কেন ব্যর্থ হলো?
আঙ্কারায় কোকাতেপ মসজিদের সামনে স্মরণ অনুষ্ঠানে সতর্ক প্রহরা। এএফপি |
অনেকের মতেই তুরস্কে গত শুক্রবার রাতের সামরিক অভ্যুত্থানের চেষ্টাটি ছিল অত্যন্ত অপরিকল্পিত। এতে দেশটির বেশ কয়েকজন বড় মাপের সামরিক কর্মকর্তা জড়িত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ইস্তাম্বুলে তৃতীয় সেনাবাহিনীর জেনারেল এরদেল ওজতুর্ক এবং দেশের ঠিক বিপরীত দিকে দ্বিতীয় সেনাবাহিনীর দায়িত্বে থাকা জেনারেল আদেম হুদুতি উল্লেখযোগ্য। তবে শীর্ষ জেনারেলদের কেউই এতে জড়িত ছিলেন না। ট্যাংকবহর ও বিমানবাহিনীর কয়েকটি অংশ জড়িয়ে পড়লেও পদাতিক বাহিনীর অধিকাংশ সৈনিকই এতে যোগ দেননি। বিমানবাহিনীর বাকি অংশগুলোও এরদোয়ানের প্রতি ছিল অনুগত। কার্নেগি এনডাউমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিস নামের একটি থিঙ্ক ট্যাংকের তুরস্কবিষয়ক বিশ্লেষক সিনান উলগেন বলেন, ‘সরকার উৎখাতের এমন একটা চেষ্টা হওয়ায় আমি স্তম্ভিত। অভ্যুত্থানকারী কর্মকর্তারা সেনাবাহিনী থেকে যথেষ্ট সমর্থন পাননি। চেইন অব কমান্ডের বাইরে গিয়ে তাঁরা এই চেষ্টাটি চালিয়েছিলেন।
আর তাই সফল হতে পারেননি।’ বিশ্লেষকেরা বলছেন, সফল অভ্যুত্থানে সাধারণত যা যা করা হয়ে থাকে, তুরস্কের অভ্যুত্থানচেষ্টায় বিদ্রোহী সেনাদের সেদিকে মনোনিবেশ করতে দেখা যায়নি। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের দখল খুব দ্রুত নিয়ে নিলেও বাকি বেসরকারি সংবাদমাধ্যমগুলোয় তারা গিয়েছে বহু পরে, যার সুযোগে সরকার সারা রাতই জনগণের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পেরেছে। বিদ্রোহী সেনারা সেনাপ্রধান হুলুসি আকারকে গ্রেপ্তার করেছে, ইস্তাম্বুলে বড় একটা ব্রিগেড অবরোধ করেছে এবং আঙ্কারায় সেনা সদর দপ্তরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে। কিন্তু সরকারের চূড়ায় থাকা এরদোয়ান এবং তাঁর প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদ্রিম ঠিকই থেকে গেছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। সরকারের একটি সূত্র বলেছে, অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া ব্যক্তিরা হয়তো আশঙ্কা করছিলেন, তাঁদের পরিকল্পনা ফাঁস হয়ে গেছে। নতুবা তাঁরা বুঝতে পেরেছিলেন, সেনাবাহিনীর ভেতরে থাকা হিজমত অনুসারীদের বিদায় করতে আগামী আগস্টে শুরু হতে যাওয়া সরকারের অভিযানে তাঁরা গ্রেপ্তার হতে পারেন। আর তাই তাড়াহুড়ো করেই কিছু একটা করতে চেয়েছিলেন তাঁরা।
No comments