৩৪ কাউন্সিলর প্রার্থীর মামলা বিচারাধীন by রাশিদুল ইসলাম
খুলনা
সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে যাচাই-বাছাই শেষে ২২৩ প্রার্থীকে
চূড়ান্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে স্বশিক্ষিত বা স্বাক্ষর করতে পারেন এমন
প্রার্থীর সংখ্যা ৪৪ জন। স্নাতক ও মাস্টার্স ডিগ্রিধারী ৫৬ জন। আর ৩৪ জনের
নামে হত্যাসহ নানা মামলা বিচারাধীন রয়েছে। সাধারণ কাউন্সিলর পদে থাকা ১৮২
জনের অধিকাংশই ক্ষুদ্র ব্যবসা ও ঠিকাদারির সঙ্গে যুক্ত। নির্বাচন অফিসে জমা
দেয়া হলফনামা থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
হলফনামা পর্যবেক্ষণ করে জানা গেছে, সাধারণ ওয়ার্ডের ১৮২ জন কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে ৯ জন মাস্টার্স, ৩৮ জন স্নাতক, ৩৩ জন এইচএসসি, দু’জন ডিপ্লোমা প্রকৌশলী, ৩৮ জন এসএসসি, দু’জন দশম শ্রেণি, একজন নবম শ্রেণি, ১৯ জন অষ্টম শ্রেণি, দু’জন সপ্তম শ্রেণি, একজন পঞ্চম শ্রেণি, ৩৭ জন স্বাক্ষর করতে পারেন। ৩২ জনের নামে হত্যাসহ বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগে মামলা বিচারাধীন রয়েছে।
আর সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ৪১ প্রার্থীর মধ্যে তিন জন মাস্টার্স, ছয় জন বিএ, তিনজন এইচএসসি, ছয় জন এসএসসি, ১৩ জন অষ্টম শ্রেণি, একজন সপ্তম শ্রেণি, একজন পঞ্চম শ্রেণি, সাতজন স্বাক্ষর করতে পারেন। আর দুইজনের নামে আদালতে মামলা বিচারাধীন রয়েছে।
কেসিসি নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার ও খুলনা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ইউনুস আলী বলেন, যাচাই-বাছাই শেষে ত্রুটিপূর্ণ, আপত্তিকর তথ্য-উপাত্ত থাকা, ঋণখেলাপি, আয়কর রিটার্ন সমস্যা থাকা, অসম্পূর্ণ মনোনয়নপত্র, মামলায় পলাতক থাকাসহ বিভিন্ন জরুরি বিষয়গুলো যাচাই করার পর এসব প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে। ২৩শে এপ্রিল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার শেষে ২৪শে এপ্রিল প্রতীক বরাদ্দ করা হবে। তারপরই নির্বাচনী প্রচারে নামতে পারবেন প্রার্থীরা, যা ১৩ মে পর্যন্ত অব্যাহতভাবে চলবে। প্রচারের সময় অবশ্যই প্রার্থীদের নির্বাচনী আচরণবিধি অনুসরণ করতে হবে। এ সময় মাঠে ভ্রাম্যমাণ আদালত সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে। আচরণবিধি লঙ্ঘনের কোনও অভিযোগ বা প্রমাণ দৃশ্যমান হলেই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সেখানে তাৎক্ষণিক আইনি পদক্ষেপ নেবেন।
সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৪১ জনের মধ্যে ২৯ গৃহিণী: খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ব্যবসায়ী ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদপ্রার্থীদের অধিকাংশই গৃহিণী। নির্বাচন অফিসে দাখিলকৃত প্রার্থীদের হলফনামার তথ্য অনুসারে জানা যায়, ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে থাকা ৪১ কাউন্সিলর প্রার্থীর ২৯ জনই পেশা হিসেবে উল্লেখ করেছেন গৃহিণী এবং ৩১টি সাধারণ ওয়ার্ডে ১৮২ জন প্রার্থীর ১৪৫ জনই পেশা হিসেবে ব্যবসার কথা লিখেছেন। কেসিসি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী কর্তৃক নির্বাচন অফিসে দাখিলকৃত হলফনামা থেকে এ সব তথ্য পাওয়া গেছে।
হলফনামায় দেয়া তথ্য অনুসারে আরও জানা যায়, সাধারণ ওয়ার্ডের প্রার্থীদের মধ্যে তিনজন বেসরকারি চাকরিজীবী, দুইজন অবসরপ্রাপ্ত, ১২ জনের আয়ের উৎস পৈতৃক সম্পত্তি ও বাড়ি ভাড়া, দুইজন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার, ১৩ জন কৃষি কাজ করেন এবং পাঁচজন আইনজীবী। পাশাপাশি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে সাতজন ব্যবসায়ী, দুইজন আইনজীবী, দুইজন শিক্ষক ও একজন ঠিকাদার রয়েছেন।
২৮৯টি ভোটকেন্দ্র পাহারায় থাকবে পাঁচ হাজার পুলিশ
খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও প্রভাবমুক্ত রাখতে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) পক্ষ থেকে বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ী, পলাতক আসামি গ্রেপ্তার ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের লক্ষ্যে এ অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। শুক্রবার দিবাগত রাত থেকে এ অভিযান শুরু হয়েছে। অভিযান টানা ১০দিন ৩০শে এপ্রিল পর্যন্ত চলবে। এরপর দুই-তিন দিন বিরতি দিয়ে আবার শুরু হয়ে ১৫ই মে নির্বাচনের দিন পর্যন্ত চলবে। এদিকে খুলনার ২৮৯টি ভোটকেন্দ্র পাহারা দেয়ার জন্য পাঁচ হাজার পুলিশ দায়িত্ব পালন করবে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আগামী ২৪শে এপ্রিল প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ করার পরপরই প্রার্থীরা তাদের নির্বাচনী প্রচারণায় নেমে পড়বেন। নির্বাচনী প্রচারণা ও ভোটের আগের দিন এবং ভোটের দিন সন্ত্রাসী অস্ত্রধারীরা বিভিন্ন প্রার্থীর পক্ষে প্রতিপক্ষ প্রার্থী ও ভোটারদের ভয়-ভীতি দেখিয়ে প্রভাবিত করতে পারে এমন অনুমানের ভিত্তিতে বিশেষ অভিযান পরিচালিত হবে। সকল প্রার্থী তাদের নির্বাচনী প্রচারণা ও ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে ভোট প্রদান করতে পারে সে লক্ষ্যে কেএমপি’র পক্ষ থেকে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
বিশেষ অভিযানের পাশাপাশি নগরীর বিভিন্ন প্রবেশদ্বারে বসানো হয়েছে চেকপোস্ট। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, জিরোপয়েন্ট, রূপসা ঘাট, জেলখানা ঘাট, আইডব্লিউটিএ ঘাট, পথের বাজার, আড়ংঘাটা বাইপাস রোড, খালিশপুরের বিভিন্ন ঘাট এলাকা।
সূত্র জানায়, নগরীর আটটি থানা যথাক্রমে খুলনা সদর, সোনাডাঙ্গা, খালিশপুর, দৌলতপুর, খানজাহান আলী, আড়ংঘাটা, হরিণটানা ও লবণচরা থানা এলাকায় নিয়মিত যে ফোর্স রয়েছে সেখানে আরও বেশি ফোর্স নিয়োগ দেয়া হয়েছে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করার জন্য।
অপরদিকে আগামী ১৫ই মে খুলনা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন উপলক্ষে নগরীর ২৮৯ ভোটকেন্দ্রে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা দিতে পাঁচহাজার পুলিশ মোতায়েন থাকবে। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে দুই থেকে আড়াই হাজার পুলিশ সদস্য এবং অবশিষ্ট পুলিশ সদস্য অন্যান্য জেলা থেকে এনে প্রয়োজন মেটানো হবে। পুলিশের সঙ্গে আনসার সদস্যরা থাকবেন সহায়তায় এবং বিজিবি স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে। এছাড়াও থাকবে র্যাব’র টহল। নির্বাচনে কোনো প্রকার সহিংসতার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে কেএমপি’র সূত্রে জানা গেছে।
ইতোমধ্যে ২৮৯টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ২২৬টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। অবশিষ্ট ৬৩টি কেন্দ্রকে সাধারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে কেএমপি’র পক্ষ থেকে ২২৬টি আসনকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী মেয়র প্রার্থীরা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত দলের খুলনা মহানগর সভাপতি ও সাবেক এমপি তালুকদার আবদুুল খালেক, বিএনপি মনোনীত দলের মহানগর সভাপতি ও সাবেক এমপি নজরুল ইসলাম মঞ্জু, জাতীয় পার্টি মনোনীত দলের মহানগর সদস্য সচিব এসএম শফিকুর রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত দলের মহানগর সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা মুজাম্মিল হক ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) মনোনীত দলের মহানগর সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বাবু। সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৩১টি ওয়ার্ডে ১৮১ জন এবং সংরক্ষিত ১০টি নারী কাউন্সিলর পদে ৪৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
মেয়র প্রার্থীদের সুজনের মুখোমুখি অনুষ্ঠান ২৮ এপ্রিল: আগামী ২৮শে এপ্রিল খুলনা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের মুখোমুখি অনুষ্ঠান সফল করতে নানা কর্মযজ্ঞ হাতে নিয়েছে সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজন জেলা ও মহানগর কমিটি। গৃহীত কর্মপরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে আগামী ২৬শে এপ্রিল বিকেল ৫ টায় সুজন খুলনার কার্যালয়ে উভয় কমিটির যৌথ সভা, ২৮শে এপ্রিল সকাল ১০টায় শহীদ হাদিস পার্কে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের মুখোমুখি অনুষ্ঠান, ২৭শে এপ্রিল থেকে ৯ মে পর্যন্ত নগরীর ২০টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থীদের মুখোমুখি অনুষ্ঠান, সৎ ও যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দিতে ভোটাদের উদ্বুদ্ধ করতে ৫ মে থেকে ১২ মে পর্যন্ত নগরীতে গাড়িতে করে ভ্রাম্যমাণ সাংস্কৃতিক (প্রচারণা) অনুষ্ঠান, ১৩ মে মানববন্ধন, ৩০শে এপ্রিল সকালে খালিশপুরে কাউন্সিলর প্রার্থীদের নিয়ে শান্তির পদযাত্রা ও আলোচনা সভা। শুক্রবার সন্ধ্যায় খুলনা সুজনের নিজস্ব কার্যালয়ে উভয় কমিটির যৌথ সভায় এসব কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্পন্ন ও সৎ যোগ্য প্রার্থীকে ভোট প্রদানে ভোটারদের উৎসাহিত করতে সুজন এসব কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা সুজনের সভাপতি অধ্যক্ষ জাফর ইমাম।
হলফনামা পর্যবেক্ষণ করে জানা গেছে, সাধারণ ওয়ার্ডের ১৮২ জন কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে ৯ জন মাস্টার্স, ৩৮ জন স্নাতক, ৩৩ জন এইচএসসি, দু’জন ডিপ্লোমা প্রকৌশলী, ৩৮ জন এসএসসি, দু’জন দশম শ্রেণি, একজন নবম শ্রেণি, ১৯ জন অষ্টম শ্রেণি, দু’জন সপ্তম শ্রেণি, একজন পঞ্চম শ্রেণি, ৩৭ জন স্বাক্ষর করতে পারেন। ৩২ জনের নামে হত্যাসহ বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগে মামলা বিচারাধীন রয়েছে।
আর সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ৪১ প্রার্থীর মধ্যে তিন জন মাস্টার্স, ছয় জন বিএ, তিনজন এইচএসসি, ছয় জন এসএসসি, ১৩ জন অষ্টম শ্রেণি, একজন সপ্তম শ্রেণি, একজন পঞ্চম শ্রেণি, সাতজন স্বাক্ষর করতে পারেন। আর দুইজনের নামে আদালতে মামলা বিচারাধীন রয়েছে।
কেসিসি নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার ও খুলনা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ইউনুস আলী বলেন, যাচাই-বাছাই শেষে ত্রুটিপূর্ণ, আপত্তিকর তথ্য-উপাত্ত থাকা, ঋণখেলাপি, আয়কর রিটার্ন সমস্যা থাকা, অসম্পূর্ণ মনোনয়নপত্র, মামলায় পলাতক থাকাসহ বিভিন্ন জরুরি বিষয়গুলো যাচাই করার পর এসব প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে। ২৩শে এপ্রিল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার শেষে ২৪শে এপ্রিল প্রতীক বরাদ্দ করা হবে। তারপরই নির্বাচনী প্রচারে নামতে পারবেন প্রার্থীরা, যা ১৩ মে পর্যন্ত অব্যাহতভাবে চলবে। প্রচারের সময় অবশ্যই প্রার্থীদের নির্বাচনী আচরণবিধি অনুসরণ করতে হবে। এ সময় মাঠে ভ্রাম্যমাণ আদালত সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে। আচরণবিধি লঙ্ঘনের কোনও অভিযোগ বা প্রমাণ দৃশ্যমান হলেই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সেখানে তাৎক্ষণিক আইনি পদক্ষেপ নেবেন।
সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৪১ জনের মধ্যে ২৯ গৃহিণী: খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ব্যবসায়ী ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদপ্রার্থীদের অধিকাংশই গৃহিণী। নির্বাচন অফিসে দাখিলকৃত প্রার্থীদের হলফনামার তথ্য অনুসারে জানা যায়, ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে থাকা ৪১ কাউন্সিলর প্রার্থীর ২৯ জনই পেশা হিসেবে উল্লেখ করেছেন গৃহিণী এবং ৩১টি সাধারণ ওয়ার্ডে ১৮২ জন প্রার্থীর ১৪৫ জনই পেশা হিসেবে ব্যবসার কথা লিখেছেন। কেসিসি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী কর্তৃক নির্বাচন অফিসে দাখিলকৃত হলফনামা থেকে এ সব তথ্য পাওয়া গেছে।
হলফনামায় দেয়া তথ্য অনুসারে আরও জানা যায়, সাধারণ ওয়ার্ডের প্রার্থীদের মধ্যে তিনজন বেসরকারি চাকরিজীবী, দুইজন অবসরপ্রাপ্ত, ১২ জনের আয়ের উৎস পৈতৃক সম্পত্তি ও বাড়ি ভাড়া, দুইজন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার, ১৩ জন কৃষি কাজ করেন এবং পাঁচজন আইনজীবী। পাশাপাশি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে সাতজন ব্যবসায়ী, দুইজন আইনজীবী, দুইজন শিক্ষক ও একজন ঠিকাদার রয়েছেন।
২৮৯টি ভোটকেন্দ্র পাহারায় থাকবে পাঁচ হাজার পুলিশ
খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও প্রভাবমুক্ত রাখতে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) পক্ষ থেকে বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ী, পলাতক আসামি গ্রেপ্তার ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের লক্ষ্যে এ অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। শুক্রবার দিবাগত রাত থেকে এ অভিযান শুরু হয়েছে। অভিযান টানা ১০দিন ৩০শে এপ্রিল পর্যন্ত চলবে। এরপর দুই-তিন দিন বিরতি দিয়ে আবার শুরু হয়ে ১৫ই মে নির্বাচনের দিন পর্যন্ত চলবে। এদিকে খুলনার ২৮৯টি ভোটকেন্দ্র পাহারা দেয়ার জন্য পাঁচ হাজার পুলিশ দায়িত্ব পালন করবে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আগামী ২৪শে এপ্রিল প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ করার পরপরই প্রার্থীরা তাদের নির্বাচনী প্রচারণায় নেমে পড়বেন। নির্বাচনী প্রচারণা ও ভোটের আগের দিন এবং ভোটের দিন সন্ত্রাসী অস্ত্রধারীরা বিভিন্ন প্রার্থীর পক্ষে প্রতিপক্ষ প্রার্থী ও ভোটারদের ভয়-ভীতি দেখিয়ে প্রভাবিত করতে পারে এমন অনুমানের ভিত্তিতে বিশেষ অভিযান পরিচালিত হবে। সকল প্রার্থী তাদের নির্বাচনী প্রচারণা ও ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে ভোট প্রদান করতে পারে সে লক্ষ্যে কেএমপি’র পক্ষ থেকে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
বিশেষ অভিযানের পাশাপাশি নগরীর বিভিন্ন প্রবেশদ্বারে বসানো হয়েছে চেকপোস্ট। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, জিরোপয়েন্ট, রূপসা ঘাট, জেলখানা ঘাট, আইডব্লিউটিএ ঘাট, পথের বাজার, আড়ংঘাটা বাইপাস রোড, খালিশপুরের বিভিন্ন ঘাট এলাকা।
সূত্র জানায়, নগরীর আটটি থানা যথাক্রমে খুলনা সদর, সোনাডাঙ্গা, খালিশপুর, দৌলতপুর, খানজাহান আলী, আড়ংঘাটা, হরিণটানা ও লবণচরা থানা এলাকায় নিয়মিত যে ফোর্স রয়েছে সেখানে আরও বেশি ফোর্স নিয়োগ দেয়া হয়েছে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করার জন্য।
অপরদিকে আগামী ১৫ই মে খুলনা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন উপলক্ষে নগরীর ২৮৯ ভোটকেন্দ্রে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা দিতে পাঁচহাজার পুলিশ মোতায়েন থাকবে। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে দুই থেকে আড়াই হাজার পুলিশ সদস্য এবং অবশিষ্ট পুলিশ সদস্য অন্যান্য জেলা থেকে এনে প্রয়োজন মেটানো হবে। পুলিশের সঙ্গে আনসার সদস্যরা থাকবেন সহায়তায় এবং বিজিবি স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে। এছাড়াও থাকবে র্যাব’র টহল। নির্বাচনে কোনো প্রকার সহিংসতার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে কেএমপি’র সূত্রে জানা গেছে।
ইতোমধ্যে ২৮৯টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ২২৬টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। অবশিষ্ট ৬৩টি কেন্দ্রকে সাধারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে কেএমপি’র পক্ষ থেকে ২২৬টি আসনকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী মেয়র প্রার্থীরা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত দলের খুলনা মহানগর সভাপতি ও সাবেক এমপি তালুকদার আবদুুল খালেক, বিএনপি মনোনীত দলের মহানগর সভাপতি ও সাবেক এমপি নজরুল ইসলাম মঞ্জু, জাতীয় পার্টি মনোনীত দলের মহানগর সদস্য সচিব এসএম শফিকুর রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত দলের মহানগর সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা মুজাম্মিল হক ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) মনোনীত দলের মহানগর সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বাবু। সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৩১টি ওয়ার্ডে ১৮১ জন এবং সংরক্ষিত ১০টি নারী কাউন্সিলর পদে ৪৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
মেয়র প্রার্থীদের সুজনের মুখোমুখি অনুষ্ঠান ২৮ এপ্রিল: আগামী ২৮শে এপ্রিল খুলনা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের মুখোমুখি অনুষ্ঠান সফল করতে নানা কর্মযজ্ঞ হাতে নিয়েছে সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজন জেলা ও মহানগর কমিটি। গৃহীত কর্মপরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে আগামী ২৬শে এপ্রিল বিকেল ৫ টায় সুজন খুলনার কার্যালয়ে উভয় কমিটির যৌথ সভা, ২৮শে এপ্রিল সকাল ১০টায় শহীদ হাদিস পার্কে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের মুখোমুখি অনুষ্ঠান, ২৭শে এপ্রিল থেকে ৯ মে পর্যন্ত নগরীর ২০টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থীদের মুখোমুখি অনুষ্ঠান, সৎ ও যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দিতে ভোটাদের উদ্বুদ্ধ করতে ৫ মে থেকে ১২ মে পর্যন্ত নগরীতে গাড়িতে করে ভ্রাম্যমাণ সাংস্কৃতিক (প্রচারণা) অনুষ্ঠান, ১৩ মে মানববন্ধন, ৩০শে এপ্রিল সকালে খালিশপুরে কাউন্সিলর প্রার্থীদের নিয়ে শান্তির পদযাত্রা ও আলোচনা সভা। শুক্রবার সন্ধ্যায় খুলনা সুজনের নিজস্ব কার্যালয়ে উভয় কমিটির যৌথ সভায় এসব কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্পন্ন ও সৎ যোগ্য প্রার্থীকে ভোট প্রদানে ভোটারদের উৎসাহিত করতে সুজন এসব কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা সুজনের সভাপতি অধ্যক্ষ জাফর ইমাম।
No comments