ডিজিটাল ওয়ার্ড গড়ার প্রতিশ্রুতি by মতিন আব্দুল্লাহ
সম্ভাব্য
কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণায় পুরো নির্বাচনী আমেজ বিরাজ করছে
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে। মাঠে যারা
প্রচারণা চালাচ্ছেন তাদের সবাই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী। দল থেকে যিনিই
মনোনয়ন পাবেন, তিনিই দলীয়ভাবে নির্বাচন করবেন। আর যারা দলীয় মনোনয়ন পাবেন
না তাদের বেশির ভাগই বিদ্রোহী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
পুরান ঢাকার এ ওয়ার্ডের নাগরিক সেবাধর্মী সব প্রতিষ্ঠান থাকলেও পরিচালনার অভাবে এসব প্রতিষ্ঠান থেকে কাক্সিক্ষত সেবা পাচ্ছেন না এলাকাবাসী। সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থীরা এবার এলাকার সমস্যার সমাধান এবং ওয়ার্ডকে ডিজিটাল ওয়ার্ডে রূপান্তরিত করার অঙ্গীকার করছেন ভোটারদের কাছে।
ওয়ার্ড পরিচিতি : আগামসীহ লেন (হোল্ডিং ১-১১৫), আগা সাদেক রোড, আবদুল হাদী লেন, আবুল হাসনাত রোড, আলী নকী দেউরী, চানখাঁরপুল লেন, নবাব কাটারা, বংশাল রোড (হোল্ডিং নম্বর ১০১ থেকে ২০৭/১), বি কে গাঙ্গুলী লেন, সিক্কাটুলী লেন- এ ১০টি এলাকা নিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড। এ ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ৩৩ হাজার ৫৫টি। জনসংখ্যা প্রায় এক লাখ। ঢাকার প্রাচীন এ ওয়ার্ডে পার্ক, খেলার মাঠ, স্কুল, কমিউনিটি সেন্টার, ব্যায়ামাগার রয়েছে। একটি আদর্শ ওয়ার্ডে যে ধরনের নাগরিক সুবিধা থাকা দরকার তার সবই রয়েছে এ ওয়ার্ডে। মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের জন্মস্থান এ ওয়ার্ডে। তার নামে রয়েছে এ এলাকায় একটি উচ্চ বিদ্যালয়।
সম্ভাব্য প্রার্থী : আসন্ন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) নির্বাচনে ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন একাধিক প্রার্থী। আওয়ামী লীগের চার প্রার্থী এখন মাঠ গরম করে রেখেছেন। দল থেকে মনোনয়ন পাক আর না পাক তারা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। তবে তারা সবাই দলের কাছে মনোনয়ন চাইবেন।
সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন- ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ইলিয়াস রশীদ, কোতোয়ালি-বংশাল থানা আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য মোস্তাকুর রহমান ফারুক, ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি আউয়াল হোসেন, বংশাল থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নিজাম উদ্দিন।
ডিএসসিসির ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে সরেজমিন ঘুরে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নির্বাচনের চূড়ান্ত ঘোষণা এলে আরও কিছু নতুন মুখ দেখা যেতে পারে। তবে এখন ওয়ার্ডে কোনো বিএনপি প্রার্থীর সরব বা নীরব কোনো ধরনের প্রচারণা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। বিএনপির দলীয় সিদ্ধান্ত না হলে এ ওয়ার্ডে কেউই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না। এ ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ছিলেন বিএনপি নেতা মোহাম্মদ মোহন।
সমস্যা : ব্রিটিশ আমলের স্যুয়ারেজ সিস্টেমে চলছে পয়ঃনিষ্কাশন কার্যক্রম। অতিপ্রাচীন স্যুয়ারেজ সিস্টেম হওয়ায় প্রায়ই অকেজো হয়ে পড়ে নিষ্কাশন ব্যবস্থা। সড়ক তলিয়ে যায় ময়লা-দুর্গন্ধ পানিতে।
পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থারও করুণ হাল। গ্রীষ্ম মৌসুমে ময়লা, দুর্গন্ধযুক্ত পানি খেতে হয় ওয়ার্ড বাসিন্দাদের। বর্তমান সময়ে ঢাকা ওয়াসার সরবরাহকৃত পানি ব্যবহার করতে পারছেন না এলাকাবাসী। ওয়ার্ডের গলি-উপগলিগুলো ভাঙাচোরা। দীর্ঘদিন থেকে এলাকার রাস্তাঘাট সংস্কার করছে না ডিএসসিসি। ফলে সড়কে চলাচলে এলাকাবাসীর চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।
আবর্জনা ব্যবস্থাপনারও বেহাল চিত্র। যত্রতত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে আবর্জনা। ওয়ার্ডের একমাত্র পার্কটির সামনে এমনভাবে আবর্জনা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে যে এ দুর্গন্ধের কারণে শিশুরা পার্কে ঘুরতে যায় না। মশক নিধন কার্যক্রমও সঠিকভাবে করে না বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।
সিক্কাটুলী পঞ্চায়েত সর্দার হাজী আশরাফ উদ্দিন জর্জ সর্দার যুগান্তরকে বলেন, এলাকার সড়ক, ড্রেনের বেহাল চিত্র। সুইপারদের দেখা মিলে কালেভদ্রে। সমস্যা হলে নিজেদেরই সব পরিষ্কার করতে হয়। কাউন্সিলর না থাকায় এলাকাবাসী নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এজন্য দ্রুত নির্বাচন দাবি করেন এই পঞ্চায়েত সর্দার।
১২৭/১২৮ আবুল হাসনাত রোডের বাসিন্দা মো. হোসেন বলেন, আমরা এমন কাউন্সিলর চাই, যাকে বিপদে-আপদে কাছে পাব। এলাকার নাগরিক সেবা নিশ্চিত করবেন। ওয়ার্ডটিকে বসবাসের উপযোগী করে গড়ে তুলবেন।
৪২ নবাব কাটারার বাসিন্দা হাজী আবদুর রশিদ বলেন, একটু বৃষ্টি হলেই নবাব কাটারা এলাকার সড়কগুলো তলিয়ে যায়। আমরা এ পানি আর দেখতে চাই না। এমন একজন কাউন্সিলর চাই, যে আমাদের এসব সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারবেন।
১০৯ বংশাল রোডের বাসিন্দা ইকবাল হোসেন বলেন, এলাকার ফুটপাতগুলো বারো মাসই বেদখল থাকে। একদিকে সড়কগুলো সরু, অন্যদিকে ফুটপাত বেদখল হওয়ায় চলাচলে মানুষ আর গাড়ির ধাক্কাধাক্কি হয়। আমরা আমাদের এলাকার এ সমস্যার সমাধান চাই।
প্রার্থীদের কথা : ইলিয়াস রশীদ বলেন, আমি এখন কাউন্সিলর না হলেও এলাকার বিভিন্ন সমস্যার সমাধান এবং এলাকার উন্নয়নের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত আছি। তিনি বলেন, এ এলাকার প্রধান সমস্যা ব্রিটিশ সময়ের ড্রেনেজ ব্যবস্থা। আমি কাউন্সিলর হলে সরকারের সহযোগিতা নিয়ে এ এলাকার সমস্যার সমাধান করব। তিনি বলেন, এ ওয়ার্ডে মডেল ওয়ার্ডের সব সেবা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। কাউন্সিলর হতে পারলে ওয়ার্ডটিকে শতভাগ ডিজিটাল ওয়ার্ডরূপে গড়ে তুলব। সম্ভাব্য এ কাউন্সিলর প্রার্থী দল থেকে মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। তবে কোনো কারণে মনোনয়ন না পেলে স্বতন্ত্র নির্বাচন করবেন বলে জানান।
মোস্তাকুর রহমান ফারুক বলেন, দীর্ঘদিন থেকে এ ওয়ার্ডের বিভিন্ন উন্নয়ন ও সামাজিক কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত। এবার কাউন্সিলর নির্বাচন করতে চাই।
কাউন্সিলর হিসেবে জনগণের খেদমত করতে চাই। আমার বিশ্বাস, এলাকাবাসী আমাকে কাউন্সিলর নির্বাচিত করবেন। জনগণ ভোট দিয়ে কাউন্সিলর নির্বাচিত করলে, এলাকার মাদক স্পট গুঁড়িয়ে দেয়ার অঙ্গীকার করেন তিনি। এছাড়া সিটি কর্পোরেশনের সব ধরনের নাগরিক সেবা প্রদানে শতভাগ চেষ্টা করার অঙ্গীকার করেন। এ প্রার্থী এলাকার ভোটারদের যোগ্যপ্রার্থী দেখে ভোট দেয়ার আহ্বান জানান। এ কাউন্সিলর প্রার্থী আরও বলেন, আমি কাউন্সিলর হতে পারলে নাগরিক সনদ, জন্মনিবদ্ধনসহ সব ধরনের সেবা কার্যক্রম ডিজিটালাইজড করব।
আউয়াল হোসেন বলেন, কাউন্সিলর নির্বাচনের জন্য ৭ বছর ধরে মাঠে আছি। এলাকাবাসীর সুখে-দুঃখে সব সময় পাশে থাকি। এলাকার সালিশ-বিচার করি। এলাকাবাসী কোনো সমস্যায় পড়লে তাদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করি। এলাকাবাসীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এবার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চাই। তাছাড়া আমার দল যুবলীগ আমাকে মাঠে নামতে বলেছে। আশা করি দলীয় মনোনয়নও পাব। যদি কোনো কারণে না পাই, তাহলে স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচন করব। জনগণ ভোট দিয়ে কাউন্সিলর নির্বাচিত করলে এলাকার সমস্যার সমাধান করব। এ ওয়ার্ডকে একটি ডিজিটাল মডেল ওয়ার্ডে রূপান্তরিত করব।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ওয়ার্ড কার্যালয় থেকে নাগরিক সেবাগুলো ডিজিটাল পদ্ধতিতে সরবরাহ করা হবে। একই সঙ্গে ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে। ডিজিটাল পদ্ধতি করতে পারলে একদিকে নাগরিক সেবাগুলো সহজ হবে, অন্যদিকে আইনশৃংখলা ব্যবস্থারও উন্নতি ঘটবে। নিজাম উদ্দিন বলেন, আমরা নির্যাতিত পরিবার। আমার ভাই একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহত হন। আমি নিজেও বিভিন্নভাবে নির্যাতিত। দলের জন্য ত্যাগ স্বীকার করেছি বলে আমার প্রত্যাশা দল থেকে এবার আমাকে মনোনয়ন দিবে। দল মনোনয়ন দিলে নির্বাচন করবেন। নইলে সম্ভাব্য এ কাউন্সিলর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না।
পুরান ঢাকার এ ওয়ার্ডের নাগরিক সেবাধর্মী সব প্রতিষ্ঠান থাকলেও পরিচালনার অভাবে এসব প্রতিষ্ঠান থেকে কাক্সিক্ষত সেবা পাচ্ছেন না এলাকাবাসী। সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থীরা এবার এলাকার সমস্যার সমাধান এবং ওয়ার্ডকে ডিজিটাল ওয়ার্ডে রূপান্তরিত করার অঙ্গীকার করছেন ভোটারদের কাছে।
ওয়ার্ড পরিচিতি : আগামসীহ লেন (হোল্ডিং ১-১১৫), আগা সাদেক রোড, আবদুল হাদী লেন, আবুল হাসনাত রোড, আলী নকী দেউরী, চানখাঁরপুল লেন, নবাব কাটারা, বংশাল রোড (হোল্ডিং নম্বর ১০১ থেকে ২০৭/১), বি কে গাঙ্গুলী লেন, সিক্কাটুলী লেন- এ ১০টি এলাকা নিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড। এ ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ৩৩ হাজার ৫৫টি। জনসংখ্যা প্রায় এক লাখ। ঢাকার প্রাচীন এ ওয়ার্ডে পার্ক, খেলার মাঠ, স্কুল, কমিউনিটি সেন্টার, ব্যায়ামাগার রয়েছে। একটি আদর্শ ওয়ার্ডে যে ধরনের নাগরিক সুবিধা থাকা দরকার তার সবই রয়েছে এ ওয়ার্ডে। মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের জন্মস্থান এ ওয়ার্ডে। তার নামে রয়েছে এ এলাকায় একটি উচ্চ বিদ্যালয়।
সম্ভাব্য প্রার্থী : আসন্ন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) নির্বাচনে ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন একাধিক প্রার্থী। আওয়ামী লীগের চার প্রার্থী এখন মাঠ গরম করে রেখেছেন। দল থেকে মনোনয়ন পাক আর না পাক তারা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। তবে তারা সবাই দলের কাছে মনোনয়ন চাইবেন।
সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন- ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ইলিয়াস রশীদ, কোতোয়ালি-বংশাল থানা আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য মোস্তাকুর রহমান ফারুক, ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি আউয়াল হোসেন, বংশাল থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নিজাম উদ্দিন।
ডিএসসিসির ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে সরেজমিন ঘুরে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নির্বাচনের চূড়ান্ত ঘোষণা এলে আরও কিছু নতুন মুখ দেখা যেতে পারে। তবে এখন ওয়ার্ডে কোনো বিএনপি প্রার্থীর সরব বা নীরব কোনো ধরনের প্রচারণা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। বিএনপির দলীয় সিদ্ধান্ত না হলে এ ওয়ার্ডে কেউই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না। এ ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ছিলেন বিএনপি নেতা মোহাম্মদ মোহন।
সমস্যা : ব্রিটিশ আমলের স্যুয়ারেজ সিস্টেমে চলছে পয়ঃনিষ্কাশন কার্যক্রম। অতিপ্রাচীন স্যুয়ারেজ সিস্টেম হওয়ায় প্রায়ই অকেজো হয়ে পড়ে নিষ্কাশন ব্যবস্থা। সড়ক তলিয়ে যায় ময়লা-দুর্গন্ধ পানিতে।
পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থারও করুণ হাল। গ্রীষ্ম মৌসুমে ময়লা, দুর্গন্ধযুক্ত পানি খেতে হয় ওয়ার্ড বাসিন্দাদের। বর্তমান সময়ে ঢাকা ওয়াসার সরবরাহকৃত পানি ব্যবহার করতে পারছেন না এলাকাবাসী। ওয়ার্ডের গলি-উপগলিগুলো ভাঙাচোরা। দীর্ঘদিন থেকে এলাকার রাস্তাঘাট সংস্কার করছে না ডিএসসিসি। ফলে সড়কে চলাচলে এলাকাবাসীর চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।
আবর্জনা ব্যবস্থাপনারও বেহাল চিত্র। যত্রতত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে আবর্জনা। ওয়ার্ডের একমাত্র পার্কটির সামনে এমনভাবে আবর্জনা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে যে এ দুর্গন্ধের কারণে শিশুরা পার্কে ঘুরতে যায় না। মশক নিধন কার্যক্রমও সঠিকভাবে করে না বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।
সিক্কাটুলী পঞ্চায়েত সর্দার হাজী আশরাফ উদ্দিন জর্জ সর্দার যুগান্তরকে বলেন, এলাকার সড়ক, ড্রেনের বেহাল চিত্র। সুইপারদের দেখা মিলে কালেভদ্রে। সমস্যা হলে নিজেদেরই সব পরিষ্কার করতে হয়। কাউন্সিলর না থাকায় এলাকাবাসী নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এজন্য দ্রুত নির্বাচন দাবি করেন এই পঞ্চায়েত সর্দার।
১২৭/১২৮ আবুল হাসনাত রোডের বাসিন্দা মো. হোসেন বলেন, আমরা এমন কাউন্সিলর চাই, যাকে বিপদে-আপদে কাছে পাব। এলাকার নাগরিক সেবা নিশ্চিত করবেন। ওয়ার্ডটিকে বসবাসের উপযোগী করে গড়ে তুলবেন।
৪২ নবাব কাটারার বাসিন্দা হাজী আবদুর রশিদ বলেন, একটু বৃষ্টি হলেই নবাব কাটারা এলাকার সড়কগুলো তলিয়ে যায়। আমরা এ পানি আর দেখতে চাই না। এমন একজন কাউন্সিলর চাই, যে আমাদের এসব সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারবেন।
১০৯ বংশাল রোডের বাসিন্দা ইকবাল হোসেন বলেন, এলাকার ফুটপাতগুলো বারো মাসই বেদখল থাকে। একদিকে সড়কগুলো সরু, অন্যদিকে ফুটপাত বেদখল হওয়ায় চলাচলে মানুষ আর গাড়ির ধাক্কাধাক্কি হয়। আমরা আমাদের এলাকার এ সমস্যার সমাধান চাই।
প্রার্থীদের কথা : ইলিয়াস রশীদ বলেন, আমি এখন কাউন্সিলর না হলেও এলাকার বিভিন্ন সমস্যার সমাধান এবং এলাকার উন্নয়নের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত আছি। তিনি বলেন, এ এলাকার প্রধান সমস্যা ব্রিটিশ সময়ের ড্রেনেজ ব্যবস্থা। আমি কাউন্সিলর হলে সরকারের সহযোগিতা নিয়ে এ এলাকার সমস্যার সমাধান করব। তিনি বলেন, এ ওয়ার্ডে মডেল ওয়ার্ডের সব সেবা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। কাউন্সিলর হতে পারলে ওয়ার্ডটিকে শতভাগ ডিজিটাল ওয়ার্ডরূপে গড়ে তুলব। সম্ভাব্য এ কাউন্সিলর প্রার্থী দল থেকে মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। তবে কোনো কারণে মনোনয়ন না পেলে স্বতন্ত্র নির্বাচন করবেন বলে জানান।
মোস্তাকুর রহমান ফারুক বলেন, দীর্ঘদিন থেকে এ ওয়ার্ডের বিভিন্ন উন্নয়ন ও সামাজিক কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত। এবার কাউন্সিলর নির্বাচন করতে চাই।
কাউন্সিলর হিসেবে জনগণের খেদমত করতে চাই। আমার বিশ্বাস, এলাকাবাসী আমাকে কাউন্সিলর নির্বাচিত করবেন। জনগণ ভোট দিয়ে কাউন্সিলর নির্বাচিত করলে, এলাকার মাদক স্পট গুঁড়িয়ে দেয়ার অঙ্গীকার করেন তিনি। এছাড়া সিটি কর্পোরেশনের সব ধরনের নাগরিক সেবা প্রদানে শতভাগ চেষ্টা করার অঙ্গীকার করেন। এ প্রার্থী এলাকার ভোটারদের যোগ্যপ্রার্থী দেখে ভোট দেয়ার আহ্বান জানান। এ কাউন্সিলর প্রার্থী আরও বলেন, আমি কাউন্সিলর হতে পারলে নাগরিক সনদ, জন্মনিবদ্ধনসহ সব ধরনের সেবা কার্যক্রম ডিজিটালাইজড করব।
আউয়াল হোসেন বলেন, কাউন্সিলর নির্বাচনের জন্য ৭ বছর ধরে মাঠে আছি। এলাকাবাসীর সুখে-দুঃখে সব সময় পাশে থাকি। এলাকার সালিশ-বিচার করি। এলাকাবাসী কোনো সমস্যায় পড়লে তাদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করি। এলাকাবাসীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এবার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চাই। তাছাড়া আমার দল যুবলীগ আমাকে মাঠে নামতে বলেছে। আশা করি দলীয় মনোনয়নও পাব। যদি কোনো কারণে না পাই, তাহলে স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচন করব। জনগণ ভোট দিয়ে কাউন্সিলর নির্বাচিত করলে এলাকার সমস্যার সমাধান করব। এ ওয়ার্ডকে একটি ডিজিটাল মডেল ওয়ার্ডে রূপান্তরিত করব।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ওয়ার্ড কার্যালয় থেকে নাগরিক সেবাগুলো ডিজিটাল পদ্ধতিতে সরবরাহ করা হবে। একই সঙ্গে ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে। ডিজিটাল পদ্ধতি করতে পারলে একদিকে নাগরিক সেবাগুলো সহজ হবে, অন্যদিকে আইনশৃংখলা ব্যবস্থারও উন্নতি ঘটবে। নিজাম উদ্দিন বলেন, আমরা নির্যাতিত পরিবার। আমার ভাই একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহত হন। আমি নিজেও বিভিন্নভাবে নির্যাতিত। দলের জন্য ত্যাগ স্বীকার করেছি বলে আমার প্রত্যাশা দল থেকে এবার আমাকে মনোনয়ন দিবে। দল মনোনয়ন দিলে নির্বাচন করবেন। নইলে সম্ভাব্য এ কাউন্সিলর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না।
No comments