রাজধানীতে বাড়ছে লিভটুগেদার
সাদিয়া
ও ইমন (ছদ্মনাম)। সাদিয়ার বিয়ে হয়েছিল। কন্যা সন্তানের জননী। স্বামীর
সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়ে গেছে কয়েক বছর আগে। আর ইমন বয়সে তরুণ। লেখাপড়া শেষ করে
ব্যবসা করার চেষ্টা করছেন। বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে গিয়ে দু’জনের পরিচয়।
তারপর ঘনিষ্ঠতা। সাদিয়া আর বিয়ে করতে আগ্রহী নন। ইমনের মাথাতেও আপাতত বিয়ের
চিন্তা নেই। দু’জনই সমঝোতার মাধ্যমে লিভটুগেদার করছেন।
সুতপা ও অর্ণব (ছদ্মনাম)। সুতপা একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি একটি চাকরিও করছেন। অর্ণবও সম্প্রতি পড়াশুনা শেষ করে চাকরিতে ঢুকেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তাদের পরিচয়। খোলামেলা আলোচনা করতে করতেই তারা সিদ্ধান্ত নেন লিভটুগেদার করার। সুতপার পরিবারে বাবা নেই, তাই নিজের পড়াশুনার পাশপাশি পরিবারকেও আর্থিক সহযোগিতা করতে হয়। বিয়ে করলে সেটা বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে বিয়েতে আগ্রহী নন তিনি। আর অর্ণব প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগে বিয়ে করতে নারাজ। সাদিয়া-ইমন বা সুতপা-অর্ণবের মতো ঢাকায় অনেকে একসঙ্গে থাকছেন বোঝাপড়া করে। বাড়ছে লিভটুগেদার।
সমাজ বিশ্লেষকরা বলছেন, সামাজিক পটপরিবর্তন ও অর্থনৈতিক কারণে বাড়ছে এমন ঘটনা। এটি সামাজিক অবক্ষয়ের ফল। সমাজ বিজ্ঞানীরা বলছেন ধর্মীয় নিয়ম এর তোয়াক্কা না করে এ ধরনের কাজের পরিণতি ভাল হয় না কখনও। কারণ কোন সমাজ যদি শৃঙ্খলাহীন হয়ে যায় তাহলে সেই সমাজ বেশিদিন টেকে না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লিভটুগেদার এখন শুধু আধুনিক বা উচ্চবিত্ত পরিবারের মধ্যেই আটকে নেই। এটা এখন মধ্যবিত্ত ছাড়িয়ে পৌঁছে গেছে নিম্নবিত্তদের মাঝেও। রাজধানী ঢাকা ও এর আশেপাশের শহরে নিম্নবিত্ত, এমনকি গার্মেন্টকর্মীদের কেউ কেউ লিভটুগেদার করে থাকেন। নানারকম ঝামেলা এড়াতেই তারা পরিচিত কোন সহকর্মীর সঙ্গে একসঙ্গে থাকেন। প্রতিবেশীদের কাছে স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দেন ঠিকই, কিন্তু ধর্মীয় ও আইনগতভাবে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে চান না। রাজধানী ঢাকার গুলশান-বনানীর মতো অভিজাত এলাকার বাইরে সাধারণ এলাকাতেও অনেকেই লিভটুগেদার করছেন। লিভটুগেদারকারীরা ঝামেলা এড়াতে বাসা ভাড়া নিতে একটু সতর্কতা অবলম্বন করেন। আবাসিক এলাকা কিংবা ফ্ল্যাট বাড়িতে লিভটুগেদার করলে ঝামেলা হয় না বলে তাদের উত্তরা, রামপুরা বা মোহাম্মদপুর এলাকা বেশি পছন্দ। আর এখন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে বিভিন্ন পেশাজীবীরাও লিভটুগেদার করছেন। বিশেষ করে শো’বিজ মিডিয়ার অনেকেই লিভটুগেদারে অভ্যস্থ হয়ে পড়েছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা, জাহাঙ্গীরনগর ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক লিভটুগেদার করেন। এছাড়া উচ্চবিত্ত বা মাল্টিন্যাশনাল প্রতিষ্ঠানে কর্মরত অনেকেই লিভটুগেদার করছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞানের অধ্যাপক ও সমাজবিজ্ঞানী ড. নেহাল করিম বলেন, যে যেভাবে দেখুক লিভটুগেদারের পরিণতি আসলে ভাল নয়। ঢাকা বিশ্বদ্যিালয়ের এই শিক্ষক বলেন, দিন পরিবর্তন হচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে মানুষের মনও পরিবর্তন হচ্ছে। আমাদের পা থেকে মাথা পর্যন্ত পশ্চিমা সংস্কৃতি দ্বারা প্রভাবিত। তাই পশ্চিমা সংস্কৃতি থেকে লিভটুগেদারও আমাদের ওপর প্রভাব ফেলছে। এটা মেনে না নেয়ার কোনও কারণ নেই। এখনকার তরুণ-তরুণীরা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে চায় না। সমাজ বিজ্ঞানীরা বলছেন, বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার চাইতে সমাজে লিভটুগেদার বেড়ে যাওয়ার সুনির্দিষ্ট কিছু কারণ রয়েছে। আধুনিক ও শিক্ষিত অনেক তরুণ-তরুণীই এখন মনে করেন বিয়ে মানে পরিবার ও সামাজিকভাবে চাপিয়ে দেয়া বিষয়। হয়তো কোন তরুণ কিংবা তরুণী বিয়ের পর বুঝতে পারলেন, তার সঙ্গীটি ঠিক তার বিপরীতধর্মী মানসিকতার। এ নিয়ে বিস্তর ঝামেলা পোহাতে হয় নিজেদের মধ্যে। পরিবার ও সামাজিকতার ভয়ে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্তে যেতেও ভয় পান বেশির ভাগ লোকজন। ভেতরে ভেতরে চাপা অস্বস্তি নিয়ে একই ছাদের নিচে বাস করতে বাধ্য হতে হয় তাদের। সমাজ বিজ্ঞানীদের মতে, আপাতদৃষ্টিতে তরুণ-তরুণীদের কাছে লিভটুগেদার করা ঝক্কি-ঝামেলাহীন জীবন মনে হলেও এর খারাপ কিছুদিক রয়েছে। বিশেষ করে ধর্মীয় অনুশাসনের দিক দিয়ে বিচার করলে এটি পুরোপুরি অবৈধ। আর আইনগতভাবেও এর কোন ভিত্তি নেই। কেউ কারো সঙ্গে প্রতারণা করলে আইনগত মোকাবেলা করতে গিয়েও সমস্যায় পড়তে হয়। এছাড়া বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঝামেলা বাড়ার সম্ভাবনাও প্রবল। পারিবারিকভাবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলে বৃদ্ধ হলে সামাজিক ও আর্থিক নিরাপত্তা পাওয়া যায়। লিভটুগেদারে সেই সুযোগ নেই। পশ্চিমা বিশ্বে লিভটুগেদারের অধিক প্রচলন রয়েছে ঠিক। সেখানে বিবাহ-বহির্ভূত সন্তান নিলে কোনও সমস্যা হয় না। আমাদের সমাজ বিবাহবর্হিভূত সন্তান কখনোই মেনে নেয় না। পশ্চিমা বিশ্বে বৃদ্ধরা অনেকেই বৃদ্ধাশ্রমে বাস করে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, কর্পোরেট চাকরি করেন এমন অনেকে সংসার জীবনের ঝামেলায় যেতে যান না। সমঝোতার ভিত্তিতে একজন সঙ্গী বা সঙ্গিনী ঠিক করে নেন। রাজধানীর অভিজাত এলাকায় বসবাস করায় তাদের জীবনাচার নিয়ে কেউ প্রশ্নও তুলে না। এছাড়া যারা এভাবে সমঝোতার ভিত্তিতে থাকছেন তারা আর্থিক বিষয়ও নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নিচ্ছেন।
সুতপা ও অর্ণব (ছদ্মনাম)। সুতপা একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি একটি চাকরিও করছেন। অর্ণবও সম্প্রতি পড়াশুনা শেষ করে চাকরিতে ঢুকেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তাদের পরিচয়। খোলামেলা আলোচনা করতে করতেই তারা সিদ্ধান্ত নেন লিভটুগেদার করার। সুতপার পরিবারে বাবা নেই, তাই নিজের পড়াশুনার পাশপাশি পরিবারকেও আর্থিক সহযোগিতা করতে হয়। বিয়ে করলে সেটা বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে বিয়েতে আগ্রহী নন তিনি। আর অর্ণব প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগে বিয়ে করতে নারাজ। সাদিয়া-ইমন বা সুতপা-অর্ণবের মতো ঢাকায় অনেকে একসঙ্গে থাকছেন বোঝাপড়া করে। বাড়ছে লিভটুগেদার।
সমাজ বিশ্লেষকরা বলছেন, সামাজিক পটপরিবর্তন ও অর্থনৈতিক কারণে বাড়ছে এমন ঘটনা। এটি সামাজিক অবক্ষয়ের ফল। সমাজ বিজ্ঞানীরা বলছেন ধর্মীয় নিয়ম এর তোয়াক্কা না করে এ ধরনের কাজের পরিণতি ভাল হয় না কখনও। কারণ কোন সমাজ যদি শৃঙ্খলাহীন হয়ে যায় তাহলে সেই সমাজ বেশিদিন টেকে না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লিভটুগেদার এখন শুধু আধুনিক বা উচ্চবিত্ত পরিবারের মধ্যেই আটকে নেই। এটা এখন মধ্যবিত্ত ছাড়িয়ে পৌঁছে গেছে নিম্নবিত্তদের মাঝেও। রাজধানী ঢাকা ও এর আশেপাশের শহরে নিম্নবিত্ত, এমনকি গার্মেন্টকর্মীদের কেউ কেউ লিভটুগেদার করে থাকেন। নানারকম ঝামেলা এড়াতেই তারা পরিচিত কোন সহকর্মীর সঙ্গে একসঙ্গে থাকেন। প্রতিবেশীদের কাছে স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দেন ঠিকই, কিন্তু ধর্মীয় ও আইনগতভাবে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে চান না। রাজধানী ঢাকার গুলশান-বনানীর মতো অভিজাত এলাকার বাইরে সাধারণ এলাকাতেও অনেকেই লিভটুগেদার করছেন। লিভটুগেদারকারীরা ঝামেলা এড়াতে বাসা ভাড়া নিতে একটু সতর্কতা অবলম্বন করেন। আবাসিক এলাকা কিংবা ফ্ল্যাট বাড়িতে লিভটুগেদার করলে ঝামেলা হয় না বলে তাদের উত্তরা, রামপুরা বা মোহাম্মদপুর এলাকা বেশি পছন্দ। আর এখন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে বিভিন্ন পেশাজীবীরাও লিভটুগেদার করছেন। বিশেষ করে শো’বিজ মিডিয়ার অনেকেই লিভটুগেদারে অভ্যস্থ হয়ে পড়েছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা, জাহাঙ্গীরনগর ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক লিভটুগেদার করেন। এছাড়া উচ্চবিত্ত বা মাল্টিন্যাশনাল প্রতিষ্ঠানে কর্মরত অনেকেই লিভটুগেদার করছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞানের অধ্যাপক ও সমাজবিজ্ঞানী ড. নেহাল করিম বলেন, যে যেভাবে দেখুক লিভটুগেদারের পরিণতি আসলে ভাল নয়। ঢাকা বিশ্বদ্যিালয়ের এই শিক্ষক বলেন, দিন পরিবর্তন হচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে মানুষের মনও পরিবর্তন হচ্ছে। আমাদের পা থেকে মাথা পর্যন্ত পশ্চিমা সংস্কৃতি দ্বারা প্রভাবিত। তাই পশ্চিমা সংস্কৃতি থেকে লিভটুগেদারও আমাদের ওপর প্রভাব ফেলছে। এটা মেনে না নেয়ার কোনও কারণ নেই। এখনকার তরুণ-তরুণীরা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে চায় না। সমাজ বিজ্ঞানীরা বলছেন, বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার চাইতে সমাজে লিভটুগেদার বেড়ে যাওয়ার সুনির্দিষ্ট কিছু কারণ রয়েছে। আধুনিক ও শিক্ষিত অনেক তরুণ-তরুণীই এখন মনে করেন বিয়ে মানে পরিবার ও সামাজিকভাবে চাপিয়ে দেয়া বিষয়। হয়তো কোন তরুণ কিংবা তরুণী বিয়ের পর বুঝতে পারলেন, তার সঙ্গীটি ঠিক তার বিপরীতধর্মী মানসিকতার। এ নিয়ে বিস্তর ঝামেলা পোহাতে হয় নিজেদের মধ্যে। পরিবার ও সামাজিকতার ভয়ে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্তে যেতেও ভয় পান বেশির ভাগ লোকজন। ভেতরে ভেতরে চাপা অস্বস্তি নিয়ে একই ছাদের নিচে বাস করতে বাধ্য হতে হয় তাদের। সমাজ বিজ্ঞানীদের মতে, আপাতদৃষ্টিতে তরুণ-তরুণীদের কাছে লিভটুগেদার করা ঝক্কি-ঝামেলাহীন জীবন মনে হলেও এর খারাপ কিছুদিক রয়েছে। বিশেষ করে ধর্মীয় অনুশাসনের দিক দিয়ে বিচার করলে এটি পুরোপুরি অবৈধ। আর আইনগতভাবেও এর কোন ভিত্তি নেই। কেউ কারো সঙ্গে প্রতারণা করলে আইনগত মোকাবেলা করতে গিয়েও সমস্যায় পড়তে হয়। এছাড়া বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঝামেলা বাড়ার সম্ভাবনাও প্রবল। পারিবারিকভাবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলে বৃদ্ধ হলে সামাজিক ও আর্থিক নিরাপত্তা পাওয়া যায়। লিভটুগেদারে সেই সুযোগ নেই। পশ্চিমা বিশ্বে লিভটুগেদারের অধিক প্রচলন রয়েছে ঠিক। সেখানে বিবাহ-বহির্ভূত সন্তান নিলে কোনও সমস্যা হয় না। আমাদের সমাজ বিবাহবর্হিভূত সন্তান কখনোই মেনে নেয় না। পশ্চিমা বিশ্বে বৃদ্ধরা অনেকেই বৃদ্ধাশ্রমে বাস করে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, কর্পোরেট চাকরি করেন এমন অনেকে সংসার জীবনের ঝামেলায় যেতে যান না। সমঝোতার ভিত্তিতে একজন সঙ্গী বা সঙ্গিনী ঠিক করে নেন। রাজধানীর অভিজাত এলাকায় বসবাস করায় তাদের জীবনাচার নিয়ে কেউ প্রশ্নও তুলে না। এছাড়া যারা এভাবে সমঝোতার ভিত্তিতে থাকছেন তারা আর্থিক বিষয়ও নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নিচ্ছেন।
No comments