অভাবনীয় ক্রিকেটযুদ্ধ by তালহা বিন নজরুল
টাইগারভক্তদের
প্রশ্ন- জিতবে তো বাংলাদেশ? আর সীমান্তের ওপারে ‘টিম ইন্ডিয়া’ ভক্তদের
চিন্তা- হেরে যাবে না তো ভারত? ভৌগোলিক আয়তন আর জনসংখ্যায় ভারত-বাংলাদেশের
যতটা ফারাক, ততটাই ফারাক ক্রিকেটে। কেবল পরিসংখ্যানে নয়, অভিজ্ঞতা আর
দক্ষতাতেও এগিয়ে তারা যোজন যোজন। বিশ্বকাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন তারা। চলতি
বিশ্বকাপেও তাদের জয় ছয়ে ছয়। ভারতের ব্যাটিং সামর্থ্যটা এমনিতে
সর্বজনবিদিত। তবে এবার তারা শক্তি দেখাচ্ছে বোলিংয়েও। বিরল রেকর্ডে গ্রুপ
পর্বে প্রতিপক্ষ ৬ দলকেই ভারত করেছে অলআউট। আর ব্যাটিং! কাগজ-কলমে ভারতের
ব্যাটিং লাইনই বিশ্বকাপের সেরা। আইসিসির র্যাঙ্কিংয়ে ভারতের অবস্থান দুইয়ে
আর বাংলাদেশ ৯। তবে আর এত বকবকানি কেন? খেলাটা ক্রিকেট বলেই এত উত্তেজনা
আর সংশয়। গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলা ক্রিকেট। যার পরতে পরতে লুকিয়ে থাকে নানা
রহস্য, বাঁকে বাঁকে থাকে খানা-খন্দক, সেখানে দক্ষ চালকেরও বুক কাঁপে, মন
কাঁপে। কাঁপে হাতও। আর তাই কখনও কখনও খেলাটা কেবল ব্যাট আর বলে সীমাবদ্ধ
থাকে না। আগে চাই হাত-পায়ের কাঁপন থামানো। আর এ জন্য প্রয়োজন মনের জোর। আর
তাই কেমন ব্যাট করবে বা কে কেমন বল করবে তা নিয়ে কোন কথাই নেই। বিশ্বকাপের
কোয়ার্টার ফাইনাল নিয়ে আলোচনার বিষয় একটাই- ‘ভয়’। কে কাকে কতটা ভয় করছে,
কতটা সমীহ করছে, কে কাকে তুবড়ি মেরে উড়িয়ে দেবে এসবই বাতাসে উড়ছে। খেলা হবে
অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে। আর ঝড় বইছে বিশ্বজুড়ে।
উপমহাদেশের ক্রিকেট অঙ্গনেই কেবল নয়, বিশ্বের যেখানে যত বাংলাদেশী আর
ভারতীয় রয়েছে সবাই শরিক এ আলোচনায়। এমন তুমুল আলোচনা অন্তত সাম্প্রতিক সময়ে
আর দেখা যায়নি। পত্র-পত্রিকা, টেলিভিশনের গণ্ডি ছাড়িয়ে নানা অনলাইন আর
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে বেশ চলছে কথার যুদ্ধ।
ক্রিকেটীয় জ্ঞান থাকুক আর না থাকুক মন্তব্য বিশ্লেষণে পিছিয়ে থাকতে চাইছে
না কেউ। এমন ঝড় দেখা যায় না সচরাচর। এই ঝড়ের ঝাপটায় আলোড়িত বেশি বোধহয়
ভারতই। চাপটাও বেশি তাদের ওপরই। আর গতকালের খেলা সবাইকে নতুন চিন্তার খোরাক
যুগিয়েছে। গত দুবারের ফাইনালিস্ট শ্রীলঙ্কাকে নাকানি-চুবানি খাইয়ে
বিশ্বকাপে ২৩ বছরের প্রথমবারের মতো নকআউট পর্বে জয় দেখলো দক্ষিণ আফ্রিকা।
আর ১৯৯৬’র চ্যাম্পিয়নরা অলআউট হলো মাত্র ১৩৩ রানে। অথচ চলতি আসরে দলটির
ব্যাটিং সামর্থ্য জাহির করছিলেন সাঙ্গাকারা-দিলশানরা। সাঙ্গাকারা আগের টানা
চার ম্যাচে সেঞ্চুরির কৃতিত্ব দেখান। গ্রুপ পর্বে আট সেঞ্চুরি দেখানো
একমাত্র দলও শ্রীলঙ্কা। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বলেই নয়, যে কোন আসরে শিরোপাই
থাকে ভারতের লক্ষ্য। এবার সেই লক্ষ্য পূরণে তারা অনেকটা এগিয়ে, আবার অনেকটা
পথ বাকিও। শিরোপা ধরে রাখতে তাদের চাই টানা তিন জয়। শেষ আটে তাদের প্রথম
বাধা বাংলাদেশ। এজন্য তাদের চাপটা যে বড় তা খোলামেলাই স্বীকার করেন ভারত
তারকা সুরেশ রায়না। গতকাল সুরেশ রায়না বলেন, বাংলাদেশ দলের আসলে চাপ শেষ ।
আর আমাদের আসল বিশ্বকাপ শুরু হচ্ছে কাল (আজ)। বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ভারত
খেলা পরিসংখ্যানের আলোয় চলে না। ২০০৭-এ প্রথম সাক্ষাতেই ভারতের বিদায় ঘণ্টা
বাজে বাংলাদেশের হাতে। ২০১১তে অবশ্য ঢাকার শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ভারত তার
প্রতিশোধটা মেটায় ভালভাবেই। যার ফল দুই বিশ্বকাপে টানা ১০ খেলায় অপরাজিত
মহেন্দ্র সিং ধোনির দল। বিশ্বকাপের ফল বাংলাদেশ ১ : ১ ভারত। তবে সাকুল্যে
ভারতের ২৪ জয়ের বিপরীতে বাংলাদেশের জয় কেবল তিনটি। তাতে কি! এবার ভিন্ন
মাঠ, ভিন্ন পরিবেশ। আজকের হিসাব আজই মেটাতে হবে। অতীতের কোন জের চলবে না।
মেলবোর্ন (এমসিজি) ভারতের খেলোয়াড়দের অতি পরিচিত এক মাঠ। এখানে ভারতীয়দের বসবাসও বাংলাদেশীদের চেয়ে অনেক বেশি। বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের মধ্যে এক সাকিব আল হাসানই খেলেছেন মেলবোর্নে। অস্ট্রেলিয়ার টি-২০ ক্রিকেট লীগ বিগ ব্যাশের গত আসরে সাকিবের দল ছিল মেলবোর্ন রেনেগেডস। এ বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মেলবোর্নে অভিষেক হয় বাংলাদেশ দলের। সেদিন হেরেও ফের এ মাঠে খেলার সুযোগ পাচ্ছে বাংলাদেশ। আজ প্রেক্ষাপট ভিন্ন। পা ফসকালেই গভীর খাঁদ। ওঠার উপায় নেই। আর এখানেই এগিয়ে বাংলাদেশ। না জিতলেও হারানোর কিছু নেই বাংলাদেশের। কিন্তু জেতার অদম্য ইচ্ছা যেমন প্রতিটি সমর্থকের তেমনি প্রতিটি খেলোয়াড়ের মনে। ইংল্যান্ডকে হারিয়ে আর নিউজিল্যান্ডকে হারানোর কাছাকাছি গিয়ে বাংলাদেশী খেলোয়াড়দের মনের জোর বেড়েছে অনেক। প্রমাণ করেছে আমরাও পারি। সবচেয়ে বড় পাওয়া হলো টিম বাংলাদেশ। তামিম ইকবালের ব্যাটে রান নেই, সাকিবও রান খরায়। তবুও বাংলাদেশের রানের চাকা থেমে নেঈ চলছে জোরেই। মাহমুদুল্লাহ রিযাদ পর পর দুটি শতরান করে দেখিয়ে দিযেছেন তার ব্যাটের ক্ষমতা। মুশফিকের ব্যাটে কেবল রানই নয় পরিচয় মিলেছে মুন্সিয়ানার। নবীন সৌম্য সরকার, সাব্বির রহমানের সাহসের তারিফ করতেই হয়। নাসির হোসেনও সাহসী কম নন। আর বোলিংয়ে এবার বাংলাদেশ তার ধার দেখিয়েছে। বিশেষ করে যাদের আস্থা ছিল না বাংলাদেশের পেস অ্যাটাকের ওপর তারা এবার লজ্জা পেয়েছেন। মাশরাফি বিন মুর্তজা সামনে থেকেই নেতৃত্ব দিচ্ছেন। পাশে পাশে রয়েছেন রুবেল হোসেন আর তাসকিন আহমেদ। স্পিনে সাকিব আল হাসান তার দক্ষতার ছাপ রেখে সমীহ আদায় করে নিচ্ছেন। মনের জোরটা ঠিক রেখে যদি বাংলাদেশের ক্রিকটোররা স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে পারে তদবে ধাওয়ান, রোহিত, কোহলি, ধোনি, রায়না, জাদেজা, অশ্বিন, শামি, যাদবদের মোকাবিলায় মন্দ হবে না লড়াইটা।
বাংলাদেশ-ভারত ক্রিকেট লড়াই প্রায় তিন যুগের। তবে বাংলাদেশ প্রথম জয়ের দেখা পায় ২০০৪এ। ২৬শে ডিসেম্বর বাংলাদেশ ঢাকার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ১৫ রানে ভারতকে হারায়। এরপরের দুটি জয় আসে ১৬ই মার্চ এবং ১৭ই মার্চ। এবার ১৮ই মার্চও একই রকম ফলের প্রত্যাশী। ২০০৪এ ধোনির উইকেটটি নিয়েছিলেন মাশরাফি। ম্যাচসেরাও হয়েছিলেন তিনি। ধোনির সেটিই ছিল প্রথম আন্তর্জাতিক সিরিজ এবং দ্বিতীয় ওয়ানডে। এরপর অবশ্য পদ্মা-যমুনায় পানি গড়িয়েছে অনেক। মহেন্দ্র সিং ধোনি এখন বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক। এটিই তার শেষ ম্যাচ হতে পারে। বিশ্বকাপের পর জাতীয় দলকে বিদায় জানাবেন এই ক্যাপ্টেন কুল। অন্যদিকে চোটের আঘাতে ধুকতে ধুকতে ৩১ বছর বয়সী মাশরাফি দলে ধারাবাহিক থাকতে পারেন নি। এখন টেস্ট না খেলে নিজেকে টিকিয়ে রেখেছেন ওয়ানডেতে। মাশরাফির বড় শক্তি হচ্ছে তার মনের জোর। সতীর্থদের কাছ থেকে সবটুকু আদায় করে নেয়ার ক্ষমতা রয়েছে তার। এখন অপেক্ষা মাঠের খেলায় কে কতটা প্রমাণ করতে পারেন তা দেখার।
মেলবোর্ন (এমসিজি) ভারতের খেলোয়াড়দের অতি পরিচিত এক মাঠ। এখানে ভারতীয়দের বসবাসও বাংলাদেশীদের চেয়ে অনেক বেশি। বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের মধ্যে এক সাকিব আল হাসানই খেলেছেন মেলবোর্নে। অস্ট্রেলিয়ার টি-২০ ক্রিকেট লীগ বিগ ব্যাশের গত আসরে সাকিবের দল ছিল মেলবোর্ন রেনেগেডস। এ বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মেলবোর্নে অভিষেক হয় বাংলাদেশ দলের। সেদিন হেরেও ফের এ মাঠে খেলার সুযোগ পাচ্ছে বাংলাদেশ। আজ প্রেক্ষাপট ভিন্ন। পা ফসকালেই গভীর খাঁদ। ওঠার উপায় নেই। আর এখানেই এগিয়ে বাংলাদেশ। না জিতলেও হারানোর কিছু নেই বাংলাদেশের। কিন্তু জেতার অদম্য ইচ্ছা যেমন প্রতিটি সমর্থকের তেমনি প্রতিটি খেলোয়াড়ের মনে। ইংল্যান্ডকে হারিয়ে আর নিউজিল্যান্ডকে হারানোর কাছাকাছি গিয়ে বাংলাদেশী খেলোয়াড়দের মনের জোর বেড়েছে অনেক। প্রমাণ করেছে আমরাও পারি। সবচেয়ে বড় পাওয়া হলো টিম বাংলাদেশ। তামিম ইকবালের ব্যাটে রান নেই, সাকিবও রান খরায়। তবুও বাংলাদেশের রানের চাকা থেমে নেঈ চলছে জোরেই। মাহমুদুল্লাহ রিযাদ পর পর দুটি শতরান করে দেখিয়ে দিযেছেন তার ব্যাটের ক্ষমতা। মুশফিকের ব্যাটে কেবল রানই নয় পরিচয় মিলেছে মুন্সিয়ানার। নবীন সৌম্য সরকার, সাব্বির রহমানের সাহসের তারিফ করতেই হয়। নাসির হোসেনও সাহসী কম নন। আর বোলিংয়ে এবার বাংলাদেশ তার ধার দেখিয়েছে। বিশেষ করে যাদের আস্থা ছিল না বাংলাদেশের পেস অ্যাটাকের ওপর তারা এবার লজ্জা পেয়েছেন। মাশরাফি বিন মুর্তজা সামনে থেকেই নেতৃত্ব দিচ্ছেন। পাশে পাশে রয়েছেন রুবেল হোসেন আর তাসকিন আহমেদ। স্পিনে সাকিব আল হাসান তার দক্ষতার ছাপ রেখে সমীহ আদায় করে নিচ্ছেন। মনের জোরটা ঠিক রেখে যদি বাংলাদেশের ক্রিকটোররা স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে পারে তদবে ধাওয়ান, রোহিত, কোহলি, ধোনি, রায়না, জাদেজা, অশ্বিন, শামি, যাদবদের মোকাবিলায় মন্দ হবে না লড়াইটা।
বাংলাদেশ-ভারত ক্রিকেট লড়াই প্রায় তিন যুগের। তবে বাংলাদেশ প্রথম জয়ের দেখা পায় ২০০৪এ। ২৬শে ডিসেম্বর বাংলাদেশ ঢাকার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ১৫ রানে ভারতকে হারায়। এরপরের দুটি জয় আসে ১৬ই মার্চ এবং ১৭ই মার্চ। এবার ১৮ই মার্চও একই রকম ফলের প্রত্যাশী। ২০০৪এ ধোনির উইকেটটি নিয়েছিলেন মাশরাফি। ম্যাচসেরাও হয়েছিলেন তিনি। ধোনির সেটিই ছিল প্রথম আন্তর্জাতিক সিরিজ এবং দ্বিতীয় ওয়ানডে। এরপর অবশ্য পদ্মা-যমুনায় পানি গড়িয়েছে অনেক। মহেন্দ্র সিং ধোনি এখন বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক। এটিই তার শেষ ম্যাচ হতে পারে। বিশ্বকাপের পর জাতীয় দলকে বিদায় জানাবেন এই ক্যাপ্টেন কুল। অন্যদিকে চোটের আঘাতে ধুকতে ধুকতে ৩১ বছর বয়সী মাশরাফি দলে ধারাবাহিক থাকতে পারেন নি। এখন টেস্ট না খেলে নিজেকে টিকিয়ে রেখেছেন ওয়ানডেতে। মাশরাফির বড় শক্তি হচ্ছে তার মনের জোর। সতীর্থদের কাছ থেকে সবটুকু আদায় করে নেয়ার ক্ষমতা রয়েছে তার। এখন অপেক্ষা মাঠের খেলায় কে কতটা প্রমাণ করতে পারেন তা দেখার।
No comments