জাহাঙ্গীর-হাসানের মিল-অমিল by ইকবাল আহমদ সরকার
গাজীপুর
সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে ৯ জন প্রার্থী থাকলেও মূল
প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে মূলত আওয়ামী লীগ ও বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর মধ্যে।
গাজীপুরে আওয়ামী লীগ প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মো. জাহাঙ্গীর
আলম আর বিএনপির প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার। বয়সে, রাজনীতিতে, অভিজ্ঞতায়
অনেক ব্যবধান থাকলেও অনেক ক্ষেত্রেই রয়েছে তাদের অনেক মিল। জাহাঙ্গীর আলম ও
হাসান সরকার দু’জনই অতীতের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। সিটি নির্বাচনে এবারই
প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল থেকে এই দু’জন প্রথম মনোনয়ন পেয়েছেন। জাহাঙ্গীর
আলম সংসদ নির্বাচন না করলেও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত
হয়েছিলেন। আর হাসান সরকার টঙ্গী পৌরসভার চেয়ারম্যান ও গাজীপুর-২ আসনে সংসদ
সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। এদিক থেকে দু’জনের মিল রয়েছে। এই দুই প্রার্থীর
মধ্যে আরেকটি বড় মিল হলো, তারা দু’জনই দলে এবং দলের বাইরে তৃণমূলে যথেষ্ট
জনপ্রিয়। স্থানীয় রাজনীতিতে ও নিজেদের দলে তাদের প্রভাব রয়েছে। রয়েছে আলাদা
বলয়। অবস্থান জোরালো। তাদের রয়েছে বিশাল কর্মী বাহিনী। দলীয় ভোটের বাইরেও
রয়েছে নিজস্ব ভোট ব্যাংক।
ছাত্রলীগের জেলার মূল দায়িত্বে না থাকলেও একটি কেন্দ্রীয় পদ আদায় করেছিলেন। সেখান থেকেই উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন, এরপরই কম বয়সেই দলের অনেক অভিজ্ঞ ও ত্যাগী নেতাদের পেছনে ফেলে হন মহানগর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। আর এবারে আজমত উল্লা খানের মতো ত্যাগী, অভিজ্ঞ ও প্রবীণ নেতাকে মনোনয়ন দৌড়ে পেছনে ফেলে নগরের মেয়র পদের প্রার্থিতা ছিনিয়ে নিলেন দল থেকে। প্রবীণ রাজনৈতিক হাসান সরকার বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য। জাহাঙ্গীর আলমের রয়েছে তরুণদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা। তার সমর্থকদের দাবি, জাহাঙ্গীরের কাছে কেউ কোনো কাজে গেলে খালি হাতে ফেরেন না। আর হাসান সরকারের রয়েছে দীর্ঘ রাজনৈতিক ক্যারিয়ার। তিনি এলাকায় স্কুল-কলেজসহ দুই ডজনেরও বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে নিজেকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। আর জাহাঙ্গীর ও এরই মাঝে তাকে শিক্ষাবান্ধব হিসেবে পরিচিত করতে অনেকটা সক্ষম হয়েছেন। নিজস্ব অর্থায়নে গড়ে তুলেছেন জাহাঙ্গীর শিক্ষাবৃত্তি ফাউন্ডেশন। কয়েকটি জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠান করে, কোটি কোটি টাকার শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করে নিজেকে তিনি নগরবাসীর কাছে নিয়ে গেছেন বিশেষ জায়গায়। গার্মেন্টসের ঝুট মালামাল ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীরের শ্রমিকদের সঙ্গে রয়েছে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ। তেমনি হাসান সরকারও এক সময় ছিলেন টঙ্গীর তুখোর শ্রমিক নেতা। জীবনের অনেক সময় কেটেছে শ্রমিক রাজনীতিতে। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে মামলায় জেল খেটেছেন হাসান সরকার। রাজনৈতিক জীবনে তেমন প্রতিকূল অবস্থায় না পড়লেও তিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন একবার। দু’জনই ব্যক্তিগতভাবে ব্যবসায়ী, অঢেল বিত্ত-বৈভবের মালিক। আলাদা ধরনের ব্যক্তিগত ইমেজ রয়েছে দু’জনেরই। ইসলাম ভক্ত হাসান সরকারের ধর্মীয় ও ধর্মীয় রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে রয়েছে বিশেষ সম্পর্ক। জাহাঙ্গীর আলম ও পিছিয়ে নেই। হেফাজতের অনেক নেতাকেই অতীতে দেখা গেছে জাহাঙ্গীরের গাড়িতে, আশপাশে। হেফাজতের আমির আল্লামা শফি আহমেদের সঙ্গে এরই মাঝে দেখা করে জাহাঙ্গীর নিয়েছেন আশীর্বাদ।
আবার দলীয় মনোনয়নের ক্ষেত্রে বিএনপির প্রার্থী মনোনয়নের বেলায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে বিবেচনায় রেখেছে। গাজীপুরে আওয়ামী লীগ জাহাঙ্গীর আলমকে মনোনয়ন দেয়ায় পর বিএনপি হাসান উদ্দিন সরকারকে মনোনয়ন দিয়েছে বলে অনেকেই মনে করছেন। আওয়ামী লীগ থেকে আজমত উল্লা খান মনোনয়ন পেলে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী বর্তমান মেয়র অধ্যাপক এমএ মান্নান-ই মনোনয়ন পেতেন বলে স্থানীয়রা ধারণা করছেন। আওয়ামী লীগের তরুণ নেতার সঙ্গে ভোটের মাঠে দৌড়ানোর জন্য হাসানকেই প্রয়োজন হয়েছে বিএনপির। জাহাঙ্গীর আলম ও হাসান সরকার এ দু’জনের মধ্যে বয়সের ব্যবধানে অনেক কমে আছেন জাহাঙ্গীর আলম। তার বছস ৩৮। আর বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসান উদ্দীন সরকারের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা রয়েছে চার দশকেরও বেশি সময়কার। নির্বাচনে ভোটের ক্ষেত্রে টঙ্গী এলাকায় একচেটিয়া আধিপত্য প্রমাণ করতে চান হাসান সরকার, আর জাহাঙ্গীর প্রমাণ করতে চান গাজীপুরে একচেটিয়া আধিপত্য।
এই দু’জন মেয়র প্রার্থী নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার পরও কয়েকবার একসঙ্গে দাঁড়িয়ে হাত মিলিয়েছেন, কোলাকুলি করেছেন। শুক্রবার দু’জনই জুমার নামাজ পড়েছেন একই মসজিদে। তারা দু’জনই বলেছেন, নির্বাচন সুষ্ঠু হলে তারা ফলাফল মেনে নেবেন ও বিজয়ী প্রার্থীকে শুভেচ্ছা জানাবেন। মনোনয়নের আগে জাহাঙ্গীর আলম মনে প্রাণে চেয়েছেন, বিএনপির প্রার্থী হয়ে আসুক নগরবাসীর কাছে এমএ মান্নানের চেয়ে তুলনামূলক কম জনপ্রিয় হাসান সরকার। কিন্তু এখন নির্বাচনী মাঠে নেমে দু’জনই স্বীকার করেছেন, অপর পক্ষকে অবহেলা করার সুযোগ নেই।
আগামী ১৫ই মে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন। ২৩শে এপ্রিল প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। আর ২৪শে এপ্রিল প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে। প্রতীক বরাদ্দের পরই আনুষ্ঠানিকভাবে গণসংযোগ ও নির্বাচনী প্রচারে মাঠে নামবেন তারা। এই সিটিতে প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের মধ্যেই হচ্ছে ভোটের মূল লড়াই। এ বিষয়ে ভোটারদের যুক্তি হচ্ছে, যেহেতু এই নির্বাচন হচ্ছে দলীয় প্রতীকে, তাই ব্যক্তি ইমেজের চেয়ে দলীয় প্রতীকই প্রাধান্য পাবে। জাহাঙ্গীর আলম মনে করছেন, বিএনপি রাজনৈতিকভাবে পিছিয়ে আছে, বর্তমান সরকারের আমলের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা আর নগর উন্নয়নের স্বার্থেই তাকে নৌকা মার্কায় বেছে নেবেন নগরবাসী। অন্যদিকে, হাসান সরকার মনে করছেন সরকারের প্রতিহিংসামূলক আচরণ, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারাগারে আটক রাখা, আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা কমে যাওয়াসহ নানা কারণে ধানের শীষে ভোট দিয়ে তাকেই নির্বাচিত করবেন নগরবাসী।
ছাত্রলীগের জেলার মূল দায়িত্বে না থাকলেও একটি কেন্দ্রীয় পদ আদায় করেছিলেন। সেখান থেকেই উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন, এরপরই কম বয়সেই দলের অনেক অভিজ্ঞ ও ত্যাগী নেতাদের পেছনে ফেলে হন মহানগর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। আর এবারে আজমত উল্লা খানের মতো ত্যাগী, অভিজ্ঞ ও প্রবীণ নেতাকে মনোনয়ন দৌড়ে পেছনে ফেলে নগরের মেয়র পদের প্রার্থিতা ছিনিয়ে নিলেন দল থেকে। প্রবীণ রাজনৈতিক হাসান সরকার বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য। জাহাঙ্গীর আলমের রয়েছে তরুণদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা। তার সমর্থকদের দাবি, জাহাঙ্গীরের কাছে কেউ কোনো কাজে গেলে খালি হাতে ফেরেন না। আর হাসান সরকারের রয়েছে দীর্ঘ রাজনৈতিক ক্যারিয়ার। তিনি এলাকায় স্কুল-কলেজসহ দুই ডজনেরও বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে নিজেকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। আর জাহাঙ্গীর ও এরই মাঝে তাকে শিক্ষাবান্ধব হিসেবে পরিচিত করতে অনেকটা সক্ষম হয়েছেন। নিজস্ব অর্থায়নে গড়ে তুলেছেন জাহাঙ্গীর শিক্ষাবৃত্তি ফাউন্ডেশন। কয়েকটি জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠান করে, কোটি কোটি টাকার শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করে নিজেকে তিনি নগরবাসীর কাছে নিয়ে গেছেন বিশেষ জায়গায়। গার্মেন্টসের ঝুট মালামাল ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীরের শ্রমিকদের সঙ্গে রয়েছে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ। তেমনি হাসান সরকারও এক সময় ছিলেন টঙ্গীর তুখোর শ্রমিক নেতা। জীবনের অনেক সময় কেটেছে শ্রমিক রাজনীতিতে। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে মামলায় জেল খেটেছেন হাসান সরকার। রাজনৈতিক জীবনে তেমন প্রতিকূল অবস্থায় না পড়লেও তিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন একবার। দু’জনই ব্যক্তিগতভাবে ব্যবসায়ী, অঢেল বিত্ত-বৈভবের মালিক। আলাদা ধরনের ব্যক্তিগত ইমেজ রয়েছে দু’জনেরই। ইসলাম ভক্ত হাসান সরকারের ধর্মীয় ও ধর্মীয় রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে রয়েছে বিশেষ সম্পর্ক। জাহাঙ্গীর আলম ও পিছিয়ে নেই। হেফাজতের অনেক নেতাকেই অতীতে দেখা গেছে জাহাঙ্গীরের গাড়িতে, আশপাশে। হেফাজতের আমির আল্লামা শফি আহমেদের সঙ্গে এরই মাঝে দেখা করে জাহাঙ্গীর নিয়েছেন আশীর্বাদ।
আবার দলীয় মনোনয়নের ক্ষেত্রে বিএনপির প্রার্থী মনোনয়নের বেলায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে বিবেচনায় রেখেছে। গাজীপুরে আওয়ামী লীগ জাহাঙ্গীর আলমকে মনোনয়ন দেয়ায় পর বিএনপি হাসান উদ্দিন সরকারকে মনোনয়ন দিয়েছে বলে অনেকেই মনে করছেন। আওয়ামী লীগ থেকে আজমত উল্লা খান মনোনয়ন পেলে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী বর্তমান মেয়র অধ্যাপক এমএ মান্নান-ই মনোনয়ন পেতেন বলে স্থানীয়রা ধারণা করছেন। আওয়ামী লীগের তরুণ নেতার সঙ্গে ভোটের মাঠে দৌড়ানোর জন্য হাসানকেই প্রয়োজন হয়েছে বিএনপির। জাহাঙ্গীর আলম ও হাসান সরকার এ দু’জনের মধ্যে বয়সের ব্যবধানে অনেক কমে আছেন জাহাঙ্গীর আলম। তার বছস ৩৮। আর বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসান উদ্দীন সরকারের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা রয়েছে চার দশকেরও বেশি সময়কার। নির্বাচনে ভোটের ক্ষেত্রে টঙ্গী এলাকায় একচেটিয়া আধিপত্য প্রমাণ করতে চান হাসান সরকার, আর জাহাঙ্গীর প্রমাণ করতে চান গাজীপুরে একচেটিয়া আধিপত্য।
এই দু’জন মেয়র প্রার্থী নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার পরও কয়েকবার একসঙ্গে দাঁড়িয়ে হাত মিলিয়েছেন, কোলাকুলি করেছেন। শুক্রবার দু’জনই জুমার নামাজ পড়েছেন একই মসজিদে। তারা দু’জনই বলেছেন, নির্বাচন সুষ্ঠু হলে তারা ফলাফল মেনে নেবেন ও বিজয়ী প্রার্থীকে শুভেচ্ছা জানাবেন। মনোনয়নের আগে জাহাঙ্গীর আলম মনে প্রাণে চেয়েছেন, বিএনপির প্রার্থী হয়ে আসুক নগরবাসীর কাছে এমএ মান্নানের চেয়ে তুলনামূলক কম জনপ্রিয় হাসান সরকার। কিন্তু এখন নির্বাচনী মাঠে নেমে দু’জনই স্বীকার করেছেন, অপর পক্ষকে অবহেলা করার সুযোগ নেই।
আগামী ১৫ই মে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন। ২৩শে এপ্রিল প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। আর ২৪শে এপ্রিল প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে। প্রতীক বরাদ্দের পরই আনুষ্ঠানিকভাবে গণসংযোগ ও নির্বাচনী প্রচারে মাঠে নামবেন তারা। এই সিটিতে প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের মধ্যেই হচ্ছে ভোটের মূল লড়াই। এ বিষয়ে ভোটারদের যুক্তি হচ্ছে, যেহেতু এই নির্বাচন হচ্ছে দলীয় প্রতীকে, তাই ব্যক্তি ইমেজের চেয়ে দলীয় প্রতীকই প্রাধান্য পাবে। জাহাঙ্গীর আলম মনে করছেন, বিএনপি রাজনৈতিকভাবে পিছিয়ে আছে, বর্তমান সরকারের আমলের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা আর নগর উন্নয়নের স্বার্থেই তাকে নৌকা মার্কায় বেছে নেবেন নগরবাসী। অন্যদিকে, হাসান সরকার মনে করছেন সরকারের প্রতিহিংসামূলক আচরণ, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারাগারে আটক রাখা, আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা কমে যাওয়াসহ নানা কারণে ধানের শীষে ভোট দিয়ে তাকেই নির্বাচিত করবেন নগরবাসী।
No comments