তুচ্ছ ঘটনা, ভয়াবহ ফলাফল- সাংবাদিককে থানায় আটকে নির্মম নির্যাতন
প্রথম আলোর সাংবাদিক মিজানকে পিটুনির পর ভ্যানে তুলে হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। ছবিটি মঙ্গলবার মাঝরাতে তোলা |
তুচ্ছ
ঘটনায় দুজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি থেকে হাতাহাতি। তাঁদের একজন সাংবাদিক,
অন্যজন পুলিশ। তবে পরিচয় জানার পর তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনার মিটমাট হয় এবং
দোকানে বসে একত্রে দুজন চাও পান করেন। অথচ এ ঘটনাকে পুঁজি করেই পুলিশের
কর্তাব্যক্তির নির্দেশে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিককে সাজানো মামলায় ফাঁসিয়ে
থানায় আটকে চালানো হলো নির্মম নির্যাতন। ভুক্তভোগী এই ব্যক্তি হলেন
প্রথম আলোর বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি এ বি এম মিজানুর রহমান।
বাউফল উপজেলার কালাইয়া বন্দর এলাকায় মঙ্গলবার রাতে হাতাহাতির ওই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্য হলেন কালাইয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক মো. হালিম খান। তাঁকে মারধর ও সরকারি কাজে বাধাদানের অভিযোগে বাউফল থানায় মিজানের বিরুদ্ধে মামলাটি তিনিই করেন। রাতেই মিজানকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। গতকাল বুধবার সকালে পটুয়াখালীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম-২ ফাইজুর রহমানের আদালতের মাধ্যমে মিজানকে জেলহাজতে পাঠায় পুলিশ। আদালতের হাজতখানা থেকে পুলিশ তাঁকে ধরে গাড়িতে তোলার সময় তিনি ব্যথায় কাতরাচ্ছিলেন। হাঁটতে পারছিলেন না। আদালত চত্বরে তাঁর সঙ্গে সাংবাদিকদের কথা বলতে দেয়নি পুলিশ। পরে আইনজীবী লুৎফর রহমান তাঁর সঙ্গে কথা বলেন। আদালতের বারান্দায় ছেলে মিজানকে দেখে বৃদ্ধ বাবা আবদুস ছালাম কান্নায় ভেঙে পড়েন। বলেন, মিজানের শারীরিক অবস্থা দেখলে পুলিশের অমানুষিক নির্যাতনের বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যাবে। তিনি অভিযোগ করেন, বিভিন্ন সময়ে ক্ষমতাসীন দলের লোকজনের অনিয়ম তুলে ধরে প্রতিবেদন প্রকাশ করায় তাঁকে এখন নির্যাতন করা হচ্ছে।
যেভাবে ঘটনার শুরু: লুৎফর রহমান সাংবাদিকদের জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ল্যাংরা মুন্সির পোল এলাকায় সড়কের ওপর একটি বাসের কারণে যানজট সৃষ্টি হয়। মামলার বাদী উপপরিদর্শক মো. হালিম সাদাপোশাকে ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলে স্থানটি অতিক্রমকালে এই যানজটে পড়েন। সে সময় বিপরীত দিক থেকে মোটরসাইকেলে আসছিলেন মিজান। তখন গালাগাল দিয়ে তাঁকে পেছনে সরে যেতে বলেন ওই পুলিশ সদস্য। মিজান প্রতিবাদ করলে দুজনের মধ্যে শুরু হয় কথা-কাটাকাটি; হাতাহাতি। পরে পরিচয় জেনে ভুল-বোঝাবুঝি হয়েছে বলে মিলে যান তাঁরা এবং সড়কের পাশে একটি দোকানে বসে চা খান। এরপর হালিম খানকে মিজান নিজ মোটরসাইকেলে ফাঁড়িতে পৌঁছে দিতে গেলে সেখানে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন জানান, মিজানকে থানায় আটকে রেখে রাত ১০টার পর শুরু করা হয় নির্যাতন। একপর্যায়ে মিজান অচেতন হয়ে পড়লে নির্যাতন বন্ধ হয়। লুৎফর রহমান জানান, পুলিশি হেফাজতে কোনো আসামিকে নির্যাতন করা যায় না। ৪ এপ্রিল মামলার শুনানির তারিখ ধার্য করা হয়েছে।
সাজানো মামলার সংক্ষেপ: বাদী মোটরসাইকেলে ফোর্সসহ কালাইয়া বন্দর এলাকায় যানজটে পড়েন। এ সময় বিপরীত দিকে থেকে মোটরসাইকেলে আসামি মিজান আসছিলেন। তখন আসামির সামনে অপর এক মোটর সাইকেলচালককে রাস্তা ক্লিয়ার করতে বললে মিজান বাদীকে কিল-ঘুষি মেরে রক্তাক্ত জখম করেন। খবর পেয়ে ফাঁড়ি থেকে ফোর্স এসে তাঁকে উদ্ধার ও মিজানকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকালে ধস্তাধস্তিতে মিজান সামান্য আহত হন।
এদিকে পুলিশের নির্যাতনে গুরুতর আহত মিজানকে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসক ব্যবস্থাপত্রে লিখেছেন, ‘ফিজিক্যাল ইনজুরি (শারীরিকভাবে জখম)’। বাউফল থানার ওসি নরেশ চন্দ্র কর্মকারের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
উদ্বেগ: মিজানুর রহমানকে গ্রেপ্তার ও পুলিশি নির্যাতনের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বরিশাল প্রেসক্লাব। গতকাল এক বিবৃতিতে তাঁকে গ্রেপ্তার ও তাঁর বিরুদ্ধে কথিত অভিযোগের বিষয়টি বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানান প্রেসক্লাবের নেতারা।
বাউফল উপজেলার কালাইয়া বন্দর এলাকায় মঙ্গলবার রাতে হাতাহাতির ওই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্য হলেন কালাইয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক মো. হালিম খান। তাঁকে মারধর ও সরকারি কাজে বাধাদানের অভিযোগে বাউফল থানায় মিজানের বিরুদ্ধে মামলাটি তিনিই করেন। রাতেই মিজানকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। গতকাল বুধবার সকালে পটুয়াখালীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম-২ ফাইজুর রহমানের আদালতের মাধ্যমে মিজানকে জেলহাজতে পাঠায় পুলিশ। আদালতের হাজতখানা থেকে পুলিশ তাঁকে ধরে গাড়িতে তোলার সময় তিনি ব্যথায় কাতরাচ্ছিলেন। হাঁটতে পারছিলেন না। আদালত চত্বরে তাঁর সঙ্গে সাংবাদিকদের কথা বলতে দেয়নি পুলিশ। পরে আইনজীবী লুৎফর রহমান তাঁর সঙ্গে কথা বলেন। আদালতের বারান্দায় ছেলে মিজানকে দেখে বৃদ্ধ বাবা আবদুস ছালাম কান্নায় ভেঙে পড়েন। বলেন, মিজানের শারীরিক অবস্থা দেখলে পুলিশের অমানুষিক নির্যাতনের বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যাবে। তিনি অভিযোগ করেন, বিভিন্ন সময়ে ক্ষমতাসীন দলের লোকজনের অনিয়ম তুলে ধরে প্রতিবেদন প্রকাশ করায় তাঁকে এখন নির্যাতন করা হচ্ছে।
যেভাবে ঘটনার শুরু: লুৎফর রহমান সাংবাদিকদের জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ল্যাংরা মুন্সির পোল এলাকায় সড়কের ওপর একটি বাসের কারণে যানজট সৃষ্টি হয়। মামলার বাদী উপপরিদর্শক মো. হালিম সাদাপোশাকে ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলে স্থানটি অতিক্রমকালে এই যানজটে পড়েন। সে সময় বিপরীত দিক থেকে মোটরসাইকেলে আসছিলেন মিজান। তখন গালাগাল দিয়ে তাঁকে পেছনে সরে যেতে বলেন ওই পুলিশ সদস্য। মিজান প্রতিবাদ করলে দুজনের মধ্যে শুরু হয় কথা-কাটাকাটি; হাতাহাতি। পরে পরিচয় জেনে ভুল-বোঝাবুঝি হয়েছে বলে মিলে যান তাঁরা এবং সড়কের পাশে একটি দোকানে বসে চা খান। এরপর হালিম খানকে মিজান নিজ মোটরসাইকেলে ফাঁড়িতে পৌঁছে দিতে গেলে সেখানে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন জানান, মিজানকে থানায় আটকে রেখে রাত ১০টার পর শুরু করা হয় নির্যাতন। একপর্যায়ে মিজান অচেতন হয়ে পড়লে নির্যাতন বন্ধ হয়। লুৎফর রহমান জানান, পুলিশি হেফাজতে কোনো আসামিকে নির্যাতন করা যায় না। ৪ এপ্রিল মামলার শুনানির তারিখ ধার্য করা হয়েছে।
সাজানো মামলার সংক্ষেপ: বাদী মোটরসাইকেলে ফোর্সসহ কালাইয়া বন্দর এলাকায় যানজটে পড়েন। এ সময় বিপরীত দিকে থেকে মোটরসাইকেলে আসামি মিজান আসছিলেন। তখন আসামির সামনে অপর এক মোটর সাইকেলচালককে রাস্তা ক্লিয়ার করতে বললে মিজান বাদীকে কিল-ঘুষি মেরে রক্তাক্ত জখম করেন। খবর পেয়ে ফাঁড়ি থেকে ফোর্স এসে তাঁকে উদ্ধার ও মিজানকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকালে ধস্তাধস্তিতে মিজান সামান্য আহত হন।
এদিকে পুলিশের নির্যাতনে গুরুতর আহত মিজানকে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসক ব্যবস্থাপত্রে লিখেছেন, ‘ফিজিক্যাল ইনজুরি (শারীরিকভাবে জখম)’। বাউফল থানার ওসি নরেশ চন্দ্র কর্মকারের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
উদ্বেগ: মিজানুর রহমানকে গ্রেপ্তার ও পুলিশি নির্যাতনের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বরিশাল প্রেসক্লাব। গতকাল এক বিবৃতিতে তাঁকে গ্রেপ্তার ও তাঁর বিরুদ্ধে কথিত অভিযোগের বিষয়টি বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানান প্রেসক্লাবের নেতারা।
No comments