ভবঘুরে আর দোকানের দখলে ফুটপাত
রাজধানীর পলাশী থেকে নীলক্ষেতমুখী রাস্তার এক পাশের ফুটপাতে বড় অংশজুড়ে ভবঘুরেদের বসবাস। ফুটপাতের ওপরই গড়ে উঠেছে চা, রুটি আর ভাতের দোকান। পথচারীরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরেই ফুটপাতটি হাঁটাচলার অনুপযোগী। পলাশী মোড় থেকে নীলক্ষেত মোড় পর্যন্ত বিস্তৃত রাস্তাটির নাম জহির রায়হান সড়ক। এই সড়কের ডান পাশের ফুটপাতে ২০টির বেশি ভবঘুরে পরিবারের বাস। গত বৃহস্পতিবার সকালে গিয়ে দেখা যায়, নীল-কালো পলিথিনের একেকটি ছাউনি। দিনের বেলায় বেশির ভাগই গুটিয়ে রাখা। কয়েকটিতে শিশুরা ঘুমাচ্ছে। পাশেই রান্নার আয়োজন। পুরো জায়গাটিই নোংরা আর দুর্গন্ধে ভরা। হালিমা বেগমসহ তাঁর পরিবারের ছয়জন ছয় বছর ধরে এই ফুটপাতে বসবাস করছেন। হালিমা বললেন, কোনো অনুষ্ঠান থাকলে পুলিশ এসে উঠিয়ে দেয়।
আবার রাতে এসে বসেন। পাশের আরেকটি ছাউনির একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ফুটপাতে থাকার জন্য নিয়মিত টাকা দিতে হয়। কারা টাকা নিচ্ছে, তা জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যান। ভবঘুরেদের আবাস ছাড়াও ছোট ছোট পাঁচ-ছয়টি চায়ের দোকানও গড়ে উঠেছে ফুটপাতের ওপর। আছে ভাত, রুটি আর পিঠার দোকান। চা বিক্রেতা স্বপন মিয়া বলেন, চাঁদা দিয়ে ফুটপাতে বসতে হয় তাঁদের। ফুটপাত দখল হওয়ায় মূল সড়ক দিয়ে পথচারীদের চলাচল করতে দেখা যায়। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাবাসসুম মূল সড়ক ধরে হাঁটছিলেন। তিনি বলেন, ‘এই ফুটপাতে হাঁটার উপায় নেই। সন্ধ্যার দিকে ভবঘুরেরা নেশা করে। এই পাশ দিয়ে হাঁটা যায় না।’ পাশের একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মী আবু সাইদ বলেন, ফুটপাতটি দীর্ঘদিন ধরে এমনই দেখে আসছেন তিনি। দোকান আর ভবঘুরেদের সংখ্যাও বাড়ছে দিন দিন। পলাশী-নীলক্ষেত এলাকাটি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের অধীন। ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. হাসিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, অনেকবার উচ্ছেদ করা হয়েছে। এরা আবার এসে বসে। পুলিশ প্রশাসন যেহেতু সব সময় টহলে থাকে, তারা চাইলে এদের সম্পূর্ণভাবে উচ্ছেদ করা সম্ভব। এ বিষয়ে লালবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান বলেন, উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে সিটি করপোরেশন। অভিযানের সময় সাহায্য চাইলে তাঁরা তাৎক্ষণিক সাড়া দেন।
No comments