ড্রোন হামলায় নিহত ১১৬ বেসামরিক লোক
বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন ও বিমান হামলায় রণাঙ্গনের বাইরে গত সাত বছরে ১১৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। হোয়াইট হাউস এ কথা জানিয়েছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলোর দাবি করা সংখ্যার চেয়ে এটি অনেক কম। বিশ্বজুড়ে বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করার এক নির্বাহী নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে দীর্ঘ-প্রতীক্ষিত এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। মার্কিন সামরিক অভিযানের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা স্বাক্ষরিত ওই নির্দেশে প্রতিবছর যুদ্ধে নিহত সাধারণ নাগরিকের প্রকৃত সংখ্যা প্রকাশ করতে বলা হয়। নির্দেশে বলা হয়, বেসরকারি সংস্থাগুলোর করা ‘নির্ভরযোগ্য প্রতিবেদন’ থেকে এতে তথ্য যুক্ত করা যেতে পারে। বেসামরিক নাগরিক নিহতের এই সংখ্যাটি ধরা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ওবামার মেয়াদকাল ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। মানবাধিকার সংগঠনগুলো দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করছে, ড্রোন ও বিমান হামলায় বেসামরিক নাগরিক হতাহতের বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন ধোঁয়াশা সৃষ্টি করে রেখেছে। কোনো কোনো সংগঠন বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের এ ধরনের হামলায় বেশ কয়েক শ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সক্রিয় জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে এসব অভিযান পরিচালনা করেছে দেশটির সামরিক বাহিনী ও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ। তাদের কার্যক্রমের স্বচ্ছতা তুলে ধরতেই হতাহত ব্যক্তিদের সংখ্যা প্রকাশ করেছে ওবামা প্রশাসন। লন্ডনভিত্তিক ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজমের হিসাবে ২০০২ সাল থেকে পাকিস্তান, ইয়েমেন ও সোমালিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন হামলায় অন্তত ১ হাজার ১০০ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। তারা বলছে, স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের সাংবাদিক, এনজিওর কর্মকর্তা, ফাঁস হওয়া সরকারি নথি, আদালতের কাগজপত্র এবং মাঠপর্যায়ের তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে নিহত ব্যক্তিদের এই সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে ওবামা প্রশাসন সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, অনেক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের দেওয়া কিছু ভুল তথ্যের কারণে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে দেওয়া নিহত ব্যক্তিদের তালিকাটি সঠিক নাও হতে পারে। হোয়াইট হাউসের প্রতিবেদনে বলা হয়, বারাক ওবামার শাসনামলে ৪৭৩টি অভিযানে ২ হাজার ৩৭২ থেকে ২ হাজার ৫৮১ সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যুর পরিসংখ্যানে আফগানিস্তান, ইরাক ও সিরিয়ার মতো কিছু রাষ্ট্রের তথ্য বাদ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া মার্কিন বাহিনীর হাতে যুদ্ধক্ষেত্রে নিহত বেসামরিক নাগরিকের সংখ্যা প্রতিবেদনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
No comments