সাদ্দাম আমলের শতাধিক সেনা কর্মকর্তা এখন আইএসের নেতৃত্বে -এপির অনুসন্ধানী প্রতিবেদন
প্রায়
বছর কুড়ি আগের কথা। ইরাকি সেনা আলী ওমরান তখন ইরাকের গোলন্দাজ বাহিনীর
একটি কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন। একদিন গায়ে ইরাকি জাতীয় পতাকা জড়ানো
অবস্থায় শৌচাগারে যান তিনি। এ জন্য একজন মেজর তাঁকে সেদিন তিরস্কার করেন।
ঘটনাটা এত দিন পরও ওমরানের স্পষ্ট মনে আছে। যদিও মেজর তাহা তাহের আল-আনির সঙ্গে এর মধ্যে আর দেখা হয়নি তাঁর। শেষমেশ ২০০৩ সালে আবার দুজনের সাক্ষাৎ ঘটে। ইরাকের প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের বিরুদ্ধে তখন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক অভিযান চলছে। মার্কিন বাহিনী রাজধানী বাগদাদের দিকে ধেয়ে আসছে। সাদ্দামের পতন আসন্ন। এই পরিস্থিতিতে উত্তর বাগদাদের একটি সামরিক ঘাঁটিতে আল-আনি তাঁর অধস্তন সেনাদের একাধিক ট্রাকে অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ তোলার নির্দেশ দেন। এসব অস্ত্র নিয়ে পরে তিনি আল-কায়েদার ঘনিষ্ঠ তাওহিদ ওয়াল-জিহাদ গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগ দেন।
স্মৃতিচারণা করে ওমরান বলেন, আল-আনি বর্তমানে ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিগোষ্ঠীর কমান্ডার। আইএস সরকারের বিরুদ্ধে লড়ছে। অথচ একসময় তিনি ইরাকি সেনাবাহিনীরই মেজর জেনারেলের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এখন আইএসের পঞ্চম ডিভিশনের কমান্ডার।
আইএসবিরোধী লড়াই করছেন, ইরাকি বাহিনীর এমন বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আল-আনি একা নন। তাঁর মতো আরও অনেক সাবেক সেনা কর্মকর্তা আইএসে যোগ দিয়েছেন। আইএসের প্রধান ইরাকি জিহাদি আবু বকর আল-বাগদাদীর সঙ্গে সাদ্দামের শাসনামলের অনেক শীর্ষস্থানীয় সামরিক ও গোয়েন্দা কর্মকর্তা হাত মিলিয়েছেন। ‘ইসলামি খেলাফত’ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে লড়াই করছেন। এঁদের মধ্যে ইরাকের সন্ত্রাসবাদ বিরোধী গুরুত্বপূর্ণ গোয়েন্দা ইউনিটের সাবেক প্রধানও আছেন।
গত বছরের জুনে ইরাক ও সিরিয়ার বিশাল অংশ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে খিলাফত রাষ্ট্র ঘোষণা করে আইএস। এরপর থেকে সংগঠনটি নতুন নতুন এলাকা দখলের চেষ্টায় লড়াই করছে। যদিও তারা একপর্যায়ে মার্কিন নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক বাহিনীর অভিযানের মুখে চাপে পড়ে। আইএস জঙ্গিদের সাফল্যের নেপথ্যের কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে, সাদ্দামের দক্ষ সাবেক সামরিক কর্মকর্তাদের যোগদান। এই কর্মকর্তারাই সারা বিশ্ব থেকে আইএসের সঙ্গে যোগ দেওয়া জিহাদিদের সংগঠিত করেন। তাঁদের সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়ার পাশাপাশি আত্মঘাতী বোমা হামলা চালানোর কৌশলও শিখিয়ে দেন। অনেকে ইরাকি সামরিক বাহিনীর খুঁটিনাটি তথ্য সংগ্রহ করেন। সেই সঙ্গে অস্ত্র আধুনিকায়ন ও রাসায়নিক অস্ত্র তৈরিরও চেষ্টা চালাচ্ছেন।
ইরাকের একনায়ক সাদ্দাম হোসেন ২০০৩ সালের ১৩ ডিসেম্বর মার্কিন বাহিনীর হাতে বন্দী হন। পরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বিতর্কিত বিচারের মাধ্যমে ২০০৬ সালের ৩০ ডিসেম্বর তাঁকে ফাঁসি দেওয়া হয়।
মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ-এর সাবেক কর্মকর্তা প্যাট্রিক স্কিনার বলেন, আইএসের শক্তি বৃদ্ধির পেছনে রয়েছেন সাদ্দাম আমলের বেশ কয়েকজন সামরিক ও গোয়েন্দা কর্মকর্তা। ওই কর্মকর্তাদের কল্যাণেই গত বছর রণক্ষেত্রে বড় ধরনের সাফল্যের মুখ দেখে আইএস। একসময় ইরাকে দায়িত্ব পালন করা স্কিনার আরও বলেন, গত বছর আইএস যে সাফল্য লাভ করে, তা সন্ত্রাসবাদী ছিল না বরং ছিল সামরিক সাফল্য।
উদারপন্থী সাদ্দামের সামরিক কর্মকর্তাদের এখন বিশ্বের সবচেয়ে কট্টরপন্থী ইসলামি জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসে যোগ দেওয়ার কারণ কী? বিশ্লেষকেরা বলছেন, এর পেছনে নানা কারণ রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, ২০০৩ সালে মার্কিন দখলদারত্বে থাকা ইরাকের সেনাবাহিনী থেকে সাদ্দাম আমলের সামরিক কর্মকর্তাদের নিষিদ্ধ করা। এ ঘটনা ওই সেনা কর্মকর্তাদের ভীষণ ক্ষুব্ধ করে।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, আইএসের উপপ্রধান সৌদ মোহসেন হাসানও সাদ্দাম আমলের মেজর ছিলেন। এ ছাড়া ওই আমলের ১০০ থেকে ১৬০ জন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা এখন আইএসের বিভিন্ন স্তরে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
ঘটনাটা এত দিন পরও ওমরানের স্পষ্ট মনে আছে। যদিও মেজর তাহা তাহের আল-আনির সঙ্গে এর মধ্যে আর দেখা হয়নি তাঁর। শেষমেশ ২০০৩ সালে আবার দুজনের সাক্ষাৎ ঘটে। ইরাকের প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের বিরুদ্ধে তখন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক অভিযান চলছে। মার্কিন বাহিনী রাজধানী বাগদাদের দিকে ধেয়ে আসছে। সাদ্দামের পতন আসন্ন। এই পরিস্থিতিতে উত্তর বাগদাদের একটি সামরিক ঘাঁটিতে আল-আনি তাঁর অধস্তন সেনাদের একাধিক ট্রাকে অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ তোলার নির্দেশ দেন। এসব অস্ত্র নিয়ে পরে তিনি আল-কায়েদার ঘনিষ্ঠ তাওহিদ ওয়াল-জিহাদ গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগ দেন।
স্মৃতিচারণা করে ওমরান বলেন, আল-আনি বর্তমানে ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিগোষ্ঠীর কমান্ডার। আইএস সরকারের বিরুদ্ধে লড়ছে। অথচ একসময় তিনি ইরাকি সেনাবাহিনীরই মেজর জেনারেলের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এখন আইএসের পঞ্চম ডিভিশনের কমান্ডার।
আইএসবিরোধী লড়াই করছেন, ইরাকি বাহিনীর এমন বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আল-আনি একা নন। তাঁর মতো আরও অনেক সাবেক সেনা কর্মকর্তা আইএসে যোগ দিয়েছেন। আইএসের প্রধান ইরাকি জিহাদি আবু বকর আল-বাগদাদীর সঙ্গে সাদ্দামের শাসনামলের অনেক শীর্ষস্থানীয় সামরিক ও গোয়েন্দা কর্মকর্তা হাত মিলিয়েছেন। ‘ইসলামি খেলাফত’ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে লড়াই করছেন। এঁদের মধ্যে ইরাকের সন্ত্রাসবাদ বিরোধী গুরুত্বপূর্ণ গোয়েন্দা ইউনিটের সাবেক প্রধানও আছেন।
গত বছরের জুনে ইরাক ও সিরিয়ার বিশাল অংশ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে খিলাফত রাষ্ট্র ঘোষণা করে আইএস। এরপর থেকে সংগঠনটি নতুন নতুন এলাকা দখলের চেষ্টায় লড়াই করছে। যদিও তারা একপর্যায়ে মার্কিন নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক বাহিনীর অভিযানের মুখে চাপে পড়ে। আইএস জঙ্গিদের সাফল্যের নেপথ্যের কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে, সাদ্দামের দক্ষ সাবেক সামরিক কর্মকর্তাদের যোগদান। এই কর্মকর্তারাই সারা বিশ্ব থেকে আইএসের সঙ্গে যোগ দেওয়া জিহাদিদের সংগঠিত করেন। তাঁদের সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়ার পাশাপাশি আত্মঘাতী বোমা হামলা চালানোর কৌশলও শিখিয়ে দেন। অনেকে ইরাকি সামরিক বাহিনীর খুঁটিনাটি তথ্য সংগ্রহ করেন। সেই সঙ্গে অস্ত্র আধুনিকায়ন ও রাসায়নিক অস্ত্র তৈরিরও চেষ্টা চালাচ্ছেন।
ইরাকের একনায়ক সাদ্দাম হোসেন ২০০৩ সালের ১৩ ডিসেম্বর মার্কিন বাহিনীর হাতে বন্দী হন। পরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বিতর্কিত বিচারের মাধ্যমে ২০০৬ সালের ৩০ ডিসেম্বর তাঁকে ফাঁসি দেওয়া হয়।
মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ-এর সাবেক কর্মকর্তা প্যাট্রিক স্কিনার বলেন, আইএসের শক্তি বৃদ্ধির পেছনে রয়েছেন সাদ্দাম আমলের বেশ কয়েকজন সামরিক ও গোয়েন্দা কর্মকর্তা। ওই কর্মকর্তাদের কল্যাণেই গত বছর রণক্ষেত্রে বড় ধরনের সাফল্যের মুখ দেখে আইএস। একসময় ইরাকে দায়িত্ব পালন করা স্কিনার আরও বলেন, গত বছর আইএস যে সাফল্য লাভ করে, তা সন্ত্রাসবাদী ছিল না বরং ছিল সামরিক সাফল্য।
উদারপন্থী সাদ্দামের সামরিক কর্মকর্তাদের এখন বিশ্বের সবচেয়ে কট্টরপন্থী ইসলামি জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসে যোগ দেওয়ার কারণ কী? বিশ্লেষকেরা বলছেন, এর পেছনে নানা কারণ রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, ২০০৩ সালে মার্কিন দখলদারত্বে থাকা ইরাকের সেনাবাহিনী থেকে সাদ্দাম আমলের সামরিক কর্মকর্তাদের নিষিদ্ধ করা। এ ঘটনা ওই সেনা কর্মকর্তাদের ভীষণ ক্ষুব্ধ করে।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, আইএসের উপপ্রধান সৌদ মোহসেন হাসানও সাদ্দাম আমলের মেজর ছিলেন। এ ছাড়া ওই আমলের ১০০ থেকে ১৬০ জন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা এখন আইএসের বিভিন্ন স্তরে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
No comments