অসাংবিধানিক ক্ষমতার পালা বদল হতে দিতে পারি না -প্রধানমন্ত্রী
দেশের
চলমান রাজনৈতিক অবস্থাকে ‘কালো মেঘ’-এর সঙ্গে তুলনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ
হাসিনা বলেছেন, মনুষ্য সৃষ্ট এ পরিস্থিতি সাময়িক। এটি কাটিয়ে ওঠতে তার
সরকার সক্ষম হবে। বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, তারা নিজেরা নির্বাচন
করবে না, অন্যদেরও নির্বাচন করতে দেবে না। নির্বাচন না হলে কি আসবে- তার
দৃষ্টান্ত বাংলাদেশের নিকট প্রতিবেশী একটি দেশে দেখা যাচ্ছে। বাংলাদেশ
দীর্ঘদিন এ ধরনের মার্শাল ল’ বা মিলিটারি ডিক্টেটর দ্বারা শাসিত হয়েছে।
আবার সেই মিলিটারি ডিক্টেটর বা অসাংবিধানিক ক্ষমতার পালাবদল-সেটাই কি হবে?
এমন প্রশ্ন রেখে শেখ হাসিনা বলেন, সেটা তো আমরা হতে দিতে পারি না। আমরা
গণতন্ত্র এনেছি। গণতান্ত্রিক ধারা বজায় রেখেই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে,
না হলে দেশ উন্নত হবে না। গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরিদর্শনকালে দেয়া
বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। দীর্ঘ ৫০ মিনিটের বক্তৃতায় সামপ্রতিক রাজনৈতিক
পরিস্থিতির বিস্তারিত তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বিদেশে দায়িত্ব পালনকারী
কূটনীতিকদের বিরোধী দলের ‘অপপ্রচার’ বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।
মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সচিবসহ সর্বস্তরের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে আয়োজিত
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি জানি দেশে যে অবস্থা চলছে সেখানে নানা
ধরনের অপপ্রচার চালিয়ে বিদেশে ভাবমূর্তি নষ্টের চেষ্টা করা হচ্ছে।
এক্ষেত্রে আমাদের দূতাবাসগুলোকে আর সক্রিয় থাকতে হবে। ‘মিডিয়ায় প্রকাশিত
কিছু ছবি সারা বাংলাদেশের চিত্র নয়’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, যে অবস্থা চলছে
সরকার তা মোকাবিলা করতে সক্ষম। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে বাংলাদেশ পুরস্কৃত
হয়, দেশের মানুষ আন্তর্জাতিকভাবে সম্মানিত হয় জানিয়ে শেখ হাসিনা অভিযোগ
করেন বিএনপি-জামায়াত জোট স্বাধীনতায়ই বিশ্বাস করে না। তারা ক্ষমতায় থাকলে
বাংলাদেশ তিরস্কৃত হয়। ওই জোটের কাছে আজ বাংলাদেশ জিম্মি মন্তব্য করে তিনি
বলেন, এ অবস্থায় দেশ থাকবে না। সরকার এটি মোকাবিলা করতে পারে, এটা করবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, কেউ যেন অহেতুক
প্যানিক সৃষ্টি না করে, ভুল বোঝাবুঝি না করে; সেদিকে একটু দৃষ্টি রাখতে
হবে। গত ছয় বছরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কূটনৈতিক অর্জন বিশেষ করে ৫ই জানুয়ারি এক
তরফা নির্বাচনের বিষয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে জনমত তৈরিতে ভূমিকা রাখায়
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ধন্যবাদ জানান
প্রধানমন্ত্রী।
তাদের কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসা করেন। সার্বিকভাবে বাংলাদেশের অগ্রগতির ধারা বাধাগ্রস্ত করতে হরতাল-অবরোধ, অগ্নিসংযোগ ও মানুষ হত্যা করা হচ্ছে- অভিযোগ করে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উদ্দেশে তিনি বলেন, মানুষ খুন করাই তার একমাত্র লক্ষ্য। বোধহয় তিনি বাংলাদেশের মানুষদের রাখতেই চান না। ২৫ মার্চের কালো রাতে এমন চিত্র ছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একই কায়দায় তারা এখন হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে। এ ‘তা-ব’ উন্নয়নের গতিধারাকে ব্যাহত করছে। আমি প্রার্থনা করি, আল্লাহ যেন তাকে সুমতি দেন। তিনি যেন এই মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেন। বক্তৃতায় ভারতের সঙ্গে ঝুলে থাকা স্থল সীমান্ত চুক্তির বাস্তবায়ন এবং তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি দ্রুত সম্পাদনে আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নিয়ে বিরোধ মীমাংসার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে মামলা করেছি। আবার সেই মামলায় জয়ীও হয়েছি। এটা একটা বিরাট কূটনৈতিক সাফল্য। এজন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদও জানান শেখ হাসিনা। প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদমুক্ত অসামপ্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তার সরকার কাজ করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, মাদক, শিশুপাচার, নারীপাচার-এর মতো সমস্যা থেকে আমাদের মুক্তি পেতে হবে। প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে তাদের সহযোগিতা নিয়েই এ কাজগুলো করতে হবে। বক্তৃতাকালে বিদেশস্থ বাংলাদেশের মিশনগুলোর নিজস্ব ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নিতে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে প্রবাসীদের প্রতি আরও বেশি দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানান। বলেন, প্রবাসীদের অবদানটা কখনও অবহেলার চাখে দেখা যাবে না। তাদের প্রতি একটু বেশি দায়িত্ব নেয়া এবং তাদের সমস্যাগুলো দেখতে হবে। তাদের সেবক হতে হবে। প্রবাসীদের মেশিন রিডঅ্যাবল পাসপোর্ট বা এমআরপি প্রদানের প্রক্রিয়া দ্রুততর এবং ভোগান্তিমুক্ত করতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য সমপ্রসারণে আরও উদ্যোগী হওয়ার নির্দেশনা দিয়ে তিনি বলেন, শুধু কূটনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধিই নয়, ব্যবসা-বাণিজ্য সমপ্রসারণেও মনোযোগী হতে হবে। কোন দেশে কি ধরনের পণ্যের চাহিদা রয়েছে সেটি খোঁজার পাশাপাশি বিদেশী বিনিয়োগ নিয়ে আসতে হবে। ‘কূটনীতি’-কে টিম ওয়ার্ক উল্লেখ করে তিনি দূতাবাসগুলোর কর্মকর্তাদের সমন্বয়ের সঙ্গে কাজ করার নির্দেশনা দেন। ‘বাংলাদেশ হবে প্রাচ্যের সুইজারল্যান্ড’ বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্নের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশকে ঠিক সেভাবেই আমরা উন্নত, সমৃদ্ধ, শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সোয়া ১টা পর্যন্ত পৌনে তিন ঘণ্টার ওই আয়োজনে সূচনা বক্তৃতা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা শেষ হওয়ার পর প্রায় সোয়া ঘণ্টাব্যাপী ক্লোজ ডোর সেশনে ‘পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভিশন’ তুলে ধরা হয়। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, পররাষ্ট্র সচিব মো. শহিদুল হকসহ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
তাদের কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসা করেন। সার্বিকভাবে বাংলাদেশের অগ্রগতির ধারা বাধাগ্রস্ত করতে হরতাল-অবরোধ, অগ্নিসংযোগ ও মানুষ হত্যা করা হচ্ছে- অভিযোগ করে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উদ্দেশে তিনি বলেন, মানুষ খুন করাই তার একমাত্র লক্ষ্য। বোধহয় তিনি বাংলাদেশের মানুষদের রাখতেই চান না। ২৫ মার্চের কালো রাতে এমন চিত্র ছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একই কায়দায় তারা এখন হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে। এ ‘তা-ব’ উন্নয়নের গতিধারাকে ব্যাহত করছে। আমি প্রার্থনা করি, আল্লাহ যেন তাকে সুমতি দেন। তিনি যেন এই মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেন। বক্তৃতায় ভারতের সঙ্গে ঝুলে থাকা স্থল সীমান্ত চুক্তির বাস্তবায়ন এবং তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি দ্রুত সম্পাদনে আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নিয়ে বিরোধ মীমাংসার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে মামলা করেছি। আবার সেই মামলায় জয়ীও হয়েছি। এটা একটা বিরাট কূটনৈতিক সাফল্য। এজন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদও জানান শেখ হাসিনা। প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদমুক্ত অসামপ্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তার সরকার কাজ করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, মাদক, শিশুপাচার, নারীপাচার-এর মতো সমস্যা থেকে আমাদের মুক্তি পেতে হবে। প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে তাদের সহযোগিতা নিয়েই এ কাজগুলো করতে হবে। বক্তৃতাকালে বিদেশস্থ বাংলাদেশের মিশনগুলোর নিজস্ব ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নিতে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে প্রবাসীদের প্রতি আরও বেশি দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানান। বলেন, প্রবাসীদের অবদানটা কখনও অবহেলার চাখে দেখা যাবে না। তাদের প্রতি একটু বেশি দায়িত্ব নেয়া এবং তাদের সমস্যাগুলো দেখতে হবে। তাদের সেবক হতে হবে। প্রবাসীদের মেশিন রিডঅ্যাবল পাসপোর্ট বা এমআরপি প্রদানের প্রক্রিয়া দ্রুততর এবং ভোগান্তিমুক্ত করতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য সমপ্রসারণে আরও উদ্যোগী হওয়ার নির্দেশনা দিয়ে তিনি বলেন, শুধু কূটনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধিই নয়, ব্যবসা-বাণিজ্য সমপ্রসারণেও মনোযোগী হতে হবে। কোন দেশে কি ধরনের পণ্যের চাহিদা রয়েছে সেটি খোঁজার পাশাপাশি বিদেশী বিনিয়োগ নিয়ে আসতে হবে। ‘কূটনীতি’-কে টিম ওয়ার্ক উল্লেখ করে তিনি দূতাবাসগুলোর কর্মকর্তাদের সমন্বয়ের সঙ্গে কাজ করার নির্দেশনা দেন। ‘বাংলাদেশ হবে প্রাচ্যের সুইজারল্যান্ড’ বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্নের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশকে ঠিক সেভাবেই আমরা উন্নত, সমৃদ্ধ, শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সোয়া ১টা পর্যন্ত পৌনে তিন ঘণ্টার ওই আয়োজনে সূচনা বক্তৃতা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা শেষ হওয়ার পর প্রায় সোয়া ঘণ্টাব্যাপী ক্লোজ ডোর সেশনে ‘পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভিশন’ তুলে ধরা হয়। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, পররাষ্ট্র সচিব মো. শহিদুল হকসহ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সাহসের সঙ্গে কাজ করার নির্দেশ:
ক্লোজ ডোর সেশনে ৯টি ভাগে পররাষ্ট্র দপ্তরের আগামী দিনের কর্মপরিকল্পনা
সংক্রান্ত এক উপস্থাপনা তুলে ধরেন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। পররাষ্ট্র
সচিবের নেতৃত্বে বিভিন্ন বিভিন্ন বিভাগ ও অনুবিভাগের কর্মকর্তারা এতে অংশ
নেন। কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, সেখানে দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক ও বহুপক্ষীয়
নিয়মিত কূটনৈতিক কার্যক্রমের পাশাপাশি সফট পাওয়ার কূটনীতি, ব্লু ইকোনমি এবং
কনফারেন্স ডিপ্লোমেসি’র মত বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর মনোযোগ আকর্ষণ করা হয়।
কনফারেন্স ডিপ্লোমেসির জন্য রাজধানীর বাইরে আরও বেশি কনফারেন্স সেন্টার
তৈরির প্রস্তাব করা হয়। মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম দিনে দিনে বেড়ে চলেছে
উল্লেখ করে জনবল, সম্পদ, বাজেট বাড়ানোর দাবি করে কূটনীতিকরা দূতাবাসের কাজে
আরও সমন্বয় কূটনীতিকদের ফোকাল পয়েন্টে রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রীর
হস্তক্ষেপ কামনা করেন। প্রধানমন্ত্রী এসব দাবি বিবেচনার আশ্বাস দেন।
বিদায়ের আগে প্রায় দুই মিনিটের সমাপনী বক্তৃতায় কূটনীতিকদের উদ্দেশ্যে তিনি
বলেন, সাহস নিয়ে কাজ করতে হবে। একাত্তরে আমাদের অনেক কিছু ছিল না। কিন্তু
সেদিন দৃঢ় মনোবল নিয়ে করায় স্বাধীনতার পক্ষে জনমতসহ বিভিন্ন দেশের স্বীকৃতি
আদায় করতে সক্ষম হয়েছিলেন সেই সময়ের কূটনীতিকরা। সেই চেতনায় সবার সম্মিলিত
প্রয়াস প্রত্যাশা করেন প্রধানমন্ত্রী।
No comments