অতিবৃষ্টি বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ে প্রাথমিক ক্ষতি ৬৩৭ কোটি টাকা
দেশজুড়ে
গত তিন মাসের অতিবৃষ্টি বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ে কৃষিসহ বিভিন্ন খাতে ব্যাপক
ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে অতিবৃষ্টি ও পাহাড় থেকে নেমে আসা ঢলে গত জুন
মাসের মাঝামাঝি ও শেষদিকে দেশের বিভিন্ন স্থানে বন্য দেখা দিয়েছে। একইসসাথে
৩০ জুলাই উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হানে ঘুর্ণিঝড় কোমেন। গত কয়েকদিনের
অতিবৃষ্টিতে দেশের উত্তর, মধ্য ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় বন্যা
দেখা দিয়েছে। এসব প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের
১১টি জেলা। আর এসব জেলায় গত বুধবার পর্যন্ত প্রাথমিকভাবে ৬৩৬ কোটি ৮২ লাখ
৪৪ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে সরকারি এক পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে।
এর আগে জেলা ও উপজেলা থেকে তথ্য নিয়ে গত জুন থেকে ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির চিত্র নিয়ে একটি পরিসংখ্যান তৈরি করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার অতিবৃষ্টিপাতে সৃষ্ট বন্যা, জলাবদ্ধতাসহ অন্যান্য দুর্যোগ মোকাবেলায় গৃহীত কার্যক্রম ও করণীয় পর্যালোচনার জন্য গঠিত দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস জাতীয় প্লাটটফরমের সভায় এটি উপস্থাপন করা হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের তৈরি করা এ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে দেশের গবাদি পশু-পাখি, ফসল, লবণ চাষের জমি, মৎস্য খামার, বন, বৈদ্যুতিক ও টেলিযোগাযোগ স্থাপনা, শিল্প-কারখানা, নৌযান ও মাছ ধরার ট্রলার থেকে খাতওয়ারী এ ক্ষয়ক্ষতি নিরুপন করা হয়েছে। তবে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি, শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, বাঁধ ও সড়ক, নলকূপের ক্ষয়ক্ষতির সংখ্যাতাত্ত্বিক পরিসংখ্যান দেয়া হলেও টাকার অঙ্কে এর মূল্য নির্ধারণ করা হয়নি।
প্রতিবেদনে ক্ষতিগ্রস্ত হিসেবে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, ফেনী, কুমিল্লা, বান্দরবান, খুলনা, সাতক্ষীরা, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা ও নওগাঁ জেলার নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনের হিসাব অনুযায়ী বন্যায় মোট ২৩ জন মারা গেছেন, আহত হয়েছেন ৯০৪ জন। বেশি ক্ষতিগ্রস্ত লোক সংখ্যা ১০ লাখ ৭৩ হাজার ৫০৯ জন ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত লোক ২৩ লাখ ১১ হাজার ৩৬৭ জন। বন্যায় ৯৩ হাজার ৪০৪ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ২৫১ কোটি ৯১ লাখ ৬১ হাজার ৯০৫ টাকার ক্ষতি হয়েছে। ১১ জেলায় সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি ২৯ হাজার ৫৮০ ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত এক লাখ ৬১ হাজার ৩৬৮টি। মোট চার হাজার ৬৫৭টি গবাদি পশু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার মূল্য চার কোটি ৮৯ লাখ ৮১ হাজার ২০০ টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত হাঁস-মুরগী এক লাখ নয় হাজার ৫৯৩টি। এর মূল্য ধরা হয়েছে দুই কোটি ৫৬ লাখ ৪২ হাজার ৩৮৬ টাকা। বন্যায় লবণচাষীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ৫৬ হেক্টর জমির এক লাখ ১২ হাজার টাকার লবণের ক্ষতি হয়েছে। ৬০ হাজার ২৭ হেক্টর চিংড়ি চাষের জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এক্ষেত্রে ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণ করা হয়েছে ৩১৭ কোটি ৮৩ লাখ ৩৫ হাজার ৮২০ টাকা। ২১ হাজার ৯৬২টি মৎস্য খামার পানিতে ভেসে যাওয়ায় ৪১ কোটি ৫৪ লাখ ৩২ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১৬১টি, এক হাজার ৫৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাঁচটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ ভেঙ্গে গেছে, ৬৬৯টি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এক হাজার ৯৮৫ কি.মি. পাকা ও ছয় হাজার ২৮০ কি.মি. কাঁচা সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১৪৮ কি.মি. বাঁধ সম্পূর্ণ ও ৩২৬ কি.মি. বাঁধ আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১৫টি ব্রিজ ও কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বনভূমির পরিমাণ ২৯২ হেক্টর। এতে ৭ কোটি ৮৫ লাখ ৬৪ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। প্রায় ১২ কিলোমিটার বিদ্যুৎ স্থাপনার ৮৯ লাখ ২০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার ক্ষতি হয়েছে ১৮ লাখ টাকা। ১০টি শিল্প-কারখানার ক্ষতির মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে এক কোটি ৩ লাখ টাকা। চার হাজার ১৬২টি গভীর, ছয় হাজার ৭৬১টি অগভীর ও দুই হাজার ৯৭১টি হস্তচালিত নলকূপ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৪২৮টি নৌকা ও ট্রলার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মূল্য ধরা হয়েছে পাঁচ কোটি ৬৫ লাখ ৪৫ হাজার। এক হাজার ৪৯৭টি মাছ ধরার জালের ক্ষতি ২ কোটি ৪৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
এ বিষয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. রিয়াজ আহমেদ বলেন, এটি একটি অসম্পূর্ণ হিসাব। কারণ বর্তমানে দেশের ২৪ জেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। এ বন্যার ক্ষয়ক্ষতির পুরো চিত্র পেতে আরও সময় লাগবে। তিনি বলেন, জাতীয় প্লাটফরমের সভায় বন্যায় কৃষক ও মৎস্যচাষীদের ক্ষতি পুষিয়ে দিতে উদ্যোগ নেওয়ার জন্য কৃষি ও মৎস্য মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে। তারাও বলেছে এ বিষয়ে তাদের পরিকল্পনা আছে। তিনি জানান, বন্যার পর পানিবাহিত রোগের বিস্তার রোধে মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে। কক্সবাজারসহ বিভিন্ন জেলায় বিশেষ ত্রাণ সহায়তা দেওয়াসহ বন্যা দুর্গত এলাকার জন্য আমাদের দীর্ঘমেয়াদী বিভিন্ন পরিকল্পনা আছে।
এর আগে জেলা ও উপজেলা থেকে তথ্য নিয়ে গত জুন থেকে ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির চিত্র নিয়ে একটি পরিসংখ্যান তৈরি করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার অতিবৃষ্টিপাতে সৃষ্ট বন্যা, জলাবদ্ধতাসহ অন্যান্য দুর্যোগ মোকাবেলায় গৃহীত কার্যক্রম ও করণীয় পর্যালোচনার জন্য গঠিত দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস জাতীয় প্লাটটফরমের সভায় এটি উপস্থাপন করা হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের তৈরি করা এ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে দেশের গবাদি পশু-পাখি, ফসল, লবণ চাষের জমি, মৎস্য খামার, বন, বৈদ্যুতিক ও টেলিযোগাযোগ স্থাপনা, শিল্প-কারখানা, নৌযান ও মাছ ধরার ট্রলার থেকে খাতওয়ারী এ ক্ষয়ক্ষতি নিরুপন করা হয়েছে। তবে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি, শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, বাঁধ ও সড়ক, নলকূপের ক্ষয়ক্ষতির সংখ্যাতাত্ত্বিক পরিসংখ্যান দেয়া হলেও টাকার অঙ্কে এর মূল্য নির্ধারণ করা হয়নি।
প্রতিবেদনে ক্ষতিগ্রস্ত হিসেবে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, ফেনী, কুমিল্লা, বান্দরবান, খুলনা, সাতক্ষীরা, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা ও নওগাঁ জেলার নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনের হিসাব অনুযায়ী বন্যায় মোট ২৩ জন মারা গেছেন, আহত হয়েছেন ৯০৪ জন। বেশি ক্ষতিগ্রস্ত লোক সংখ্যা ১০ লাখ ৭৩ হাজার ৫০৯ জন ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত লোক ২৩ লাখ ১১ হাজার ৩৬৭ জন। বন্যায় ৯৩ হাজার ৪০৪ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ২৫১ কোটি ৯১ লাখ ৬১ হাজার ৯০৫ টাকার ক্ষতি হয়েছে। ১১ জেলায় সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি ২৯ হাজার ৫৮০ ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত এক লাখ ৬১ হাজার ৩৬৮টি। মোট চার হাজার ৬৫৭টি গবাদি পশু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার মূল্য চার কোটি ৮৯ লাখ ৮১ হাজার ২০০ টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত হাঁস-মুরগী এক লাখ নয় হাজার ৫৯৩টি। এর মূল্য ধরা হয়েছে দুই কোটি ৫৬ লাখ ৪২ হাজার ৩৮৬ টাকা। বন্যায় লবণচাষীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ৫৬ হেক্টর জমির এক লাখ ১২ হাজার টাকার লবণের ক্ষতি হয়েছে। ৬০ হাজার ২৭ হেক্টর চিংড়ি চাষের জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এক্ষেত্রে ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণ করা হয়েছে ৩১৭ কোটি ৮৩ লাখ ৩৫ হাজার ৮২০ টাকা। ২১ হাজার ৯৬২টি মৎস্য খামার পানিতে ভেসে যাওয়ায় ৪১ কোটি ৫৪ লাখ ৩২ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১৬১টি, এক হাজার ৫৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাঁচটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ ভেঙ্গে গেছে, ৬৬৯টি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এক হাজার ৯৮৫ কি.মি. পাকা ও ছয় হাজার ২৮০ কি.মি. কাঁচা সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১৪৮ কি.মি. বাঁধ সম্পূর্ণ ও ৩২৬ কি.মি. বাঁধ আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১৫টি ব্রিজ ও কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বনভূমির পরিমাণ ২৯২ হেক্টর। এতে ৭ কোটি ৮৫ লাখ ৬৪ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। প্রায় ১২ কিলোমিটার বিদ্যুৎ স্থাপনার ৮৯ লাখ ২০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার ক্ষতি হয়েছে ১৮ লাখ টাকা। ১০টি শিল্প-কারখানার ক্ষতির মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে এক কোটি ৩ লাখ টাকা। চার হাজার ১৬২টি গভীর, ছয় হাজার ৭৬১টি অগভীর ও দুই হাজার ৯৭১টি হস্তচালিত নলকূপ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৪২৮টি নৌকা ও ট্রলার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মূল্য ধরা হয়েছে পাঁচ কোটি ৬৫ লাখ ৪৫ হাজার। এক হাজার ৪৯৭টি মাছ ধরার জালের ক্ষতি ২ কোটি ৪৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
এ বিষয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. রিয়াজ আহমেদ বলেন, এটি একটি অসম্পূর্ণ হিসাব। কারণ বর্তমানে দেশের ২৪ জেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। এ বন্যার ক্ষয়ক্ষতির পুরো চিত্র পেতে আরও সময় লাগবে। তিনি বলেন, জাতীয় প্লাটফরমের সভায় বন্যায় কৃষক ও মৎস্যচাষীদের ক্ষতি পুষিয়ে দিতে উদ্যোগ নেওয়ার জন্য কৃষি ও মৎস্য মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে। তারাও বলেছে এ বিষয়ে তাদের পরিকল্পনা আছে। তিনি জানান, বন্যার পর পানিবাহিত রোগের বিস্তার রোধে মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে। কক্সবাজারসহ বিভিন্ন জেলায় বিশেষ ত্রাণ সহায়তা দেওয়াসহ বন্যা দুর্গত এলাকার জন্য আমাদের দীর্ঘমেয়াদী বিভিন্ন পরিকল্পনা আছে।
No comments