদের ছেলেমেয়েদের, ছাত্রছাত্রীদের অনুরোধ করুন, তারা যেন ক্লাসরুমে ফিরে আসে। মন্ত্রী বলেন, শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনে জনদুর্ভোগ তৈরি হচ্ছে, সারা শহর অচল হয়ে যাচ্ছে; এটা কারও কাম্য নয়। আমাদের প্রিয় ছাত্রছাত্রী ভাইয়েরা অবরোধ তুলে নেবেন, এই অনুরোধ আমরা জানাচ্ছি। যারা অবরোধ করছে, তাদের জন্য কাম্য নয়।
যারা আমরা রাস্তায় চলাচল করছি, তাদের জন্য কাম্য নয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গত তিন দিনে ৩০৯টি গাড়ি ভাঙা হয়েছে, পোড়ানো হয়েছে আটটি গাড়ি। তিনি বলেন, ২৯ তারিখ ১৫০টি গাড়ি ভেঙেছে, ৩০ তারিখে ২৫টি গাড়ি ভেঙেছে এবং ৩১ তারিখে ১৩৪টি গাড়ি ভেঙেছে। এর মধ্যে পুলিশের ২টি, ফায়ার সার্ভিসের ১টি, যা পুলিশের ক্ষতি, ফায়ার সার্ভিসেরও ক্ষতি। এই যে আমাদের কোমলমতি ছাত্রছাত্রীরা অবরোধ করছে। একে কাজে লাগিয়ে স্বার্থান্বেষী মহল নতুন করে জ্বালাও-পোড়াও ও গাড়ি ভাঙছে। ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলন তুলে নিয়ে ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে আসাদুজ্জামান খান বলেন, অনুরোধ করবো, আমাদের প্রিয় কোমলমতি ছাত্রছাত্রীরা পড়াশোনায় মনোযোগী হবে। দোষীরা যাতে সর্বোচ্চ শাস্তি পায়, তার ব্যবস্থা নেবো। সরকার ব্যবস্থা নেবে। বিভিন্নভাবে দাবি-দাওয়া আমাদের কাছে পৌঁছেছে।
আমরা সবগুলো মেনে নিয়েছি। সবগুলোই মনে হয় যৌক্তিক। আমরা কোনোক্রমে লাইসেন্সবিহীন, রুট পারমিটবিহীন গাড়ি চলতে দেবো না। এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তিন দিন হয়ে যাচ্ছে, আমাদের সন্তানেরা রাস্তায়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও চান, আমাদের প্রিয় সন্তানেরা রাস্তা থেকে ফিরে আসুক। স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসুক। সমস্যা দীর্ঘদিনের, অল্প সময়ের মধ্যে কি এই সমস্যার সমাধান হবে?- এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যথার্থ বলেছেন। আমাদের ইনটেনশন হলো যেন দুর্ঘটনা না ঘটে। সবাই যেন আইন মেনে চলে। মালিক, শ্রমিক ও পথচারীরা আইনটা মেনে চলে। পথচারীরাও ভুল করে। সবাই যাতে মেনে চলে, তার জন্য আমরা আইনটা করতে চাইছি।
এদিকে বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর ছড়িয়ে পড়া ছাত্র বিক্ষোভকে অযৌক্তিক মনে করেন না সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ছাত্রদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে নতুন আইন পাস হচ্ছে, এরপরই সরকার কঠোর ব্যবস্থা নেবে। গতকাল সড়কমন্ত্রী সেতু ভবনে গণমাধ্যমকর্মীদের মুখোমুখি হয়ে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, এখানে একটা প্রচণ্ড ইমোশন কাজ করেছে, এর বাস্তবতাও আছে। কারণ দুইজন সম্ভাবনাময়ী শিক্ষার্থী মর্মান্তিকভাবে নিহত হয়েছেন। সেটার প্রতিবাদে এমন বিক্ষোভ আমি অযৌক্তিক বলে মনে করি না।
এ ধরনের বিক্ষোভ হতেই পারে। এই বিক্ষোভের মধ্যে বুধবার সড়কে বাসের সংখ্যাও আবার কম। এ বিষয়ে কাদের বলেন, কিছু কিছু অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর হওয়াতে পরিবহনের লোকজন কিছুটা ভয় পেয়েছিল। তারা তো ভাঙচুরের মধ্যে গাড়ি নামাতে চাইবে না। আমার মনে হয় ভীতিটা কেটে যাবে। আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হয়ে যাবে। এটা কি ভীতির কারণে নাকি কেউ কলকাঠি নাড়ছে- এমন প্রশ্নে সড়কমন্ত্রী বলেন, না না, এটা ভীতির কারণ। কারণ এমন অবস্থায় গাড়িতে আগুন দেবে বা ভাঙচুর করবে এই আশঙ্কা তো তাদের থাকতেই পারে। ছাত্রদের কিছু বলবেন কি না?- জানতে চাইলে কাদের বলেন, চলমান বিক্ষোভ কি এখনো আছে নাকি? তার প্রশ্নের জবাবে সাংবাদিকরা বিক্ষোভ চলছে জানালে মন্ত্রী বলেন, আজকে অনেক কম।
এ ব্যাপারে চেষ্টা করা হচ্ছে। আমি তাদের বলবো, সড়কে দুর্ঘটনা ও সড়কে বিশৃঙ্খলা নিয়ে আইন কেবিনেটে আসছে এবং আগামী সংসদ অধিবেশনে এ ব্যাপারে আইনও পাস হবে। কাজেই আমি ছাত্রছাত্রীদের বলবো যে, আমরা সরকার ও প্রধানমন্ত্রী নিজেই অবৈধ চালকদের ধরার জন্য নির্দেশ প্রদান করেছেন এবং তিনি মর্মাহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আমরা সবাই মর্মাহত। নৌমন্ত্রী নিজেও ক্ষমা চেয়েছেন। আমি ছাত্রছাত্রীদের বলবো শান্ত হওয়ার জন্য। স্ব স্ব ক্যাম্পাসে ফিরে গিয়ে তারা পড়াশোনায় মনোনিবেশ করবে। আমরা ভবিষ্যতে যাতে এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে তার জন্য কঠোর আইন করতে যাচ্ছি এবং ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছি। গত নয় বছরে সড়ক পরিবহনে নৈরাজ্য যতবারই আলোচনায় এসেছে ততবারই নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের নাম এসেছে।
সরকার কি তাকে নিয়ে এখন পর্যন্ত বিব্রত কিনা?’- এমন প্রশ্নে সড়কমন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকারের সময়ের আগে টার্মিনালে খুনোখুনি নিত্যদিনের ঘটনা ছিল। কিন্তু এই সরকারের সময়ে কিন্তু এই নৈরাজ্য হয়নি এবং যেভাবে ধর্মঘট হওয়ার কথা ছিল সেভাবে হয়নি। একমাত্র চিটাগাংয়ে ঈদের সময় একটা ধর্মঘট হয়েছিল, যাতে ভোগান্তিও হয়েছিলো। এছাড়া কিন্তু কোনো ধর্মঘট স্থায়ী রূপ নেয়নি। বাকিগুলো যেদিন ডেকেছে সেদিনই প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। এদিকে সচিবালয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেন, প্রস্তাবিত সড়ক পরিবহন আইনে সড়ক দুর্ঘটনায় দ্রুত বিচারের বিধান রাখা হচ্ছে। এতে মোট ১২টি ক্ষেত্রে বিচারের কথা বলা আছে। এই আইনে কী আছে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী জানান, সড়ক দুর্ঘটনায় যে শাস্তি হওয়া উচিত, তার সর্বোচ্চটাই থাকছে সড়ক পরিবহন আইনে।
আইনটিতে ত্বরিত গতিতে বিচারের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। এই আইনে সংশ্লিষ্ট কোনো অপরাধী আইনের কোনো ফাঁকফোকর দিয়ে বের হতে পারবে না। যদি কেউ বড় অপরাধ করে তাহলে তাকে এ আইন অনুযায়ী বড় শাস্তি পেতে হবে। আবার কেউ ছোট অপরাধ করে বড় শাস্তি পাবারও আশঙ্কা থাকবে না এই আইনে। মন্ত্রী জানান, আইনটিতে আরো ১২টি বিষয় রাখা হয়েছে। চালকদের নানা ভুলের শাস্তি হিসেবে ব্যবহার করা হবে এই বিষয়গুলো। প্রধানমন্ত্রী চান আইনটি দ্রুত পাস হোক এবং অপরাধীরা শাস্তি পাক। এ বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ও আন্তরিক ভূমিকা রাখছে।
বলেন, সড়ক পরিবহন আইনের ভেটিং শেষ হয়েছে। আগামী মন্ত্রিসভায় আইনটি উঠতে পারে। এরপর বিকালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সভাপতিত্বে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে অন্যান্যের মধ্যে নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এবং পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গাসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এদের মধ্যে নৌমন্ত্রী শাজাহান খান বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি। আর জাতীয় পার্টির নেতা রাঙ্গা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি।
বৈঠকের পর আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণের আশ্বাস দিয়ে শিক্ষার্থীদের রাজপথ ছেড়ে ঘরে ফিরে যেতে অনুরোধ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মো. আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, আমরা ছাত্রছাত্রীদের আহ্বান জানাবো, তোমাদের যে সমবেদনা, যে দুর্ভোগ- সারা দেশে এই মেসেজ পৌঁছে গেছে। আমরা অনুরোধ করবো, তোমাদের দাবি সবই মানা হয়েছে। যারা অন্যায় করেছে, যারা ঘাতক, আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি যাতে তারা পায়, সেই ব্যবস্থা আমরা করছি। অভিভাবক, শিক্ষক যারা আছেন, তাদের বলছি, আপনারা আপনাদের ছেলেমেয়েদের, ছাত্রছাত্রীদের অনুরোধ করুন, তারা যেন ক্লাসরুমে ফিরে আসে। মন্ত্রী বলেন, শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনে জনদুর্ভোগ তৈরি হচ্ছে, সারা শহর অচল হয়ে যাচ্ছে; এটা কারও কাম্য নয়। আমাদের প্রিয় ছাত্রছাত্রী ভাইয়েরা অবরোধ তুলে নেবেন, এই অনুরোধ আমরা জানাচ্ছি। যারা অবরোধ করছে, তাদের জন্য কাম্য নয়।
যারা আমরা রাস্তায় চলাচল করছি, তাদের জন্য কাম্য নয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গত তিন দিনে ৩০৯টি গাড়ি ভাঙা হয়েছে, পোড়ানো হয়েছে আটটি গাড়ি। তিনি বলেন, ২৯ তারিখ ১৫০টি গাড়ি ভেঙেছে, ৩০ তারিখে ২৫টি গাড়ি ভেঙেছে এবং ৩১ তারিখে ১৩৪টি গাড়ি ভেঙেছে। এর মধ্যে পুলিশের ২টি, ফায়ার সার্ভিসের ১টি, যা পুলিশের ক্ষতি, ফায়ার সার্ভিসেরও ক্ষতি। এই যে আমাদের কোমলমতি ছাত্রছাত্রীরা অবরোধ করছে। একে কাজে লাগিয়ে স্বার্থান্বেষী মহল নতুন করে জ্বালাও-পোড়াও ও গাড়ি ভাঙছে। ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলন তুলে নিয়ে ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে আসাদুজ্জামান খান বলেন, অনুরোধ করবো, আমাদের প্রিয় কোমলমতি ছাত্রছাত্রীরা পড়াশোনায় মনোযোগী হবে। দোষীরা যাতে সর্বোচ্চ শাস্তি পায়, তার ব্যবস্থা নেবো। সরকার ব্যবস্থা নেবে। বিভিন্নভাবে দাবি-দাওয়া আমাদের কাছে পৌঁছেছে।
আমরা সবগুলো মেনে নিয়েছি। সবগুলোই মনে হয় যৌক্তিক। আমরা কোনোক্রমে লাইসেন্সবিহীন, রুট পারমিটবিহীন গাড়ি চলতে দেবো না। এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তিন দিন হয়ে যাচ্ছে, আমাদের সন্তানেরা রাস্তায়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও চান, আমাদের প্রিয় সন্তানেরা রাস্তা থেকে ফিরে আসুক। স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসুক। সমস্যা দীর্ঘদিনের, অল্প সময়ের মধ্যে কি এই সমস্যার সমাধান হবে?- এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যথার্থ বলেছেন। আমাদের ইনটেনশন হলো যেন দুর্ঘটনা না ঘটে। সবাই যেন আইন মেনে চলে। মালিক, শ্রমিক ও পথচারীরা আইনটা মেনে চলে। পথচারীরাও ভুল করে। সবাই যাতে মেনে চলে, তার জন্য আমরা আইনটা করতে চাইছি।
এদিকে বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর ছড়িয়ে পড়া ছাত্র বিক্ষোভকে অযৌক্তিক মনে করেন না সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ছাত্রদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে নতুন আইন পাস হচ্ছে, এরপরই সরকার কঠোর ব্যবস্থা নেবে। গতকাল সড়কমন্ত্রী সেতু ভবনে গণমাধ্যমকর্মীদের মুখোমুখি হয়ে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, এখানে একটা প্রচণ্ড ইমোশন কাজ করেছে, এর বাস্তবতাও আছে। কারণ দুইজন সম্ভাবনাময়ী শিক্ষার্থী মর্মান্তিকভাবে নিহত হয়েছেন। সেটার প্রতিবাদে এমন বিক্ষোভ আমি অযৌক্তিক বলে মনে করি না।
এ ধরনের বিক্ষোভ হতেই পারে। এই বিক্ষোভের মধ্যে বুধবার সড়কে বাসের সংখ্যাও আবার কম। এ বিষয়ে কাদের বলেন, কিছু কিছু অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর হওয়াতে পরিবহনের লোকজন কিছুটা ভয় পেয়েছিল। তারা তো ভাঙচুরের মধ্যে গাড়ি নামাতে চাইবে না। আমার মনে হয় ভীতিটা কেটে যাবে। আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হয়ে যাবে। এটা কি ভীতির কারণে নাকি কেউ কলকাঠি নাড়ছে- এমন প্রশ্নে সড়কমন্ত্রী বলেন, না না, এটা ভীতির কারণ। কারণ এমন অবস্থায় গাড়িতে আগুন দেবে বা ভাঙচুর করবে এই আশঙ্কা তো তাদের থাকতেই পারে। ছাত্রদের কিছু বলবেন কি না?- জানতে চাইলে কাদের বলেন, চলমান বিক্ষোভ কি এখনো আছে নাকি? তার প্রশ্নের জবাবে সাংবাদিকরা বিক্ষোভ চলছে জানালে মন্ত্রী বলেন, আজকে অনেক কম।
এ ব্যাপারে চেষ্টা করা হচ্ছে। আমি তাদের বলবো, সড়কে দুর্ঘটনা ও সড়কে বিশৃঙ্খলা নিয়ে আইন কেবিনেটে আসছে এবং আগামী সংসদ অধিবেশনে এ ব্যাপারে আইনও পাস হবে। কাজেই আমি ছাত্রছাত্রীদের বলবো যে, আমরা সরকার ও প্রধানমন্ত্রী নিজেই অবৈধ চালকদের ধরার জন্য নির্দেশ প্রদান করেছেন এবং তিনি মর্মাহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আমরা সবাই মর্মাহত। নৌমন্ত্রী নিজেও ক্ষমা চেয়েছেন। আমি ছাত্রছাত্রীদের বলবো শান্ত হওয়ার জন্য। স্ব স্ব ক্যাম্পাসে ফিরে গিয়ে তারা পড়াশোনায় মনোনিবেশ করবে। আমরা ভবিষ্যতে যাতে এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে তার জন্য কঠোর আইন করতে যাচ্ছি এবং ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছি। গত নয় বছরে সড়ক পরিবহনে নৈরাজ্য যতবারই আলোচনায় এসেছে ততবারই নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের নাম এসেছে।
সরকার কি তাকে নিয়ে এখন পর্যন্ত বিব্রত কিনা?’- এমন প্রশ্নে সড়কমন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকারের সময়ের আগে টার্মিনালে খুনোখুনি নিত্যদিনের ঘটনা ছিল। কিন্তু এই সরকারের সময়ে কিন্তু এই নৈরাজ্য হয়নি এবং যেভাবে ধর্মঘট হওয়ার কথা ছিল সেভাবে হয়নি। একমাত্র চিটাগাংয়ে ঈদের সময় একটা ধর্মঘট হয়েছিল, যাতে ভোগান্তিও হয়েছিলো। এছাড়া কিন্তু কোনো ধর্মঘট স্থায়ী রূপ নেয়নি। বাকিগুলো যেদিন ডেকেছে সেদিনই প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। এদিকে সচিবালয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেন, প্রস্তাবিত সড়ক পরিবহন আইনে সড়ক দুর্ঘটনায় দ্রুত বিচারের বিধান রাখা হচ্ছে। এতে মোট ১২টি ক্ষেত্রে বিচারের কথা বলা আছে। এই আইনে কী আছে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী জানান, সড়ক দুর্ঘটনায় যে শাস্তি হওয়া উচিত, তার সর্বোচ্চটাই থাকছে সড়ক পরিবহন আইনে।
আইনটিতে ত্বরিত গতিতে বিচারের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। এই আইনে সংশ্লিষ্ট কোনো অপরাধী আইনের কোনো ফাঁকফোকর দিয়ে বের হতে পারবে না। যদি কেউ বড় অপরাধ করে তাহলে তাকে এ আইন অনুযায়ী বড় শাস্তি পেতে হবে। আবার কেউ ছোট অপরাধ করে বড় শাস্তি পাবারও আশঙ্কা থাকবে না এই আইনে। মন্ত্রী জানান, আইনটিতে আরো ১২টি বিষয় রাখা হয়েছে। চালকদের নানা ভুলের শাস্তি হিসেবে ব্যবহার করা হবে এই বিষয়গুলো। প্রধানমন্ত্রী চান আইনটি দ্রুত পাস হোক এবং অপরাধীরা শাস্তি পাক। এ বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ও আন্তরিক ভূমিকা রাখছে।
No comments