মিনায় পদদলনের আসল কারণ কী?
মিনায়
পদদলিত হয়ে ৭৬৯ জন হাজির মৃত্যুর ঘটনার পর বিশ্ববাসীর মনে এমন প্রশ্ন
ঘুরপাক খাচ্ছে—আসলে কী ঘটেছিল সেখানে? কেমন করে এত মানুষ পদদলিত হয়ে মারা
গেল?
সৌদি সরকার দাবি করে আসছে হজ ব্যবস্থাপনায় তাদের গাফিলতি ছিল না। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বড় জামারায় কঙ্কর মারার আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্নের জন্য হজ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ যে গাইডলাইন দিয়েছিল হাজিদের একটা অংশ সে নির্দেশনা মানেনি। ফলে এই ট্র্যাজেডি ঘটে গেছে। তবে ইরান সরকার ও লেবানন ভিত্তিক হিযবুল্লাহসহ বহির্বিশ্বের বিভিন্ন মহল এ ঘটনার জন্য সৌদি সরকারকেই দায়ি করেছে।
হজের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করার স্থানগুলোতে গণমাধ্যমের সংবাদ সংগ্রহ করার সুযোগ না থাকায় এ বিষয়ে সৌদি কর্তৃপক্ষের সরবরাহ করা তথ্যের ওপরই মূলত সংবাদকর্মীদের নির্ভর করতে হচ্ছে। এর ফলে ঘটনার কারণ নিরপেক্ষ সূত্রের আলোকে বিশ্লেষণ করা যাচ্ছে না।
তবে প্রত্যক্ষদর্শী ও বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে ঘটনার সম্ভাব্য কারণ সম্পর্কে সিএনএন একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
ওই প্রতিবেদনে সম্ভাব্য কারণ সম্পর্কে বলা হয়েছে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে হজের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করার বাধ্যবাধকতার কারণে হাজিদের মধ্যে তাড়াহুড়ো ছিল। মিনায় ওই দিন ছিল প্রচণ্ড গরম আবহাওয়া। যেদিকে যাওয়ার কথা অনেকে তার বিপরীত দিকে যাওয়ায় মুখোমুখি অবস্থার কারণে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। আবার প্রথমবারের মতো হজে যাওয়া হাজিদের অনেকে খানিকটা বিভ্রান্ত ছিলেন।
সাংবাদিক ও ব্লগার ইথার আল-কাতানি হজে গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, অনেকে যে পথে যাওয়ার কথা তার বিপরীত দিক দিয়ে গিয়ে ঠেলাঠেলিতে পড়ে যান। অনেকে শয়তানকে পাথর মারার দিকে যাচ্ছিলেন। আবার অনেকে পাথর নিক্ষেপ শেষে বিপরীত দিকে ফিরে আসছিলেন।
আহমেদ মোহাম্মদ আমির নামের এক হাজি বলেন, ‘একটি দল ২০৪ নম্বর সড়ক দিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় বিপরীত দিক থেকে আরেকটি দল ২০৬ সড়ক থেকে এই পথে চলে আসে। এ সময় বিপরীতমুখী দুটি দলের মধ্যে প্রচণ্ড ধাক্কাধাক্কি হয়। এর পর কী হয়েছিল, আমি তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না। এই প্রচণ্ড ধাক্কাধাক্কিতে হতাহতের সংখ্যা অনেক বেশি বেড়ে যায়।’
ঘটনার পর উদ্ধারকাজ শুরু হতে বেশ দেরি হয় বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, অ্যাম্বুলেন্স আর সাইরেনের শব্দে গোটা এলাকায় ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এই প্রচণ্ড গরমে ধাক্কাধাক্কিতে যখন কেউ পড়ে যাচ্ছিল, অন্যরা তার ওপর দিয়েই চলে যাচ্ছিল। এভাবেই ঘটে পদদলনের ঘটনা। এর সঙ্গে তিনি যোগ করেন, মিনায় শয়তানকে লক্ষ্য করে পাথর নিক্ষেপের জন্য খুব একটা সময় দেওয়া হয়নি। সময় স্বল্পতা হাজিদের মধ্যে এক ধরনের চাপ সৃষ্টি করে।
সাংবাদিক খালেদ আল মায়েনার মতে, ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্নে হাজিদের তাড়া থাকার বিষয়টি এই দুর্ঘটনার প্রধান কারণ। বেশির ভাগ হাজি সকাল সকাল শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করার আনুষ্ঠানিকতাটা সম্পন্ন করে ফেলতে চেয়েছিলেন। সেই তাড়াই শেষ পর্যন্ত কাল হয়ে দাঁড়াল।
এ ব্যাপারে সাংবাদিক ও ব্লগার ইথার আল-কাতানি বলেন, ওই দিন ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল। দীর্ঘ সময় এই রোদে কেউ থাকলে শরীর থেকে ঘাম ঝরতে ঝরতে তার মূর্ছা যাওয়াটা ছিল স্বাভাবিক বিষয়। নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমি ছবি তোলা, ভিডিও ধারণের জন্য ঘণ্টা দুয়েক ওই রোদে দাঁড়িয়েছিলাম। আমার মনে হচ্ছিল, আমি যে কোনো সময় মূর্ছা যাব।’ রোদে ক্লান্ত হয়ে পড়া হাজিদের মধ্যে যারা একবার পড়ে গেছেন, ভিড়ের মধ্যে তাদের পক্ষে আর দাঁড়ানো সম্ভব হয়নি বলে তিনি জানান।
সৌদি আরবের আল-আরবিয়া টেলিভিশনের জামাল খাসোগি বলেন, হজে চলাচলের ব্যবস্থাটা এমন যে, কোনো একটি দল যদি ভুল দিকে যেতে থাকে সেখানে বিপর্যয় না হয়ে আর কোনো উপায় থাকে না।
সৌদির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিরাপত্তা-বিষয়ক মুখপাত্র মেজর জেনারেল মনসুর আল তুর্কি বলেন, কিছু হাজি সম্ভবত চলাচলের জন্য নির্দেশিত পথ অনুসরণ করেননি। তাঁরা নিজেদের মতো পথে চলেছেন কিংবা সংক্ষিপ্ত কোনো পথ ধরে গন্তব্যে পৌঁছাতে চেয়েছিলেন। এ থেকেই দুর্ঘটনাটা ঘটে।
সৌদি সরকার দাবি করে আসছে হজ ব্যবস্থাপনায় তাদের গাফিলতি ছিল না। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বড় জামারায় কঙ্কর মারার আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্নের জন্য হজ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ যে গাইডলাইন দিয়েছিল হাজিদের একটা অংশ সে নির্দেশনা মানেনি। ফলে এই ট্র্যাজেডি ঘটে গেছে। তবে ইরান সরকার ও লেবানন ভিত্তিক হিযবুল্লাহসহ বহির্বিশ্বের বিভিন্ন মহল এ ঘটনার জন্য সৌদি সরকারকেই দায়ি করেছে।
হজের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করার স্থানগুলোতে গণমাধ্যমের সংবাদ সংগ্রহ করার সুযোগ না থাকায় এ বিষয়ে সৌদি কর্তৃপক্ষের সরবরাহ করা তথ্যের ওপরই মূলত সংবাদকর্মীদের নির্ভর করতে হচ্ছে। এর ফলে ঘটনার কারণ নিরপেক্ষ সূত্রের আলোকে বিশ্লেষণ করা যাচ্ছে না।
তবে প্রত্যক্ষদর্শী ও বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে ঘটনার সম্ভাব্য কারণ সম্পর্কে সিএনএন একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
ওই প্রতিবেদনে সম্ভাব্য কারণ সম্পর্কে বলা হয়েছে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে হজের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করার বাধ্যবাধকতার কারণে হাজিদের মধ্যে তাড়াহুড়ো ছিল। মিনায় ওই দিন ছিল প্রচণ্ড গরম আবহাওয়া। যেদিকে যাওয়ার কথা অনেকে তার বিপরীত দিকে যাওয়ায় মুখোমুখি অবস্থার কারণে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। আবার প্রথমবারের মতো হজে যাওয়া হাজিদের অনেকে খানিকটা বিভ্রান্ত ছিলেন।
সাংবাদিক ও ব্লগার ইথার আল-কাতানি হজে গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, অনেকে যে পথে যাওয়ার কথা তার বিপরীত দিক দিয়ে গিয়ে ঠেলাঠেলিতে পড়ে যান। অনেকে শয়তানকে পাথর মারার দিকে যাচ্ছিলেন। আবার অনেকে পাথর নিক্ষেপ শেষে বিপরীত দিকে ফিরে আসছিলেন।
আহমেদ মোহাম্মদ আমির নামের এক হাজি বলেন, ‘একটি দল ২০৪ নম্বর সড়ক দিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় বিপরীত দিক থেকে আরেকটি দল ২০৬ সড়ক থেকে এই পথে চলে আসে। এ সময় বিপরীতমুখী দুটি দলের মধ্যে প্রচণ্ড ধাক্কাধাক্কি হয়। এর পর কী হয়েছিল, আমি তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না। এই প্রচণ্ড ধাক্কাধাক্কিতে হতাহতের সংখ্যা অনেক বেশি বেড়ে যায়।’
ঘটনার পর উদ্ধারকাজ শুরু হতে বেশ দেরি হয় বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, অ্যাম্বুলেন্স আর সাইরেনের শব্দে গোটা এলাকায় ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এই প্রচণ্ড গরমে ধাক্কাধাক্কিতে যখন কেউ পড়ে যাচ্ছিল, অন্যরা তার ওপর দিয়েই চলে যাচ্ছিল। এভাবেই ঘটে পদদলনের ঘটনা। এর সঙ্গে তিনি যোগ করেন, মিনায় শয়তানকে লক্ষ্য করে পাথর নিক্ষেপের জন্য খুব একটা সময় দেওয়া হয়নি। সময় স্বল্পতা হাজিদের মধ্যে এক ধরনের চাপ সৃষ্টি করে।
সাংবাদিক খালেদ আল মায়েনার মতে, ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্নে হাজিদের তাড়া থাকার বিষয়টি এই দুর্ঘটনার প্রধান কারণ। বেশির ভাগ হাজি সকাল সকাল শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করার আনুষ্ঠানিকতাটা সম্পন্ন করে ফেলতে চেয়েছিলেন। সেই তাড়াই শেষ পর্যন্ত কাল হয়ে দাঁড়াল।
এ ব্যাপারে সাংবাদিক ও ব্লগার ইথার আল-কাতানি বলেন, ওই দিন ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল। দীর্ঘ সময় এই রোদে কেউ থাকলে শরীর থেকে ঘাম ঝরতে ঝরতে তার মূর্ছা যাওয়াটা ছিল স্বাভাবিক বিষয়। নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমি ছবি তোলা, ভিডিও ধারণের জন্য ঘণ্টা দুয়েক ওই রোদে দাঁড়িয়েছিলাম। আমার মনে হচ্ছিল, আমি যে কোনো সময় মূর্ছা যাব।’ রোদে ক্লান্ত হয়ে পড়া হাজিদের মধ্যে যারা একবার পড়ে গেছেন, ভিড়ের মধ্যে তাদের পক্ষে আর দাঁড়ানো সম্ভব হয়নি বলে তিনি জানান।
সৌদি আরবের আল-আরবিয়া টেলিভিশনের জামাল খাসোগি বলেন, হজে চলাচলের ব্যবস্থাটা এমন যে, কোনো একটি দল যদি ভুল দিকে যেতে থাকে সেখানে বিপর্যয় না হয়ে আর কোনো উপায় থাকে না।
সৌদির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিরাপত্তা-বিষয়ক মুখপাত্র মেজর জেনারেল মনসুর আল তুর্কি বলেন, কিছু হাজি সম্ভবত চলাচলের জন্য নির্দেশিত পথ অনুসরণ করেননি। তাঁরা নিজেদের মতো পথে চলেছেন কিংবা সংক্ষিপ্ত কোনো পথ ধরে গন্তব্যে পৌঁছাতে চেয়েছিলেন। এ থেকেই দুর্ঘটনাটা ঘটে।
No comments