আমি সাঁতার জানি না বিদেশে যেতে চাই না
‘আমি খুব ভয় পাচ্ছি। আমি সাঁতার জানি না। আমি ভিনদেশে যেতে চাই না- নিহত শিশু আয়লান কুর্দির মায়ের এ আকুতি বলতে বলতে কেঁদে ফেললেন তার ফুফু টিমা কুর্দি। কানাডা প্রবাসী ননদের প্রস্তাব এভাবেই ফিরিয়ে দিয়েছিলেন আয়লানের মা রেহান। সাঁতার না জানায় অথৈ সাগরে ডুবে মরার ভয় আগেই দানা বেঁধেছিল তার মনে। তারপরও সন্তানদের ভবিষ্যতের চিন্তা ও সচ্ছল জীবনের তাগিদে চাপা পড়ে এ ভীতি। ঝুঁকি নিয়ে গ্রিসে যাওয়ার জন্য স্বামী-সন্তানসহ ওঠে পড়েন ডিঙ্গি নৌকায়। যাত্রার মাত্র ৩০ মিনিট যেতেই বাস্তবে রূপ নেয় তার শংকা। কলিজার টুকরা দুই সন্তানসহ নির্মম সলিল সমাধি হয় তার। খবর ডেইলি মেইলের। ভাই আবদুল্লাহর জীবনে এ নির্মম পরিহাস কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না আয়লানের ফুফু টিমা। সিরিয়ার কোবানির ভয়াবহ যুদ্ধের কবল থেকে রক্ষা করতে নিজের কাছে কানাডায় নিরাপদ আশ্রয়ে ডেকেছিলেন। যাওয়ার খরচও পাঠিয়েছিলেন তিনি।
এসব কথা বর্ণনা করে ভাইয়ের কষ্টের দায় নিজে নেয়ার চেষ্টা করেন। বৃহস্পতিবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন টিমা। তিনি বলেন, আমি চাই আমার ভাই আমার কাছে আসুক। ফোনে আবদুল্লাহকে কোবানিতে ফিরে যেতে নিষেধ করেন তিনি। কিন্তু সন্তানহারা পাগলপ্রায় আবদুল্লাহ জানায়, যাদের জন্য তোমার কাছে রওনা করেছিলাম তারাইতো নেই। আমার গিয়ে কি হবে? আমি বরং ওদের (সন্তান-স্ত্রী) কবর দেব। নিজের ভিটায় ওদের সঙ্গেই বাকি জীবনটা কাটিয়ে দেব। মাঝে মাঝে কলা-রুটি কিনে দেব আয়লানকে ও গালিপকে। গালিপ কলা খুব পছন্দ করত। তার আর কোনো বায়না পূরণ করতে হবে না আবদুুল্লাহকে। কবরে না খেলেও সেখানে কলা-রুটি রাখবেন তিনি। আবদুল্লাহ বলেন, আমার পরিবার হারিয়ে যদি সবার মঙ্গল হয় তবে সেটা আমার অন্যরকম পাওয়া। টিমা বলেন, আমি চাই শরণার্থীদের রক্ষায় সবাই এগিয়ে আসুন।
No comments