চিকিৎসকের লাথিতে মৃত সন্তান প্রসবে মামলা
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে ভুল আল্ট্রাসনোগ্রাম রিপোর্টের প্রতিবাদ করায় চিকিৎসকের লাথিতে ইসমতারা নামে এক গৃহবধূর মৃত সন্তান প্রসবের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ইসমতারা বাদী হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. শরিফুল আলম সুমনকে আসামি করে গোবিন্দগঞ্জ থানায় মামলা করেন। এ মামলায় ১ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদিকে ডা. শরিফুল আলম সুমন দাবি করেন, তিনি ওই গৃহবধূর পেটে লাথি মারেননি। বরং তার পরিবার এবং অন্যরা তাকে মারধর করেছেন। এ ঘটনায় চিকিৎসকও গোবিন্দগঞ্জ থানায় মামলা করেছেন। আল্টাসনোগ্রাম রিপোর্টে ভুল তথ্যের কারণে শুধু চিকিৎসকের ওপরই হামলা করা হয়নি, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সও ভাংচুর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গাইবান্ধা সিভিল সার্জন। ইসমতারার করা মামলার অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার ফুলবাড়ী ইউনিয়নের বড় সাতাইল বাতাইল গ্রামের মনিরুল ইসলামের স্ত্রী মুক্তিযোদ্ধার নাতনি ইসমতারা। ১২ জুলাই গোবিন্দগঞ্জ নিরাময় ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. শরিফুল আলম সুমনের কাছে আল্ট্রাসনোগ্রাম করান তিনি। তার দেয়া রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, ইসমতারার গর্ভে দুটি সন্তান রয়েছে। এ রিপোর্টে ইসমতারার সন্দেহ হলে তিনি ওই আল্ট্রাসনোগ্রামের ২৪ দিন পর ৪ আগস্ট স্থানীয় বিসমিল্লাহ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অন্য ডাক্তারের কাছে আরেকটি আল্ট্রাসনোগ্রাম করান। সেখানকার রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, ইসমতারার পেটে একটি সন্তান রয়েছে।
ওইদিনই ইসমতারা ও পরিবারের লোকজন গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. শরিফুল আলম সুমনের কাছে রিপোর্ট দুটি দেখিয়ে প্রকৃত তথ্য জানতে চান। এতে ডা. সুমন রোগীর প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। একপর্যায়ে ডা. সুমন ওই গৃহবধূর পেটে লাথি মারেন বলে অভিযোগ করেন। এতে ইসমতারা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে সোমবার তিনি একটি মৃত সন্তান প্রসব করেন। গাইবান্ধা সিভিল সার্জন ডা. আমির আলী জানান, প্রাথমিক স্তরে গর্ভবতীর পেটের সন্তান সম্পর্কে সঠিক তথ্য আল্ট্রাসনোগ্রামে নাও আসতে পারে। ডা. সুমনের ক্ষেত্রে তাই ঘটেছে। তিনি বলেন, দ্বিতীয় আল্ট্রাসনোগ্রাম রিপোর্টে একটি সন্তানের কথাই বলা হয়েছে। শুধু তাই নয়, ওই সন্তানটি প্রায় মৃত বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ভুল তথ্যের কারণে শুধু চিকিৎসকের ওপরই হামলা করা হয়নি, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সও ভাংচুর করা হয়েছে। গোবিন্দগঞ্জ থানার ওসি মজিবুর রহমান বলেন, মামলার পরিপ্রেক্ষিতে হোসেন আলী (৩৫) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
No comments