ওবামার শ্রমমন্ত্রী পেরেস নতুন ডেমোক্র্যাট নেতা
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা প্রশাসনের শ্রমমন্ত্রী টম পেরেস যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্রেটিক পার্টির নতুন প্রধান হলেন। শনিবার জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের আটলান্টা শহরে অনুষ্ঠিত দলীয় নির্বাচনে জাতীয় কমিটির চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন পেরেস। গত নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হেরে যায় ডেমোক্র্যাটরা। কংগ্রেস ও সিনেটের নিয়ন্ত্রণও চলে গেছে রিপাবলিকানদের হাতে। এই পরিস্থিতিতে দল পুনর্গঠনে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচিত করা হলো। টম পেরেসের জয়ের মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো একজন হিস্পানিক আমেরিকান ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রধান নির্বাচিত হলেন। দলটির পুনর্গঠনের দায়িত্ব এখন পেরেসের ওপর।
রিপাবলিকান পার্টির টিকিটে প্রেসিডেন্ট হওয়া ডোনাল্ড ট্রাম্পকেও মোকাবিলা করতে হবে তাঁকে। মুসলিম কংগ্রেসম্যান কিথ এলিসনের সঙ্গে টম পেরেসের জোর প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়। দ্বিতীয় পর্বের ভোটে দলের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন পেরেস। তিনি পেয়েছেন ২৩৫ ভোট। প্রতিদ্বন্দ্বী এলিসন পেয়েছেন ২০০ ভোট। জয়ী হওয়ার পর কিথ এলিসনকে ভাইস চেয়ারম্যান মনোনীত করেন টম পেরেস। তাঁর সামনে প্রথম বড় চ্যালেঞ্জ হবে ২০১৮ সালে কংগ্রেসের মধ্যবর্তী নির্বাচনে দলের অবস্থা ভালো করে ডেমোক্র্যাটদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা ফিরিয়ে আনা। তবে ভোট নিয়ে দলের মধ্যে ব্যাপক বাদানুবাদ হয়েছে। উদারনৈতিক ডেমোক্র্যাটরা পেরেসের পক্ষে অবস্থান নেন। আর দলের মধ্যে ‘প্রগতিশীল অংশ’ হিসেবে পরিচিত নেতারা চেয়েছিলেন কিথ এলিসনকে। পেরেজের জয়ে তাঁরা বেশ হতাশ। জিম ডিন নামে এলিসনের সমর্থক একজনের মন্তব্য, দল পুনর্গঠনের আরেকটি সুযোগ হারাল ডেমোক্রেটিক পার্টি। তবে বরফ গলানোর আহ্বান জানিয়েছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। তিনি বলেন, ‘আমি জানি টম পেরেস আমাদের ঐক্যবদ্ধ করবেন।’ পেরেস ও এলিসন আগামী চার বছরের জন্য দায়িত্ব পালন করবেন। দলের জাতীয় কমিটির উদ্দেশে পেরেস বলেছেন, ‘আমরা আত্মবিশ্বাসের সংকটে ভুগছি, ভুগছি প্রাসঙ্গিকতার সংকটে।’ ডেমোক্র্যাটদের এই বিরোধে খুব খুশি রিপাবলিকানরা।
তারা মনে করছে, ডেমোক্র্যাটদের এই নির্বাচন প্রমাণ করে দিচ্ছে তারা কতটা ‘জনবিচ্ছিন্ন’। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও টুইট করে বলেছেন, ‘আমি তাঁর (পেরেস) এবং রিপাবলিকান পার্টির জন্য বেজায় খুশি।’ গত বছরের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতির সব হিসাব-নিকাশ পাল্টে যায়। ওবামার শাসনামলে রিপাবলিকান পার্টিকে নেতৃত্বহীন মনে হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রে বেড়ে ওঠা অভিবাসী ও নিম্নবিত্তদের সঙ্গে আপাতসংযোগহীন রিপাবলিকান পার্টিকে ২০১৫ সালেও বিভ্রান্ত মনে হতো। ভিন্ন রাজনৈতিক বাস্তবতায় সাম্প্রতিক ইতিহাসের সবচেয়ে কঠিন সময় পার করছে ডেমোক্রেটিক পার্টি। প্রেসিডেন্ট হিসেবে ওবামার প্রস্থানের পর দলের বিধ্বস্ত অবস্থা প্রকাশ্যে ফুটে ওঠে। হিলারি ক্লিনটনের পেছনে ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতারা ঐক্যবদ্ধ থাকলেও প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তাঁর শেষ রক্ষা হয়নি।
No comments