অর্থ, আধিপত্যের জন্য অশান্ত হতে পারে কারওয়ান বাজার by রোজিনা ইসলাম
রাজধানীর কারওয়ান বাজার এলাকায় ফুটপাতসহ সড়কের দুই পাশ ঘেঁষে রাখা হয় গাড়ি। এতে বাধাগ্রস্ত হয় যান চলাচল ও পথচারীদের হাঁটাচলা। পেট্রোবাংলা ভবনের সামনের ছবি l প্রথম আলো |
রাজধানীতে
পাইকারি ও খুচরা কেনাবেচার অন্যতম বড় কেন্দ্র কারওয়ান বাজার ঘিরে অবৈধভাবে
ছোট-বড় ট্রাকস্ট্যান্ড, অবৈধ দোকানপাট, চাঁদাবাজি এবং এসবের ওপর আধিপত্য
বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রভাবশালী চক্র গড়ে উঠেছে। তারা সেখানে অবৈধ
স্থাপনা করেছে। ইজারার নামে কাঁচাবাজারকে পাঁচ ভাগে ভাগ করে ফুটপাতে দোকান
বসানো হয়েছে। আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের মধ্যে এ নিয়ে
বিরোধ দেখা দিচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এ অবস্থায় কারওয়ান বাজার এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে; এমনকি যেকোনো সময় খুনোখুনির মতো ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি বিশেষ প্রতিবেদন পাঠানো হয়।
বেশ কয়েক বছর আগে কারওয়ান বাজার সরিয়ে মহাখালীতে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এ লক্ষে৵ সিটি করপোরেশন সেখানে বহুতল ভবন নির্মাণ করে। এখন ৩৩১ কোটি টাকা ব্যয়ে যাত্রাবাড়ী, আমিনবাজার ও মহাখালীতে যথাক্রমে আড়ত, খুচরা ও মাছবাজার সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করবে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। গতকাল মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে প্রায় দেড় ঘণ্টা আলোচনা করেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মেয়রকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে।
জানতে চাইলে মেয়র আনিসুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘কারওয়ান বাজারে আগে হতো খুনোখুনি, এখন হচ্ছে চাঁদাবাজি। শত শত দোকান জবরদখল করা। যেসব দোকান আড়ত হিসেবে ভাড়া দেওয়া, সেগুলোতে লোক ঘুমায়। কিচেন মার্কেটটিতেও ফাটল ধরেছে। মেয়র বলেন, মূলত ট্রাকস্ট্যান্ড ও বাজারকে ঘিরে প্রভাবশালী চক্র গড়ে উঠেছে। তারা সেখানে অবৈধ স্থাপনা করেছে। আমরা যে যুদ্ধে নেমেছি এখন প্রয়োজন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় কাউন্সিলরদের সহযোগিতা।’ প্রধানমন্ত্রীও বলেছেন, এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সহায়তা করবেন। তবে বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দায়িত্ব নেওয়ার পর পরিস্থিতির অনেকটা উন্নতি হয়েছে বলেও জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে পাঠানো প্রতিবেদনে কারওয়ান বাজারে দোকানিদের কাছে চাঁদাবাজির কারণে স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়ছে এবং সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে বলে উল্লেখ করা হয়। প্রতিবেদনে চাঁদা উত্তোলনকারীদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা ব্যবসায়ীদের সবজি ও ফলফলাদি গাড়িতে ওঠানো-নামানোর সময় গাড়িপ্রতি ২০০ থেকে ৩০০ টাকা চাঁদা দিতে হয়। চাঁদা না দিলে হয়রানির শিকার হন তাঁরা।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের কাছ থেকে ২০১৩ সালের ২৮ নভেম্বর মেসার্স মমতাজ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী কাজী মোস্তফা ৮ লাখ ১৯ হাজার ৯০০ টাকায় এক বছরের জন্য কারওয়ান বাজারে গাড়ি পার্কিংয়ের ইজারা নেন। সকাল সাতটা থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত যানবাহন ভেদে নির্ধারিত হারে টোল আদায়ের কথা। কিন্তু ইজারাদার ২৪ ঘণ্টা ব্যবসায়ী ও চালকদের কাছ থেকে টোল আদায় করছেন। কাজী মোস্তফা নিয়ম-বহির্ভূতভাবে বিভিন্ন পর্যায়ের প্রভাবশালী ৩০ জন নেতা-কর্মীর কাছ থেকে ৩০ লাখ টাকা নিয়ে তাঁদের অংশীদার বানায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, কাজী মোস্তফা ওরফে কালা মোস্তফা চাঁদাবাজি ও ফুটপাত দখলে প্রধান ভূমিকা পালন করেন। তিনি দুলাল ওরফে বিদেশি দুলাল, কালাম ওরফে লাভলি কামাল, ফারুক বিএসসি ও বিপ্লব গংদের মাধ্যমে চাঁদা উঠিয়ে থাকেন।
তেজগাঁও থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি জহিরুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি কখনো মাসিক বাজার করতে ছাড়া কারওয়ান বাজারে যাই না। আমি একটি এতিমখানা পরিচালনা করি।’ তবে তিনি স্বীকার করেন, প্রতিবেদনে যা বলা হয়েছে তা সঠিক।
জানতে চাইলে তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মসিউর রহমান বলেন, চাঁদাবাজির কিছু ঘটনা ছিল যা অনেক আগের। এখন এ রকম হচ্ছে বলে তাঁর জানা নেই।
এসব বিষয়ে তেজগাঁও এলাকার সাংসদ ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘বিষয়টি আমি স্থানীয়ভাবে অনুসন্ধান করার নির্দেশ দিয়েছি। প্রতিবেদনে যাঁদের নাম এসেছে এঁরা আওয়ামী লীগ, যুবলীগের নেতা-কর্মী কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদি কেউ আধিপত্য বিস্তার করে চাঁদাবাজির চেষ্টা করে, তবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মেসার্স মমতাজ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী কাজী মোস্তফা ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনেরই একজন কর্মচারী (পিয়ন)। করপোরেশনের কর্মকর্তাদের যোগসাজশে অবৈধভাবে তিনি ইজারার কাজটি পেয়েছেন। এ ব্যাপারে মেয়র আনিসুল হক আমার সঙ্গে কথা বলেছেন। শিগগিরই নিলাম ডেকে পার্কিংয়ের জন্য নতুন ইজারাদার নিয়োগ দেওয়া হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এ অবস্থায় কারওয়ান বাজার এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে; এমনকি যেকোনো সময় খুনোখুনির মতো ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি বিশেষ প্রতিবেদন পাঠানো হয়।
বেশ কয়েক বছর আগে কারওয়ান বাজার সরিয়ে মহাখালীতে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এ লক্ষে৵ সিটি করপোরেশন সেখানে বহুতল ভবন নির্মাণ করে। এখন ৩৩১ কোটি টাকা ব্যয়ে যাত্রাবাড়ী, আমিনবাজার ও মহাখালীতে যথাক্রমে আড়ত, খুচরা ও মাছবাজার সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করবে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। গতকাল মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে প্রায় দেড় ঘণ্টা আলোচনা করেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মেয়রকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে।
জানতে চাইলে মেয়র আনিসুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘কারওয়ান বাজারে আগে হতো খুনোখুনি, এখন হচ্ছে চাঁদাবাজি। শত শত দোকান জবরদখল করা। যেসব দোকান আড়ত হিসেবে ভাড়া দেওয়া, সেগুলোতে লোক ঘুমায়। কিচেন মার্কেটটিতেও ফাটল ধরেছে। মেয়র বলেন, মূলত ট্রাকস্ট্যান্ড ও বাজারকে ঘিরে প্রভাবশালী চক্র গড়ে উঠেছে। তারা সেখানে অবৈধ স্থাপনা করেছে। আমরা যে যুদ্ধে নেমেছি এখন প্রয়োজন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় কাউন্সিলরদের সহযোগিতা।’ প্রধানমন্ত্রীও বলেছেন, এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সহায়তা করবেন। তবে বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দায়িত্ব নেওয়ার পর পরিস্থিতির অনেকটা উন্নতি হয়েছে বলেও জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে পাঠানো প্রতিবেদনে কারওয়ান বাজারে দোকানিদের কাছে চাঁদাবাজির কারণে স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়ছে এবং সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে বলে উল্লেখ করা হয়। প্রতিবেদনে চাঁদা উত্তোলনকারীদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা ব্যবসায়ীদের সবজি ও ফলফলাদি গাড়িতে ওঠানো-নামানোর সময় গাড়িপ্রতি ২০০ থেকে ৩০০ টাকা চাঁদা দিতে হয়। চাঁদা না দিলে হয়রানির শিকার হন তাঁরা।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের কাছ থেকে ২০১৩ সালের ২৮ নভেম্বর মেসার্স মমতাজ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী কাজী মোস্তফা ৮ লাখ ১৯ হাজার ৯০০ টাকায় এক বছরের জন্য কারওয়ান বাজারে গাড়ি পার্কিংয়ের ইজারা নেন। সকাল সাতটা থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত যানবাহন ভেদে নির্ধারিত হারে টোল আদায়ের কথা। কিন্তু ইজারাদার ২৪ ঘণ্টা ব্যবসায়ী ও চালকদের কাছ থেকে টোল আদায় করছেন। কাজী মোস্তফা নিয়ম-বহির্ভূতভাবে বিভিন্ন পর্যায়ের প্রভাবশালী ৩০ জন নেতা-কর্মীর কাছ থেকে ৩০ লাখ টাকা নিয়ে তাঁদের অংশীদার বানায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, কাজী মোস্তফা ওরফে কালা মোস্তফা চাঁদাবাজি ও ফুটপাত দখলে প্রধান ভূমিকা পালন করেন। তিনি দুলাল ওরফে বিদেশি দুলাল, কালাম ওরফে লাভলি কামাল, ফারুক বিএসসি ও বিপ্লব গংদের মাধ্যমে চাঁদা উঠিয়ে থাকেন।
তেজগাঁও থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি জহিরুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি কখনো মাসিক বাজার করতে ছাড়া কারওয়ান বাজারে যাই না। আমি একটি এতিমখানা পরিচালনা করি।’ তবে তিনি স্বীকার করেন, প্রতিবেদনে যা বলা হয়েছে তা সঠিক।
জানতে চাইলে তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মসিউর রহমান বলেন, চাঁদাবাজির কিছু ঘটনা ছিল যা অনেক আগের। এখন এ রকম হচ্ছে বলে তাঁর জানা নেই।
এসব বিষয়ে তেজগাঁও এলাকার সাংসদ ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘বিষয়টি আমি স্থানীয়ভাবে অনুসন্ধান করার নির্দেশ দিয়েছি। প্রতিবেদনে যাঁদের নাম এসেছে এঁরা আওয়ামী লীগ, যুবলীগের নেতা-কর্মী কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদি কেউ আধিপত্য বিস্তার করে চাঁদাবাজির চেষ্টা করে, তবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মেসার্স মমতাজ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী কাজী মোস্তফা ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনেরই একজন কর্মচারী (পিয়ন)। করপোরেশনের কর্মকর্তাদের যোগসাজশে অবৈধভাবে তিনি ইজারার কাজটি পেয়েছেন। এ ব্যাপারে মেয়র আনিসুল হক আমার সঙ্গে কথা বলেছেন। শিগগিরই নিলাম ডেকে পার্কিংয়ের জন্য নতুন ইজারাদার নিয়োগ দেওয়া হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।’
No comments