গোলাপ নিয়ে বিপাকে বরইতলীর মানুষ by আব্দুল কুদ্দুস
চকরিয়ার বরইতলীর একটি গোলাপবাগানে ফুটে রয়েছে অজস্রফুল। বিক্রি না হওয়ায় হতাশ চাষি l প্রথম আলো |
কক্সবাজারের
চকরিয়া উপজেলার বরইতলী ইউনিয়নের ১১৯টি বাগানের গোলাপ বাগানেই ঝরে যাচ্ছে।
টানা হরতাল–অবরোধের কারণে চট্টগ্রামের বাজারে সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দাম
পড়ে গেছে ফুলের। আগে প্রতিটি গোলাপ তিন থেকে চার টাকায় বিক্রি হলেও
বর্তমানে মাত্র ৫০ পয়সায় বিক্রি হচ্ছে।
বরইতলী গোলাপবাগান মালিক সমিতির আহ্বায়ক মঈনুল ইসলাম জানান, বিরোধী জোটের টানা ৬৮ দিনের হরতাল–অবরোধ ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে বরইতলীর ১১৯টি বাগানের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা। ঋণের টাকায় গোলাপবাগান করে গোলাপচাষিরা এখন দিশেহারা। ৮ মার্চ দুপুরে পশ্চিম বরইতলীর একাধিক বাগান ঘুরে দেখা গেছে, গোলাপে ভরপুর সব কটি বাগান। তবে বাগান থেকে ফুল তোলার কোনো উদ্যোগ নেই। ফুলের দাম না পাওয়ায় হতাশ চাষিরা।
স্থানীয় চাষি জিয়াউর রহমান জানান, গত ডিসেম্বর মাসে এক একরের একটি বাগান থেকে তিনি ৪০ হাজার টাকার গোলাপ বিক্রি করেছেন। অথচ গত জানুয়ারি থেকে মার্চ মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত মাত্র পাঁচ হাজার টাকার গোলাপ বিক্রি হয়েছে। বাগানের চার হাজার গাছের ফুল বিক্রিই হয়নি। এসব ফুল বিক্রি করলে তিন লাখ টাকা আয় হতো তাঁর।
পাশের গ্রাম দক্ষিণ বরইতলীর চাষি আবুল কালাম বলেন, ‘বিক্রি না হওয়ায় প্রতিদিন বাগান থেকে কয়েক হাজার গোলাপ কেটে ফেলতে হচ্ছে। প্রতিটি গাছে তিন থেকে সাতটি গোলাপ ফুটে আছে। অথচ বিক্রি করতে পারছি না।’
আবুল কালাম আরও জানান, ডিসেম্বর মাসে প্রতিটি গোলাপ বিক্রি হয়েছে চার টাকায়, আর এখন বিক্রি হচ্ছে ৫০ পয়সায়। হরতাল–অবরোধ চলতে থাকলে পুরো বাগানের ফুল শেষ হয়ে যাবে।
স্থানীয় কয়েকজন চাষি জানান, গোলাপবাগান লাভজনক হওয়ায় তাঁরা ব্যাংক ও বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে উচ্চ সুদে ঋণ নিয়ে এবার গোলাপ চাষ করেছেন। শুরুতে ভালো দামে গোলাপ বিক্রি হলেও এখন পথে বসার উপক্রম হচ্ছে। আগামী এপ্রিল পর্যন্ত গোলাপের মৌসুম রয়েছে। এর মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে তাঁরা ঋণ শোধ করতে পারবেন না।
চাষি জহির আহমদ তামাক বাদ দিয়ে গোলাপ চাষ করেছিলেন। গত বছর গোলাপ বিক্রি করে ৫৫ হাজার টাকা আয় হলেও এ বছর লোকসান হয়েছে এক লাখ টাকার বেশি।
বরইতলী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়া উদ্দিন চৌধুরী জানান, দুই দশক ধরে এই ইউনিয়নে ফুলের চাষ হচ্ছে। একসময় শখের বশে ফুল চাষ করা হলেও এখন বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাষ হচ্ছে। সারা দেশের মানুষ এখন বরইতলীকে চেনে গোলাপের গ্রাম হিসেবে। কিন্তু হরতাল-অবরোধ চাষিদের পথে বসিয়েছে।
কক্সবাজার শহরের তিন রাস্তার মোড়ে অবস্থিত ফুলের দোকান পুষ্পনিলয়ের বিক্রয়কর্মীরা জানান, ডিসেম্বর মাসে এই দোকানে প্রতিদিন গড়ে ১২ হাজার টাকার ফুল বিক্রি হয়েছে। অথচ এখন দৈনিক বিক্রি এক হাজার টাকায় নেমে এসেছে। কারণ জানতে চাইলে দোকানের মালিক এ কে এইচ বাদশা জানান, বিরোধী জোটের টানা হরতাল-অবরোধ এবং রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে মানুষ বিয়ের মতো সামাজিক অনুষ্ঠানের আয়োজন কম করছে। তা ছাড়া পর্যটক আসা বন্ধ হওয়ায় ফুলের চাহিদাও কমে গেছে। তিনি বলেন, ‘গত বছর ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে বরইতলীর থেকে ৬০ হাজার টাকার ফুল কিনে বিক্রি করেছি ১ লাখ ২০ হাজার টাকায়। অথচ এবার ভালোবাসা দিবসে ফুল বিক্রি হয়েছে ছয় হাজার টাকার।’ চকরিয়া উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মো. আতিক উল্লাহ বলেন, বরইতলী এবং পার্শ্ববর্তী হারবাংয়ে ২০০ একর জমিতে ১১৯টি ফুলের বাগান আছে। এসব বাগানে মূলত গোলাপ চাষ হয়। এখানকার মাটি গোলাপ চাষের উপযোগী বলে উৎপাদনও ভালো হয়। প্রচুর লাভ হওয়ায় চাষিরাও গোলাপ চাষে ঝুঁকছিলেন। তবে হরতাল–অবরোধের কারণে চাষিরা লোকসানের মুখে পড়েছেন।
বরইতলী গোলাপবাগান মালিক সমিতির আহ্বায়ক মঈনুল ইসলাম জানান, বিরোধী জোটের টানা ৬৮ দিনের হরতাল–অবরোধ ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে বরইতলীর ১১৯টি বাগানের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা। ঋণের টাকায় গোলাপবাগান করে গোলাপচাষিরা এখন দিশেহারা। ৮ মার্চ দুপুরে পশ্চিম বরইতলীর একাধিক বাগান ঘুরে দেখা গেছে, গোলাপে ভরপুর সব কটি বাগান। তবে বাগান থেকে ফুল তোলার কোনো উদ্যোগ নেই। ফুলের দাম না পাওয়ায় হতাশ চাষিরা।
স্থানীয় চাষি জিয়াউর রহমান জানান, গত ডিসেম্বর মাসে এক একরের একটি বাগান থেকে তিনি ৪০ হাজার টাকার গোলাপ বিক্রি করেছেন। অথচ গত জানুয়ারি থেকে মার্চ মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত মাত্র পাঁচ হাজার টাকার গোলাপ বিক্রি হয়েছে। বাগানের চার হাজার গাছের ফুল বিক্রিই হয়নি। এসব ফুল বিক্রি করলে তিন লাখ টাকা আয় হতো তাঁর।
পাশের গ্রাম দক্ষিণ বরইতলীর চাষি আবুল কালাম বলেন, ‘বিক্রি না হওয়ায় প্রতিদিন বাগান থেকে কয়েক হাজার গোলাপ কেটে ফেলতে হচ্ছে। প্রতিটি গাছে তিন থেকে সাতটি গোলাপ ফুটে আছে। অথচ বিক্রি করতে পারছি না।’
আবুল কালাম আরও জানান, ডিসেম্বর মাসে প্রতিটি গোলাপ বিক্রি হয়েছে চার টাকায়, আর এখন বিক্রি হচ্ছে ৫০ পয়সায়। হরতাল–অবরোধ চলতে থাকলে পুরো বাগানের ফুল শেষ হয়ে যাবে।
স্থানীয় কয়েকজন চাষি জানান, গোলাপবাগান লাভজনক হওয়ায় তাঁরা ব্যাংক ও বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে উচ্চ সুদে ঋণ নিয়ে এবার গোলাপ চাষ করেছেন। শুরুতে ভালো দামে গোলাপ বিক্রি হলেও এখন পথে বসার উপক্রম হচ্ছে। আগামী এপ্রিল পর্যন্ত গোলাপের মৌসুম রয়েছে। এর মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে তাঁরা ঋণ শোধ করতে পারবেন না।
চাষি জহির আহমদ তামাক বাদ দিয়ে গোলাপ চাষ করেছিলেন। গত বছর গোলাপ বিক্রি করে ৫৫ হাজার টাকা আয় হলেও এ বছর লোকসান হয়েছে এক লাখ টাকার বেশি।
বরইতলী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়া উদ্দিন চৌধুরী জানান, দুই দশক ধরে এই ইউনিয়নে ফুলের চাষ হচ্ছে। একসময় শখের বশে ফুল চাষ করা হলেও এখন বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাষ হচ্ছে। সারা দেশের মানুষ এখন বরইতলীকে চেনে গোলাপের গ্রাম হিসেবে। কিন্তু হরতাল-অবরোধ চাষিদের পথে বসিয়েছে।
কক্সবাজার শহরের তিন রাস্তার মোড়ে অবস্থিত ফুলের দোকান পুষ্পনিলয়ের বিক্রয়কর্মীরা জানান, ডিসেম্বর মাসে এই দোকানে প্রতিদিন গড়ে ১২ হাজার টাকার ফুল বিক্রি হয়েছে। অথচ এখন দৈনিক বিক্রি এক হাজার টাকায় নেমে এসেছে। কারণ জানতে চাইলে দোকানের মালিক এ কে এইচ বাদশা জানান, বিরোধী জোটের টানা হরতাল-অবরোধ এবং রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে মানুষ বিয়ের মতো সামাজিক অনুষ্ঠানের আয়োজন কম করছে। তা ছাড়া পর্যটক আসা বন্ধ হওয়ায় ফুলের চাহিদাও কমে গেছে। তিনি বলেন, ‘গত বছর ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে বরইতলীর থেকে ৬০ হাজার টাকার ফুল কিনে বিক্রি করেছি ১ লাখ ২০ হাজার টাকায়। অথচ এবার ভালোবাসা দিবসে ফুল বিক্রি হয়েছে ছয় হাজার টাকার।’ চকরিয়া উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মো. আতিক উল্লাহ বলেন, বরইতলী এবং পার্শ্ববর্তী হারবাংয়ে ২০০ একর জমিতে ১১৯টি ফুলের বাগান আছে। এসব বাগানে মূলত গোলাপ চাষ হয়। এখানকার মাটি গোলাপ চাষের উপযোগী বলে উৎপাদনও ভালো হয়। প্রচুর লাভ হওয়ায় চাষিরাও গোলাপ চাষে ঝুঁকছিলেন। তবে হরতাল–অবরোধের কারণে চাষিরা লোকসানের মুখে পড়েছেন।
No comments