ওবামার সফরকে কেন্দ্র করে ভারতে কঠোর নিরাপত্তা
বারাক
ওবামার আসন্ন তিন দিনের ভারত সফরকে সামনে রেখে সব ধরনের নিরাপত্তা গ্রহণ
করা হয়েছে। বুধবার এ কথা জানিয়েছেন, ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং।
বারাক ওমাবার নিরাপত্তার জন্য সাত ধাপের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে
স্বাধীনতা দিবস প্যারেডের ভিভিআইপি মঞ্চের চারপাশে। ভারতের স্বাধীনতা দিবস
প্যারেডে ওবামা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। ভারত সফরে আগ্রাও
ভ্রমণ করবেন তিনি। রাজধানী দিল্লির প্রত্যেক এলাকায় সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায়
থাকবে নিরাপত্তাবাহিনী। আন্তর্জাতিক সীমান্তের নিরাপত্তা বৃদ্ধিতে পদক্ষেপ
নিয়েছে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। জম্মু ও কাশ্মীরের সীমান্তে
অতিরিক্ত ১২০০ বিএসএফ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। ২৫শে জানুয়ারি ভারত সফর
শুরু হবে ওবামার। তবে এ সফরকে সামনে রেখে ক্রমেই উদ্বিগ্ন হয়ে উঠছেন ভারতের
নিরাপত্তা কর্মকর্তারা। তারা আশঙ্কা করছেন, পাকিস্তান থেকে হয়তো নতুন কোনো
বোমা প্রস্তুতকারী ভারতে প্রবেশ করার অপেক্ষায় রয়েছে। তার নাম দেয়া হয়েছে
‘ওয়াকাস-২’। ভারতে বেশ কয়েকটি বোমা বিস্ফোরণের হোতা ওয়াকাস নামের
পাকিস্তানের এক বোমাপ্রস্তুতকারী। তার আসল নাম জিয়া-উর-রেহমান। ইন্ডিয়ান
মুজাহিদীন (আইএম)-এর পক্ষে সে এসব বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল। গত বছরের মার্চে তাকে
বাংলাদেশে গ্রেপ্তার করা হয়। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা টিএনএন। সমপ্রতি
ব্যাঙ্গালুরুতে গ্রেপ্তার হওয়া আইএম-এর বিস্ফোরক যোগানদাতাদের জিজ্ঞাসাবাদ
করে যে তথ্য পাওয়া গেছে, তাতে আরও আশঙ্কা দানা বাঁধছে নিরাপত্তা
কর্মকর্তাদের মনে। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো জানতে পেরেছে যে, বিস্ফোরক ও
সার্কিট জোগাড় করে নিজের কাছে রেখে দেয়ার নির্দেশ ছিল গ্রেপ্তারকৃত
ব্যক্তির কাছে। সামনের যে কোনদিন তার কাছে বোমা প্রস্তুতকারী এক ব্যক্তি
তার সঙ্গে যোগাযোগ করবে বলে জানিয়ে দেয়া হয়েছিল তাকে। ওই ব্যক্তিকে
পাকিস্তান থেকে ভারতে পাঠিয়েছে আইএম-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা রিয়াজ ভাতকল। তবে
এটি এখনও নিশ্চিত নয়, নতুন বোমাপ্রস্তুতকারীকে পাঠানো হয়েছে কিনা ভারতে।
ধারণা করা হচ্ছে, ওই ব্যক্তি হবে সমপূর্ণ নতুন এক ব্যক্তি। কিংবা ড.
শাহনেওয়াজ, মির্জা সাদাব বেগ, বড় সাজিদের মতো ভারতে অবস্থানরত কর্মীদের
মধ্যে কেউ। কয়েকদিন আগে ব্যাঙ্গালুরু পুলিশ আইএম-এর চার সদস্যকে গ্রেপ্তার
করে। তারা ওয়াকাস, তেহসিন আখতার বা ইয়াসিন ভাতকলকে বিস্ফোরক সরবরাহ করে বলে
ধারণা করা হচ্ছে। ওই চার ব্যক্তির নাম সৈয়দ ইসলাম আফাক, সাদ্দাম হুসেন,
আবদুস সবুর ও রিয়াজ আহমেদ সাইয়েদি। ৮ই জানুয়ারি পুলিশ ৪০ প্যাকেট
অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট জেল, ডিটোনেটর, ইলেক্ট্রনিক টাইমার ডিভাইস, ডিজিটাল
সার্কিট, তার ও পিভিসি পাইপ আটক করে ওই চার ব্যক্তির কাছ থেকে। এর মধ্যে
আফাক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, তার কাছে নির্দেশ ছিল বিস্ফোরক জোগাড় করে
নিজের কাছে রেখে দেয়ার জন্য। পরে এক ব্যক্তিকে পাঠালে তার কাছে যাতে সরবরাহ
করা যায়। তবে ওই ব্যক্তি কে হবে তা জানে না আফাক। পুলিশ ধারণা করছে, ওই
ব্যক্তি হতে পারে ওয়াকাসের মতো প্রশিক্ষিত কোন বোমা প্রস্তুতকারী। ওয়াকাস
যেহেতু এখন কারাগারে রয়েছে, তাই এ ব্যক্তিকে বলা হচ্ছে ‘ওয়াকাস-২’ নামে।
আতককৃত ওই চার ব্যক্তির কাছে যে ধরনের বিস্ফোরক ও অন্যান্য জিনিস আটক করা
হয়েছে, তার সঙ্গে মিল রয়েছে ২০১৩ সালে হায়দ্রাবাদ বিস্ফোরণের নমুনার সঙ্গে।
এছাড়া ব্যাঙ্গালুরুর একটি ঘরে যেসব বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়েছিল, তার
সঙ্গেও মিল রয়েছে সেসবের।
No comments