যত ভোগান্তি ভাঙাচোরা চার কিলোমিটারে
মৌলভীবাজার-চান্দগ্রাম আঞ্চলিক মহাসড়কের কুলাউড়া উপজেলার লুয়াইউনি চা-বাগান থেকে রাজনগর উপজেলার টেংরা বাজার পর্যন্ত চার কিলোমিটার দীর্ঘদিন ধরে ভাঙাচোরা। কিন্তু ওই সড়ক সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। এ অবস্থায় লোকজনকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর এবং সড়ক পরিবহন ও শ্রমিক ইউনিয়নের কুলাউড়া কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মৌলভীবাজার জেলা সদর থেকে বড়লেখা উপজেলার চান্দগ্রাম পর্যন্ত আঞ্চলিক মহাসড়কটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৫৯ কিলোমিটার। এ মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন বাস, ট্রাক, মাইক্রোবাস, অটোরিকশাসহ বিভিন্ন ধরনের দুই-আড়াই হাজার যান চলাচল করে। এর মধ্যে দূরপাল্লার বাসও রয়েছে। বড়লেখা, জুড়ী ও কুলাউড়া এবং সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার লোকজন এ সড়ক দিয়ে ঢাকা, সিলেট ও মৌলভীবাজার জেলা সদরে চলাচল করে। এ ছাড়া দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসা পর্যটকেরা এ সড়ক দিয়ে বড়লেখার মাধবকুণ্ড জলপ্রপাতে বেড়াতে যান। ২০ ফেব্রুয়ারি সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়কের লুয়াইউনি চা-বাগান থেকে শুরু করে রাজনগর ও মাথিউরা চা-বাগান এলাকায় অন্তত ১৫টি বাঁক রয়েছে। এসব জায়গায় সড়কের পিচ উঠে নুড়ি-পাথর বেরিয়ে গেছে। অনেক স্থানে ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সড়কের ছবি তোলার সময় মৌলভীবাজার থেকে কুলাউড়াগামী যাত্রীবাহী বাসের চালক মোস্তফা মিয়া গাড়ি থামিয়ে বললেন, ‘রাস্তাটা অনেক দিন ধরি খারাপ। কেউ এইটা দেখে না। মানুষের কষ্ট হচ্ছে।
আর গাতে পড়িয়া গাড়ির কলকবজা তো নষ্ট হয়-ই।’ টেংরা বাজার থেকে আসা যাত্রীবাহী অটোরিকশার চালক পারভেজ আহমদ বলেন,‘এই জায়গায় (টেংরা বাজার-লুয়াইউনি বাগান) আগে রাইতে গাছ ফালাইয়া গাড়ি আটকাইয়া ডাকাতি হইতো। মানুষ এখনো রাইতে চলতে ভয় পায়। রাস্তা খারাপ থাকায় রিস্ক (ঝুঁকি) আরও বাড়ি গেছে।’ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের কুলাউড়া উপজেলা শাখার সভাপতি আবদুস শহীদ মাখন বলেন, সড়কের দুরবস্থার কারণে প্রায়ই ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া যাত্রী নিয়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে সময়ও বেশি লাগে। সওজের মৌলভীবাজার কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী উৎপল সামন্ত ২০ ফেব্রুয়ারি মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, বর্ষা মৌসুমে দুই পাশের টিলা-পাহাড় থেকে পানি বেয়ে পড়ায় সড়কের এ অবস্থা হয়েছে। উৎপল সামন্ত বলেন, মৌলভীবাজার-চান্দগ্রাম সড়কের লুয়াইউনি বাগান থেকে টেংরা বাজার পর্যন্ত চার কিলোমিটার জায়গাসহ জেলার বিভিন্ন সড়কের উন্নয়নে একটি প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। তা অনুমোদন হলে কাজ শুরু হবে। এ ছাড়া লুয়াইউনি বাগান থেকে টেংরা বাজার পর্যন্ত সড়কে তিনটি কালভার্ট ও পানি নিষ্কাশনের জন্য কয়েকটি ড্রেন (নর্দমা) নির্মাণের বিষয়টিও প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তবে আপাতত সড়কের ওই অংশে নুড়ি-পাথর ও বিটুমিন দিয়ে মেরামত করে যান চলাচলের উপযোগী করা হবে।
No comments