ফেসবুকে প্রেম, বিয়ে অতঃপর... by তামান্না মোমিন খান
ফেসবুকে
পরিচয়, প্রেম। এরপর বিয়ে। বিয়ের কিছু দিন যেতে না যেতেই বিচ্ছেদ। যূথী আর
হুমায়ূনের এমনই প্রেমকাহিনী। এখন হুমায়ুন সৌদি আরবে। যূথী বাংলাদেশে। যূথী
বিষয়টির প্রতিকার চান নারী নির্যাতন প্রতিরোধ সেলে। সেখানেই কথা হয় তার
সঙ্গে। যূথী জানান, ফেসবুকে তাকে প্রথম দেখে হুমায়ুন। সামনাসামনি না দেখেই
যূথীর প্রেমে পড়ে যান তিনি। একাধিকবার যূথীকে ফেসবুক মেসেঞ্জারে বার্তা
পাঠান হুমায়ুন। অনুরোধ করেন একবারের জন্য হলেও তার সঙ্গে কথা বলতে। অচেনা
কারো সঙ্গে কথা বলতে রাজি ছিলেন না যূথী। এ কারণে যূথী হুমায়ুনের বার্তার
উত্তর দিতেন না। কিন্তু নাছোড়বান্দা হুমায়ুন সকাল-বিকাল বার্তা পাঠাতেই
থাকেন। বিরক্ত হয়েই একদিন যূথী জানতে চায় হুমায়ুনের বাড়ি কোথায়? হুমায়ুন
জানান, তার বাড়ি মাদারীপুর। যূথীর বাড়িও মাদারীপুর। এলাকার ছেলে জেনে যূথী
হুমায়ুনের ওপর আস্থা রাখেন। এরপর থেকে তাদের নিয়মিত কথা হতো ভিডিও কল ও
মেসেঞ্জারে। এভাবেই কেটে যায় পাঁচ মাস। যূথী হুমায়ুনের সঙ্গে দেখা করতে
চান। কিন্তু যূথীকে না দেখেই সরাসরি বিয়ের প্রস্তাব দেন হুমায়ুন। শর্ত দেন
তা পরিবারকে জানানো যাবে না। বিয়ের পর পরিবারকে জানানো হবে যূথীকে এমনটাই
বলেছিলেন হুমায়ুন। বিয়ের কথা পরিবারের কাছে গোপন রাখতে রাজি হলেও সামনে না
দেখে বিয়ে করতে রাজি হয় না যূথী। এরপর গত বছরের ২৬শে জানুয়ারি প্রথম দেখা
হয় যূথী ও হুমায়ুনের। দেখা হওয়ার তিনদিন পর ২৯শে জানুয়ারি পরিবারকে না
জানিয়ে মাদারীপুরে এক আত্মীয়ের বাড়িতে গোপনে বিয়ে করেন যূথী ও হুমায়ুন।
দেনমোহর ধার্য করা হয় তিন লাখ টাকা। বিয়ের পর দুজনে মাদারীপুর থেকে সোজা
ঢাকায় যূথীর বোনের বাড়িতে এসে উঠেন। যূথী আর হুমায়ুনের দিন ভালোই কাটছিল।
এর মধ্যে হুমায়ূনকে বিয়ের কথা তার বাড়িতে জানাতে চাপ দেন যূথী। বিয়ের দশদিন
পর হুমায়ুন যূথীকে এসে হঠাৎ জানান পরের সপ্তাহে তিনি সৌদি আরব চলে
যাচ্ছেন। বিদেশে গিয়ে তিনি তার পরিবারকে বিয়ের কথা জানাবেন। ১৭ই
ফেব্রুয়ারি হুমায়ুন সৌদি আরব চলে যান। বিদেশে যাওয়ার পর মাসখানেক যূথীর
সঙ্গে নিয়মিত কথা হতো হুমায়ুনের। এরপরই ফোন করা কমিয়ে দেয় হমায়ুন। যূথী
যখনই পরিবারের কাছে তাদের বিয়ের কথা জানাতে বলতেন হুমায়ুন বলতেন দেশে ফিরে
এসে বলবেন। একসময় হুমায়ুন বলেন, যূথী তার চেয়ে ছয় বছরের বড়। ছেলের চেয়ে
বয়সে বড় বউ তার পরিবার মেনে নেবে না। এরপর থেকে যূথীর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ
করে দেন। যূথী বলেন, বার বার চেষ্টা করেও হুমায়ুনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে
ব্যর্থ হয়েছি। বিদেশে যাবার আগে হুমায়ুনের মোবাইল ফোন থেকে তার মা ও ভাইয়ের
মোবাইল নম্বর রেখে দিয়েছিলাম। কোনো পথ না পেয়ে বাধ্য হয়ে হুমায়ুনের মায়ের
কাছে ফোন করে সব জানিয়েছি। হুমায়ুনের মা উল্টো আমাকে চরিত্রহীন বলে অপবাদ
দিয়েছেন। তার বাচ্চা ছেলেকে ফাঁসিয়েছি বলে গালিগালাজ করেন। আমি তো কিছু
লুকাইনি। বিয়ের আগেই এ জন্য আমি ওর সঙ্গে বার বার দেখা করতে চেয়েছি। কিন্তু
হুমায়ুন বলেছে, সে শুধু আমাকে ভালোবাসে আর কিছু জানতে চায় না। বিয়ের
কাবিননামাতে আমার জন্ম সাল ১৯৮৮ আর হুমায়ুনের জন্ম সাল ১৯৯৪ দেয়া আছে।
তাহলে তখন কেন সে আমাকে বিয়ে করতে রাজি হলো। বিয়ের পর সে এসব কথা কেন
বলছে? আমি যাকে ভালোবেসেছি তার সঙ্গেই সংসার করতে চাই। আমি এখনো অপেক্ষায়
আছি হুমায়ুন আমার কাছে ফিরে আসবে।
No comments