নিজের ফোনালাপ শুনে ভড়কে যান কাদের by সিদ্দিক আলম দয়াল
১০
হাজার ফোনালাপ থেকে কিলিং মিশন সিন্ডিকেটের কাহিনী ফাঁস হয়ে যায়। পুলিশ
একটি ছিনতাই ঘটনার সূত্র ধরে কিলারদের খুঁজে পেতে বেশ কয়েকজনের মোবাইল ফোন
ট্র্যাকিং করে। শুধু ৬ মাসে কাদের খানের ফোনালাপ তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়।
ফোনালাপের সূত্রধরে পুলিশি অনুসন্ধানে উঠে আসে কাদের খানের কিলিং মিশনের
নেপথ্য কাহিনী। সাংসারিক জীবনে অসুখী কাদের খান ছিলেন উচ্চাভিলাষী। স্ত্রী ও
১ ছেলের কাছে কাদের ছিলেন রাগী মানুষ। শুধু টাকার পেছনে ছুটতেন। সে কারণে
স্ত্রী ও স্বজনদের সঙ্গে দূরত্ব দীর্ঘদিন আগে থেকেই তৈরি হয়। এক সময়
স্বামী-স্ত্রী মিলে বগুড়ায় জায়গা কিনে বাড়ি ও ক্লিনিক ব্যবসায় মন দেন।
চাকরি জীবন থেকে আবদুল কাদের গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের খান
পাড়ায় আসতেন না। বাড়িতেও ছোটভাই ও তার পরিবার ছাড়া কেউ থাকতেন না। ক্ষমতার
লোভেই তিনি যোগাযোগ করেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ও জাপা চেয়ারম্যান এরশাদের
সঙ্গে। মহাজোটের মনোনয়ন নিয়ে তিনি সুন্দরগঞ্জে আসেন। তার মনোনয়নের খবর পেয়ে
সেই সময়ে তার বিরুদ্ধে জাতীয় পার্টির ত্যাগী নেতাকর্মীরা কাদের খানকে
বর্জনের ঘোষণা দেন। অনেকেই জাতীয় পার্টি ছেড়ে যোগ দেন অন্য দলে। লোকজনের
সঙ্গে যোগাযোগ ছিলো খুব কম। তারপর তিনি বনে যান মহাজোটের প্রার্থী।
নির্বাচিত হন এমপি।
পরবর্তীতে নির্বাচনে হেরে গিয়ে তিনি প্রতিশোধের নেশায় মেতে ওঠেন। সুন্দরগঞ্জে কেউ যাতে মাথাচাড়া দিতে না পারে সেজন্য তিনি তার পথ পরিষ্কারের কথা ভাবতে থাকেন। সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখেন নিজস্ব কিলারদের সঙ্গে। কিলিং মিশনের প্রথম টার্গেট হয়েছেন সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন। লিটন হত্যাকাণ্ডের পর তোলপাড় শুরু হয় সারা দেশে ও প্রশাসনিক মহলে। তৎপর হয়ে ওঠেন খুনিদের গ্রেপ্তারে। পুলিশসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা কিলারদের মোটিভ ও খুনিদের খুঁজে বের করতে অনুসন্ধান চালাতে গিয়ে একটি ছিনতাইয়ের পর ফেলে যাওয়া ম্যাগাজিন ও গুলি উদ্ধারের বিষয়টি নিয়ে তদন্তকাজ চালিয়ে যেতে থাকে। একপর্যায়ে কাদের খানের চলাফেরা, বিদেশে আসা-যাওয়া এবং তার বৈধ অস্ত্র সম্পর্কে অনুসন্ধান চালাতে গিয়ে বিষয়টি ফাঁস হয়ে যায়। এমপি লিটনের গায়ে বিদ্ধ হওয়া গুলি ছিলো কাদের খানের পিস্তলের। এ তথ্য জানান, গাইবান্ধার তৎকালীন পুলিশ সুপার আশরাফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ফরেনসিক পরীক্ষার পর সব পরিষ্কার হয়ে যায়। তারপরও পুলিশ নিশ্চিত হতে গিয়ে ছয় মাসে কাদের খানের ফোনালাপ খুঁজে বের করেন। সেখান ফোনালাপ থেকে হত্যাকাণ্ডের সম্পৃক্ত থাকার ঘটনা ধরা পড়ে। তারপর পুলিশ কাদের খানকে প্রথমে আটক ও পরে গ্রেপ্তার করে গাইবান্ধায় নিয়ে আসে। ১০ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিঞ্জাসাবাদ করলে ৩ দিন পর কাদের খানকে তার ফোনালাপ শোনানো হয়। সেখানে তিনি হত্যাকারীদের সঙ্গে বিস্তারিত আলাপ-আলোচনা ও পরামর্শ ও অর্থ দিয়ে সহযোগিতার কথা উঠে আসে। ফোনালাপ শুনে কাদের খান হতচকিত হয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় বলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী শফিকুল ইসলাম শফিক সাংবাদিকদের কাছে জানান। পুলিশ জানায়, কাদের খানের ফোনালাপ থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলেছে। যা এখন সাংবাদিকদের কাছে বলা যাবে না। তবে অনেকেই হত্যার সঙ্গে বিভিন্নভাবে জড়িত তাদেরকে নজরে রাখা হয়েছে।
কাদের খান প্রশিক্ষিত কিলার গ্রুপ ছিনতাই করতো:
কাদের খান নিজ বাড়িতে নিজের লাইসেন্সবিহীন অবৈধ পিস্তলের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দিয়ে মেহেদী হাসান, শামীম মণ্ডল, শাহীন, রানাকে নিয়ে যে কিলার গ্রুপটি গড়ে তুলেছিল তারা মাদকাসক্ত ছিল এবং সুন্দরগঞ্জ ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় ছিনতাই ও রাহাজানি করে বেড়াতো। এসব ছিনতাইয়ের ঘটনায় কাদের খানের ওই অবৈধ পিস্তল এবং তার দেয়া বুলেটই ব্যবহৃত হতো। যে কারণে কাদের খান তার লাইসেন্স করা পিস্তলে ব্যবহারের জন্য ক্রয়কৃত ৪০ রাউন্ড বুলেটের সঠিক হিসাব পুলিশকে দিতে পারেনি। পিস্তল ও বুলেট জব্দ করার সময় সে মাত্র ১০ রাউন্ড বুলেট জমা দেয়। বাকি ৩০ রাউন্ড বুলেটের হিসাব দিতে পারেনি। এর মধ্যে শুধু ৫ রাউন্ড বুলেট এমপি লিটনের খুনে ব্যবহৃত হয়েছে এবং ১ রাউন্ড তার বাড়িতে প্রশিক্ষণকালে অসাবধানতাবশত: মিস ফায়ার হয়। সে হিসাবে ২৪ রাউন্ড বুলেট প্রশিক্ষণসহ ছিনতাই ও রাহাজানি কাজে ব্যবহৃত হয়েছে বলে জানা গেছে। এমপি লিটনের কিলাররা গত ১ ডিসেম্বর গাইবান্ধা-সুন্দরগঞ্জ সড়কে ধোপাডাঙ্গায় ফাইম নামে এক যুবকের কাছ থেকে তার মোবাইল ও টাকা পয়সা ছিনতাই করে। ছিনতাই শেষে তাড়াহুড়া করে পালাতে গিয়ে পিস্তলের ৬ রাউন্ড বুলেটের ম্যাগাজিনটি তাদের অগোচরে রাস্তায় পড়ে যায়। যা স্থানীয় জনগণের দেয়া তথ্য অনুযায়ী পুলিশ উদ্ধার করে এবং সুন্দরগঞ্জ থানায় একটি জিডিও করা হয়। লিটন হত্যাকাণ্ড সম্পন্ন হওয়ার পর হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বুলেট এবং ওই ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত প্রাপ্ত বুলেটের মিল পাওয়ার সূত্র ধরেই পুলিশ খুনিদের গ্রেপ্তার করে। অতঃপর জিজ্ঞাসাবাদে তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী কাদের খানের সম্পৃক্ততা প্রমাণিত হয় এবং খুনের রহস্য উদঘাটিত হয়।
পরবর্তীতে নির্বাচনে হেরে গিয়ে তিনি প্রতিশোধের নেশায় মেতে ওঠেন। সুন্দরগঞ্জে কেউ যাতে মাথাচাড়া দিতে না পারে সেজন্য তিনি তার পথ পরিষ্কারের কথা ভাবতে থাকেন। সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখেন নিজস্ব কিলারদের সঙ্গে। কিলিং মিশনের প্রথম টার্গেট হয়েছেন সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন। লিটন হত্যাকাণ্ডের পর তোলপাড় শুরু হয় সারা দেশে ও প্রশাসনিক মহলে। তৎপর হয়ে ওঠেন খুনিদের গ্রেপ্তারে। পুলিশসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা কিলারদের মোটিভ ও খুনিদের খুঁজে বের করতে অনুসন্ধান চালাতে গিয়ে একটি ছিনতাইয়ের পর ফেলে যাওয়া ম্যাগাজিন ও গুলি উদ্ধারের বিষয়টি নিয়ে তদন্তকাজ চালিয়ে যেতে থাকে। একপর্যায়ে কাদের খানের চলাফেরা, বিদেশে আসা-যাওয়া এবং তার বৈধ অস্ত্র সম্পর্কে অনুসন্ধান চালাতে গিয়ে বিষয়টি ফাঁস হয়ে যায়। এমপি লিটনের গায়ে বিদ্ধ হওয়া গুলি ছিলো কাদের খানের পিস্তলের। এ তথ্য জানান, গাইবান্ধার তৎকালীন পুলিশ সুপার আশরাফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ফরেনসিক পরীক্ষার পর সব পরিষ্কার হয়ে যায়। তারপরও পুলিশ নিশ্চিত হতে গিয়ে ছয় মাসে কাদের খানের ফোনালাপ খুঁজে বের করেন। সেখান ফোনালাপ থেকে হত্যাকাণ্ডের সম্পৃক্ত থাকার ঘটনা ধরা পড়ে। তারপর পুলিশ কাদের খানকে প্রথমে আটক ও পরে গ্রেপ্তার করে গাইবান্ধায় নিয়ে আসে। ১০ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিঞ্জাসাবাদ করলে ৩ দিন পর কাদের খানকে তার ফোনালাপ শোনানো হয়। সেখানে তিনি হত্যাকারীদের সঙ্গে বিস্তারিত আলাপ-আলোচনা ও পরামর্শ ও অর্থ দিয়ে সহযোগিতার কথা উঠে আসে। ফোনালাপ শুনে কাদের খান হতচকিত হয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় বলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী শফিকুল ইসলাম শফিক সাংবাদিকদের কাছে জানান। পুলিশ জানায়, কাদের খানের ফোনালাপ থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলেছে। যা এখন সাংবাদিকদের কাছে বলা যাবে না। তবে অনেকেই হত্যার সঙ্গে বিভিন্নভাবে জড়িত তাদেরকে নজরে রাখা হয়েছে।
কাদের খান প্রশিক্ষিত কিলার গ্রুপ ছিনতাই করতো:
কাদের খান নিজ বাড়িতে নিজের লাইসেন্সবিহীন অবৈধ পিস্তলের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দিয়ে মেহেদী হাসান, শামীম মণ্ডল, শাহীন, রানাকে নিয়ে যে কিলার গ্রুপটি গড়ে তুলেছিল তারা মাদকাসক্ত ছিল এবং সুন্দরগঞ্জ ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় ছিনতাই ও রাহাজানি করে বেড়াতো। এসব ছিনতাইয়ের ঘটনায় কাদের খানের ওই অবৈধ পিস্তল এবং তার দেয়া বুলেটই ব্যবহৃত হতো। যে কারণে কাদের খান তার লাইসেন্স করা পিস্তলে ব্যবহারের জন্য ক্রয়কৃত ৪০ রাউন্ড বুলেটের সঠিক হিসাব পুলিশকে দিতে পারেনি। পিস্তল ও বুলেট জব্দ করার সময় সে মাত্র ১০ রাউন্ড বুলেট জমা দেয়। বাকি ৩০ রাউন্ড বুলেটের হিসাব দিতে পারেনি। এর মধ্যে শুধু ৫ রাউন্ড বুলেট এমপি লিটনের খুনে ব্যবহৃত হয়েছে এবং ১ রাউন্ড তার বাড়িতে প্রশিক্ষণকালে অসাবধানতাবশত: মিস ফায়ার হয়। সে হিসাবে ২৪ রাউন্ড বুলেট প্রশিক্ষণসহ ছিনতাই ও রাহাজানি কাজে ব্যবহৃত হয়েছে বলে জানা গেছে। এমপি লিটনের কিলাররা গত ১ ডিসেম্বর গাইবান্ধা-সুন্দরগঞ্জ সড়কে ধোপাডাঙ্গায় ফাইম নামে এক যুবকের কাছ থেকে তার মোবাইল ও টাকা পয়সা ছিনতাই করে। ছিনতাই শেষে তাড়াহুড়া করে পালাতে গিয়ে পিস্তলের ৬ রাউন্ড বুলেটের ম্যাগাজিনটি তাদের অগোচরে রাস্তায় পড়ে যায়। যা স্থানীয় জনগণের দেয়া তথ্য অনুযায়ী পুলিশ উদ্ধার করে এবং সুন্দরগঞ্জ থানায় একটি জিডিও করা হয়। লিটন হত্যাকাণ্ড সম্পন্ন হওয়ার পর হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বুলেট এবং ওই ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত প্রাপ্ত বুলেটের মিল পাওয়ার সূত্র ধরেই পুলিশ খুনিদের গ্রেপ্তার করে। অতঃপর জিজ্ঞাসাবাদে তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী কাদের খানের সম্পৃক্ততা প্রমাণিত হয় এবং খুনের রহস্য উদঘাটিত হয়।
No comments