পাকিস্তানে যেখানে ভালোবাসা দিবস নিষিদ্ধ
পাকিস্তানে উন্মুক্ত স্থান ও সরকারি অফিসে ভালোবাসা দিবস উদ্যাপন নিষিদ্ধ করে আদেশ জারি করেছেন ইসলামাবাদ হাইকোর্ট। আজ সোমবার আদালতের এ সিদ্ধান্ত সারা দেশে ‘দ্রুত কার্যকর করতে’ ব্যবস্থা গ্রহণেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ডন অনলাইনের খবরে বলা হয়েছে, ভালোবাসা দিবসের আগের দিন আজ বিচারপতি শওকত আজিজ এ–সংক্রান্ত শুনানি শেষে উন্মুক্ত স্থান ও সরকারি অফিসে ভালোবাসা দিবস উদ্যাপনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। এ আদেশ দ্রুত কার্যকর করতে আদালত দেশটির তথ্য মন্ত্রণালয়, পাকিস্তান ইলেকট্রনিক মিডিয়া রেগুলেটরি অথোরিটি (পেমরা) ও ইসলামাবাদ হাইকমিশনের প্রতি আদেশ জারি করেন। আদালত ‘অবিলম্বে ভালোবাসা দিবসসংক্রান্ত প্রচার বা উৎসাহ বন্ধ করতে’ পত্রিকা ও ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমকে সতর্ক করে দিয়েছেন। পত্রিকা ও ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমে ভালোবাসা দিবসসংক্রান্ত প্রচার হচ্ছে কি না, তা তদারকি করতে পেমরাকে আদেশ দেওয়া হয়েছে। দেশটির আবদুল আজিজ নামের একজন ব্যক্তি আদালতে একটি পিটিশন দেন। তিনি তাতে বলেন, মূলধারার গণমাধ্যমে এবং সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ভালোবাসা দিবস নিয়ে প্রচার ও পালনে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। এটা পালন ‘ইসলামের শিক্ষার সঙ্গে বিরোধী এবং এটা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে’। এরপরই এক শুনানি শেষে ইসলামাবাদ আদালত উন্মুক্ত জায়গায় বিশ্ব ভালোবাসা দিবসের অনুষ্ঠান পালনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। প্রতিবছর ভালোবাসা দিবস পালন নিয়ে পাকিস্তানে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা যায়। কেউ কেউ এটা স্বচ্ছন্দে পালন করে থাকেন। আবার এর বিরোধিতাও দেশটিতে দেখা যায়।
পাকিস্তানের প্রধান শহরগুলো ও বিভিন্ন রেস্তোরাঁ-বেকারিতে ভালোবাসা দিবসে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে বিরোধীরা দেশব্যাপী ‘ভালোবাসা দিবসকে না বলুন’-এর প্রচার চালায়। আদালতের এই নিষেধাজ্ঞা নিয়ে ডন অনলাইনে একটি জরিপের মাধ্যমে পাঠকের কাছে পক্ষে-বিপক্ষে ভোট চাওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ সময় রাত নয়টা পর্যন্ত ওই জরিপে ৪ হাজার ৬৪৯ ভোট পড়েছে। তাতে দেখা যায়, আদালতের রায়ের সঙ্গে একমত পোষণ করেন ২ হাজার ৮২ জন। রায়ের সঙ্গে একমত নন ২ হাজার ৫৬৭ জন। গত বছর দেশটির প্রেসিডেন্ট মামনুন হুসেইন ভালোবাসা দিবস উদ্যাপন না করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন। ওই সময় ইসলামাবাদে এক অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট এ আহ্বান জানিয়ে বলেন, এটা মুসলিম ঐতিহ্যের অংশ নয়, এটা পশ্চিমাদের সংস্কৃতি। পাকিস্তানের সংস্কৃতির সঙ্গে ভালোবাসা দিবসের কোনো সম্পর্ক নেই। কাজেই এটিকে পরিহার করতে হবে। এর আগে পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের একটি জেলায় ভালোবাসা দিবস উদ্যাপন নিষিদ্ধ করা হয়। পাকিস্তানের কট্টর ইসলামপন্থীরা ভালোবাসা দিবস উদ্যাপনের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিল, এটি পাকিস্তানি সংস্কৃতির পরিপন্থী।
No comments