‘সব দলকেই হারানো সম্ভব’
মাশরাফি বিন মুর্তজা |
বিশ্বকাপ-যাত্রার
আগে শেষ আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনটা হয়ে গেল কাল মিরপুর শেরেবাংলা
স্টেডিয়ামে। মাশরাফি বিন মুর্তজা তাতে বড় কোনো স্বপ্ন দেখালেন না। তবে
বাংলাদেশ অধিনায়ক পুরো সংবাদ সম্মেলনেই যে রকম দলীয় প্রচেষ্টা আর লক্ষ্যকে
তুলে ধরতে চাইলেন সবার ওপরে, তাতে বাংলাদেশের কোটি কোটি ক্রিকেটপ্রেমী
আশাবাদী হলেও হতে পারে—
এবারের বিশ্বকাপে লক্ষ্য—
মাশরাফি বিন মুর্তজা: ইচ্ছের তো শেষ নেই। পারলে শেষ পর্যন্ত যেতে চাই। আমরা চেষ্টা করব দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়ার। এটাও অনেক কঠিন কাজ। প্রতিটি ম্যাচই গুরুত্বপূর্ণ। তার আগে আফগানিস্তানের বিপক্ষে শুরুটা ভালো করতে হবে। তাহলে সবাই ভালো খেলার একটা প্ল্যাটফর্ম পাবে।
দলের যে সামর্থ্য, বিশ্বকাপে ভালো করা কতটা সম্ভব—
মাশরাফি: দলের সামর্থ্য খুবই ভালো। এ ধরনের টুর্নামেন্টে মানসিক শক্তির খুব প্রয়োজন হয়। আমার মনে হয় না দক্ষতার দিক থেকে আমরা পিছিয়ে আছি। একটা-দুইটা জায়গায় আমরা বেশি ভুল করি। সেগুলো ঠিক করার চেষ্টা করছি। আসলে এই পর্যায়ে যে যত বেশি মানসিক চাপ নিতে পারবে, সে তত বেশি সুবিধা পাবে। আমাদের অবশ্যই সামর্থ্য আছে দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়ার।
সিনিয়র ক্রিকেটারদের ভূমিকা—
মাশরাফি: সিনিয়র ক্রিকেটারদের সব সময়ই দায়িত্ব থাকে। মাঠে ভেতরে-বাইরে দুই জায়গাতেই। তবে আমার মনে হয়, কোনো একটা দলকে খুব ভালো ফলাফল পেতে হলে তরুণ ক্রিকেটারদেরই এগিয়ে আসতে হয়। আমাদের তরুণ যারা আছে তারা খুবই ভালো। হয়তো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অতটা খেলেনি, কিন্তু তারা ভালো ক্রিকেট খেলেছে বলেই এই জায়গায় এসেছে।
বাংলাদেশের কোন বিশ্বকাপ দল সবচেয়ে ভালো—
মাশরাফি: ১৯৯৯ ও ২০০৭ বিশ্বকাপের দল দুটোই ছিল সবচেয়ে ভালো। আরেকটা বিশ্বকাপ সামনে এসেছে, আমাদের আরও একটা সুযোগ এসেছে আরও ভালো কিছু করার। ২০০৭-এর গ্রুপটা বেশ কঠিন ছিল। এবারেরটাও কঠিন। তবে আমরা ২০০৭-এ পেরেছি। এবারও ২০০৭-এর মতো ভালো শুরু করতে পারলে ভালো ফল সম্ভব।
আফগানিস্তান আর স্কটল্যান্ডের বাইরে শ্রীলঙ্কা ও ইংল্যান্ডকে হারানোর সম্ভাবনা—
মাশরাফি: জয়ের জন্য আমি নির্দিষ্ট কোনো দলের দিকে তাকাচ্ছি না। নির্দিষ্ট কোনো দলকে টার্গেট করলে ওই ম্যাচে অনেক চাপ তৈরি হবে। আমাদের গ্রুপে যারা আছে প্রতিটি দলকেই আমরা হারিয়েছি। এমন না যে শুধু আমাদের কন্ডিশনে, ওদের কন্ডিশনেও ওদের হারিয়েছি। আমরা প্রতিটি দলকে নিয়ে কাজ করছি। সেরা ক্রিকেটটা খেলতে পারলে সব দলকেই হারানো সম্ভব।
বিশ্বকাপে ব্যক্তিগত লক্ষ্য—
মাশরাফি: অধিনায়ক হলে আসলে ব্যক্তিগত লক্ষ্যটা কমে যায়। আর ব্যক্তিগত লক্ষ্য ঠিক করা অনেক আগে থেকেই কমিয়ে দিয়েছি। তবে প্রতিটি ম্যাচেই লক্ষ্য থাকে কিছু করতে হবে। বিশ্বকাপের প্রতিটি ম্যাচে ভালো করা এবং প্রতিটি ম্যাচে অবদান রাখাই আমার লক্ষ্য। যেটাতে সবাই খুশি হবে এবং আমরাও খুশি হব, দলীয়ভাবে এ রকম একটা জায়গাতে যাওয়াই লক্ষ্য আমাদের।
বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের মূল খেলোয়াড় কারা হতে পারে—
মাশরাফি: আমার কাছে ১৫ জনই মূল খেলোয়াড়। আলাদা করে কারও নাম বলতে চাই না। কোনো দিন দেখিনি কেউ একাই সব ম্যাচ জিতিয়েছে। একা ১০-১৫টি ম্যাচ জেতানো সম্ভব। কিন্তু তার জন্যও কারও না কারও সাহায্য লাগে। যারা আছে তারা প্রত্যেকেই গুরুত্বপূর্ণ। সে জন্যই তারা বিশ্বকাপ স্কোয়াডে সুযোগ পেয়েছে।
ব্যাটসম্যানদের প্রতি বার্তা—
মাশরাফি: অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডের খেলাগুলো এখন সবাই দেখছে। টেস্টে এখন প্রায় চার শর ওপরে রান হচ্ছে, ওয়ানডেতে ২৬৭-২৭০ হচ্ছে এবং এটা ভালো বোলিংয়ের বিপক্ষে। অস্ট্রেলিয়ার উইকেট এখন গ্রীষ্মেও খুব ভালো। আমাদের ব্যাটসম্যানদের প্রথম দিকে হয়তো একটু কষ্ট হবে। তবে মানিয়ে নিতে পারলে পরে সহজ হবে।
এবার প্রত্যাশার চাপ বেশি না থাকায় দল কি একটু নির্ভার?
মাশরাফি: আমার মনে হয় প্রত্যাশা অনেকের মনের ভেতরই আছে, কিন্তু প্রকাশ করছে না। খেলা শুরু হলে দেখবেন অনেকে তা প্রকাশ করছে। প্রত্যাশার শেষ নেই। আমরা শুরুটা ভালো করলে দেখবেন প্রত্যাশা বেড়ে গেছে। আসলে এসব নিয়ে না ভেবে ভালো কিছু করার চেষ্টা করাই ভালো। বিশ্ব আসরে ভালো কিছু করতে পারলে নিজেদের কাছেও ভালো লাগবে।
অস্ট্রেলিয়ার মাঠের আকৃতি—
মাশরাফি: সবারই একটা শক্তির জায়গা আছে। সে অনুযায়ী খেলতে হবে। এক দিকের শক্তি বাড়াতে গিয়ে আরেক দিক দুর্বল হয়ে গেলে সমস্যা। অস্ট্রেলিয়ার মাঠ অনেক বড় হলেও ছক্কাও অনেক হয়! উইকেটও বেশ ভালো ওখানে। সহজেই বল ব্যাটে আসে। কাজেই আমার মনে হয় না মাঠটা কোনো ব্যাপার হবে। তবে রানিং বিটুইন দ্য উইকেট ভালো থাকলে হয়তো বা দুইগুলোকে তিন করা যাবে। যারা শট খেলে তাদের জন্য সুবিধা বেশি। আমার মনে হয় না ওখানে এখন অতটা সুইং আছে। হ্যাঁ, একটু বাউন্স থাকবে। কিন্তু যারা সাইড শট খেলে বা যারা শট খেলতে পছন্দ করে তাদের জন্য রান করার সবচেয়ে ভালো সুযোগ এটাই।
টিম কম্বিনেশন নিয়ে পরিকল্পনা—
মাশরাফি: আমরা ম্যাচের আগের দিন উইকেট, মাঠ, কন্ডিশন সব দেখব। এর পর কোচ একটা পরিকল্পনা করবেন, টিম ম্যানেজমেন্ট এবং সিনিয়রদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। এখনই এসব নিয়ে কথা বলা কঠিন। আমার যতটা বিশ্বাস, ওখানে স্পিনাররাই ভালো ভূমিকা রাখবে। যতটুকু দেখছি টেস্ট ম্যাচ, ওয়ানডে, বিগ ব্যাশ সব ম্যাচেই স্পিনারদের ইকোনমি ৬; যেখানে পেস বোলারদের ইকোনমি সাড়ে ৭ বা ৮ করে। উইকেটে ঘাস খুব বেশি না থাকলে আমার মনে হয় স্পিনাররাই বেশি ভূমিকা রাখবে।
বাংলাদেশ দলের কারা বিশ্বকাপের সেরাদের মধ্যে থাকতে পারেন—
মাশরাফি: ব্যাটিংয়ের কথা বললে বলব মুশফিক। বিশ্বের ভালো ভালো ব্যাটসম্যানের সঙ্গে ওর লড়াই করার ক্ষমতা আছে। সাকিবের বোলিংয়ের কথা অবশ্যই বলব। আমার বিশ্বাস, পৃথিবীর যেকোনো উইকেটেই ও ভালো বল করতে পারে। উইকেটে স্পিন হয় কি হয় না, সেটা তার কাছে কোনো বিষয় না। এ ছাড়া আরও অনেকে আছে, যেমন রিয়াদ (মাহমুদউল্লাহ) ফর্মে এসেছে। তবে সেরা দশে আসাটা কারও ব্যক্তিগত লক্ষ্য হতে পারে। আমার লক্ষ্য হচ্ছে, কেউ যদি ২০-এর মধ্যেও না আসে, দলটা এমন একটা পর্যায়ে যাক যাতে বাংলাদেশের ক্রিকেট এক ধাপ এগোবে। তাতে দেশের মানুষ খুশি হব, আমরাও খুশি হব। আমার মনে হয় না কোনো খেলোয়াড় সেরা দশে আসলে সেটা তার ক্যারিয়ারেও কোনো সাহায্য করবে। পারফরম্যান্স এমন একটা জিনিস যেটার উত্থান-পতন থাকেই। হয়তো দেখা যাবে বিশ্বকাপে সে সেরা পারফরমার, কিন্তু পরবর্তী ৬ মাসে কিছুই করতে পারল না। তার চেয়ে আমরা যদি দলটাকে একটা ভালো অবস্থানে নিতে পারি সেটা আজীবন মানুষ মনে রাখবে এবং পরের বিশশ্বকাপে আত্মবিশ্বাস জোগাতে সাহায্য করবে।
এটা আপনার তৃতীয় বিশ্বকাপ। দলকে সেরাটা দেওয়ার এটাই উপযুক্ত সময় কিনা—
মাশরাফি: দলকে সেরাটা দেওয়ার আসলে কোনো নির্দিষ্ট সময় নেই। এখন তো অবশ্যই সেই সময় এসেছে, আগেও তা ছিল মনে করি। কতটুকু দিতে পারব সেটা বলা খুব কঠিন। অবশ্যই সর্বোচ্চটা দিয়েই চেষ্টা করব ইনশা আল্লাহ।
সাকিব-তামিম-মুশফিক দেশের সেরা, কিন্তু বিশ্ব ক্রিকেটে তেমন কিছু করতে পারেনি এখনো। বিশ্ব আসরে কিছু করার তাদের জন্যও এটা সেরা সময় কিনা—
মাশরাফি: যত দিন ধরে খেলছে, ওরা তিনজন সব সময় পারফর্ম করে আসছে। একটু খারাপ ভালোর ভেতর দিয়ে প্রত্যেক মানুষই যায়। অবশ্যই আমি মনে করি ওদের এখন সময় এই পর্যায়ে ভালো করার। সারা দুনিয়া তাদের যেভাবে চেনে এখানে যদি আরও ভালো করে, নজরটা আরও বেশি কাড়বে। তবে ওদের কাছে আমি এতটুকুই আশা করি, দিন শেষে দলের জন্য যতটুকু দরকার। অতিরিক্ত চাপ নেওয়ার কিছু নেই। সবারই চিন্তা থাকে বিশ্বকাপে ভালো কিছু করার, তাই বলে এটাই শেষ নয়। ভালো করার মানসিকতা থাকা ভালো, তবে সে জন্য কেউ চাপে পড়ে যাক, সেটা চাই না।
এবারের বিশ্বকাপে লক্ষ্য—
মাশরাফি বিন মুর্তজা: ইচ্ছের তো শেষ নেই। পারলে শেষ পর্যন্ত যেতে চাই। আমরা চেষ্টা করব দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়ার। এটাও অনেক কঠিন কাজ। প্রতিটি ম্যাচই গুরুত্বপূর্ণ। তার আগে আফগানিস্তানের বিপক্ষে শুরুটা ভালো করতে হবে। তাহলে সবাই ভালো খেলার একটা প্ল্যাটফর্ম পাবে।
দলের যে সামর্থ্য, বিশ্বকাপে ভালো করা কতটা সম্ভব—
মাশরাফি: দলের সামর্থ্য খুবই ভালো। এ ধরনের টুর্নামেন্টে মানসিক শক্তির খুব প্রয়োজন হয়। আমার মনে হয় না দক্ষতার দিক থেকে আমরা পিছিয়ে আছি। একটা-দুইটা জায়গায় আমরা বেশি ভুল করি। সেগুলো ঠিক করার চেষ্টা করছি। আসলে এই পর্যায়ে যে যত বেশি মানসিক চাপ নিতে পারবে, সে তত বেশি সুবিধা পাবে। আমাদের অবশ্যই সামর্থ্য আছে দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়ার।
সিনিয়র ক্রিকেটারদের ভূমিকা—
মাশরাফি: সিনিয়র ক্রিকেটারদের সব সময়ই দায়িত্ব থাকে। মাঠে ভেতরে-বাইরে দুই জায়গাতেই। তবে আমার মনে হয়, কোনো একটা দলকে খুব ভালো ফলাফল পেতে হলে তরুণ ক্রিকেটারদেরই এগিয়ে আসতে হয়। আমাদের তরুণ যারা আছে তারা খুবই ভালো। হয়তো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অতটা খেলেনি, কিন্তু তারা ভালো ক্রিকেট খেলেছে বলেই এই জায়গায় এসেছে।
বাংলাদেশের কোন বিশ্বকাপ দল সবচেয়ে ভালো—
মাশরাফি: ১৯৯৯ ও ২০০৭ বিশ্বকাপের দল দুটোই ছিল সবচেয়ে ভালো। আরেকটা বিশ্বকাপ সামনে এসেছে, আমাদের আরও একটা সুযোগ এসেছে আরও ভালো কিছু করার। ২০০৭-এর গ্রুপটা বেশ কঠিন ছিল। এবারেরটাও কঠিন। তবে আমরা ২০০৭-এ পেরেছি। এবারও ২০০৭-এর মতো ভালো শুরু করতে পারলে ভালো ফল সম্ভব।
আফগানিস্তান আর স্কটল্যান্ডের বাইরে শ্রীলঙ্কা ও ইংল্যান্ডকে হারানোর সম্ভাবনা—
মাশরাফি: জয়ের জন্য আমি নির্দিষ্ট কোনো দলের দিকে তাকাচ্ছি না। নির্দিষ্ট কোনো দলকে টার্গেট করলে ওই ম্যাচে অনেক চাপ তৈরি হবে। আমাদের গ্রুপে যারা আছে প্রতিটি দলকেই আমরা হারিয়েছি। এমন না যে শুধু আমাদের কন্ডিশনে, ওদের কন্ডিশনেও ওদের হারিয়েছি। আমরা প্রতিটি দলকে নিয়ে কাজ করছি। সেরা ক্রিকেটটা খেলতে পারলে সব দলকেই হারানো সম্ভব।
বিশ্বকাপে ব্যক্তিগত লক্ষ্য—
মাশরাফি: অধিনায়ক হলে আসলে ব্যক্তিগত লক্ষ্যটা কমে যায়। আর ব্যক্তিগত লক্ষ্য ঠিক করা অনেক আগে থেকেই কমিয়ে দিয়েছি। তবে প্রতিটি ম্যাচেই লক্ষ্য থাকে কিছু করতে হবে। বিশ্বকাপের প্রতিটি ম্যাচে ভালো করা এবং প্রতিটি ম্যাচে অবদান রাখাই আমার লক্ষ্য। যেটাতে সবাই খুশি হবে এবং আমরাও খুশি হব, দলীয়ভাবে এ রকম একটা জায়গাতে যাওয়াই লক্ষ্য আমাদের।
বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের মূল খেলোয়াড় কারা হতে পারে—
মাশরাফি: আমার কাছে ১৫ জনই মূল খেলোয়াড়। আলাদা করে কারও নাম বলতে চাই না। কোনো দিন দেখিনি কেউ একাই সব ম্যাচ জিতিয়েছে। একা ১০-১৫টি ম্যাচ জেতানো সম্ভব। কিন্তু তার জন্যও কারও না কারও সাহায্য লাগে। যারা আছে তারা প্রত্যেকেই গুরুত্বপূর্ণ। সে জন্যই তারা বিশ্বকাপ স্কোয়াডে সুযোগ পেয়েছে।
ব্যাটসম্যানদের প্রতি বার্তা—
মাশরাফি: অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডের খেলাগুলো এখন সবাই দেখছে। টেস্টে এখন প্রায় চার শর ওপরে রান হচ্ছে, ওয়ানডেতে ২৬৭-২৭০ হচ্ছে এবং এটা ভালো বোলিংয়ের বিপক্ষে। অস্ট্রেলিয়ার উইকেট এখন গ্রীষ্মেও খুব ভালো। আমাদের ব্যাটসম্যানদের প্রথম দিকে হয়তো একটু কষ্ট হবে। তবে মানিয়ে নিতে পারলে পরে সহজ হবে।
এবার প্রত্যাশার চাপ বেশি না থাকায় দল কি একটু নির্ভার?
মাশরাফি: আমার মনে হয় প্রত্যাশা অনেকের মনের ভেতরই আছে, কিন্তু প্রকাশ করছে না। খেলা শুরু হলে দেখবেন অনেকে তা প্রকাশ করছে। প্রত্যাশার শেষ নেই। আমরা শুরুটা ভালো করলে দেখবেন প্রত্যাশা বেড়ে গেছে। আসলে এসব নিয়ে না ভেবে ভালো কিছু করার চেষ্টা করাই ভালো। বিশ্ব আসরে ভালো কিছু করতে পারলে নিজেদের কাছেও ভালো লাগবে।
অস্ট্রেলিয়ার মাঠের আকৃতি—
মাশরাফি: সবারই একটা শক্তির জায়গা আছে। সে অনুযায়ী খেলতে হবে। এক দিকের শক্তি বাড়াতে গিয়ে আরেক দিক দুর্বল হয়ে গেলে সমস্যা। অস্ট্রেলিয়ার মাঠ অনেক বড় হলেও ছক্কাও অনেক হয়! উইকেটও বেশ ভালো ওখানে। সহজেই বল ব্যাটে আসে। কাজেই আমার মনে হয় না মাঠটা কোনো ব্যাপার হবে। তবে রানিং বিটুইন দ্য উইকেট ভালো থাকলে হয়তো বা দুইগুলোকে তিন করা যাবে। যারা শট খেলে তাদের জন্য সুবিধা বেশি। আমার মনে হয় না ওখানে এখন অতটা সুইং আছে। হ্যাঁ, একটু বাউন্স থাকবে। কিন্তু যারা সাইড শট খেলে বা যারা শট খেলতে পছন্দ করে তাদের জন্য রান করার সবচেয়ে ভালো সুযোগ এটাই।
টিম কম্বিনেশন নিয়ে পরিকল্পনা—
মাশরাফি: আমরা ম্যাচের আগের দিন উইকেট, মাঠ, কন্ডিশন সব দেখব। এর পর কোচ একটা পরিকল্পনা করবেন, টিম ম্যানেজমেন্ট এবং সিনিয়রদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। এখনই এসব নিয়ে কথা বলা কঠিন। আমার যতটা বিশ্বাস, ওখানে স্পিনাররাই ভালো ভূমিকা রাখবে। যতটুকু দেখছি টেস্ট ম্যাচ, ওয়ানডে, বিগ ব্যাশ সব ম্যাচেই স্পিনারদের ইকোনমি ৬; যেখানে পেস বোলারদের ইকোনমি সাড়ে ৭ বা ৮ করে। উইকেটে ঘাস খুব বেশি না থাকলে আমার মনে হয় স্পিনাররাই বেশি ভূমিকা রাখবে।
বাংলাদেশ দলের কারা বিশ্বকাপের সেরাদের মধ্যে থাকতে পারেন—
মাশরাফি: ব্যাটিংয়ের কথা বললে বলব মুশফিক। বিশ্বের ভালো ভালো ব্যাটসম্যানের সঙ্গে ওর লড়াই করার ক্ষমতা আছে। সাকিবের বোলিংয়ের কথা অবশ্যই বলব। আমার বিশ্বাস, পৃথিবীর যেকোনো উইকেটেই ও ভালো বল করতে পারে। উইকেটে স্পিন হয় কি হয় না, সেটা তার কাছে কোনো বিষয় না। এ ছাড়া আরও অনেকে আছে, যেমন রিয়াদ (মাহমুদউল্লাহ) ফর্মে এসেছে। তবে সেরা দশে আসাটা কারও ব্যক্তিগত লক্ষ্য হতে পারে। আমার লক্ষ্য হচ্ছে, কেউ যদি ২০-এর মধ্যেও না আসে, দলটা এমন একটা পর্যায়ে যাক যাতে বাংলাদেশের ক্রিকেট এক ধাপ এগোবে। তাতে দেশের মানুষ খুশি হব, আমরাও খুশি হব। আমার মনে হয় না কোনো খেলোয়াড় সেরা দশে আসলে সেটা তার ক্যারিয়ারেও কোনো সাহায্য করবে। পারফরম্যান্স এমন একটা জিনিস যেটার উত্থান-পতন থাকেই। হয়তো দেখা যাবে বিশ্বকাপে সে সেরা পারফরমার, কিন্তু পরবর্তী ৬ মাসে কিছুই করতে পারল না। তার চেয়ে আমরা যদি দলটাকে একটা ভালো অবস্থানে নিতে পারি সেটা আজীবন মানুষ মনে রাখবে এবং পরের বিশশ্বকাপে আত্মবিশ্বাস জোগাতে সাহায্য করবে।
এটা আপনার তৃতীয় বিশ্বকাপ। দলকে সেরাটা দেওয়ার এটাই উপযুক্ত সময় কিনা—
মাশরাফি: দলকে সেরাটা দেওয়ার আসলে কোনো নির্দিষ্ট সময় নেই। এখন তো অবশ্যই সেই সময় এসেছে, আগেও তা ছিল মনে করি। কতটুকু দিতে পারব সেটা বলা খুব কঠিন। অবশ্যই সর্বোচ্চটা দিয়েই চেষ্টা করব ইনশা আল্লাহ।
সাকিব-তামিম-মুশফিক দেশের সেরা, কিন্তু বিশ্ব ক্রিকেটে তেমন কিছু করতে পারেনি এখনো। বিশ্ব আসরে কিছু করার তাদের জন্যও এটা সেরা সময় কিনা—
মাশরাফি: যত দিন ধরে খেলছে, ওরা তিনজন সব সময় পারফর্ম করে আসছে। একটু খারাপ ভালোর ভেতর দিয়ে প্রত্যেক মানুষই যায়। অবশ্যই আমি মনে করি ওদের এখন সময় এই পর্যায়ে ভালো করার। সারা দুনিয়া তাদের যেভাবে চেনে এখানে যদি আরও ভালো করে, নজরটা আরও বেশি কাড়বে। তবে ওদের কাছে আমি এতটুকুই আশা করি, দিন শেষে দলের জন্য যতটুকু দরকার। অতিরিক্ত চাপ নেওয়ার কিছু নেই। সবারই চিন্তা থাকে বিশ্বকাপে ভালো কিছু করার, তাই বলে এটাই শেষ নয়। ভালো করার মানসিকতা থাকা ভালো, তবে সে জন্য কেউ চাপে পড়ে যাক, সেটা চাই না।
No comments