দুই নেত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন ড্যানিশ মন্ত্রী by মিজানুর রহমান
প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন সফররত
ডেনমার্কের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সহায়তা মন্ত্রী মগেন্স জেনসেন। সন্ধ্যা সাতটায়
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গণভবনে তার সাক্ষাতের সূচি রয়েছে বলে
জানাগেছে। তার আগে সন্ধ্যা ছয়টায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার
গুলশানের কার্যালয়ে জেনসেন সাক্ষাৎ করবেন বলে বিএনপি সূত্র জানিয়েছে।
সাক্ষাতে বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলে
কূটনীতিক সূত্র দাবি করেছে। গতকাল সকালে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল
মুহিতের সঙ্গে বৈঠক শেষে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপের পরামর্শ দিয়েছিলেন
ডেনমার্কের মন্ত্রী। তিনি বলেছিলেন, কেবল তার দেশই নয়, বাংলাদেশের চলমান
রাজনৈতিক অস্থিরতায় সবাই উদ্বিগ্ন। আমরা বিশ্বাস করি, অর্থনীতির স্বার্থে
সব রাজনৈতিক দলের মধ্যে আলোচনার ভিত্তিতে দ্রুত পরিস্থিতির উন্নতি হবে।
বাংলাদেশের উন্নয়ন অংশীদার ডেনমার্ক সরকারের ওই গুরুত্বপূর্ণ প্রতিনিধি
বলেন, যে কোন কোন দেশের উন্নয়নের জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অত্যন্ত জরুরি।
বাংলাদেশ কতৃপক্ষের ওপর আমাদের আস্থা রয়েছে। আশা করি সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে
সরকার অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কাজ করবে।
সংলাপের পরামর্শ ড্যানিশ মন্ত্রীর
দেশের
চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতায় উদ্বিগ্ন ডেনমার্ক। সঙ্কট উত্তরণে সরকার অন্য
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন ঢাকা সফররত
ডেনমার্কের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সহায়তা মন্ত্রী মগেন্স জেনসেন। গতকাল সকালে
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত
করেন। মন্ত্রীর হেয়ার রোডের সরকারি বাসায় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকের পর বেরিয়ে
যাওয়ার পথে গণমাধ্যমের মুখোমুুখি হন ডেনিশ মন্ত্রী। সেখানে তিনি বলেন, কেবল
তার দেশই নয়, বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতায় সবাই উদ্বিগ্ন। আমরা
বিশ্বাস করি, অর্থনীতির স্বার্থে সব রাজনৈতিক দলের মধ্যে আলোচনার ভিত্তিতে
দ্রুত পরিস্থিতির উন্নতি হবে। বাংলাদেশের উন্নয়ন অংশীদার ডেনমার্ক সরকারের
ওই গুরুত্বপূর্ণ প্রতিনিধি বলেন, যে কোন দেশের উন্নয়নের জন্য রাজনৈতিক
স্থিতিশীলতা অত্যন্ত জরুরি। বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের ওপর আমাদের আস্থা রয়েছে।
আশা করি, সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে সরকার অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কাজ করবে।
এক প্রশ্নের জবাবে মগেন্স জানান, রাজনৈতিক অস্থিরতা থাকলেও ব্যক্তিগতভাবে
তিনি নিরাপত্তাহীন বোধ করছেন না। বৈঠকে রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার
বিষয়টি স্বীকার করেন অর্থমন্ত্রী। বলেন, হ্যাঁ, এসব (রাজনৈতিক পরিস্থিতি)
নিয়ে কথা হয়েছে। তারা তাদের কথা বলেছে। আমিও আমাদের কথা বলেছি। এ
অবরোধ-হরতালের কোন কার্যকারিতা নেই। অর্থনীতির চালকরা (ইকোনমিক অ্যাক্টর)
নিজস্ব স্টাইল বের করে নিয়েছে, কিভাবে কাজ করতে হবে। সরকার তাদের সহযোগিতা
করছে। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসছে দাবি করে অর্থমন্ত্রী
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কর্মকাণ্ডকে ‘ননসেন্স’ বলে মন্তব্য করেন।
তিন দিনের সফরে একটি প্রতিনিধিদল নিয়ে মঙ্গলবার ঢাকায় এসেছেন ডেনিশ ওই
মন্ত্রী। সফরের প্রথম দিনে দেশটির সরকারের সহায়তায় জলবায়ু পরিবর্তনের
প্রভাব মোকাবিলায় বরিশালে বাস্তবায়নাধীন একটি প্রকল্প পরিদর্শন করেন তারা।
গতকাল অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক ছাড়াও গাজীপুরের একটি কারখানার কর্মপরিবেশ
সরজমিন পর্যবেক্ষণ করেন মন্ত্রী ও সফরসঙ্গীরা। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ
হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ছাড়াও সরকারের বেশ কয়েকজন মন্ত্রী ও
গুরুত্বপূর্ণ প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক করবেন ডেনিশ সরকারের প্রতিনিধিরা।
দিনের শুরুতে রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠেয় ‘বাংলাদেশ-ফ্রেমিং দ্য ফিউচার’
শীর্ষক তৈরী পোশাক নিয়ে এক উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনেও অংশ নেবেন। তার সফর
নিয়ে আজ আনুষ্ঠানিকভাবে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলবেন। এ ছাড়া ডেনিশ সরকারের
গুরুত্বপূর্ণ ওই প্রতিনিধিদের সফরে বাংলাদেশের তৈরী পোশাকশিল্পের সঙ্গে
যুক্ত শ্রমিকদের পেশাগত নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্য (ওএসএইচ) খাতে সহযোগিতায়
নতুন উদ্যোগের বিষয়ে দুই সরকারের মধ্যে একটি সম্মতিপত্র সইয়ের প্রস্তুতি
রয়েছে। তার বিদায়ের আগে এটি সই হতে পারে। বাংলাদেশের উন্নয়নে আগামী পাঁচ
বছরে ৬০০ কোটি টাকা সহায়তার আশ্বাস দেন মগেন্স জেনসেন। এদিকে অপর এক
বিবৃতিতে ডেনিশ মন্ত্রী বলেছেন, রানা প্লাজা ধসের পর তৈরী পোশাকশিল্পের
শ্রমমান ও কারখানার উন্নয়নে বাংলাদেশ আরেক অগ্রগতি অর্জন করেছে। বিদেশী
বন্ধুদের সঙ্গে মিলে বাংলাদেশ নতুন স্ট্যান্ডার্ড সেট করেছে বলেও মন্তব্য
করেন তিনি। তবে তার মতে, এটাই চূড়ান্ত নয়, বাংলাদেশকে অনেক দূর পথ যেতে
হবে।
No comments