মিনায় ১৬ বাংলাদেশী হাজি নিহত, নিখোঁজ ১০৪
সৌদি
আরবে মিনায় গত বৃহস্পতিবারের পদদলিত হওয়ার ঘটনায় ১৬ জন বাংলাদেশী নিহত এবং
১০৪ জন নিখোঁজ রয়েছেন। জেদ্দায় বাংলাদেশ কনস্যুলেট অবশ্য চারজন বাংলাদেশী
হাজির মৃত্যু নিশ্চিত করেছে। এই চারজন হলেন- খুলনার মো. শহিদুল ইসলাম,
সাভারের আমিনুর রহমান, জামালপুরের ফিরোজা খানম এবং অজ্ঞাতনামা একজন
বাংলাদেশী রয়েছেন। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১০৪ জন নিখোঁজের তালিকা প্রস্তুত
করেছে জেদ্দায় বাংলাদেশ কনস্যুলেট অফিস। তবে সাভারের আমিনুর রহমানের নিহতের
ঘটনা নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। তার পরিবার জানিয়েছে, সাভারের আমিনুর
বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যে ব্যক্তির লাশের খোঁজ দিয়েছে, সেটি তার লাশ নয়।
এদিকে, যুগান্তরের প্রতিনিধিরা আত্মীয় স্বজনের বরাত দিয়ে আরও নিহতের খবর দিচ্ছেন। প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য মোতাবেক, ফেনীর পাঁচজন হাজির নিহতের খবর নিশ্চিত করছেন তাদের স্বজনরা। তারা হলেন- সোনাগাজীর সুজাপুর গ্রামের তহুরা বেগম তার ভাই নূরুন্নবী, সদর উপজেলার ধলিয়া ইউনিয়নের কলঘর গ্রামের জয়নব বিবি, তার ছোট ভাই শহরের পাঠানবাড়ী এলাকার নূরুল হুদা ও মাস্টার আবুল কাশেম ও পরশুরামের খালেদা খানমের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।
শরীয়তপুরের তিনজন হাজির মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তারা হলেন- জাজিরা উপজেলার জাজিরা ইউনিয়নের জব্বার আকনকান্দি গ্রামের এম এ রাজ্জাক আকন্দ (৬৫), তার স্ত্রী হাসিনা আকতার (৫৫), গোসাইরহাট উপজেলার চরধিপুর গ্রামের আহম্মেদ আলী মৃধা (৬৫)।
মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার হাজি বারেক মোড়ল (৭৫) নিহত হয়েছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার বাদৈর ইউনিয়নের মান্দারপুর গ্রামের গোলাম মোস্তফা খালেক (৬০) স্ত্রীকে বাঁচাতে গিয়ে পদদলিত হয়ে মারা যান।
দিনাজপুরের ষাটোর্ধ্ব কেরামত আলী দুর্ঘটনার সময় ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন বলে তার সঙ্গে থাকা হাজীরা পরিবারের সদস্যদের জানিয়েছেন। মিনার ঘটনায় বগুড়ার নন্দীগ্রামের নূরজাহান বেগম (৭০) নিহত হয়েছেন।
কর্মকর্তারা বলছেন, নিহত বাংলাদেশীর সংখ্যা বাড়তে পারে। কেননা সৌদি কর্তৃপক্ষ নিহতদের মধ্যে এখন পর্যন্ত যে ৬৫০টি মরদেহের ছবি প্রকাশ করেছে, তার মধ্যে ৯০টি মরদেহের চেহারা বাংলাদেশী বলে মনে হচ্ছে। এসব ছবি মক্কায় বাংলাদেশ হজ মিশনের সামনে টানিয়ে দেয়া হয়েছে। হজ এজেন্সি, আত্মীয়-স্বজন এবং হজ গাইডদের এসব ছবি থেকে বাংলাদেশীদের সনাক্ত করার জন্যে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
মিনায় পদদলিত হয়ে সাড়ে শতাধিক হাজি নিহত হওয়ার পর যে বাংলাদেশীরা নিখোঁজ রয়েছেন, পরিবারের সদস্যরা এখন হন্যে হয়ে তাদের হদিস খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন।
অনেকে বলছেন, তাদের চোখের সামনেই মারা যাওয়ার পর মৃতদেহ পুলিশ নিয়ে গেছে, কিন্তু তারপরে কী হয়েছে তা তাদের জানা নেই।
মক্কায় অবস্থিত বাংলাদেশ হজ অফিসের কনসাল (হজ কাউন্সিলর) মো. আসাদুজ্জামান রোববার টেলিফোনে যুগান্তরকে জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশের ১২৮ জন আমাদেরকে টেলিফোনে এবং অন্যান্য উপায়ে আমাদেরকে তথ্য দিয়েছিলেন যে, তারা হজ করতে আসা তাদের আত্মীয়-স্বজনকে খোঁজে পাচ্ছেন না। তারপর তাদের মধ্য থেকে ৩০ জন জানিয়েছেন, তারা তাদের আত্মীয়-স্বজনদের সন্ধান পেয়েছেন। আত্মীয়-স্বজনদের তথ্য মোতাবেক, এখন পর্যন্ত ৯৮জন বাংলাদেশী হাজী নিখোঁজ রয়েছেন।
তিনি আরও জানান, সৌদি সরকার নিহতদের ছবি প্রকাশ করেছে। তাদের মধ্য থেকে ৯০ জনের ছবি দেখে বাংলাদেশী বলে মনে হচ্ছে। এখন তাদের ছবি আত্মীয়-স্বজনদের মাধ্যমে মিলিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে এই তালিকায় কতজন নিশ্চিতভাবে মৃত্যুবরণ করেছেন সেটা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। মিনার ঘটনায় আহতদের কোনো তালিকা আমাদের হাতে নেই।
মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, মিনায় একটি একমুখী রাস্তা আছে। কিন্তু ওই ঘটনার সময় একমুখী রাস্তায় উভয় দিক থেকে মানুষ চলাচল শুরু করে। ওই সময়ে প্রচণ্ড গরম ছিল। সৌদি কর্তৃপক্ষ আমাদের জানায় যে, আতঙ্কিত হয়ে লোকজন ছোটাছুটি শুরু করে। গরমে দুই দিক থেকে ছুটে আসা মানুষের চাপে প্রচণ্ড ভিড়ে হিটস্ট্রোকে অনেকেই মারা গেছেন। মিনার ঘটনায় নিখোঁজ বাংলাদেশীদের তালিকা জেদ্দায় বাংলাদেশ কনসুলেট জেনারেল দফতরে দিয়েছি।
সৌদি আরবের জেদ্দায় অবস্থিত বাংলাদেশের কনসুলেট জেনারেল দফতরের কনসাল জেনারেল এ কে এম শহিদুল করিম রোববার বাংলাদেশ সময় বেলা আড়াইটায় টেলিফোনে যুগান্তরকে বলেন, মিনার ঘটনায় সৌদি কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত ৬৫০টি লাশের ছবি প্রকাশ করেছে। ওই সব ছবি দেখে বাংলাদেশী কতজন আছেন সেটা সনাক্ত করার চেষ্টা করছি। এটা সনাক্ত করার ক্ষেত্রে যেসব আত্মীয়-স্বজন এবং হজ এজেন্সি নিঁখোজ থাকার ব্যাপারে রিপোর্ট করেছেন, তাদের সহায়তা গ্রহণ করছি।
তিনি আরও বলেন, এখন পর্যন্ত তিনজন বাংলাদেশী নিহত হয়েছেন বলে আমরা নিশ্চিত হয়েছি। নিহতদের মধ্যে খুলনার মো. শহিদুল ইসলাম এবং সাভারের আমিনুর রহমানের লাশের ছবি দেখে তাদের আত্মীয়-স্বজনেরা তাদের পরিচয় নিশ্চিত করেছেন। নিহত তৃতীয় ব্যক্তির গলায় বাংলাদেশী ট্যাগ দেখে তা নিশ্চিত করা হয়েছে। তবে এই তৃতীয় ব্যক্তির নাম ও বিস্তারিত পরিচয় আমরা নিশ্চিত হতে পারিনি। এই তিন জনের বাইরে জামালপুরের ফিরোজা খানম নামের একজন নিহত হয়েছেন বলে তার আত্মীয়-স্বজন আমাদেরকে জানিয়েছেন। তবে এ ব্যাপারটি আমরা নিজেরা নিশ্চিত নই।
এ কে এম শহিদুল করিম বলেন, যে সব ব্যক্তি ও হজ এজেন্সি তাদের লোক নিখোঁজ রয়েছেন বলে রিপোর্ট করেছেন, তাদের সবাইকে ডাকা হয়েছে। তাদেরকে লাশের ছবি দেখে নিহতদের সনাক্ত করতে বলা হয়েছে।
এদিকে, সৌদি কর্তৃপক্ষ নিহতদের আরও ছবি আজ কিংবা কালের মধ্যে প্রকাশ করবে। তারপর বাংলাদেশী নিহতদের বিষয়ে একটা পূর্ণাঙ্গ চিত্র পাওয়া যাবে।
তিনি বলেন যে, মিনার ঘটনায় কোনো প্রকার ক্ষতিপূরণ দেয়ার কথা সৌদি সরকার ঘোষণা করেনি। সৌদি কর্তৃপক্ষ চান নিহতদের দাফন সৌদি আরবেই সম্পন্ন হোক। তবে এ ব্যাপারে নিহতদের পরিবারের সম্মতি প্রয়োজন হবে। তবে নিহতদের পরিবার যদি মরদেহ দেশে ফিরিয়ে নিতে চান তবে সেটাও সম্ভব। তবে এই ক্ষেত্রে মরদেহ দেশে ফেরত পাঠানোর কাজটি দীর্ঘ মেয়াদি এবং সময় সাপেক্ষ ব্যাপার।
মিনার ঘটনায় পদদলিত হয়েই হাজিরা নিহত হয়েছেন বলে উল্লেখ করে শহিদুল করিম বলেন, নিখোঁজ বাংলাদেশীদের একটি তালিকা আমাদের হাতে আছে। এই তালিকা মোতাবেক, ১০৪ জন বাংলাদেশী এখন পর্যন্ত নিখোঁজ আছেন। নিখোঁজদের এই তালিকা আমরা প্রকাশ করব কিনা সেটা এখনই বলতে পারছি না।
তিনি বলেন, এ ব্যাপারে কিছুক্ষণের মধ্যেই আমরা একটি বৈঠকে বসছি। সৌদি আরবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মহোদয় এই বৈঠক ডেকেছেন। বৈঠকে রাষ্ট্রদূত মহোদয় এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানাবেন।
শহিদুল করিম আরও বলেন, নিখোঁজ হওয়া মানে সবাই মিনার ঘটনায় নিখোঁজ হয়েছেন এমন নয়। আরাফাতের ময়দানে প্রতি বছরেই বিভিন্নভাবে বাংলাদেশীরা নিখোঁজ হয়ে থাকেন। ফলে নিখোঁজ সবাই মিনার ঘটনায় নিখোঁজ হয়েছেন এমন বলা যাবে না।
রিয়াদে বাংলাদেশ দূতাবাস, জেদ্দায় বাংলাদেশের কনসুলেট জেনারেল দফতর এবং মক্কায় বাংলাদেশ হজ মিশন আরও তথ্য পাওয়ার জন্যে কাজ করছে এবং ভিকটিমদের সহায়তার চেষ্টা করছে।
হাজী, তাদের সহযাত্রী, আত্মীয়-স্বজন, হজ গাইড এবং হজ এজেন্টদের নিখোঁজ হাজিদের ব্যাপারে রিপোর্ট করার জন্যে ০০৯৬৬(০)৫৩৭৩৭৫৮৫৯ এবং ০০৯৬৬(০)৫০৯৩৬০০৮২ টেলিফোন নম্বরে যোগাযোগ করার জন্যে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এদিকে, যুগান্তরের প্রতিনিধিরা আত্মীয় স্বজনের বরাত দিয়ে আরও নিহতের খবর দিচ্ছেন। প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য মোতাবেক, ফেনীর পাঁচজন হাজির নিহতের খবর নিশ্চিত করছেন তাদের স্বজনরা। তারা হলেন- সোনাগাজীর সুজাপুর গ্রামের তহুরা বেগম তার ভাই নূরুন্নবী, সদর উপজেলার ধলিয়া ইউনিয়নের কলঘর গ্রামের জয়নব বিবি, তার ছোট ভাই শহরের পাঠানবাড়ী এলাকার নূরুল হুদা ও মাস্টার আবুল কাশেম ও পরশুরামের খালেদা খানমের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।
শরীয়তপুরের তিনজন হাজির মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তারা হলেন- জাজিরা উপজেলার জাজিরা ইউনিয়নের জব্বার আকনকান্দি গ্রামের এম এ রাজ্জাক আকন্দ (৬৫), তার স্ত্রী হাসিনা আকতার (৫৫), গোসাইরহাট উপজেলার চরধিপুর গ্রামের আহম্মেদ আলী মৃধা (৬৫)।
মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার হাজি বারেক মোড়ল (৭৫) নিহত হয়েছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার বাদৈর ইউনিয়নের মান্দারপুর গ্রামের গোলাম মোস্তফা খালেক (৬০) স্ত্রীকে বাঁচাতে গিয়ে পদদলিত হয়ে মারা যান।
দিনাজপুরের ষাটোর্ধ্ব কেরামত আলী দুর্ঘটনার সময় ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন বলে তার সঙ্গে থাকা হাজীরা পরিবারের সদস্যদের জানিয়েছেন। মিনার ঘটনায় বগুড়ার নন্দীগ্রামের নূরজাহান বেগম (৭০) নিহত হয়েছেন।
কর্মকর্তারা বলছেন, নিহত বাংলাদেশীর সংখ্যা বাড়তে পারে। কেননা সৌদি কর্তৃপক্ষ নিহতদের মধ্যে এখন পর্যন্ত যে ৬৫০টি মরদেহের ছবি প্রকাশ করেছে, তার মধ্যে ৯০টি মরদেহের চেহারা বাংলাদেশী বলে মনে হচ্ছে। এসব ছবি মক্কায় বাংলাদেশ হজ মিশনের সামনে টানিয়ে দেয়া হয়েছে। হজ এজেন্সি, আত্মীয়-স্বজন এবং হজ গাইডদের এসব ছবি থেকে বাংলাদেশীদের সনাক্ত করার জন্যে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
মিনায় পদদলিত হয়ে সাড়ে শতাধিক হাজি নিহত হওয়ার পর যে বাংলাদেশীরা নিখোঁজ রয়েছেন, পরিবারের সদস্যরা এখন হন্যে হয়ে তাদের হদিস খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন।
অনেকে বলছেন, তাদের চোখের সামনেই মারা যাওয়ার পর মৃতদেহ পুলিশ নিয়ে গেছে, কিন্তু তারপরে কী হয়েছে তা তাদের জানা নেই।
মক্কায় অবস্থিত বাংলাদেশ হজ অফিসের কনসাল (হজ কাউন্সিলর) মো. আসাদুজ্জামান রোববার টেলিফোনে যুগান্তরকে জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশের ১২৮ জন আমাদেরকে টেলিফোনে এবং অন্যান্য উপায়ে আমাদেরকে তথ্য দিয়েছিলেন যে, তারা হজ করতে আসা তাদের আত্মীয়-স্বজনকে খোঁজে পাচ্ছেন না। তারপর তাদের মধ্য থেকে ৩০ জন জানিয়েছেন, তারা তাদের আত্মীয়-স্বজনদের সন্ধান পেয়েছেন। আত্মীয়-স্বজনদের তথ্য মোতাবেক, এখন পর্যন্ত ৯৮জন বাংলাদেশী হাজী নিখোঁজ রয়েছেন।
তিনি আরও জানান, সৌদি সরকার নিহতদের ছবি প্রকাশ করেছে। তাদের মধ্য থেকে ৯০ জনের ছবি দেখে বাংলাদেশী বলে মনে হচ্ছে। এখন তাদের ছবি আত্মীয়-স্বজনদের মাধ্যমে মিলিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে এই তালিকায় কতজন নিশ্চিতভাবে মৃত্যুবরণ করেছেন সেটা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। মিনার ঘটনায় আহতদের কোনো তালিকা আমাদের হাতে নেই।
মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, মিনায় একটি একমুখী রাস্তা আছে। কিন্তু ওই ঘটনার সময় একমুখী রাস্তায় উভয় দিক থেকে মানুষ চলাচল শুরু করে। ওই সময়ে প্রচণ্ড গরম ছিল। সৌদি কর্তৃপক্ষ আমাদের জানায় যে, আতঙ্কিত হয়ে লোকজন ছোটাছুটি শুরু করে। গরমে দুই দিক থেকে ছুটে আসা মানুষের চাপে প্রচণ্ড ভিড়ে হিটস্ট্রোকে অনেকেই মারা গেছেন। মিনার ঘটনায় নিখোঁজ বাংলাদেশীদের তালিকা জেদ্দায় বাংলাদেশ কনসুলেট জেনারেল দফতরে দিয়েছি।
সৌদি আরবের জেদ্দায় অবস্থিত বাংলাদেশের কনসুলেট জেনারেল দফতরের কনসাল জেনারেল এ কে এম শহিদুল করিম রোববার বাংলাদেশ সময় বেলা আড়াইটায় টেলিফোনে যুগান্তরকে বলেন, মিনার ঘটনায় সৌদি কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত ৬৫০টি লাশের ছবি প্রকাশ করেছে। ওই সব ছবি দেখে বাংলাদেশী কতজন আছেন সেটা সনাক্ত করার চেষ্টা করছি। এটা সনাক্ত করার ক্ষেত্রে যেসব আত্মীয়-স্বজন এবং হজ এজেন্সি নিঁখোজ থাকার ব্যাপারে রিপোর্ট করেছেন, তাদের সহায়তা গ্রহণ করছি।
তিনি আরও বলেন, এখন পর্যন্ত তিনজন বাংলাদেশী নিহত হয়েছেন বলে আমরা নিশ্চিত হয়েছি। নিহতদের মধ্যে খুলনার মো. শহিদুল ইসলাম এবং সাভারের আমিনুর রহমানের লাশের ছবি দেখে তাদের আত্মীয়-স্বজনেরা তাদের পরিচয় নিশ্চিত করেছেন। নিহত তৃতীয় ব্যক্তির গলায় বাংলাদেশী ট্যাগ দেখে তা নিশ্চিত করা হয়েছে। তবে এই তৃতীয় ব্যক্তির নাম ও বিস্তারিত পরিচয় আমরা নিশ্চিত হতে পারিনি। এই তিন জনের বাইরে জামালপুরের ফিরোজা খানম নামের একজন নিহত হয়েছেন বলে তার আত্মীয়-স্বজন আমাদেরকে জানিয়েছেন। তবে এ ব্যাপারটি আমরা নিজেরা নিশ্চিত নই।
এ কে এম শহিদুল করিম বলেন, যে সব ব্যক্তি ও হজ এজেন্সি তাদের লোক নিখোঁজ রয়েছেন বলে রিপোর্ট করেছেন, তাদের সবাইকে ডাকা হয়েছে। তাদেরকে লাশের ছবি দেখে নিহতদের সনাক্ত করতে বলা হয়েছে।
এদিকে, সৌদি কর্তৃপক্ষ নিহতদের আরও ছবি আজ কিংবা কালের মধ্যে প্রকাশ করবে। তারপর বাংলাদেশী নিহতদের বিষয়ে একটা পূর্ণাঙ্গ চিত্র পাওয়া যাবে।
তিনি বলেন যে, মিনার ঘটনায় কোনো প্রকার ক্ষতিপূরণ দেয়ার কথা সৌদি সরকার ঘোষণা করেনি। সৌদি কর্তৃপক্ষ চান নিহতদের দাফন সৌদি আরবেই সম্পন্ন হোক। তবে এ ব্যাপারে নিহতদের পরিবারের সম্মতি প্রয়োজন হবে। তবে নিহতদের পরিবার যদি মরদেহ দেশে ফিরিয়ে নিতে চান তবে সেটাও সম্ভব। তবে এই ক্ষেত্রে মরদেহ দেশে ফেরত পাঠানোর কাজটি দীর্ঘ মেয়াদি এবং সময় সাপেক্ষ ব্যাপার।
মিনার ঘটনায় পদদলিত হয়েই হাজিরা নিহত হয়েছেন বলে উল্লেখ করে শহিদুল করিম বলেন, নিখোঁজ বাংলাদেশীদের একটি তালিকা আমাদের হাতে আছে। এই তালিকা মোতাবেক, ১০৪ জন বাংলাদেশী এখন পর্যন্ত নিখোঁজ আছেন। নিখোঁজদের এই তালিকা আমরা প্রকাশ করব কিনা সেটা এখনই বলতে পারছি না।
তিনি বলেন, এ ব্যাপারে কিছুক্ষণের মধ্যেই আমরা একটি বৈঠকে বসছি। সৌদি আরবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মহোদয় এই বৈঠক ডেকেছেন। বৈঠকে রাষ্ট্রদূত মহোদয় এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানাবেন।
শহিদুল করিম আরও বলেন, নিখোঁজ হওয়া মানে সবাই মিনার ঘটনায় নিখোঁজ হয়েছেন এমন নয়। আরাফাতের ময়দানে প্রতি বছরেই বিভিন্নভাবে বাংলাদেশীরা নিখোঁজ হয়ে থাকেন। ফলে নিখোঁজ সবাই মিনার ঘটনায় নিখোঁজ হয়েছেন এমন বলা যাবে না।
রিয়াদে বাংলাদেশ দূতাবাস, জেদ্দায় বাংলাদেশের কনসুলেট জেনারেল দফতর এবং মক্কায় বাংলাদেশ হজ মিশন আরও তথ্য পাওয়ার জন্যে কাজ করছে এবং ভিকটিমদের সহায়তার চেষ্টা করছে।
হাজী, তাদের সহযাত্রী, আত্মীয়-স্বজন, হজ গাইড এবং হজ এজেন্টদের নিখোঁজ হাজিদের ব্যাপারে রিপোর্ট করার জন্যে ০০৯৬৬(০)৫৩৭৩৭৫৮৫৯ এবং ০০৯৬৬(০)৫০৯৩৬০০৮২ টেলিফোন নম্বরে যোগাযোগ করার জন্যে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
No comments