রুবির ভিডিওবার্তায় তদন্তে নতুন মোড়
জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহর অপমৃত্যু মামলাটি ২১ বছর পর নতুন করে মোড় নিয়েছে। সোমবার ফেসবুকে একটি ভিডিওবার্তা ভাইরাল হওয়ার পর দেশজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। নড়েচড়ে বসে পুলিশ। এ মামলায় অভিযুক্ত আসামিদের মধ্যে রাবেয়া সুলতানা রুবি ভিডিওবার্তায় সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, সালমান শাহ আত্মহত্যা করেননি। তাকে হত্যা করা হয়েছে। কারা তাকে হত্যা করেছে তিনি তাদের কয়েকজনের নামও প্রকাশ করেন। এদিকে আসামির মুখে খুনি চিহ্নিত করার এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য জানার পর মঙ্গলবার তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পদস্থ কর্মকর্তারা বৈঠক করেন। তারা অফসিয়ালি ফেসবুক কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এ সংক্রান্ত ভিডিওবার্তার ডকুমেন্ট আনার প্রক্রিয়া শুরু করেন। আজ বুধবার এ সংক্রান্ত আবেদন জানানো হবে। অগণিত সালমানভক্ত ছাড়াও ভিডিওবার্তাটি মিডিয়া জগতেও নতুন করে দাগ কেটেছে। মঙ্গলবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারে বেশ কয়েকজন সিনিয়র চলচ্চিত্র শিল্পী সালমান শাহ হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচার দাবি করেন। তারা বলেন, রুবির দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ যেন দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেয়। তারা চান, প্রকৃত খুনি বা খুনিরা যেই হোন না কেন তাদের যেন শাস্তি হয়। লন্ডনে অবস্থানরত সালমান শাহর মা নীলা চৌধুরী মঙ্গলবার রাতে যমুনা টেলিভিশনকে বলেন, ‘আমার ছেলের খুনিদের চিহ্নিত করার স্বার্থে দ্রুত রুবিকে দেশে ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন। বাংলাদেশে এনে তাকে সেফহোমে রাখতে সরকারকে অনুরোধ করছি। না হলে খুনিরা তাকেও মেরে ফেলতে পারে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সরকারের কাছে এ দাবি জানাই। বিদেশে থাকলেও আমি বাংলাদেশের একজন নাগরিক এবং ভোটার। তাই সরকারের কাছে জোরালোভাবে এ দাবি করছি।’ এদিকে রুবি মঙ্গলবার একটি অনলাইন পত্রিকাকে বলেন, ‘এ মামলার বড় সাক্ষী তার ছেলে ভিকি। ভিকির বয়স তখন ১৭ ছিল। আমার ছেলে ভিকি সেদিন সামিরার দেয়া জিনিস এক ছাদ থেকে অন্য ছাদে পার করেছে। ওদের বাসা থেকে আমাদের বাসার ছাদে একটা কাপড়ের পুটলি পাচার করেছে।’ রুবির এ বক্তব্য জানার পর পিবিআই তার বিষয়ে খোঁজ নিতে শুরু করেছে। তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন পিবিআই কর্মকর্তারা। এ বিষয়ে পিবিআইয়ের বিশেষ পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ যুগান্তরকে বলেন, ‘সালমান শাহ অপমৃত্যু মামলাটির বিষয়ে যে কেউ বক্তব্য দিতে পারে। তবে সে বক্তব্য কতটুকু সত্য তা যাচাইয়ের ব্যাপার আছে। এতদিন পর তিনি কেন এ দাবি করবেন- এ নিয়েও স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠতে পারে।’ তার মতে, তার এ বক্তব্য সত্য হতে পারে, আবার মিথ্যাও হতে পারে। তদন্ত আরও একটু গভীরে নিয়ে গেলে বোঝা যাবে প্রকৃত ঘটনা কী। মঙ্গলবার একটি অনলাইন পোর্টালকে দেয়া সাক্ষাৎকারে রুবি দাবি করেন, হঠাৎ করে তার ছেলে ভিকির কাছ থেকে তিনি সালমান শাহর মৃত্যু নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পান। এতদিন তিনি জেনে এসেছেন, সালমান শাহ আত্মহত্যা করেছেন। এ কারণে সালমান শাহর মা নীলা চৌধুরীর ওপর তিনি ক্ষিপ্ত ছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমি আমার বড় ছেলে ভিকির কাছ থেকে কিছু তথ্য পেয়ে সেই সূত্রে অনেক কিছু জেনে নিজেই অবাক হয়েছি। আমি কোনোদিন ভাবিনি সালমান খুন হয়েছেন। এমনকি এ খুনের পেছনে আমার স্বামী ও ভাই জড়িত। জড়িত সামিরা ও তার পরিবার।’ তিনি আরও বলেন, ‘সব তথ্য শুনে আমার মনে হয়েছে- এ বিষয়টি গোপন রাখা ঠিক হবে না। সালমান ও তার পরিবারের সঙ্গে অনেক বড় অন্যায় হয়েছে। এর শোধ নেয়া দরকার। তাই ভিডিওবার্তায় বিষয়টি জানিয়েছি। বেশ কয়েক মাস আগে ভিকি আমাকে পুটলির কথা জানিয়েছিল। কিন্তু এ বিষয়টা সে কারও সঙ্গে শেয়ার করেনি। তার মুখে এ কথাটা শুনে আমারও অনেক সন্দেহ হয়। ধীরে ধীরে বিষয়টা নিয়ে আমি আমার স্বামীর সঙ্গে কথা বলি। সে আবার সামিরার মামা। পরে জানতে পারি, এ খুনের সঙ্গে আমার পরিবারও জড়িত।’
কিছু প্রশ্ন : সালমান শাহ অপমৃত্যু মামলার ৬ নম্বর আসামি রাবেয়া সুলতানা। রুবি বিভিন্ন সময় এ মামলা নিয়ে সমালোচনা করে ভিডিও প্রকাশ করেছেন। এতদিন তিনি দাবি করে আসছিলেন, সালমান শাহ আত্মহত্যা করেছেন। তাকে এ মামলায় জড়ানোর কারণে তিনি সালমানের মা নীলা চৌধুরীর কঠোর সমালোচনা করেন। তিন মাস আগেও রুবি ফেসবুকে একটি ভিডিও প্রকাশ করে নীলা চৌধুরী ও সালমান শাহকে নিয়ে অনেক বাজে কথা বলেন। তবে হঠাৎ করে কেন তিনি ভোল পাল্টালেন সেটিও এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। তবে কারণ যাই হোক সবার প্রত্যাশা প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসুক। ধরা পড়–ক খুনিরা। পিবিআইয়ের একটি সূত্র জানায়, সালমান শাহর মৃত্যুর ২০ বছর পর ২০১৬ সালে এ মামলার তদন্তভার পায় সংস্থাটি। এই দীর্ঘ সময়ে থানা পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) এবং পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) মামলার তদন্ত করে বলেছে ঘটনাটি আত্মহত্যা। কিন্তু তারা তদন্তে নেমে অনেক প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাচ্ছে না। যেমন- এ মামলার অনেক গুরুত্বপূর্ণ আলামত খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বা নষ্ট হয়ে গেছে। মূলত এ কারণে সালমান শাহকে হত্যা করা হয়েছে, নাকি তিনি আত্মহত্যা করেছেন তা নিশ্চিত হওয়া তাদের পক্ষে অনেকটা কঠিন হয়ে পড়েছে।
রুবির ভিডিওবার্তা : সোমবার ভিডিওবার্তায় রুবি দাবি করেন- আত্মহত্যা নয়, হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন সালমান শাহ। এর জন্য তার স্ত্রী সামিরা হকের পরিবারকে দায়ী করেছেন। রুবি সালমান শাহর ‘বিউটিশিয়ান’ ছিলেন। রুবি জানান, তার স্বামীর নাম চ্যাংলিং চ্যাং, যিনি বাংলাদেশে জন চ্যাং নামে পরিচিত ছিলেন। ধানমণ্ডি ২৭ নম্বর সড়কে সাংহাই রেস্টুরেন্ট নামে তার একটি চাইনিজ রেস্টুরেন্ট ছিল। সালমান শাহকে হত্যার পেছনে তার স্বামী চ্যাং ও ভাই (সামিরার ভাই) হাত ছিল বলে জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সালমান শাহর মৃত্যুর পর তার বাবা কমর উদ্দিন চৌধুরী একটি অপমৃত্যু মামলা করেন। বিভিন্ন সংস্থা এ মামলার তদন্ত করেছে। ওই সময় সালমানের মা নীলা চৌধুরী আদালতে পিটিশন দায়ের করে ১১ জনের নাম উল্লেখ করে বলেছেন, তারা হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে। এ নিয়ে আলাদা কোনো মামলা হয়নি। ওই পিটিশনে রুবি ৬ নম্বর আসামি।
কিছু প্রশ্ন : সালমান শাহ অপমৃত্যু মামলার ৬ নম্বর আসামি রাবেয়া সুলতানা। রুবি বিভিন্ন সময় এ মামলা নিয়ে সমালোচনা করে ভিডিও প্রকাশ করেছেন। এতদিন তিনি দাবি করে আসছিলেন, সালমান শাহ আত্মহত্যা করেছেন। তাকে এ মামলায় জড়ানোর কারণে তিনি সালমানের মা নীলা চৌধুরীর কঠোর সমালোচনা করেন। তিন মাস আগেও রুবি ফেসবুকে একটি ভিডিও প্রকাশ করে নীলা চৌধুরী ও সালমান শাহকে নিয়ে অনেক বাজে কথা বলেন। তবে হঠাৎ করে কেন তিনি ভোল পাল্টালেন সেটিও এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। তবে কারণ যাই হোক সবার প্রত্যাশা প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসুক। ধরা পড়–ক খুনিরা। পিবিআইয়ের একটি সূত্র জানায়, সালমান শাহর মৃত্যুর ২০ বছর পর ২০১৬ সালে এ মামলার তদন্তভার পায় সংস্থাটি। এই দীর্ঘ সময়ে থানা পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) এবং পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) মামলার তদন্ত করে বলেছে ঘটনাটি আত্মহত্যা। কিন্তু তারা তদন্তে নেমে অনেক প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাচ্ছে না। যেমন- এ মামলার অনেক গুরুত্বপূর্ণ আলামত খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বা নষ্ট হয়ে গেছে। মূলত এ কারণে সালমান শাহকে হত্যা করা হয়েছে, নাকি তিনি আত্মহত্যা করেছেন তা নিশ্চিত হওয়া তাদের পক্ষে অনেকটা কঠিন হয়ে পড়েছে।
রুবির ভিডিওবার্তা : সোমবার ভিডিওবার্তায় রুবি দাবি করেন- আত্মহত্যা নয়, হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন সালমান শাহ। এর জন্য তার স্ত্রী সামিরা হকের পরিবারকে দায়ী করেছেন। রুবি সালমান শাহর ‘বিউটিশিয়ান’ ছিলেন। রুবি জানান, তার স্বামীর নাম চ্যাংলিং চ্যাং, যিনি বাংলাদেশে জন চ্যাং নামে পরিচিত ছিলেন। ধানমণ্ডি ২৭ নম্বর সড়কে সাংহাই রেস্টুরেন্ট নামে তার একটি চাইনিজ রেস্টুরেন্ট ছিল। সালমান শাহকে হত্যার পেছনে তার স্বামী চ্যাং ও ভাই (সামিরার ভাই) হাত ছিল বলে জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সালমান শাহর মৃত্যুর পর তার বাবা কমর উদ্দিন চৌধুরী একটি অপমৃত্যু মামলা করেন। বিভিন্ন সংস্থা এ মামলার তদন্ত করেছে। ওই সময় সালমানের মা নীলা চৌধুরী আদালতে পিটিশন দায়ের করে ১১ জনের নাম উল্লেখ করে বলেছেন, তারা হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে। এ নিয়ে আলাদা কোনো মামলা হয়নি। ওই পিটিশনে রুবি ৬ নম্বর আসামি।
No comments