আইনের শাসন কঠোর করতে হবে
২০১৪ সালের তুলনায় ২০১৫ সালে শিশু ধর্ষণ বেড়েছে ১৬১ শতাংশ। অন্যদিকে চলতি বছরের প্রথম চার মাসে গত বছরের প্রথম চার মাসের চেয়ে ধর্ষণ বেড়েছে ১৪ শতাংশ। বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের শিশু অধিকার পরিস্থিতি নিয়ে করা এক প্রতিবেদনে এ ভয়াবহ চিত্র পাওয়া গেছে। শিশু ধর্ষণের মতো জঘন্য ঘটনা দিনে দিনে বেড়ে চলা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না।ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর ৫২১টি শিশু ধর্ষণের শিকার হয়। এর মধ্যে ৯৯টি শিশু গণধর্ষণের শিকার হয়। ৩০টি শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। ধর্ষণের শিকার চারটি শিশু আত্মহত্যা করে। ২০১৪ সালে ধর্ষণের শিকার ১৯৯টি শিশুর মধ্যে ২২টি শিশু গণধর্ষণের শিকার হয়েছিল। এ থেকে বোঝা যায়, পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ, শিশুদের নিরাপত্তার বিষয়টি কতটা নাজুক। নানাভাবেই দেশে শিশুরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। ধর্ষণ ছাড়াও শিশুরা রাজনৈতিক সহিংসতা ও বিদ্যালয়ে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। তুচ্ছ কারণে খুন হচ্ছে শিশুরা।
শিশুদের ওপর চলা এসব নির্যাতন দুর্ভাগ্যজনকভাবে প্রতিহত করা যাচ্ছে না। এটা পরিষ্কার যে আইনের যথাযথ প্রয়োগের ঘাটতি থাকায় শিশুদের ওপর নানা পর্যায়ের সহিংসতা কমছে না। শিশুদের ওপর সহিংসতা যখন উদ্বেগজনক হারে বেড়ে চলেছে, তখন কিছু বাড়তি পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। শিশু অধিকার ফোরামের প্রতিবেদনে শিশু নির্যাতন বন্ধে বেশ কিছু সুপারিশ করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে হত্যা, ধর্ষণসহ শিশু নির্যাতনের ক্ষেত্রে দ্রুত বিচারের উদ্যোগ নেওয়া, অপরাধীর শাস্তি নিশ্চিত করা ও দ্রুত রায় কার্যকর করা। দ্রুত বিচারের মাধ্যমে অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করা গেলে তা দৃষ্টান্ত হিসেবে কাজ করবে। আমরা আশা করব এসব সুপারিশ সরকার গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নেবে এবং দ্রুত তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেবে। পরিস্থিতি যে গুরুতর আকার ধারণ করেছে তাতে এর কোনো বিকল্প নেই।
No comments