প্রতিবন্ধী বানানোর কারিগর by মুসা বিন মোহাম্মদ
মিরপুরের
ভাষানটেক থেকে পশ্চিম দিকে ২০ মিনিট হাঁটলেই দেওয়ানপাড়া। সেখানে মোল্লা
টাওয়ারের কাছে একটি রিকশা গ্যারেজ। গ্যারেজের দেয়ালে টানানো রয়েছে
প্রতিবন্ধী সমিতির সাইনবোর্ড। ভেতরে রয়েছে প্রতিবন্ধীদের বেশক’টি ছবি। এ
রিকশা গ্যারেজকে সবাই চিনে শাহীনের গ্যারেজ হিসেবে। এই শাহীন বসবাস করেন
ভাষানটেক এক নম্বর বস্তিতে। তাকে সবাই শাহীন মাস্টার নামে চেনে। আর শাহীনের
এ গ্যারেজই হলো প্রতিবন্ধী বানানোর কারখানা। কারিগর হলেন শাহীন। কৃত্রিম
উপায়ে প্রতিবন্ধী বানিয়ে অসংখ্য মানুষকে ভিক্ষা পেশায় নিয়োগ দেন তিনি। যা
থেকে আয় করেন লাখ লাখ টাকা। মিরপুর ১৪ নম্বরে দেখা মেলে তের বছর বয়সী
শারমিনের সঙ্গে। তার দুই হাত নেই। মিরপুর-১৪ নম্বরের ক্যান্টনমেন্ট এলাকায়
প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বসে থাকা তার কাজ। এই কিশোরীর
পাশে রাখা ভিক্ষার থালি। প্রতিবন্ধী হওয়ার সুবাদে শারমিনের উপার্জন অন্য
ভিক্ষুকদের চেয়ে একটু বেশি। মিরপুর এলাকায় ভিক্ষা করে প্রতিবন্ধী তানভীর,
আকলিমাসহ আরো অনেক শিশু কিশোর-কিশোরী। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ভিক্ষা পেশাকে
মানবিক ব্যবসায় রূপ দিতে নানা কৌশল নিচ্ছে রাজধানীতে সক্রিয় কয়েকটি
সিন্ডিকেট। কৃত্রিম উপায়ে প্রতিবন্ধী বানিয়ে এসব ভিক্ষুকশ্রেণিকে দিয়ে
ভিক্ষা ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছে তারা। তেমনি একটি এলাকা মিরপুরের ভাষানটেক।
এই বিশাল বস্তিতে হাজার হাজার নিম্নশ্রেণি মানুষের বসবাস। এখানে রয়েছে
ভিক্ষুক বসতি। ভাষানটেক বস্তির বায়তুল আকসা মসজিদের পাশে থাকেন প্রতিবন্ধী
খোকন। তার দু’ পা-ই অকেজো। ছোটকালে টাইফয়েড জ্বর থেকে তার এ অবস্থার কথা
বলেন খোকনের মা। স্থানীয় বাসিন্দা ফুসকা ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলামের সূত্র ধরে
দীর্ঘ অনুসন্ধানে খুুঁজে পাওয়া যায় এই প্রতিবন্ধীকে। এনজিওকর্মী পরিচয়ে
খোকনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তার কখনই টাইফয়েড হয়নি। কৃত্রিম উপায়ে তাকে
প্রতিবন্ধী বানানো হয়েছে। খোকন জানায়, ভাষানটেক বস্তিতে শত শত ভিক্ষুক
থাকে। তারা সবাই সমিতির নজরদারিতে বিভিন্ন এলাকায় ভিক্ষা করে। তাদের যাবতীয়
দেখভাল করে দেওয়ানপাড়ার শাহীন। শাহীন সম্পর্কে আর কিছু বলতে অনীহা প্রকাশ
করেন খোকন। স্থানীয় বস্তিবাসী সূত্রে জানা যায়, দেওয়ানপাড়ায় শাহীনের রিকশার
গ্যারেজ রয়েছে। পাশাপাশি প্রতিবন্ধীদের নিয়ে সে বিভিন্ন কাজকর্ম করে। ভর
দুপুরে শাহীনের গ্যারেজে গিয়ে দেখা যায় টেবিলের ওপর ঘুমাচ্ছে শাহীন। শব্দে
জেগে ওঠলে সে হতচকিত হয়ে জানতে চায়- ‘এখানে কেন, কিসের জন্য’। এ প্রতিবেদক
তাকে তিনজনকে প্রতিবন্ধীর কার্ড ও ঢাকায় অনায়াসে ভিক্ষা করার সুযোগ করে
দেয়ার অনুরোধ করেন। এতে রাজি হয়ে শাহীন বলে, এ ভিক্ষুকদের ভাতা কার্ডসহ
তাদের নিয়ে কিছু হালকা ঘুরাফেরা করে থাকি। তাও আবার যারা উপরে আছে তাদের
অনুমতি নিয়ে করা হয়। প্রতিবন্ধী ভিক্ষুকের ভাতা কার্ড পেতে কী করতে হবে
জানতে চাইলে শাহীন বলেন, সে যে ওয়ার্ডের ভিক্ষুক সেখানকার প্রকৃত
প্রতিবন্ধী হতে হবে, আইডি কার্ডও থাকতে হবে। এসব কিছু না থাকলেও
প্রতিবন্ধীদের ভাতা ও ভিক্ষা সুবিধা করে দেয়ার অনুরোধ করলে শাহীন বলেন,
এদের প্রতিবন্ধী যাচাই করতে প্রথমে ডাক্তারি পরীক্ষা করাতে হবে। তার আগে
কোনো একদিন ঐ তিনজনকে তিন নম্বর বস্তিতে নিয়ে এসে দেখাতে বলেন শাহীন।
কীভাবে তাদের প্রতিবন্ধী করার ব্যবস্থা করে দিয়ে ভিক্ষুক ভাতার কার্ড দেয়া
যায় তিনি সেই আশ্বাস দেন প্রতিবেদককে।
একই রকমভাবে ভিক্ষুক এলাকা নামে পরিচিত সবুজবাগ থানার দক্ষিণ মান্ডা এলাকা। এলাকাটি ৩০ বছর আগে ছিল ডোবা। এখন খুবই ঘনবসতি। সড়কের দু’পাশ ঘেঁষে গড়ে ওঠেছে অনেকগুলো আধা পাকা ঘর। ঘরগুলোর চাল টিন দিয়ে আর বেড়া ও মেঝে বাঁশের তৈরি। নিম্ন শ্রেণির মানুষ এসব ঘরের বাসিন্দা। ভিক্ষুক থাকার বিষয়টি অস্বীকার করে স্থানীয় পোল্ট্রি মুরগি ব্যবসায়ী মোশারফ হোসেন বলেন, অনেক বছর আগে ভিক্ষুক থাকার কথা শুনেছিলাম। এক গণ্ডগোলের কারণে তারা এলাকা ছেড়ে চলে গেছে। এখন এগুলো নাই। মোশারফের এই কথার ওপর ভিত্তি করে দীর্ঘদিন খোঁজ করা হয় ভিক্ষুক আস্তানা ও ভিক্ষুক বানানোর কারখানা। উত্তর-দক্ষিণ মান্ডার পানির পাম্প গলি ও কদম আলী রোডের সব শাখা গলিতে ঘুরে ঘুরে অনুসন্ধান করা হয়। টানা কয়েকদিন খোঁজাখুঁজির পর ভিক্ষুক বিষয়ে ছাত্র পরিচয়ে প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হন এলাকাটিতে ৩০ বছর ধরে বসবাসরত রংপুরের বাসিন্দা রবিউল ইসলাম। তিনি বলেন, মনির মিয়া ও জমশের মিয়ার গলিতে ভাড়ায় অনেক ভিক্ষুক থাকতেন। তবে এখনো আছে কিনা তা আমার জানা নেই। বুলু মিয়ার বাড়ি বরাবর সড়কের বিপরীত দক্ষিণ মান্ডার গলি ধরে ৫ মিনিট হাঁটলেই চোখে পড়ে বস্তির মতো কয়েকটি ঘর। তাতে ছোট ছোট কক্ষে ভাড়ায় থাকেন এসব ভিক্ষুক। স্থানীয় বাসিন্দা আলম মিয়া বলেন, এ এলাকায় ভিক্ষুকের অভাব নাই। তবে বাপ্পি নামের ভিক্ষুককে আমরা সবাই চিনি। প্রতিবেদককে সঙ্গে নিয়ে যাওয়া হয় বাপ্পীর বাড়ি। কথা হয় প্রতিবন্ধী ভিক্ষুক বাপ্পির সঙ্গে। দক্ষিণ মান্ডা এলাকার এই প্রতিবন্ধী ভিক্ষুক বলেন, তার দুই বউ। দুই ঘরে তার সন্তান রয়েছে ১২ জন। এসব সন্তান দিয়েই তার সংসার চলে। তাদের কৃত্রিমভাবে ভিক্ষুক বানিয়ে বেইলি রোড ও শান্তিনগরসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ভিক্ষায় বসিয়ে দেয় বাপ্পি। এতে যা আয় হয় তা দিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে দিন চলছে তার। একজনের এতগুলো সন্তান ও তাদের ভিক্ষুক বানিয়ে ভিক্ষা করানোর জন্য তাকে কয়েকবার পুলিশ ধরে নিয়ে গিয়েছিল বলে জানান একই এলাকার বাসিন্দা বাপ্পির ঘনিষ্ঠ বন্ধু নুর মোহাম্মদ। রিকভারিতে পুলিশের গাড়িচালক নুর মোহাম্মদ বলেন, শুধু বাপ্পি নয়। তার মতো শত শত ভিক্ষুক রয়েছে এ এলাকায়। কৃত্রিমভাবে প্রতিবন্ধী বানিয়ে তাদের দিয়ে অহরহ ভিক্ষা করানো হচ্ছে। সরজমিন জানতে প্রতিবেদককে নিয়ে যাওয়া হয় প্রতিবন্ধী বাপ্পির বাড়ি থেকে ৫০ গজ উত্তরে স্বপনের বাড়িতে। বেলা ৪টায় সেখানে গিয়ে দেখা যায়, ছোট একটি ঘরে ৪ থেকে ৫ জন ছেলেমেয়ে শুয়ে আছে ফ্লোরে। তাদের দেখাশোনা করছে মধ্যম বয়সী এক মহিলা। পাশে রয়েছে স্বপনের স্ত্রী। সবার জন্য খাবার তৈরি করছেন স্বপনের মা। নুর মোহাম্মদ বলেন, স্বপনের মা এই বাড়ির প্রধান। এসব সন্তানকে কৃত্রিমভাবে প্রতিবন্ধী সাজিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ভিক্ষায় নামিয়ে দেয়া হয়। এই মহিলার স্বামী একজন প্রতিবন্ধী। তার দুই বউয়ের একজন এই মহিলা। নামে-বেনামে বউদের দিয়ে এসব শিশুকে দিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানান প্রতিবন্ধী বাপ্পির বন্ধু নুর মোহাম্মদ।
ভাষানটেক ও মান্ডা এলাকার মতো ধানমন্ডি লেকের উত্তর পাশে ভিক্ষা করেন প্রতিবন্ধী তানভীর। লেকের ৮ নং ব্রিজের ওপারে বায়তুল আমান মসজিদে পাঁচ বার নামাজের সময় ভিক্ষার থলি নিয়ে বসে যান সাহেরা ভানু। তাদের দুজনেরই পা অকেজো হওয়ায় তাদের বাহন হুইল চেয়ার। তারা আসেন রায়েরবাজার থেকে। খিলগাঁওয়ের তিলপাপাড়া এলাকা ও তেজগাঁও কলোনি থেকে এসে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে ভিক্ষার থলি নিয়ে ফার্মগেট ওভারব্রিজে ও নিচে বসে যায় হাত-পা ছাড়া শিশু প্রতিবন্ধী শাহনাজ ও বাবলু হোসেন। তাদের প্রতিবন্ধী হওয়ার ক্ষেত্রে জন্মগত সমস্যা বললেও প্রকৃতপক্ষে কারণ ভিন্ন। অনুসন্ধানে জানা যায়, যারা তাদের মা-বাবা পরিচয় দিচ্ছে তারা নামেমাত্র মা-বাবা। এসব প্রতিবন্ধী ও তাদের পরিচিতরা জানায়, পালক মায়ের পরিচয়ে প্রতিদিন এসব এলাকায় ভিক্ষার জন্য নিয়ে আসে তারা। জন্মগত প্রতিবন্ধীর অজুহাতে দীর্ঘদিন ধরে তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখলেও এসব ভিক্ষুকের সমস্যা কৃত্রিম বলেই জানা গেছে।
একই রকমভাবে ভিক্ষুক এলাকা নামে পরিচিত সবুজবাগ থানার দক্ষিণ মান্ডা এলাকা। এলাকাটি ৩০ বছর আগে ছিল ডোবা। এখন খুবই ঘনবসতি। সড়কের দু’পাশ ঘেঁষে গড়ে ওঠেছে অনেকগুলো আধা পাকা ঘর। ঘরগুলোর চাল টিন দিয়ে আর বেড়া ও মেঝে বাঁশের তৈরি। নিম্ন শ্রেণির মানুষ এসব ঘরের বাসিন্দা। ভিক্ষুক থাকার বিষয়টি অস্বীকার করে স্থানীয় পোল্ট্রি মুরগি ব্যবসায়ী মোশারফ হোসেন বলেন, অনেক বছর আগে ভিক্ষুক থাকার কথা শুনেছিলাম। এক গণ্ডগোলের কারণে তারা এলাকা ছেড়ে চলে গেছে। এখন এগুলো নাই। মোশারফের এই কথার ওপর ভিত্তি করে দীর্ঘদিন খোঁজ করা হয় ভিক্ষুক আস্তানা ও ভিক্ষুক বানানোর কারখানা। উত্তর-দক্ষিণ মান্ডার পানির পাম্প গলি ও কদম আলী রোডের সব শাখা গলিতে ঘুরে ঘুরে অনুসন্ধান করা হয়। টানা কয়েকদিন খোঁজাখুঁজির পর ভিক্ষুক বিষয়ে ছাত্র পরিচয়ে প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হন এলাকাটিতে ৩০ বছর ধরে বসবাসরত রংপুরের বাসিন্দা রবিউল ইসলাম। তিনি বলেন, মনির মিয়া ও জমশের মিয়ার গলিতে ভাড়ায় অনেক ভিক্ষুক থাকতেন। তবে এখনো আছে কিনা তা আমার জানা নেই। বুলু মিয়ার বাড়ি বরাবর সড়কের বিপরীত দক্ষিণ মান্ডার গলি ধরে ৫ মিনিট হাঁটলেই চোখে পড়ে বস্তির মতো কয়েকটি ঘর। তাতে ছোট ছোট কক্ষে ভাড়ায় থাকেন এসব ভিক্ষুক। স্থানীয় বাসিন্দা আলম মিয়া বলেন, এ এলাকায় ভিক্ষুকের অভাব নাই। তবে বাপ্পি নামের ভিক্ষুককে আমরা সবাই চিনি। প্রতিবেদককে সঙ্গে নিয়ে যাওয়া হয় বাপ্পীর বাড়ি। কথা হয় প্রতিবন্ধী ভিক্ষুক বাপ্পির সঙ্গে। দক্ষিণ মান্ডা এলাকার এই প্রতিবন্ধী ভিক্ষুক বলেন, তার দুই বউ। দুই ঘরে তার সন্তান রয়েছে ১২ জন। এসব সন্তান দিয়েই তার সংসার চলে। তাদের কৃত্রিমভাবে ভিক্ষুক বানিয়ে বেইলি রোড ও শান্তিনগরসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ভিক্ষায় বসিয়ে দেয় বাপ্পি। এতে যা আয় হয় তা দিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে দিন চলছে তার। একজনের এতগুলো সন্তান ও তাদের ভিক্ষুক বানিয়ে ভিক্ষা করানোর জন্য তাকে কয়েকবার পুলিশ ধরে নিয়ে গিয়েছিল বলে জানান একই এলাকার বাসিন্দা বাপ্পির ঘনিষ্ঠ বন্ধু নুর মোহাম্মদ। রিকভারিতে পুলিশের গাড়িচালক নুর মোহাম্মদ বলেন, শুধু বাপ্পি নয়। তার মতো শত শত ভিক্ষুক রয়েছে এ এলাকায়। কৃত্রিমভাবে প্রতিবন্ধী বানিয়ে তাদের দিয়ে অহরহ ভিক্ষা করানো হচ্ছে। সরজমিন জানতে প্রতিবেদককে নিয়ে যাওয়া হয় প্রতিবন্ধী বাপ্পির বাড়ি থেকে ৫০ গজ উত্তরে স্বপনের বাড়িতে। বেলা ৪টায় সেখানে গিয়ে দেখা যায়, ছোট একটি ঘরে ৪ থেকে ৫ জন ছেলেমেয়ে শুয়ে আছে ফ্লোরে। তাদের দেখাশোনা করছে মধ্যম বয়সী এক মহিলা। পাশে রয়েছে স্বপনের স্ত্রী। সবার জন্য খাবার তৈরি করছেন স্বপনের মা। নুর মোহাম্মদ বলেন, স্বপনের মা এই বাড়ির প্রধান। এসব সন্তানকে কৃত্রিমভাবে প্রতিবন্ধী সাজিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ভিক্ষায় নামিয়ে দেয়া হয়। এই মহিলার স্বামী একজন প্রতিবন্ধী। তার দুই বউয়ের একজন এই মহিলা। নামে-বেনামে বউদের দিয়ে এসব শিশুকে দিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানান প্রতিবন্ধী বাপ্পির বন্ধু নুর মোহাম্মদ।
ভাষানটেক ও মান্ডা এলাকার মতো ধানমন্ডি লেকের উত্তর পাশে ভিক্ষা করেন প্রতিবন্ধী তানভীর। লেকের ৮ নং ব্রিজের ওপারে বায়তুল আমান মসজিদে পাঁচ বার নামাজের সময় ভিক্ষার থলি নিয়ে বসে যান সাহেরা ভানু। তাদের দুজনেরই পা অকেজো হওয়ায় তাদের বাহন হুইল চেয়ার। তারা আসেন রায়েরবাজার থেকে। খিলগাঁওয়ের তিলপাপাড়া এলাকা ও তেজগাঁও কলোনি থেকে এসে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে ভিক্ষার থলি নিয়ে ফার্মগেট ওভারব্রিজে ও নিচে বসে যায় হাত-পা ছাড়া শিশু প্রতিবন্ধী শাহনাজ ও বাবলু হোসেন। তাদের প্রতিবন্ধী হওয়ার ক্ষেত্রে জন্মগত সমস্যা বললেও প্রকৃতপক্ষে কারণ ভিন্ন। অনুসন্ধানে জানা যায়, যারা তাদের মা-বাবা পরিচয় দিচ্ছে তারা নামেমাত্র মা-বাবা। এসব প্রতিবন্ধী ও তাদের পরিচিতরা জানায়, পালক মায়ের পরিচয়ে প্রতিদিন এসব এলাকায় ভিক্ষার জন্য নিয়ে আসে তারা। জন্মগত প্রতিবন্ধীর অজুহাতে দীর্ঘদিন ধরে তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখলেও এসব ভিক্ষুকের সমস্যা কৃত্রিম বলেই জানা গেছে।
No comments